মুসনাদে আহমদ- ইমাম আহমদ রহঃ (আল-ফাতহুর রব্বানী)

الفتح الرباني لترتيب مسند الإمام أحمد بن حنبل الشيباني

নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ৯৩ টি

হাদীস নং: ৪১
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ : আল্লাহর নবী ইউনুস (আ) প্রসঙ্গ
(৪১) আবদুল্লাহ ইব্‌ন জা'ফর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, কোন নবীরই এইরূপ বলা উচিত নয় যে, আমি ইউনুস ইব্‌ন মাত্তার চেয়ে উত্তম।
আবু আবদুর রহমান বলেন, হারূণ ইব্‌ন মা'রূফ আমাদের কাছে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
(আবু দাউদ, সনদ উত্তম।)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
باب ذكر نبي الله يونس عليه السلام
عن عبد الله بن جعفر (7) قال قال رسول الله صلي الله عليه وسلم ما ينبغي لنبي أن يقول إني خير من يونس بن منى قال أبو عبد الرحمن (8) وحدثنا هارون بن معروف مثله
হাদীস নং: ৪২
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ : আল্লাহর নবী ইউনুস (আ) প্রসঙ্গ
(৪২) আবূ হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে পূর্বের হাদীসের (আবদুল্লাহ ইবনে জা'ফর বর্ণিত) অনুরূপ বর্ণনা করেছেন, তবে সেখানে 'নবী'-এর পরিবর্তে 'বান্দা' শব্দটির উল্লেখ এসেছে।
(বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য।)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
باب ذكر نبي الله يونس عليه السلام
عن أبي هريرة (9) عن النبي صلي الله عليه وعلى آله وصحبه وسلم أنه قال لعبد بدل نبي
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪৩
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ : "যুন্নুন তথা ইউনুস (আ)-এর দা'ওয়াত ও হজ সংক্রান্ত পরিচ্ছেদ”
(৪৩) ইব্রাহীম ইবন মুহাম্মদ তাঁর দাদা সা'দ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি উছমান ইব্‌ন 'আফফান (রা)-এর পাশ দিয়ে মসজিদের মধ্যে যাচ্ছিলাম; আমি তাঁকে সালাম দিলাম, কিন্তু তিনি আমার থেকে চোখ ঘুরিয়ে নেন এবং সালামের কোন উত্তর দেননি। তখন আমি আমীরুল মু'মিনীন উমর ইব্‌র খাত্তাবের (রা) নিকট এসে বললাম, ইসলামে কোন নতুন জিনিস ঘটেছে নাকি? দু'বার বললাম। তিনি বলেন, না। ব্যাপার কী? আমি বললাম, এইমাত্র মসজিদে আমি উছমানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম, আমি তাঁকে সালাম দিলাম, কিন্তু তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং আমার সালামের উত্তর দিলেন না। উমর (রা) উছমানকে (রা) ডেকে পাঠান এবং জিজ্ঞেস করেন, তুমি তোমার এই ভাইকে সালামের উত্তর দাওনি কেন? উছমান (রা) বললেন, না আমি এইরূপ করিনি। আমি বললাম, করেছেন। এইভাবে শেষ পর্যন্ত তিনি শপথ করেন এবং আমিও শপথ করে বললাম। কিন্তু একটু পরে উছমানের (রা) বিষয়টি মনে পড়লো এবং তিনি বললেন, আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি (আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি ও তাওবা করছি); হ্যাঁ, একটু আগে তুমি আমার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলে। কিন্তু তখন আমি মনে মনে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে শ্রুত একটি কথা স্মরণ করার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু আল্লাহর শপথ, যখনই কথাটি স্মরণ করতে যাচ্ছিলাম, তখনই আমার চক্ষু ও অন্তরের সামনে যেন একটি পর্দা পড়ে যাচ্ছে (অর্থাৎ সঠিকভাবে স্মরণ করতে পারছি না)। তখন রাবী সা'দ বলেন, ঠিক আছে আমি আপনাকে সে কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। (একদা) রাসূল (ﷺ) আমাদেরকে প্রথম দোয়া বা দাওয়াত সম্পর্কে বলছিলেন, এমন সময় এক বেদুঈন এসে রাসূলকে (ﷺ) অন্য প্রসঙ্গে ব্যস্ত করে ফেলে। (একসময়) রাসূল (ﷺ) উঠে দাঁড়ান, আমিও তাঁর পেছনে পেছনে চলতে থাকি। যখন দেখলাম যে তিনি আমার পূর্বেই বাড়ী পৌঁছে যাবেন, তখন আমি শব্দ করে দ্রুত অগ্রসর হলাম, তিনি আমার প্রতি দৃষ্টি দিয়ে বললেন, কে? আবু ইসহাক? আমি বললাম, জি হ্যাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (ﷺ)! রাসুল (ﷺ) বললেন, ব্যাপার কী? আমি বললাম, একটু আগে আপনি আমাদের উদ্দেশ্যে প্রথম দা'ওয়াত সম্পর্কে বলছিলেন, কিন্তু ঐ বেদুঈন এসে আপনাকে অন্য প্রসঙ্গে নিয়ে যায়। রাসূল (ﷺ) বললেন, হ্যাঁ, সেটি হচ্ছে যুন্নুন (আ)-এর দা'ওয়াত (দোয়া)। তিনি মাছের পেটে অবস্থান করে বলেছিলেন,
لاۤ اِلٰہَ اِلَّاۤ اَنۡتَ سُبۡحٰنَکَ اِنِّیۡ کُنۡتُ مِنَ الظّٰلِمِیۡنَ
"লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনায যোয়ালিমীন।”
(হে আল্লাহ!) তুমি ছাড়া কোন মাবুদ নেই। তুমি সকল ত্রুটি থেকে পবিত্র। নিশ্চয়ই আমি অপরাধী।
কোন মুসলিম এই কালেমা পাঠান্তে যদি তার প্রভুর নিকট কোন বিষয় প্রার্থনা করে, তবে প্রভু তা অবশ্যই কবুল করে নেন।
(১৪শ খণ্ডে কিতাবুল আযকারে এই হাদীসের তাখরীজ বর্ণিত হয়েছে।)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
باب ما جاء في دعوة ذي النون يعني يونس عليه السلام وحجه
حدثنا إبراهيم بن محمد بن سعد (1) حدثني والدي محمد عن أبيه سعد قال مررت بعثمان بن عفان في المسجد فسلمت عليه فملأ عينيه منى ثم لم يرد علىّ السلام. فأتيت أمير المؤمنين عمر بن الخطاب فقلت يا أمير المؤمنين هل حدث فى الاسلام شيء مرتين؟ قال لا، وما ذاك؟ قال قلت لا: إلا أنى مررت بعثمان آنفا فى المسجد فسلمت عليه فملأ عينيه منى ثم لم يرد علىّ السلام، قال فأرسل عمر إلى عثمان فدعاه فقال ما منعك أن لا تكون رددت على أخيك السلام؟ قال عثمان ما فعلت، قال سعد قلت بلى، قال حتى حلف وحلفت، قال ثم أن عثمان ذكر فقال بلى وأستغفر الله وأتوب إليه، انك مررت بى آنفا وأنا أحدث نفسى بكلمة سمعتها من رسول الله صلي الله عليه وسلم لا والله ما ذكرتها قط الا تغشى بصرى وقلبى غشاوة، قال قال سعد فانا أنبئك بها، إن رسول الله صلي الله عليه وسلم ذكر لنا أول دعوة ثم جاء أعرابى فشغله حتى قام رسول الله صلي الله عليه وسلم فاتبعته فلما أشفقت أن يسبقنى الى منزله ضربت بقدمى الأرض فالتفت الىّ رسول الله صلي الله عليه وسلم فقال من هذا؟ أبو اسحاق؟ قال قلت نعم يا رسول الله، قال فمه (2) قال قلت لا والله الا أنك ذكرت لنا أول دعوة ثم جاء هذا الأعرابى فشغلك، قال نعم، دعوة ذى النون إذ هو فى بطن الحوت (لا إله إلا أنت سبحانك أنى كنت من الظالمين) فأنه لم يدع بها مسلم ربه فى شئ إلا استجاب له
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪৪
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ : "যুন্নুন তথা ইউনুস (আ)-এর দা'ওয়াত ও হজ সংক্রান্ত পরিচ্ছেদ”
(৪৪) ইব্‌ন 'আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হজ্জের সময় যখন হারশা নামক টিলা অতিক্রম করছিলেন, তখন জিজ্ঞেস করলেন এটি কোন্ টিলা?' লোকজন বললো, হারশা টিলা। রাসূল (ﷺ) বললেন, আমি যেন ইউনুস ইবনে মাত্তাকে (আ) দেখতে পাচ্ছি। তিনি তালবিয়া পড়ছেন। লাল বর্ণের উষ্ট্রীর উপর সওয়ার হয়ে পশমের জুব্বা পরিধান করে যাচ্ছেন। তাঁর উষ্ট্রীর লাগাম খেজুর বৃক্ষের বাকল দ্বারা তৈরী।
(মুসলিম ও অন্যান্য।)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
باب ما جاء في دعوة ذي النون يعني يونس عليه السلام وحجه
عن ابن عباس (1) أن رسول الله صلي الله عليه وسلم لما مر بثنية هرشاء حين حج قال أى ثنية هذه؟ قالوا ثنية هرشاء، قال كأنى أنظر إلى يونس بن متى على ناقة حمراء جعدة عليه جبة من صوف، خطام ناقتهُ خلبة (قال هشيم يعنى ليفا وهو يلبى)
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪৫
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ্ নবী মূসা ইবনে ইমরান (আ) সম্পর্কিত পরিচ্ছেদসমূহ

পরিচ্ছেদ : আল্লাহর নবী মূসা (আ)-এর মর্যাদা এবং খানিকটা আমাদের প্রিয়নবী (ﷺ)-এর মর্যাদা
(৪৫) আবূ হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক মুসলিম এবং ইয়াহুদীদের এক ব্যক্তি বিতর্ক করছিল। মুসলিম ব্যক্তি বলল, সেই সত্তার শপথ, যিনি মুহাম্মদ (ﷺ)-কে সমগ্র সৃষ্টজগতের উপর নির্বাচিত (সম্মানিত) করেছেন। ইয়াহুদী বললো, সেই সত্তার শপথ, যিনি মূসাকে (আ) সমগ্র জগতের উপর নির্বাচিত (সম্মানিত) করেছেন। এতে মুসলিম ব্যক্তি রাগান্বিত হয়ে ইয়াহুদীকে চোখের উপর ঘুষি মেরে বসলো। ইয়াহুদী রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর কাছে এসে বিষয়টি তাঁকে অবহিত করলো। রাসূল (ﷺ) সেই ব্যক্তিকে ডেকে ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন, সে তা স্বীকার করলো। তখন রাসূল (ﷺ) বললেন, তোমরা মূসা (আ)-এর উপর আমাকে প্রাধান্য দিও না। কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ বজ্রাহত ও বেহুশ হয়ে পড়বে। আমি সর্বপ্রথম সম্বিত ফিরে পাব এবং মূসাকে (আ) দেখতে পাব, তিনি আরশের একপাশ ধরে দণ্ডায়মান। আমি জানিনা, তিনি কি বেহুঁশ হওয়ার পর আমার পূর্বেই সম্বিত ফিরে পেয়েছেন, নাকি তিনি আল্লাহ্ তা'আলা কর্তৃক ব্যতিক্রমী মর্যাদাপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত (ফলে বেহুশই হননি)।
(হাদীসটি গরীব)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
أبواب ذكر نبى الله موسى بن عمران عليه السلام

باب ما جاء فى فضل نبى الله موسى وشئ من فضل نبينا عليهما الصلاة والسلام
عن أبى هريرة (2) قال أستب رجل من المسلمين ورجل من اليهود فقال المسلم والذى أصطفى محمداً على العالمين، وقال اليهودى والذى أصطفى موسى على العالمين، فغضب المسلم فلطم عين اليهودى، فأتى اليهودى رسول الله صلي الله عليه وسلم فأخبره بذلك، فدعاه رسول الله صلي الله عليه وسلم فسأله فاعترف بذلك، فقال رسول الله صلي الله عليه وسلم لا تخيرونى على موسى (3) فان الناس يصعقون (4) يوم القيامة فأكون أول من يفيق فأجد موسى ممسكا بجانب العرش فما أدرى أكان فيمن صعق فأفاق قبلى أم كان ممن استثناه الله عز وجل
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪৬
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ্ নবী মূসা ইবনে ইমরান (আ) সম্পর্কিত পরিচ্ছেদসমূহ

পরিচ্ছেদ : আল্লাহর নবী মূসা (আ)-এর মর্যাদা এবং খানিকটা আমাদের প্রিয়নবী (ﷺ)-এর মর্যাদা
(৪৬) আবূ সা'ঈদ আল-খুদরী (রা) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
(বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
أبواب ذكر نبى الله موسى بن عمران عليه السلام

باب ما جاء فى فضل نبى الله موسى وشئ من فضل نبينا عليهما الصلاة والسلام
عن أبى سعيد الخدرى (6) عن النبى صلي الله عليه وسلم مثله.
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪৭
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ্ নবী মূসা ইবনে ইমরান (আ) সম্পর্কিত পরিচ্ছেদসমূহ

পরিচ্ছেদ : আল্লাহর নবী মূসা (আ)-এর মর্যাদা এবং খানিকটা আমাদের প্রিয়নবী (ﷺ)-এর মর্যাদা
(৪৭) আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, একদিন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কোন কিছু বণ্টন করেন। তখন আনসারের জনৈক ব্যক্তি বলে ওঠে, এটি এমন বণ্টন যদ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করা হয়নি তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ্ শত্রু, তুই যা বলেছিস আমি তা অবশ্যই রাসূলকে (ﷺ) বলে দিব। অতঃপর রাসূলকে (ﷺ) এই বিষয় জানানো হলে, তাঁর মুখমণ্ডল রক্তিম হয়ে ওঠে। এরপর রাসূল (ﷺ) বলেন, মূসার (আ) উপর আল্লাহর রহমত হোক; তাঁকে এর চেয়েও বেশী কষ্ট দেওয়া হয়েছিল। তখন তিনি সবর করেছেন।
(বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য।)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
أبواب ذكر نبى الله موسى بن عمران عليه السلام

باب ما جاء فى فضل نبى الله موسى وشئ من فضل نبينا عليهما الصلاة والسلام
عن عبد الله (1) قال قسم رسول الله صلي الله عليه وسلم ذات يوم قسما قال فقال رجل من الأنصار إن هذه لقسمة ما أريد بها وجه الله عز وجل، قال فقلت يا عدو الله أما لأخبرن رسول الله صلي الله عليه وسلم بما قلت، قال فذكر ذلك للنبى صلي الله عليه وسلم فاحمر وجهه، قال ثم قال رحمة الله على موسى فقد أوذى باكثر من هذا فصبر
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪৮
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ্ নবী মূসা ইবনে ইমরান (আ) সম্পর্কিত পরিচ্ছেদসমূহ

পরিচ্ছেদ : আল্লাহর নবী মূসা (আ)-এর মর্যাদা এবং খানিকটা আমাদের প্রিয়নবী (ﷺ)-এর মর্যাদা
(৪৮) আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে মেরাজের ঘটনা বর্ণিত, তাতে আছে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেন, অতঃপর আমাদেরকে ষষ্ঠ আকাশে আরোহণ করানো হয়। জিব্রাইল (আ) দরজা খুলতে বলেন। তাঁকে বলা হলো, আপনি কে? তিনি বলেন, জিব্রাইল। বলা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বলেন, মুহাম্মদ (ﷺ)। বলা হলো, তাঁকে কি ডাকা হয়েছে? তিনি বলেন, হ্যাঁ ডাকা হয়েছে। এরপর আমাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হল। তখন আমি মূসার (আ) মুখোমুখি হলাম। তিনি আমাকে অভিনন্দন জানালেন এবং কল্যাণ কামনায় দোয়া করলেন। (এই হাদীসে আরও এসেছে) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেন, অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা আমার প্রতি যা ওহী করবার তা করেন এবং তিনি আমার উপর দিবা-রাত্রি পঞ্চাশবার সালাত ফরয করেন। আমি অবরোহণ করে মূসার (আ) নিকট পৌঁছালাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, আপনার প্রভু আপনার উম্মতের উপর কী ফরয করেছেন? আমি বললাম, দিবা-রাত্রিতে পঞ্চাশ বার সালাত। তিনি বললেন, আপনি আবার প্রভুর কাছে ফিরে গিয়ে আরো সহজ করার অনুরোধ করুন। আপনার উম্মত তা পালনে সমর্থ হবে না। আমি বনী ইসরাইলকে পরীক্ষা করে দেখেছি এবং তাদের খবর আমি জানি।
রাসূল (ﷺ) বলেন, অতঃপর আমি মহাপ্রভুর নিকট ফিরে গিয়ে আরয করলাম, ইয়া রব, আমার উম্মতের জন্য সহজ করে দিন। তখন তিনি পাঁচ কমিয়ে দেন। আবার আমি মূসার (আ) কাছে ফিরে এলাম, তিনি বললেন, আপনি কী করেছেন? আমি বললাম, আমার প্রতিপালক পাঁচবার কমিয়ে দিয়েছেন। তিনি বললেন, আপনার উম্মত তা করতে পারবে না, আপনি আপনার প্রভুর কাছে ফিরে গিয়ে উম্মতের জন্য আরও সহজ করার প্রার্থনা করুন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেন, এইভাবে আমি আমার প্রভু ও মূসার (আ) মধ্যে যাতায়াত করতে থাকি; এবং প্রতিবারই পাঁচ পাঁচ করে তিনি কমাতে থাকেন। এবং শেষ পর্যন্ত তিনি (প্রভু) বলেন, হে মুহাম্মদ, এই নিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত দিবা-রাত্রিতে। প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য দশ (ওয়াক্তের সওয়াব) পাবে, আর তাতেই পঞ্চাশ ওয়াক্ত হবে। আর যে ব্যক্তি কোন নেক কাজের নিয়্যত করলো, কিন্তু বাস্তবে করতে পারলোনা, তার জন্য একটি নেকী (পুণ্য) লেখা হবে। আর যদি সে বাস্তবে তা আমল করে, তাহলে তার জন্য দশটি নেকী লেখা হবে। অপরদিকে যদি কেউ কোন খারাপ কাজ করার নিয়্যত করে, কিন্তু তা বাস্তবায়ন না করে, তাহলে এর বিপরীতে কিছু লেখা হবে না। তবে যদি সে তা বাস্তবায়িত করে, তাহলে মাত্র একটি গোনাহ লেখা হবে। (প্রভুর এই নির্দেশনা প্রাপ্তির পর) আমি অবরোহণ করে মূসার (আ) কাছে এসে (সবিস্তারে) তাঁকে অবহিত করি। কিন্তু তিনি বললেন, আপনি আপনার রবের কাছে ফিরে গিয়ে আপনার উম্মতের জন্য আরো সহজ করার অনুরোধ করুন। কারণ, আপনার উম্মত তা পালন করতে পারবে না। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, আমি আমার রবের কাছে এতবার ফিরে গিয়েছি যে, এখন আমি লজ্জাবোধ করছি।
(এটি একটি সুদীর্ঘ হাদীসের অংশবিশেষ। বিস্তারিত বর্ণনা ও তাখরীজ 'ইসরা'-এর ঘটনায় আসছে ইনশাআল্লাহ্।)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
أبواب ذكر نبى الله موسى بن عمران عليه السلام

باب ما جاء فى فضل نبى الله موسى وشئ من فضل نبينا عليهما الصلاة والسلام
عن أنس بن مالك (3) من حديث الأسراء أن رسول الله صلي الله عليه وسلم قال ثم عرج بنا إلى السماء السادسة فاستفتح جبريل فقيل من أنت؟ قال جبريل، قيل ومن معك؟ قال محمد صلي الله عليه وسلم فقيل وقد بعث اليه؟ قال قد بعث اليه، ففتح لنا فاذا أنا بموسى عليه السلام فرحب ودعا بخير (وفيه أيضا) أن رسول الله صلي الله عليه وسلم قال فأوحى الله عز وجل اليّ ما أوحى، وفرض علىّ فى كل يوم وليلة خمسين صلاة فنزلت حتى انتهيت الى موسى، فقال ما فرض ربك على أمتك؟ قال قلت خمسين صلاة فى كل يوم وليلة، قال أرجع الى ربك فاسأله التخفيف فان أمتك لا تطيق ذلك فانى قد بلوت بنى اسرائيل وخبرتهم، قال فرجعت الى ربى عز وجل فقلت أى رب خفف عن أمتى فحط عنى خمسا، فرجعت الى موسى فقال ما فعلت؟ قلت حط عنى خمسا، قال أن أمتك لا تطيق ذلك فارجع الى ربك فاسأله التخفيف لأمتك، قال فلم أزل أرجع بين ربى وبين موسى ويحط عنى خمسا خمسا حتى قال يا محمد هى خمس صلوات فى كل يوم وليلة بكل صلاة عشر فتلك خمسون صلاة، ومن هم بحسنة فلم يفعلها كتبت له حسنة، فان عملها كتبت عشرا ومن هم بسيئة فلم يعملها لم تكتب شيئا، فان عملها كتبت سيئة واحدة، فنزلت حتى أنهيت الى موسى فأخبرته فقال أرجع الى ربك فاسأله التخفيف لأمتك فان أمتك لا تطيق ذلك، فقال رسول الله صلي الله عليه وسلم لقد رجعت الى ربى حتى لقد أستحيت
হাদীস নং: ৪৯
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ্ নবী মূসা ইবনে ইমরান (আ) সম্পর্কিত পরিচ্ছেদসমূহ

পরিচ্ছেদ : আল্লাহর নবী মূসা (আ)-এর মর্যাদা এবং খানিকটা আমাদের প্রিয়নবী (ﷺ)-এর মর্যাদা
(৪৯) ইব্‌ন আব্বাস (রা) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, আমার সম্মুখে উম্মতসমূহ (বিভিন্ন) পেশ করা হয়। আমি জনৈক নবীকে (ﷺ) দেখলাম, তাঁর সাথে একটি সম্প্রদায়। আরেক নবীকে (আ) দেখলাম তাঁর সাথে একজন ও দুইজন পুরুষ। আরেক নবীকে (আ) দেখলাম- তাঁর সাথে কেউ নেই। এই সময় আমার সম্মুখে বিশাল জনতা পেশ করা হয়, আমি বললাম-এটি কি আমার উম্মত? বলা হলো, এঁরা হচ্ছেন মূসা (আ) ও তাঁর সম্প্রদায়। আপনি সম্মুখ দিগন্তে দৃষ্টিপাত করুন। (আমি চেয়ে দেখলাম) বিশাল জনতা; বলা হলো, অন্য দিগন্তে দেখুন। (আমি দেখলাম) বিশাল জনতা। বলা হলো, এই হচ্ছে আপনার উম্মত এবং এদের সাথে রয়েছে সত্তর হাজার, যাঁরা বিনা হিসাবে ও বিনা শাস্তিতে জান্নাতে প্রবেশ করবে। সাহাবীগণের মধ্যে কেউ কেউ মন্তব্য করছিলেন, সম্ভবতঃ এঁরা (এই সত্তর হাজার) নবীর (ﷺ) সাহাবীবৃন্দ (রা)। আবার কেউ বলছিলেন, এঁরা সম্ভবতঃ সেই সব লোক, যাঁরা ইসলামে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং আল্লাহর সাথে কখনও কোন শরীক করেননি। এছাড়া অন্য বিষয়াদিও তাঁরা উল্লেখ করেন। ইত্যবসরে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁদের সম্মুখে বের হয়ে আসেন এবং জিজ্ঞেস করেন, তোমরা কী বিষয়ে আলোচনায় লিপ্ত ছিলে? তখন তাঁরা তাঁকে আলোচিত বিষয় সম্পর্কে অবহিত করেন। তখন রাসূল (ﷺ) বলেন, তাঁরা (সত্তর হাজার) হচ্ছেন সেই সব লোক, যাঁরা (গরম লোহার) দাগ লাগায় না, তাবিজ-তুমার করে না, শুভাশুভ নির্ণয়ের জন্য পাখি উড়ায় না। এবং তারা তাদের রবের উপর তাওয়াক্কুল (ভরসা) করে। একথা শুনে 'উক্কাশা ইবনে মিহসান আল 'আশ'আরী (রা) দণ্ডায়মান হয়ে আরয করেন, আমি কি তাঁদের অন্তর্ভুক্ত, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। রাসূল (ﷺ) বলেন, হ্যাঁ তুমি তাঁদের অন্তর্ভুক্ত। এরপর অন্য একজন দণ্ডায়মান হয়ে জিজ্ঞেস করে, আমি কি তাঁদের অন্তর্ভুক্ত, ইয়া রাসূলাল্লাহ্? তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেন, এ বিষয়ে 'উকাশা তোমার অগ্রে চলে গিযেছে।
(এই হাদীসের বরাত সপ্তদশ খণ্ডে 'কিতাবুত তিব্ব'-এ বর্ণিত হয়েছে।)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
أبواب ذكر نبى الله موسى بن عمران عليه السلام

باب ما جاء فى فضل نبى الله موسى وشئ من فضل نبينا عليهما الصلاة والسلام
عن سعيد بن جبير (4) قال حدثنا ابن عباس رضى الله عنهما عن النبي صلي الله عليه وسلم قال عرضت علىّ الأمم فرأيت النبى صلي الله عليه وسلم ومعه الرهط والنبى ومعه الرجل والرجلين والنبى وليس معه أحد إذ رفع لى سواد عظيم فقلت هذه أمتى؟ فقيل هذا موسى وقومه ولكن انظر الى الأفق، فاذا سواد عظيم ثم قيل انظر الى هذا الجانب الآخر، فاذا سواد عظيم فقيل هذه أمتك ومعهم سبعون الفا يدخلون الجنة بغير حساب ولا عذاب: فقال بعضهم لعلهم الذين صحبوا النبى صلي الله عليه وسلم وقال بعضهم لعلهم الذين ولدوا فى الاسلام ولم يشركوا بالله شيئا قط وذكروا أشياء، فخرج اليهم النبى صلي الله عليه وسلم فقال ما هذا الذى كنتم تخوضون فيه؟ فأخبروه بمقالتهم فقال هم الذين لا يكتوون ولا يسترقون ولا يتطيرون وعلى ربهم يتوكلون، فقام عكاشة بن محصن الأشعرى رضى الله عنه فقال أنا منهم يا رسول الله صلى الله عليه وعلى آله وسلم سبقك بها عكاشة
হাদীস নং: ৫০
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: আল্লাহর নবী মূসার (আ) গুণাগুণ, তাঁর হজ ও সওম প্রসংগ
(৫০) ইব্‌ন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন আযরক উপত্যকা অতিক্রম করছিলেন (অর্থাৎ হজ্জের সময়), তখন জিজ্ঞেস করেন, এটি কোন্ উপত্যকা? লোকজন বললো, আযরক উপত্যকা। তখন তিনি বলেন, আমি যেন মূসাকে (আ) দেখতে পাচ্ছি। তিনি টিলা থেকে নামছেন, আর তিনি উচ্চস্বরে আল্লাহ্ তা'আলার উদ্দেশ্যে তালবিয়্যা পাঠ করছেন। (চলতে চলতে) অতপর রাসূল (ﷺ) হারশা টিলায় উপনীত হন এবং জিজ্ঞেস করেন, এটি কোন টিলা? লোকজন বললো, হারশা টিলা। রাসূল (ﷺ) বলেন, আমি যেন ইউনুস ইব্‌ন মাত্তাকে (আ) দেখতে পাচ্ছি, তিনি তাঁর লাল রংয়ের আঁটসাঁট দেহবিশিষ্ট উষ্ট্রীর উপর সওয়ার। পশমী জোব্বা পরিহিত। তার উটের লাগাম খেজুর গাছের বাকলের।তিনি তালবিয়্যা পাঠ করছেন।
(তিরমিযী ও ইবন মাজাহ)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
باب ما جاء فى صفة نبى الله موسى عليه السلام وحجه وصومه
عن ابن عباس (1) أن رسول الله صلي الله عليه وسلم مر بوادى الأزرق (يعنى حين حج) فقال أى واد هذا؟ قالوا هذا وادى الأزرق، فقال كأنى أنظر الى موسى عليه السلام وهو هابط من الثنية (2) وله جؤار الى الله عز وجل بالتلبية حتى أتى على ثنية هرشاء (3) فقال أى ثنية هذه؟ قالوا ثنية هرشاء قال كأنى أنظر الى يونس بن متى على ناقة حمراء جعدة (4) عليه جبة من صوف خطام (5) ناقتهُ خلبة (6) قال هشيم يعنى ليفا وهو يلبى
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫১
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: আল্লাহর নবী মূসার (আ) গুণাগুণ, তাঁর হজ ও সওম প্রসংগ
(৫১) ইব্‌ন আব্বাস (রা) থেকে আরো বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, যে রাত্রে আমাকে ঊর্ধ্বে নিয়ে যাওয়া হয়, সেই রাত্রে আমি মূসা ইব্‌ন ইমরানকে (আ) দেখেছি দীর্ঘাকৃতি ও কোঁকড়া চুলবিশিষ্ট। তিনি যেন 'শানুআ' গোত্রের কোন সুপুরুষ। আমি ঈসা ইবন মারয়ামকে (আ) দেখেছি, মধ্য আকৃতির ও ঋজু ও ঝুলন্ত চুলবিশিষ্ট। (অন্য বর্ণনায়) আমি মুসাকে (আ) দেখেছি অধিক কেশরাশি সম্পন্ন সুঠাম দেহের অধিকারী।
(বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য।)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
باب ما جاء فى صفة نبى الله موسى عليه السلام وحجه وصومه
وعنه أيضا (8) قال قال نبى الله صلي الله عليه وسلم رأيت ليلة أسرى بى موسى بن عمران رجلا آدم (9) طُوالا جعدا كأنه من رجال شَنوءة (10) ورأيت عيسى ابن مريم عليهما السلام مربوع الخلق الى الحمرة والبياض، سبط (1) الرأس (وله فى رواية أخرى) ورأيت موسى أسحم آدم كثير الشعر (قال حسن) الشعرة شديد الخلق
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫২
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: আল্লাহর নবী মূসার (আ) গুণাগুণ, তাঁর হজ ও সওম প্রসংগ
(৫২) জাবির ইব্‌ন আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেন, আমার সম্মুখে নবীগণকে (আ) পেশ করা হয়। মূসাকে (আ) দেখলাম- তিনি যেন শানুআহ গোত্রের একজন সুদর্শন পুরুষ।
(এই হাদীসের তাখরীজ ফেরেশতা সৃষ্টি পরিচ্ছেদে বর্ণিত হয়েছে।)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
باب ما جاء فى صفة نبى الله موسى عليه السلام وحجه وصومه
عن جابر (2) عن النبى صلي الله عليه وسلم قال عرض علىّ الانبياء فاذا موسى رجل ضرب من الرجال كأنه من رجال شنوأة
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৩
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: আল্লাহর নবী মূসার (আ) গুণাগুণ, তাঁর হজ ও সওম প্রসংগ
(৫৩) ইবন 'আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মদীনায় এসে (হিজরতের পর) দেখলেন, ইয়াহুদীরা আশুরার দিন সওম পালন করছে। তিনি বললেন, এটা কোন দিনে তোমরা সওম পালন করছো? তারা বললো, এটি একটি ভাল দিন। এই দিনে আল্লাহ্ তা'আলা বনী ইসরাইলকে তাদের শত্রুদের কবল থেকে মুক্তি দেন। অতঃপর মুসা (আ) এই দিনে সওম পালন করেন। রাসূল (ﷺ) বলেন, মূসাকে (আ) অনুসরণের ক্ষেত্রে আমি তোমাদের চেয়েও অগ্রগামী। সুতরাং রাসূল (ﷺ) নিজে সেই দিনে সওম পালন করেন এবং অন্যদেরও তা করতে নির্দেশ দেন।
(এই হাদীসের তাখরীজ ১০ম খণ্ডে 'কিতাবুত তাখরীজ'-এ বর্ণিত হয়েছে।)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
باب ما جاء فى صفة نبى الله موسى عليه السلام وحجه وصومه
عن أبن عباس (3) قال قدم رسول الله صلي الله عليه وسلم المدينة فرأى اليهود يصومون يوم عاشوراء، فقال ما هذا اليوم الذى تصومون؟ قالوا هذا يوم صالح، هذا يوم نجى الله فيه بنى اسرائيل من عدوهم، قال فصامه موسى، قال قال رسول الله صلي الله عليه وسلم أنا أحق بموسى منكم فصامه رسول الله صلي الله عليه وسلم وأمر بصومه.
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৪
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: প্রস্তরখণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত মূসার (আ) ঘটনা
(৫৪) আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, বনী ইসরাইল একত্রে উলঙ্গ হয়ে গোসল করতো (অন্য বর্ণনায়-তারা একে অপরের গুপ্তাঙ্গের প্রতি দৃষ্টিপাত করতো)। কিন্তু আল্লাহর নবী মুসা (আ) তাতে লজ্জাবোধ করতেন। গোসলের সময় তিনি পর্দা করতেন। এতে বনী ইসরাইল তার গুপ্তাংগে দোষারোপ করল। (অন্য বর্ণনায়- তারা বললো আল্লাহর কসম, মুসা একশিরার রোগী। এই কারণেই সে আমাদের সাথে গোসল করে না)। (এই যখন অবস্থা তখন) আল্লাহর নবী মূসা (আ) একদিন একটি পাথরের উপর তাঁর কাপড় রেখে গোসল করছিলেন। পাথর তাঁর কাপড় নিয়ে ছুটতে থাকে। আল্লাহর নবীও পাথরের পেছনে পেছনে তাঁর লাঠি হাতে ছুটতে থাকেন আর বলতে থাকেন, হে পাথর আমার কাপড় দিয়ে যা-। এইরূপ করতে করতে তিনি বনী ইসলাইলদের সর্দারদের মাঝখানে গিয়ে পৌছেন, আর পাথরও তখন থেমে যায়। আল্লাহর নবী তাঁর কাপড় নিয়ে নেন। এই সুযোগে বনী ইসরাইল সম্প্রদায় তাঁর প্রতি দৃষ্টিপাত করে তাঁর উত্তম শারীরিক গঠন ও পূর্ণাঙ্গ আকৃতি দেখতে পায়। তখন তারা বলে ওঠে, বনী ইসরাইলের জঘন্য মিথ্যাবাদীদের আল্লাহ্ ধ্বংস করুন। এই ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা তাদের দোষারোপ থেকে তাঁকে মুক্ত করেন। (অন্য এক বর্ণনায় এসেছে) মূসা (আ) তাঁর কাপড় উঠিয়ে নিয়ে পাথরকে আঘাত করতে থাকেন। আবূ হুরাইরা (রা) বলেন, আল্লাহর শপথ, ঐ পাখরে মুসার (আ) আঘাতের ছয় অথবা সাতটি চিহ্ন রয়েছে। (দ্বিতীয় একটি বর্ণনায় এসেছে) আবদুল্লাহ ইবন শাক্বীক থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু হুরাইরা (রা) আমাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি কোথা হতে এসেছ? আমি বললাম শাম (সিরিয়া) থেকে। তিনি বললেন, তুমি কি মূসার (আ) পাথর দেখেছ? আমি বললাম, মুসার (আ) পাথর, সে আবার কি? তখন তিনি বলেন, বনী ইসরাঈল সম্প্রদায় তাদের আলোচনায় মূসার (আ) কাপড়ের নীচে তার অণ্ডকোষ সম্পর্কে অনর্থক কথাবার্তা বলে। একদা তিনি একটি পাথরের উপর তাঁর কাপড় রেখে গোসল করতে থাকেন। এমন সময় সেই পাথর তাঁর কাপড় নিয়ে দৌড় দেয়। তিনিও পাথরের পেছনে দৌড়াতে থাকেন আর বলতে থাকেন, হে পাথর, আমার কাপড় রেখে যা কিন্তু ততক্ষনে পাথর কাপড় নিয়ে বনী ইসরাইলদের মধ্যে পৌঁছে যায় এবং তারা মুসাকে (আ) তাঁর উত্তম শারীরিক গঠনে দেখতে পায়। মুসা (আ) সেই পাথরকে (তাঁর লাঠির সাহায্যে) তিনবার আঘাত করেন। সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আবু হুরাইরার প্রাণ, আমি যদি সেই পাথরটিকে দেখতাম, তাহলে অবশ্যই তাতে মুসার (আ) আঘাতের চিহ্নগুলো দেখতে পেতাম।
(বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী ও অন্যান্য।)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
باب قصته مع الحجر
عن أبى هريرة (4) أن رسول الله صلي الله عليه وسلم قال أن بنى اسرائيل كانوا يغتسلون عراة (وفى رواية ينظر بعضهم الى سوأة بعض) وكان نبى الله موسى عليه السلام منه الحياء والستر، وكان يتستر اذا اغتسل فطعنوا فيه بغورة (وفى رواية فقالوا والله ما يمنع موسى أن يغتسل معنا إلا أنه آدر) قال فبينما نبى الله يغتسل يوما وضع ثيابه على صخرة فانطلقت الصخرة بثيابه، فاتبعها نبى الله ضربا بعصاه وهو يقول ثوبى يا حجر ثوبى يا حجر، حتى انتهى به الى ملأ من بنى اسرائيل وتوسطهم فقامت (أى الصخرة) وأخذ نبى الله ثيابه فنظروا فاذا أحسن الناس خلقا وأعدلهم، صورة، فقالت بنوا اسرائيل قاتل الله أفاكى (5) بنى اسرائيل فكانت براءته التى برأه الله عز وجل بها (6) (وفى رواية) فأخذ ثوبه وطفق بالحجر ضربا: فقال أبو هريرة رضى الله عنه والله أن بالحجر نَدَبَا ستة أو سبعة ضرب موسى بالحجر (ومن طريق ثان) (7) عن عبد الله بن شقيق قال قال لى أبو هريرة رضى الله عنه من أين أقبلت؟ قلت من الشام، قال فقال لى هل رأيت حجر موسى؟ قلت وما حجر موسى؟ قال أن بنى أسرائيل قالوا لموسى قولا تحت ثيابه فى مذاكيره (8) قال فوضع ثيابه على صخرة وهو يغتسل قال فسع ثيابه قال فتبعها في أثرها وهو يقول يا حجر الق ثيابى حتى أتت به على بنى اسرائيل فرأوا مستويا حسن الخلق فلجبه ثلاث لجبات (1) فو الذى نفس أبى هريرة بيده لو كنت نظرت لرأيت لجبات موسى فيه.
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: ফিরআউন ও তার সৈন্য-সামন্তের ধ্বংস ও জিব্রাইল (আ) কর্তৃক তার মুখে মাটি ছিটিয়ে দেওয়া
(৫৫) ইবন 'আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, (মৃত্যুর পূর্বে) ফিরআউন যখন বললো, "আমি বিশ্বাস স্থাপন করেছি যে, বনী ইসরাইল যে সত্তায় বিশ্বাস করেছে, সেই সত্তা ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।" জিব্রাইল (আ) আমাকে বলেছেন, হে মুহাম্মদ, সেই সময় আপনি যদি আমাকে দেখতেন, আমি কেমন করে একটি সমুদ্রের থেকে কিছু কাদা নিয়ে তা ফিরআউনের মুখে ঠেসে দেই যাতে রহমত (আল্লাহ্) তাকে স্পর্শ না করে। (দ্বিতীয় ধারায় মুহাম্মদ ইব্‌ন জা'ফর ইবন 'আব্বাসের সূত্রে বর্ণনা করে বলেন) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, জিব্রাইল (আ) ফিরআউনের মুখের মধ্যে মাটি ঢুকিয়ে দিচ্ছিলেন- যেন সে “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ" বলতে না পারে।
(এই হাদীসের সনদ, ব্যাখ্যা ও তাখরীজ ১৮শ পর্বে 'ফাযাইলুল কুরআন' অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে।)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
باب ذكر هلاك فرعون وجنوده ودس جبريل عليه السلام الطين في فيه
عن ابن عباس (1) قال قال رسول الله صلي الله عليه وسلم لما قال فرعون آمنت أنه لا اله الا الذى آمنت به بنوا اسرائيل، قال قال لى جبريل يا محمد لو رأيتنى وقد أخذت حالا من حال البحر فدسيته فى فيه مخافة أن تناله الرحمة (ومن طريق ثان) حدثنا محمد بن جعفر ثنا شعبة عن عدى بن ثابت وعطاء بن السائب عن سعيد بن جبير عن ابن عباس رضى الله عنهما قال رفعه أحدهما إلى النبي صلى الله عليه وسلم قال إن جبريل كان يدس في فم فرعون الطين مخافة أن يقول لا إله إلا الله
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৬
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: বনী ইসরাইল যখন বলেছিল, "হে মূসা, আমাদের জন্য ইলাহ সাব্যস্ত করুন-ওদের যেমন অনেক ইলাহ রয়েছে" সেই ঘটনা প্রসংগ
(৫৬) আবূ ওয়াক্বিদ আল-লাইছী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, লোকজন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর নেতৃত্বে মক্কা থেকে হুনাইনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলেন। সেখানে কাফিরদের মালিকানায় একটি কুলবৃক্ষ ছিল। তারা সেখানে অবস্থান করতো এবং তাদের অস্ত্র-শস্ত্র সেই বৃক্ষে ঝুলিয়ে রাখতো। সেই বৃক্ষকে বলা হতো 'যাতু আনওয়াত। রাবী বলেন, আমরা সেখানে প্রকাণ্ড সবুজ এক কুলবৃক্ষের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমরা বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (ﷺ)! আমাদের জন্য একটি 'যাতু আনওয়াত' বানিয়ে দিন। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, আমার প্রাণ যাঁর হাতে, সেই সত্তার শপথ, তোমরা এমন কথা বললে যেমনটি মূসার (আ) সম্প্রদায় বলেছিল- "আমাদের জন্য একজন ইলাহ ঠিক করে দিন, যেমন তাদের রয়েছে বহু ইলাহ্। মূসা বললেন, তোমরা নিশ্চয় মূর্খ সম্প্রদায়।" (রাসূল (ﷺ) বলেন) এসব হচ্ছে- সুনান বা রীতি- পদ্ধতি। তোমরা পূর্ববর্তীদের রীতি-পদ্ধতিসমূহ একটি একটি করে রপ্ত করতে থাকবে (এবং ভ্রষ্টতার পথে অগ্রসর হবে)।
(নাসাঈ ও তিরমিযী। তিরমিযীর মতে এটি হাসান ও সহীহ।)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
باب قصة موسى عليه السلام مع بنى اسرائيل إذ قالوا يا موسى اجعل لنا إلها كما لهم آلهة
عن أبى واقد الليثى (1) رضى الله عنه أنهم خرجوا عن مكة مع رسول الله صلي الله عليه وسلم إلى حنين قال وكان للكفار سدرة يعكفون عندها ويعلقون بها أسلحتهم يقال لها ذات أنواط، قال فمررنا بسدرة خضراء عظيمة، قال فقلنا يا رسول أجعل لنا ذات أنواط، فقال رسول الله صلي الله عليه وسلم قلتم والذى نفسى بيده كما قال قوم موسى أجعل لنا إلها كما لهم آلهة، قال إنكم قوم تجهلون) انها لسنن، لتركبن سنن من قبلكم سنة سنة
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৭
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ : মুসা কালীমুল্লাহর (আ) অনুপস্থিতিতে তাদের বাছুর পুজা ও এতদ্দর্শনে মূসা কর্তৃক তাওরাতের তক্তাসমূহ ফেলে দেওয়া ও তা ভেঙ্গে যাওয়া
(৫৭) ইব্‌ন 'আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, সংবাদ কখনও প্রত্যক্ষ দর্শনের মত হয় না। নিশ্চয় আল্লাহ্ তা'আলা মুসার (আ) কওম যা করেছিল সে সম্পর্কে মূসাকে (আ) অবহিত করেছিলেন, তাতে মূসা (আ) তাওরাতের তক্তাসমূহ ফেলে দেননি। কিন্তু তারা যা করেছে (গোবৎস পুজা) তা সচক্ষে প্রত্যক্ষ করার পর তিনি তক্তাসমূহ ফেলে দেন এবং তা ভেঙ্গে যায়।
(মালিক, ইবনে হিব্বান, তায়ালিসী ও বাযযার।)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
باب قصة عبادتهم العجل فى غيبة كليم الله عنهم والقائه ألواح التوراة عندما عاين ذلك فانكسرت
عن ابن عباس (2) قال قال رسول الله صلي الله عليه وسلم ليس الخير كالمعاينة إن الله عز وجل أخبر موسى بما صنع قومه فى العجل فلم يلق الألواح، فلما عاين ما صنعوا ألقى الألواح فانكسرت
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৮
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: বনী ইসরাইলের কাপুরুষতা ও অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনায় তাদের ভয়-ভীতি
(৫৮) আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন বদরের উদ্দেশ্যে বের হন, তখন তিনি লোকদের কাছ থেকে পরামর্শ আহ্বান করেন। অতপর আবু বকর (রা) তাকে এক পরামর্শ দিলেন। রাসূল (ﷺ) পুনরায় পরামর্শ আহ্বান করেন। এবার উমার (রা) তাকে এক পরামর্শ দেন। রাসূল (ﷺ) চুপ থাকেন। তখন আনসারদের জনৈক ব্যক্তি বললেন, রাসূল (ﷺ) তোমাদেরকে উদ্দিষ্ট করেছেন। তখন তাঁরা (আনসারগণ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (ﷺ) আল্লাহর শপথ, আমরা কখনও বনী ইসরাইল মূসাকে (আ) যেরূপ বলেছিল "আপনি এবং আপনার প্রভু এগিয়ে যান এবং যুদ্ধ করুন, আমরা এখানে বসে পড়লাম” – এরূপ হবো না। বরং আল্লাহর শপথ, আপনি যদি উষ্ট্রী হাঁকিয়ে চলতে থাকেন এবং এমনকি ইয়ামানের 'বারকুল-গিমাদ' পর্যন্ত পৌঁছে যান, তবুও আমরা আপনার সাথেই থাকবো।
(নাসাঈ ও ইবনে হিব্বান)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
باب ما جاء فى جبن بنى اسرائيل وخوفهم من قتال الجبارين
عن أنس (1) قال لما سار رسول الله صلي الله عليه وسلم الى بدر خرج فاستشار الناس فأشار عليه أبو بكر رضى الله عنه، ثم استشارهم فأشار عليه عمر رضى الله عنه فسكت، فقال رجل من الأنصار إنما يريدكم (2) فقالوا يا رسول الله والله لا نكون كما قالت بنوا اسرائيل لموسى عليه السلام (اذهب أنت وربك فقاتلا أنا ههنا قاعدون) ولكن والله لو ضربت أكباد الابل حتى تبلغ بَرك الغِماد (3) لكنا معك
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৯
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ : খিযির (আ)-এর সাথে মূসা (আ) এর ঘটনা
(৫৯) ইবন 'আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, (একদা) তিনি এবং হুর ইবনে ক্বাইস ইবনে হিসন আল-ফাযারী মূসার (আ) সেই সঙ্গী বিষয়ে বিতর্কে লিপ্ত হন, যাঁর সাক্ষাত লাভের আশায় তিনি রাস্তার সন্ধান করেছিলেন। ইবন 'আব্বাস বলেন, তিনি খাযির (আ)। এই সময় তাঁদের (ইব্‌ন আব্বাস ও হুর) পাশ দিয়ে উবাই ইব্‌ন কা'ব (রা) যাচ্ছিলেন। ইবন 'আব্বাস তাকে ডাক দিয়ে থামালেন এবং বললেন, আমি ও আমার এই সাথী মূসার (আ) সেই সঙ্গীর ব্যাপারে তর্কে লিপ্ত হয়ে পড়েছি, যাঁর সাক্ষাতের আশায় তিনি (মূসা) রাস্তার সন্ধান করেছিলেন! আপনি কি এ বিষয়ে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) থেকে কোন কিছু শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কে বলতে শুনেছি- একদা মূসা (আ) বনী ইসরাইলের নেতৃস্থানীয়দের মাঝে ছিলেন, এমন সময় এক ব্যক্তি তাঁর কাছে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো, আপনার চেয়ে অধিক জ্ঞানী কোন লোককে আপনি চেনেন? তিনি উত্তর দেন, না। তখন আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর কাছে ওহী প্রেরণ করে বললেন, তিনি হচ্ছেন আমার বান্দা খাযির। তখন মূসা (আ) তাঁর সাথে সাক্ষাত করার জন্য আল্লাহর কাছে রাস্তার সন্ধান প্রার্থনা করেন। আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর জন্য (মূসা) একটি মাছকে নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করে দেন। এবং তাঁকে (মূসা) বলা হয়, যখন আপনি মাছটি হারিয়ে ফেলবেন, তখন ফিরে যাবেন। তাহলে নিশ্চয়ই আপনি তার সাক্ষাৎ পাবেন।
বর্ণনাকারী ইবনে মুসআ’ব তার হাদীসে আরো বলেন: যেতে যেতে তিনি একটি জায়গায় থামলেন। তখন তিনি তার (সঙ্গী) যুবককে বলল, আমাদের নাশতা লও। সত্যি বলতে কি, এ সফরে আমরা বড় ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। তখন দেখা গেল তিনি মাছটি হারিয়ে ফেলেছেন। তখন তারা তাদের পদচিহ্ন ধরে ফিরে চললেন। এভাবে মুসা সমুদ্রে মাছের চিহ্ন অনুসরণ করে এগিয়ে চললেন। অতঃপর তাঁদের দু'জনের (মূসা ও খিযির) বাকি ঘটনা আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর পবিত্র কিতাবে বিবৃত করেছেন।
(বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য। হাদীসটি সহীহ।)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
باب قصته مع الخضر عليه السلام
عن ابن عباس رضى الله عنهما أنه ثمارى هو والحر بن قيس بن حصن الفزارى فى صاحب موسى عليه السلام الذى سأل السبيل الى لقيه، فقال ابن عباس هو خضر إذ مر بهما ابيّ بن كعب رضى الله عنه، فناداه ابن عباس فقال انى تماريت أنا وصاحبى هذا فى صاحب موسى عليه السلام الذى سأل السبيل إلى لقيه، فهل سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يذكر شأنه؟ قال نعم، سمعت رسول الله صلى الله عليه وآله وسلم يقول بينا موسى عليه السلام فى ملأ من بنى اسرائيل إذ قام اليه رجل فقال هل تعلم أحد أعلم منك؟ قال لا، قال فأوحى الله تبارك وتعالى اليه عبدنا خضر، فسأل موسى عليه السلام السبيل الى لقيته وجعل الله تبارك وتعالى له الحوت آية فقيل له اذا فقدت الحوت فارجع، وكان من شأنهما ما قص الله تبارك وتعالى في كتابه
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৬০
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ : খিযির (আ)-এর সাথে মূসা (আ) এর ঘটনা
(৬০) সাঈদ ইব্‌ন জুবাইর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ইবনে 'আব্বাসকে (রা) বললাম, নাওফ আশ্-শামী মনে করে অথবা বলে যে, খাযিরের সাথী মূসা বনী ইসরাইলের মুসা (আ) নয়। তখন ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেন, নাওফ আল্লাহর শত্রু, সে মিথ্যা বলেছে। আমাকে উবাই ইব্‌ন কা'ব (রা) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, মূসা (আ) একদিন বনী ইসরাঈলদের উদ্দেশ্যে ভাষণ প্রদান করেন। তারা তাঁকে জিজ্ঞেস করে, সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তি কে? তিনি বলেন, আমি। তখন আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর কাছে ওহী প্রেরণ করে জানিয়ে দেন আমার এক বান্দা রয়েছেন যিনি আপনার চেয়ে অধিক জ্ঞানী। তিনি বলেন, হে আমার রব, আপনি আমাকে তাঁর দর্শন লাভ করান। কথা হলো, আপনি একটি মাছ থলেতে নিয়ে (সম্মুখে) চলতে থাকুন। যেখানে আপনি মাছটি হারিয়ে ফেলবেন সেখানেই তিনি। অতঃপর একটি মাছ থলেতে ভরে তিনি এবং তাঁর সঙ্গী সমুদ্রের উপকূল ঘেঁষে চলতে থাকেন। তাঁরা একটি পাথরের কাছে পৌছান। মূসা (আ) ঘুমিয়ে পড়েন, মাছটি থলের ভিতর নড়াচড়া করতে থাকে এবং একসময় সমুদ্রে চলে যায়। আল্লাহ্ তা'আলা পানির গতিরোধ করে দেন। পানিতে নড়াচড়ার শব্দ হলো। মূসা (আ) জেগে উঠলেন এবং তাঁর (সঙ্গী) যুবককে বললেন, “আমাদের নাশতা আন। আমরা এই সফরে পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েছি।" বস্তুতঃ আল্লাহ্ তা'আলা তাদেরকে যেখানে যেতে আদেশ করেছিলেন, সেই স্থান অতিক্রম করার পরই শ্রান্তিবোধ করেন, তার আগে নয়। সঙ্গী যুবক বললেন, "আপনি কি লক্ষ্য করেছেন, আমরা যখন প্রস্তরখণ্ডে আশ্রয় নিয়েছিলাম, তখন আমি মাছের কথা ভুলে গিয়েছিলাম। শয়তানই আমাকে একথা স্মরণ রাখতে ভুলিয়ে দিয়েছিল।"...অতঃপর তাঁরা নিজেদের চিহ্ন অনুসরণ করে ফিরে চললেন। মাছটি আশ্চর্যজনকভাবে সমুদ্রে নিজের পথ করে নিয়েছে। পানির গতিধারা স্তব্ধ হয়ে যায় এবং একটা সুড়ংগের মত হয়ে যায়। অর্থাৎ মাছটির জন্য সমুদ্রে চলার পথ হয়ে যায় এবং মূসার (আ) জন্য তা হয় আশ্চর্যের চূড়ান্ত। তাঁরা পূনরায় সেই প্রস্তরখণ্ডের কাছে ফিরে আসেন। সেখানে দেখতে পেলেন কাপড়ে আবৃত এক ব্যক্তিকে। মূসা (আ) তাঁকে সালাম দিলেন। তিনি বললেন এই (জনমানবহীন) প্রান্তরে সালাম কোথা থেকে এল? তিনি বললেন, আমি মূসা। তিনি বললেন, বনী ইসরাঈলের মূসা? মূসা বললেন, হাঁ। আমি এই শর্তে আপনার অনুসরণ করতে চাই যে, "সত্যপথের যে জ্ঞান আপনাকে শেখানো হয়েছে, তা থেকে আমাকে কিছু শিক্ষা দেবেন।" তিনি খাযির বললেন, হে মূসা, আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন ইলম বা জ্ঞান লাভ করেছি, যা আপনি জানেন না। আর আপনি আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন ইলম পেয়েছেন, যা আল্লাহ্ তা'আলা আপনাকে শিখিয়েছেন। অতঃপর তারা দু'জন উপকূল ধরে চলতে থাকেন। এ সময় একটি নৌকা এল। তারা খাযিরকে চিনে ফেললো। নৌকার মালিক ভাড়া ছাড়াই উঠিয়ে নিল, এতে তিনি আশ্চর্যান্বিত হলেন না। তিনি নৌকার দিকে তাকিয়ে দেখলেন এবং কুঠারের সাহায্যে নৌকার একটি তক্তা ভেঙ্গে দিতে উদ্যত হলেন। মুসা (আ) বললেন আমাদেরকে ভাড়া ছাড়াই উঠিয়ে নেয়া হল আর আপনি নৌকাটি ফুটো করে দিতে চাচ্ছেন যাতে এর আরোহী বা মালিক ডুবে যায়! খাযির বললেন, আমি কি বলিনি যে, আপনি আমার সাথে ধৈর্য ধারণ করতে পারবেন না! তিনি বললেন, ওহ, আমি ভুলে গিয়েছি। এই সময় একটি চড়ুই পাখি এসে সমুদ্র থেকে তার চঞ্চু দিয়ে পানি পান করলো। খাযির বললেন, আমার জ্ঞান ও আপনার জ্ঞান আল্লাহর জ্ঞানসমুদ্র থেকে ততটুকুই হ্রাস করে যতটুকু এই চড়ুই এই সমুদ্র থেকে হ্রাস করেছে। তাঁরা দু'জন আবার চলতে থাকেন, এবং (একসময়) একটি গ্রামে এলে গ্রামবাসীদের কাছে খাবার চাইলেন কিন্তু তারা তাঁদেরকে আপ্যায়ন করতে অস্বীকার করলো। এই সময় খাযির এক কিশোরকে দেখতে পান এবং তার শির ধরে টান দিয়ে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। মূসা (আ) বলে উঠলেন, আপনি একটি নিষ্পাপ আত্মাকে কোন অপরাধ ছাড়াই হত্যা করে ফেললেন! আপনি নিশ্চয় একটি মন্দ কাজ করেছেন। খাযির বললেন, আমি কি বলি নাই যে, আপনি আমার সাথে ধৈর্য ধারণ করতে পারবেন না! সুফিয়ান বলেন, আমর (রা) বলেছেন, এটি ছিল প্রথমবারের চেয়ে অধিক শক্ত। তাঁরা দু'জন (আবারো) চলতে থাকলেন; সম্মুখে একটি দেওয়াল পেলেন যা ছিল পতনোন্মুখ, খাযির তা দাঁড় করিয়ে দিলেন। সুফিয়ান তাঁর দুই হাত দিয়ে (দেওয়াল উঠিয়ে দেওয়ার দৃশ্যটি) দেখালেন। এইভাবে যে, তিনি তাঁর হাত মুখ উপরে উঠিয়ে তারপর অন্য হাতের তালুর সাথে মেলালেন। তারপর উভয় হাত আস্তে আস্তে উপরে তুললেন। মূসা (আ) বললেন, আপনি চাইলে এই কাজের জন্য বিনিময় (মজুরী) নিতে পারতেন। খাযির বললেন, এখানেই (হোক) আমার ও আপনার মধ্যকার বিচ্ছেদ। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেন, মূসার (আ) প্রথম আপত্তিটি ছিল ভুলবশতঃ। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেন, আল্লাহ্ মূসাকে (আ) রহম করুন, তিনি যদি ধৈর্য ধারণ করতেন, এবং আমাদেরকে তাঁর বিষয়ে (আরো) জানাতেন, (তাহলে কতই না ভাল হতো)।
(এই হাদীসটি সহীহ। বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য।)
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
باب قصته مع الخضر عليه السلام
حدثني أبو عثمان (1) عمر بن محمد بن بكير النافد ثنا سفيان بن عيينة عن عمرو يعنى ابن دينار عن سعيد بن جبير قال قلت لابن عباس إن نوفا الشامى يزعم أو يقول ليس موسى صاحب خضر: موسى نبى اسرائيل، قال كذب نوف عدو الله، حدثنى أبيّ بن كعب رضى الله عنه عن النبى صلي الله عليه وسلم أن موسى عليه السلام قام فى بنى اسرائيل خطيبا فقالوا له من أعلم الناس؟ قال أنا، فأوحى الله تبارك وتعالى اليه إن لى عبدا أعلم منك، قال رب فأرنيه؟ قال قيل تأخذ حوتا فتجعله فى مكتل فحيثما فقدته فهو ثَمّ، قال فأخذ حوتا فجعله فى مِكتل وجعل هو وصاحبه يمشيان على الساحل حتى أتيا الصخرة رقد موسى عليه السلام وأضطرب الحوت فى المكتل فوقع فى البحر، فحبس الله جرية الماء فاضطرب الماء فاستيقظ موسى فقال (لفتاه آتنا غداءنا لقد لقينا من سفرنا هذا نصبا) ولم يصب النصب حتى جاوز الذى أمره الله تبارك وتعالى فقال (أرأيت إذ أوينا الى الصخرة فإنى نسيت الحوت وما أنسانيه الا الشيطان) (فارتدا على آثارهما قصصا) فجعلا يقصان آثارهما (واتخذ سبيله فى البحر سربا) قال أمسك عنه جرية الماء فصار عليه مثل الطاق فكان للحوت سربا وكان لموسى عليه عجبا حتى انتهيا الى الصخرة فاذا رجل مسجى عليه ثوب فسلم موسى عليه، فقال وأنى بأرضك السلام، قال أنا موسى، قال موسى بنى اسرائيل؟ قال نعم، (أتبعك على أن تعلمن مما عُلمت رشداً) قال يا موسى انى على علم من الله تبارك وتعالى لا تعلمه، وأنت على علم من الله تعالى علمكه الله، فانطلقا يمشيان على الساحل فمرت سفينة فعرفوا الخضر فحمل بغير نول فلم يعجبه، ونظر فى السفينة فأخذ القدوم يريد أن يكسر منها لوحا، فقال حملنا بغير نول وتريد أن تخرقها لتغرق أهلها (قال ألم أقل إنك لن تستطيع معى صبرا) قال انى نسيت، وجاء عصفور فنقر فى البحر قال الخضر ما ينقص علمى ولا علمك من علم الله تعالى الا كما ينقص هذا العصفور من هذا البحر (فانطلقا حتى اذا أتيا أهل قرية استطعما أهلها فأبوا أن يضيفوها) فرأى غلاما فأخذ رأسه فأنزعه (أقتلت نفسا زاكية بغير نفس لقد جئت شيئا نكرا، قال ألم أقل لك إنك لن تستطيع معى صبرا) قال سفيان قال عمرو وهذه أشد من الأولى: قال فانطلقا فاذا جدار يريد أن ينقض فأقامه، أرانا سفيان بيديه فرفع يده هكذا رفعا فوضع راحتيه فرفعهما لبطن كفيه رفقا فقال (لو شئت لاتخذت عليه أجرا، قال هذا فراق بيني وبينك) قال ابن عباس كانت الأولى نسيانا، فقال رسول الله صلي الله عليه وسلم رحم الله موسى لو كان صبر حتى يقص علينا من أمره
tahqiq

তাহকীক: