প্রশ্নঃ ১০৮৮২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
হিন্দু দের প্রসাদ খাওয়া চলবে ?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রতিবেশি বিধর্মীদের সাথে সামাজিক সুসম্পর্ক রাখাতে কোন সমস্যা নেই।
তাদেরকে হাদিয়া দেয়া জায়েজ আছে।
তবে হাদিয়া না নেয়াই উত্তম। তবে যদি নেয়া হয়, তা খেতে কোন সমস্যা নেই।
তবে যদি উক্ত খাবার তাদের প্রতিমা ও মূর্তির নামে উৎসর্গকৃত খাবার হয়, কিংবা তাতে কোন হারাম বস্তু মিশ্রিত থাকে, তাহলে তা খাওয়া জায়েজ হবে না।
হিন্দুরা এই প্রসাদ সাধারণত কি কি দিয়ে তৈরি করে,,,?
যদিও হিন্দু শিক্ষক, বন্ধু কিংবা বান্দবি বা প্রতিবেশীটি মুসলিমদের কাছে একটি জিনিস গোপন রেখে দেয়। বলে না তার প্রসাদের উপাদানগুলো কি কি ?
সত্যি বলতে দূর্গা পূজায় কি কি উপাদান লাগে তাদের প্রসাদের জন্য, দুটি উপাদান পূজার অন্য অপরিহার্য।
১) পঞ্চগব্য
২) গো-চনা (গরুর মূত্র)
উ্ইকিপিডিয়ার দেয়া তথ্য মতে,পঞ্চগব্য হচ্ছে পাচ প্রকার জিনিসের সংমিশ্রন। এই মিশ্রনটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নিকট খুবই পবিত্র।
পঞ্চগব্য তৈরী হয় ৫টি উপাদান দিয়ে-
১/ গোবর, ২/ গোমূত্র পেসাব , ৩/ দুধ, ৪/ঘি
৫/ ও দই । এ পঞ্চগব্য মন্দিরে প্রসাদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
এবার অাসুন এগুলি খাওয়া জায়েজ বা হালাল কিনা। হালাল হারামের বিষয়টি তো স্পষ্ট বুঝতে পারছেন যে যেটি তৈরি হয় গরুর পেসাব অার গোবর দিয়ে সেটি কিভাবে হালাল হতে পারে সেটা হয়তো অামাকে আর বলতে হবেনা ।
এবার আসুন এগুলি খাওয়া জায়েজ কিনা সেটা বলি। মহান আল্লাহ বলেন
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺘَّﺨِﺬُﻭﺍْ ﺑِﻄَﺎﻧَﺔً ﻣِّﻦ ﺩُﻭﻧِﻜُﻢ
ْ ﻻَ ﻳَﺄْﻟُﻮﻧَﻜُﻢْ ﺧَﺒَﺎﻻً ﻭَﺩُّﻭﺍْ ﻣَﺎ ﻋَﻨِﺘُّﻢْ ﻗَﺪْ ﺑَﺪَﺕِ ﺍﻟْﺒَﻐْﻀَﺎﺀ ﻣِﻦْ ﺃَﻓْﻮَﺍﻫِﻬِﻢْ ﻭَﻣَﺎ ﺗُﺨْﻔِﻲ ﺻُﺪُﻭﺭُﻫُﻢْ ﺃَﻛْﺒَﺮُ ﻗَﺪْ ﺑَﻴَّﻨَّﺎ ﻟَﻜُﻢُ ﺍﻵﻳَﺎﺕِ ﺇِﻥ ﻛُﻨﺘُﻢْ ﺗَﻌْﻘِﻠُﻮﻥَ
অর্থ, হে ঈমানদারগণ! তোমরা মুমিন ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না, তারা তোমাদের অমঙ্গল সাধনে কোন ক্রটি করে না তোমরা কষ্টে থাকো, তাতেই তাদের আনন্দ। শত্রুতাপ্রসুত বিদ্বেষ তাদের মুখেই ফুটে বেরোয়। আর যা কিছু তাদের মনে লুকিয়ে রয়েছে, তা আরো অনেকগুণ বেশী জঘন্য। তোমাদের জন্যে নিদর্শন বিশদভাবে বর্ণনা করে দেয়া হলো, যদি তোমরা তা অনুধাবন করতে সমর্থ হও। সুরাহ আল ইমরান ৩:১১৮
অন্য জায়গাায় বলেন,
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺘَّﺨِﺬُﻭﺍْ ﺍﻟْﻴَﻬُﻮﺩَ ﻭَﺍﻟﻨَّﺼَﺎﺭَﻯ ﺃَﻭْﻟِﻴَﺎﺀ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ ﺃَﻭْﻟِﻴَﺎﺀ ﺑَﻌْﺾٍ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﺘَﻮَﻟَّﻬُﻢ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻻَ ﻳَﻬْﺪِﻱ ﺍﻟْﻘَﻮْﻡَ ﺍﻟﻈَّﺎﻟِﻤِﻴﻦَ
অর্থ , হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। সুরাহ আল মায়েদা ৫:৫১
অন্য জায়গাায় বলেন,
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁَﻣَﻨُﻮﺍ ﻟَﺎ ﺗَﺘَّﺨِﺬُﻭﺍ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮِﻳﻦَ ﺃَﻭْﻟِﻴَﺎﺀَ ﻣِﻦْ ﺩُﻭﻥِ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﺃَﺗُﺮِﻳﺪُﻭﻥَ ﺃَﻥْ ﺗَﺠْﻌَﻠُﻮﺍ ﻟِﻠَّﻪِ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺳُﻠْﻄَﺎﻧًﺎ ﻣُﺒِﻴﻨًﺎ
অর্থ ,হে ঈমানদারগণ! তোমরা কাফেরদেরকে বন্ধু বানিও না মুসলমানদের বাদ দিয়ে।তোমরা কি এমনটি করে নিজের উপর আল্লাহর প্রকাশ্য দলীল কায়েম করে দেবে(মুনাফেকে পরিনত হবে) সুরা আন নিসা ৪:১৪৪
অর্থাৎ একজন মুমিন কোন কাফেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ না করার সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে কোরআনে।
একজন মুমিন কোন কাফেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতে পারে না কারণ একজন মানুষ যতক্ষণ পর্যন্ত ঈমান না আনে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর পক্ষ থেকে তার(কাফের) উপর গজব নাজিল হতে থাকে।
এজন্য অমুসলিমদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের খাদ্য খাওয়া প্রসঙ্গেঃ পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে, তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ নাজায়েজ। তাই অবশ্যই তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপলক্ষে তৈরী খাদ্য খাওয়া মুমিন মুসলিমের জন্য নাজায়েজ। সে খাদ্যগুলো তাদের(অমুসলিম) রীতিনীতিতে তৈরী করা হয় এবং তাদের দেবতাদের উৎসর্গ করা হয়ে থাকে। তাদের পূজার প্রসাদ, হালুয়া, লাড্ডু খাওয়া কখনোই বৈধ হবে না। এগুলি খাওয়া হারাম!
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ১০৫১৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, বিধর্মীদের বিয়ের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিলে সেখানে কি উপস্থিত হওয়া কি ঠিক? তাদের উপসনালয়ে অনুষ্ঠান হবে না। বাইরে হবে।ওই অনুষ্ঠানের খাবার গ্রহন করা জায়েজ আছে কি? জাজাকাল্লাহ।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
অমুসলিমদের সাধারণ দাওয়াত এবং ওই দাওয়াত যার সঙ্গে তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি জড়িত থাকে–উভয়টি এক নয়। তাদের সাধারণ দাওয়াতে অংশগ্রহণ করলে যদি নিজের ঈমান-আমলের ক্ষতি হবার আশঙ্কা না থাকে তাহলে অংশগ্রহণ করা জায়েয। আর ঈমান-আমলের ক্ষতি হবার আশঙ্কা থাকলে অংশগ্রহণ করা না-জায়েয।
পক্ষান্তরে ওই দাওয়াত যে জাতীয় দাওয়াতের সঙ্গে তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি জড়িত থাকে, যেহেতু এ জাতীয় দাওয়াতে অংশগ্রহণ করলে নিজের ঈমান-আমলের ক্ষতি হবার আশঙ্কাই প্রবল থাকে সেহেতু এজাতীয় দাওয়াতে অংশগ্রহণ করা সর্বাবস্থায় হারাম।
ঐ খাবারটি হারাম নয় এ বিষয়ে নিশ্চিত জানা থাকলে বা খাবারের মধ্যে পবিত্রতা-অপবিত্রতার ক্ষেত্রে কোনরূপ সন্দেহ না থাকলে আপনি চাইলে বিধর্মীদের সেই খাবারে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন