আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

ব্যাংকের মাধ্যমে হজ্বের কুরবানী করানোর বিধান

প্রশ্নঃ ১০০২৮১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, দমে শোকরের কুরবানীর টাকা ব্যাংকে দেয়া বেশি নিরাপদ নাকি নিজেরা ব্যবস্থা করা?

২২ এপ্রিল, ২০২৫
ছাগলনাইয়া

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


হজ্বে ক্বিরান অথবা হজ্বে তামাত্তু আদায়কারীর উপর দমে শোকর (একই সফরে হজ্ব উমরা দুইটি করার সুযোগ লাভের শুকরিয়াস্বরূপ) দিতে হয়। যদিও সাধারণ মানুষ এটাকে কুরবানী হিসেবে চিনে। বাস্তবে এটি কুরবানী নয়। বরং দমে শোকর। তাই হাজ্বী সাহেব মুসাফির হোক কিংবা মুকীম, সর্বাবস্থায় এই দমে শোকর দেওয়া ওয়াজিব। বাদায়েউস সানায়ে: ২/১৭৪

হযরত আনাস ইবনে মালেক রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ মিনায় আগমন করে 'জামারায়' এলেন। তারপর পাথর নিক্ষেপ করে মিনায় অবস্থিত তাঁবুতে গেলেন এবং কুরবানী করলেন। অতঃপর মাথা মুণ্ডনকারীকে স্বীয় মাথা মোবারকের ডান পাশ অথবা বাম পাশের দিকে ইশারা করে মাথা মুণ্ডানোর নির্দেশ দিলেন। মুসলিম : ১/৪২১
এ হাদিসে দেখা যায়, রাসূলুল্লাহ ﷺ জামারায় কংকর নিক্ষেপ, কুরবানী ও হলকে ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছেন। সাহাবায়ে কেরামও আল্লাহর রাসুলকে অনুসরণ করেছেন। এই তিনটার মধ্যে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব।

উল্লেখ্য, যারা ব্যাংকের মাধ্যমে কুরবানী করান যদি তাদের কুরবানীর ক্ষেত্রে এই ধারাবাহিকতা লঙ্ঘিত না হয়, তাহলে ব্যাংকের মাধ্যমেও কুরবানী করানোর অবকাশ আছে। কিন্তু সরেজমিনে কাজ করেছেন তাদের বক্তব্য হলো, ব্যাংকে তত্ত্বাবধানে এতো বেশী পরিমাণে কুরবানী জমা হয় যে, তারা অনেক সময় কুরবানী করার আগেই মানুষকে কুরবানীর কনফার্ম ম্যাসেজ পাঠিয়ে দেয়। অথচ তারা কুরবানীর দিন অতিক্রম হওয়ার পরও কুরবানী করে!
অতএব সর্বপ্রথম চেষ্টা করা উচিত নিজ হাতে কুরবানী করার। যদি সম্ভব না হয় (কাজটা কিছুটা কঠিন) তাহলে নিজে উপস্থিত থেকে কুরবানী করানো। তাও সম্ভব না হলে, নিজ কাফেলার বা অন্য কাফেলার বিশ্বস্ত, উদ্যোগী, কর্মঠ, অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের মাধ্যমে কুরবানী করানো। এইসব চেষ্টা এবং প্রক্রিয়া ব্যর্থ হলে সর্বশেষ ব্যাংকের দ্বারস্থ হওয়া যেতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, কিছুটা কষ্টসাধ্য হলেও উপরোক্ত পন্থাগুলো অবলম্বন করা অসম্ভব নয়।
তবে ব্যাংকের মাধ্যমে কুরবানী করালে ব্যাংকের পক্ষ থেকে কুরবানীর যে সময় বা কনফার্ম ম্যাসেজ পাঠানো হয় সতর্কতামূলক সে সময় থেকে এক বেলা বা ছয় ঘন্টা বিলম্বে মাথা মুণ্ডিয়ে বা চুল কেটে হালাল হওয়া। শরহু মুলতাকাল আবহুর: ৩৩৮-৩৩৯, গুনইয়াতুন নাসিক: ২৭৯-২৮০

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেন:

ইসহাক মাহমুদ
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া
খতীব, নবোদয় সি ব্লক জামে মসজিদ, মোহাম্মদপুর
ইমাম, বায়তুল ওয়াহহাব জামে মসজিদ, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন