ইকামতের আগে দাঁড়িয়ে কাতার সোজা করার বিধান
প্রশ্নঃ ১১৮৮৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ইক্বামতের আগে দারিয়ে কাতার সোজা করা যাবে কি না
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ক) ইমাম নামাযের জন্য প্রস্ত্ত হওয়ার পরই ইকামত শুরু করা উচিত। ইমামের প্রস্ত্ত হওয়ার আগে ইকামত শুরু করা ঠিক নয়। তদ্রূপ মুসল্লিদের জন্যও আগে থেকে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকা ঠিক নয়; বরং মুসল্লিগণ ইকামত আরম্ভ হওয়ার সময় দাঁড়িয়ে যাবে। যাতে ইকামতের শেষ পর্যন্ত কাতার সোজা হয়ে যায় এবং ইকামত শেষ হওয়ার পর ইমাম সাহেব নামায শুরু করতে পারেন।
সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হাদীসে আছে, বিলাল রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আসতে দেখে ইকামত বলা শুরু করতেন। আর অন্যরা কাতার সোজা করা শুরু করতেন। এভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের জায়গায় পৌঁছার পূর্বেই কাতার পুরোপুরি সোজা হয়ে যেত। (সহীহ মুসলিম ১/২২০)
অপর হাদীসে আছে, মুআযযিন আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার বলে ইকামত বলামাত্রই লোকেরা নামাযের জন্য দাঁড়িয়ে যেত এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের জায়গায় পৌঁছতে পৌঁছতে কাতার সোজা হয়ে যেত। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ১/৫০৭) এসব হাদীস থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, মুক্তাদীগণ হাইয়া আলাল ফালাহ বলা পর্যন্ত অপেক্ষা করবে না; বরং ইকামতের শুরুতেই দাঁড়িয়ে যাবে।
খ) ইকামত শুরু হওয়ার পর ইমাম বা কোনো মুক্তাদীর দাঁড়ানো থেকে বসে যাওয়া অতপর হাইয়াআলাল ফালাহ বা ক্বাদকামাতিস সালাহ বলার পর দাঁড়ানোর প্রচলনটি শরীয়তসম্মত নয়। কেননা পূর্বে বর্ণিত সহীহ মুসলিমের হাদীস থেকে এ কথা সুস্পষ্ট যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মসজিদে আসতে দেখলেই ইকামত শুরু হয়ে যেত এবং সাহাবায়ে কেরাম শুরুতেই দাঁড়িয়ে কাতার সোজা করতেন আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোজা ইমামের জায়গায় পৌঁছে যেতেন। এমন ক্ষেত্রে মসজিদে প্রবেশ করে নবীজীর বা কোনো সাহাবীর বসে যাওয়া অতপর হাইয়াআলাস সালাহ বলার সময় দাঁড়ানোর কোনো বর্ণনা পাওয়া যায় না।
সুতরাং প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ইকামত শুরু হওয়ার পর ইমামের জন্য মসজিদে এসে বসে যাওয়ার আমলটি একেবারে ভিত্তিহীন ও নবআবিষ্কৃত। আর ইকামতের পূর্ব থেকে যারা বসে আছে তাদের জন্যও ‘হাইয়া আলাল ফালাহ’ বা ‘ক্বদকামাতিস সালাহ’ বলা পর্যন্ত বসে অপেক্ষা করতে থাকা ঠিক নয়। এটিও সুন্নত পরিপন্থী কাজ।-জাওয়াহিরুল ফিকহ ২/৪২৭; শরহে মুসলিম, নববী ১/২২০
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন