মেয়েদের উচ্চশিক্ষা লাভ করা
প্রশ্নঃ ১০৯২৯৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার বাবা bank job করে,বাবাকে বুঝিয়েছিলাম,কিন্তু বাবা বলে shariah based ব্যাংক ইত্যাদি অনেক কথা ,নিয়ত করেছিলাম মেডিকেলে chance নিয়ে নিজের একটা ব্যবস্থা হয়ে গেলে বাবাকে আর চাকরি করতে দিব না, কিন্তু সম্প্রতি আমি মেয়েদের নিয়ে করা একটি ওয়াজে, হুজুর বারবার বুঝাচ্ছিল যে কেন মেয়েদের বাইরে গিয়ে কাজ করা উচিত নয়, আমি আমার বাবা মার একটা মাত্রই মেয়ে, সন্তান হিসেবেও আমার অনেক দায়িত্ব আছে,আমার পড়াশোনা এখনো শেষ হয় নাই, এই ওয়াজ শোনার পর এখন আমার পড়াশোনায় আর মন বসতেছে না,চিন্তায় আমি পাগল হয়ে যাইতেছি,দয়া করে আমাকে বলেন আমার কি পড়াশোনা শেষ করে ডাক্তার হওয়া উচিত? নাকি কি করা উচিত?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
নারী পুরুষ সবার জন্য নিজের দ্বীন ঈমান পর্দাপুশিদা এবং পরিবারের আবশ্যিক দায়-দায়িত্ব ঠিক রেখে পড়াশোনা ও উচ্চশিক্ষার লাভ করা শরীয়তে নিষেধ নয়।
অবশ্য নারীদেরকে সাধারণ অবস্থায় ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শরীয়ত তাদের ওপর এমন দায়িত্ব আরোপ করে নি, যার কারণে তাদের ঘরের বাইরে যেতে হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)
যদি ঠেকায় পড়ে যায়, উপায়ান্তর না থাকে, এরকম বিশেষ প্রয়োজনে নারীদের জন্য শরীয়তের বিধান মোতাবেক পর্দা নিরাপত্তা ও পরিবারের হক ঠিক রেখে ঘরের বাহিরে যাওয়ার অবকাশ আছে। তবে এর জন্য কিছু নিয়ম ও শর্ত রয়েছে। নিয়ম ও শর্তগুলো মেনে চললে নারীর জন্য ঘর থেকে বের হওয়া জায়েয হবে; অন্যথায় নয়। যেমন,
– যদি সত্যিকারে তার চাকরি করার প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে।
– চাকরিটা তার দৈহিক, মানসিক স্বভাব ও রুচির সঙ্গে সামন্জস্যশীল হতে হবে। যেমন, ডাক্তারি, নার্সিং, শিক্ষা, সেলাই কিংবা এ জাতীয় পেশা হতে হবে।
– কর্মক্ষেত্রে পর্দার পরিপূর্ণ পরিবেশ থাকতে হবে। অন্যথায় জায়েয হবে না।
– চাকরির কারণে যাতে পরপুরুষের সঙ্গে সফর করতে না হয়।
– কর্মক্ষেত্রে আসা-যাওয়ার পথে যাতে কোন হারাম কাজ করতে না হয়। যেমন, ড্রাইভারের সঙ্গে একাকী যাওয়া, পারফিউম ব্যবহার করা ইত্যাদি।
– নারীর প্রধান কাজ ও দায়িত্ব হচ্ছে স্বামীর খেদমত করা, তার সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা ও মাতৃত্বের দায়িত্ব পালন করা। যদি চাকরি করতে গিয়ে এসব দায়িত্ব পালনে ব্যাপক অসুবিধা হয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে না। (ফাতাওয়াল মারআতিল মুসলিমাহ ২/৯৮১ ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩৫৯)
সুতরাং আপনি যদি উপরের বিষয়গুলোর ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিশ্চয়তা দিতে পারেন তাহলে আপনি উচ্চশিক্ষা লাভ করে ডাক্তারি পেশা গ্রহণ করতে পারবেন।
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন