আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

কন্ট্রাক্ট করে ওয়াজ করা কী জায়েজ?

প্রশ্নঃ ১১৬৪৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, বর্তমানে আমাদের দেশে ওয়াজের মৌসুম চলছে। মাহফিল গুলোতে যে সকল বক্তা / আলিম বয়ান করেন সাধারণত ওনাদের 20, 30, চল্লিশ, পঞ্চাশ হাজার টাকার মত হাদিয়া দিতে হয়। আমার প্রশ্ন হল, এটা কি দ্বীন প্রচার না দ্বীন ব্যবসা ? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম, সাহাবা রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহু, তাবেঈন রহমাতুল্লাহ আলাইহিগণ থেকে এরকম টাকার বিনিময় বয়ান করার কোন দলিল আছে কিনা ? অনেক সময় এরকম কথা শোনা যায়/ প্রচার আছে যে, অমুক বক্তা কোন ধরা বাধা টাকা নেন না, কিন্তু সত্যি কথা হলো টাকা না দিলে উনি আসবেন না, আর ওনাকে আনলে 10,000/ 20,000 / 50000 টাকার নিচে দেওয়া যায় না। অনেককে আগেই কিছু টাকা পাঠিয়ে দিতে হয় ? "আপনি দাওয়াত করেন কেন ? আপনাকে বলেছে কে ? আমাদের সংসার চলবে কিভাবে ? আসা যাওয়ার ভাড়া কে দিবে? (প্রকৃতপক্ষে আসা যাওয়াতে এত টাকা লাগেনা) গানবাজনায় খরচ করলে তো এরকম প্রশ্ন আসতো না কিংবা নর্তকী নাচালে তো কোন প্রশ্ন তুলতেন না ?" এরকম উত্তর না দেয়ার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি। কারণ, এগুলো শরীয়াতের কোনো দলিল নয়। কেউ কোন হারাম কার্যক্রম করলে সেটা শরীয়তের কোন দলিল হতে পারে না ? আমি কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক দলিল চাচ্ছি ? দ্বীন প্রচারের ক্ষেত্রে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবী রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহু, তাবেঈন রহমাতুল্লাহ আলাইহি এর আদর্শ / পদ্ধতি কেমন ছিল ? আর আমি যে পদ্ধতির কথা এখানে উল্লেখ করলাম এটা জায়েজ কিনা ?

১০ ডিসেম্বর, ২০২৩
ঢাকা ১০০০

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


প্রিয়ভাই!
আপনার প্রশ্নটা কিছুটা ধৈর্য ও সময় নিয়ে পড়লাম। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে কবুল করুন।

আসলে কিছুকিছু বিষয়, কর্ম বা বক্তব্য এমন আছে যার ব্যাখ্যা তৎসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাই ভালো বলতে পারবেন। যারা তার সাথে জড়িত নন তাদের কাছে ওইগুলোর ব্যাখ্যা জানতে চাওয়াও আমার কাছে যথাযথ মনে হয় না। কাজেই যারা এজাতীয় ওয়াজ করে বেড়ান যা আপনার শব্দে দ্বিন ব্যবসা বলে উল্লেখ করেছেন তারাই এর ব্যাখ্যা ভালো দিতে পারবেন। তবে আমরা সাদা চোখে যতটুকু দেখি তা থেকে এটা বলতে পারি, রাসুলুল্লাহ সা. থেকে নিয়ে সাহাবা তাবেয়ীন, সালাফে সালেহীন, এমনকি আমাদের নিকট অতীতের হক্কানী ওলামায়ে কেরামও দ্বিনের মেহনতকে এভাবে অর্থণৈতিক উন্নতির সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহর করেছেন বলে আমাদের জানা নাই।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই জাতি, দেশ ও ইসলামকে হেফাজত করুন। জানি না এর কারণে আমাদের ওপর আবার ভয়াবহ কোনো বিপদ এসে পড়ে কি না!!

চিন্তশীল ওলামায়ে কেরাম বিষয়গুলো নিয়ে এখন খোলামেলা কথা বলছেন।

আপনি যেসব যুক্তি বা অজুহাতের কথা বলেছেন, আমার দৃষ্টিতে সেগুলো যুক্তির নামে অপযু্ক্তি ছাড়া কিছুই নয়। কিছুকিছু ক্ষেত্রে হয়তো আয়োজকদের ত্রুটি থাকে কিন্তু তাই বলে সামগ্রিকভাবে এসব অজুহাত বেমানান। আল্লাহ তায়ালা ওইসব বক্তাদের হেদায়াত দান করুন।

এখানে মাহফিল আয়োজকদের দায়ও কোনো অংশে কম নয়। বরং তারই ওই সকল বক্তাদের জিভে জল ছিঁটিয়েছেন!! যেই ওয়াজ মাহফিলগুলো ছিল হেদায়াত ও নসিহতের কেন্দ্রবিন্দু সেগুলোকে তারা অনেকটা রসরঙ্গ, হাসি তামাশ এবং উৎসবের পালা বানিয়েছেন। যতদিন এটারও পরিবর্তন না হবে, মাহফিলে উদ্দেশ্য হেদায়াত প্রাপ্তি না হবে, জানি না ততদিন অবস্থার উন্নতি হবে কি না! আল্লাহ তায়ালা সবাইকে হেদায়াত দান করুন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেন:

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন