মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত জমি বিক্রি করে মসজিদের কাজে ব্যয় করার বিধান
প্রশ্নঃ ১২৬০২৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, পূর্বপুরুষরা তাদের দান খায়রাতের মাধ্যমে আমাদের মসজিদের জন্য অনেক জমি ক্রয় করে গিয়েছেন। ২০১৫ সালের দিকে পুরাতন মসজিদের নতুন সংস্কার কাজ শুরু হয়েছিলো,, যা টাকার অভাবে, বিভিন্ন সমস্যার কারনে এখনো সমাপ্ত করা সম্ভব হয়নি,, কিছুদিন পরপর কাজের জন্য মানুষের কাছে হাত পাতা হয়, অথচ যে কোন একটা জমি বিক্রি করলেই সকল কাজ সমাপ্ত হয়ে যায়, এমতাবস্থায় জমি বিক্রি না করে বারবার দানের জন্য হাত পাতার বিধান কি? দলিলের আলোকে জানাবেন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
জমিগুলো যদি মসজিদের নামে ওয়াকফকৃত হয় এবং সেগুলো থেকে কোনোভাবে উপকৃত হওয়া যায়, তাহলে সেগুলো বিক্রি করা যাবে না। বরং সেগুলো থেকে প্রাপ্ত অর্থ মসজিদের কাজে ব্যয় করতে হবে। আর যদি এমন হয় যে, জমিগুলো থেকে কোনোভাবেই উপকৃত হওয়া যাচ্ছে না, তাহলে সেগুলো বিক্রি করে উপকৃত হওয়া যায়, এমন জমি ক্রয় করতে হবে এবং পরবর্তীতে ক্রয়কৃত জমিও মসজিদের ওয়াকফ সম্পত্তি বলে বিবেচিত হবে। পূর্বের জমি বিক্রি করার অর্থ মসজিদের নামে নতুন জমি ক্রয় ব্যতীত অন্য কোনো কাজে ব্যয় করা যাবে না।
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {وَابْتَلُوا اليَتَامَى حَتَّى إِذَا بَلَغُوا النِّكَاحَ، فَإِنْ آنَسْتُمْ مِنْهُمْ رُشْدًا فَادْفَعُوا إِلَيْهِمْ أَمْوَالَهُمْ، وَلاَ تَأْكُلُوهَا إِسْرَافًا وَبِدَارًا أَنْ يَكْبَرُوا، وَمَنْ كَانَ غَنِيًّا فَلْيَسْتَعْفِفْ وَمَنْ كَانَ فَقِيرًا فَلْيَأْكُلْ بِالْمَعْرُوفِ، فَإِذَا دَفَعْتُمْ إِلَيْهِمْ أَمْوَالَهُمْ فَأَشْهِدُوا عَلَيْهِمْ وَكَفَى بِاللَّهِ حَسِيبًا، لِلرِّجَالِ نَصِيبٌ مِمَّا تَرَكَ الوَالِدَانِ وَالأَقْرَبُونَ، وَلِلنِّسَاءِ نَصِيبٌ مِمَّا تَرَكَ الوَالِدَانِ، وَالأَقْرَبُونَ مِمَّا قَلَّ مِنْهُ أَوْ كَثُرَ [ص:10] نَصِيبًا مَفْرُوضًا} [النساء: 7] {حَسِيبًا} [النساء: 6] «يَعْنِي كَافِيًا، وَلِلْوَصِيِّ أَنْ يَعْمَلَ فِي مَالِ اليَتِيمِ وَمَا يَأْكُلُ مِنْهُ بِقَدْرِ عُمَالَتِهِ»
২৫৭৬। হারূন (রাহঃ) .... ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সময়ে উমর (রাযিঃ) নিজের কিছু সম্পত্তি সাদ্কা করেছিলেন, তা ছিল, ছামাগ নামে একটি খেজুর বাগান। উমর (রাযিঃ) বলেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি একটি সম্পদ পেয়েছি, যা আমার নিকট খুবই পছন্দনীয়। আমি সেটি সাদ্কা করতে চাই।’ নবী (ﷺ) বলেন, ‘মূল সম্পদটি এ শর্তে সাদ্কা কর, যে, তা বিক্রি করা যাবে না, দান করা যাবে না এবং কেউ ওয়ারিস হবে না, বরং তার ফল (আল্লাহ্র পথে) দান করা হবে। তারপর উমর (রাযিঃ) সেটি এভাবেই সাদ্কা করলেন। তার এ সাদ্কা ব্যয় হবে আল্লাহর রাস্তায়, দাস মুক্তির ব্যাপারে, মিসকীন, মেহমান, মুসাফির ও আত্মীয়দের জন্য। এর যে মুতাওল্লালী হবে তার জন্য তা থেকে সঙ্গত পরিমাণ আহার করলে কিংবা বন্ধু বান্ধবকে খাওয়ালে কোন দোষ নেই। তবে তা সঞ্চয় করতে পারেব না।
সহীহ বুখারী
হাদীস নংঃ ২৫৭৬
আন্তর্জাতিক নং: ২৭৬৪
«وإذا صح الوقف لم يجز بيعه ولا تمليكه،»
«الهداية في شرح بداية المبتدي» (3/ 18):
«سئل الحلواني عن أوقاف المسجد إذا تعطلت وتعذر استغلالها هل للمتولي بيعها، ويشتري بثمنها أخرى؟ قال نعم.
وروى هشام عن محمد أنه قال: إذا صار الوقف بحيث لا ينتفع به المساكين فللقاضي أن يبيعه ويشتري بثمنه غيره، وعلى هذا فينبغي أن لا يفتي على قوله برجوعه إلى ملك الواقف وورثته بمجرد تعطله وخرابه، بل إذا صار بحيث لا ينتفع به يشترى بثمنه وقف آخر يستغل، ولو كانت غلته دون غلة الأول، وكذا للمتولي أن يبيع من تراب مسبلة إذا كان فيه مصلحة.»
«فتح القدير للكمال بن الهمام - ط الحلبي» (6/ 237):
«وَالثَّانِي: أَنْ لَا يَشْرُطَهُ سَوَاءٌ شَرَطَ عَدَمَهُ أَوْ سَكَتَ لَكِنْ صَارَ بِحَيْثُ لَا يُنْتَفَعُ بِهِ بِالْكُلِّيَّةِ بِأَنْ لَا يَحْصُلَ مِنْهُ شَيْءٌ أَصْلًا، أَوْ لَا يَفِي بِمُؤْنَتِهِ فَهُوَ أَيْضًا جَائِزٌ عَلَى الْأَصَحِّ إذَا كَانَ بِإِذْنِ الْقَاضِي وَرَأْيِهِ الْمَصْلَحَةَ فِيهِ.»
«حاشية ابن عابدين = رد المحتار ط الحلبي» (4/ 384):
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদিনা মুনাওয়ারা ৷
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন