মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২৩- পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১৫ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৪৩৬৮

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৬৮। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলিয়াছেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সম্মুখ দিয়া যাইতেছিলাম। সেই সময় আমার ইযার (লুঙ্গী) ঝুলান ছিল। তখন তিনি আমাকে বলিলেনঃ হে আব্দুল্লাহ্! তোমার ইযার উঠাইয়া লও। তখনই আমি উহা উঠাইয়া লইলাম। অতঃপর বলিলেন, আরো উঠাও। সুতরাং আমি আরও উঠাইলাম। ইহার পর হইতে আমি সর্বদা উহা উপরে বাঁধিতে তৎপর থাকিতাম। কেহ কেহ জিজ্ঞাসা করিল, কতটুকু উপরে উঠাইতে হইবে। তিনি বলিলেন, দুই পায়ের অর্ধ নলা পর্যন্ত। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪৩৬৯

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৬৯। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর হইতে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি অহংকারবশত কাপড় (ইয়ার) হেঁচড়াইয়া চলে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা'আলা তাহার দিকে (দয়ার দৃষ্টিতে) তাকাইবেন না। তখন হযরত আবু বকর (রাঃ) বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমার অসাবধানতাবশত অনেক সময় আমার ইযার টানার নীচে ঝুলিয়া যায়, তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁহাকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন, যাহারা অহংকারবশত কাপড় ঝুলায় আপনি তাহাদের অন্তর্ভুক্ত নহেন। —বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪৩৭০

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৭০। হযরত ইকরামা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ)-কে এইভাবে ইযার পরিধান করিতে দেখিয়াছি যে, তিনি তাঁহার ইযারের সম্মুখের অংশ পায়ের পাতার উপর ঝুলাইয়া রাখিয়াছেন এবং পিছনের অংশ উপরে উঠাইয়া রাখিয়াছেন। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, আপনি এইভাবে ইযার পরিয়াছেন কেন? তিনি বলিলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে এইভাবে ইযার পরিধান করিতে দেখিয়াছি। –আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪৩৭১

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৭১। হযরত উবাদা ইবনে সামেত (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ তোমরা পাগড়ী বাঁধিবে। কেননা, উহা ফিরিশতাদের প্রতীক। আর উহা (অর্থাৎ, উহার শামলা) পিছনে পিঠের উপর ছাড়িয়া দাও। —বায়হাকী শোআবুল ঈমানে

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪৩৭২

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৭২। হযরত আয়েশা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা (আমার ভগ্নী) আসমা বিনতে আবু বকর (রাঃ) পালা কাপড় পরিহিত অবস্থায় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট গেলেন। হুযূর (ﷺ) অন্য দিকে মুখ ফিরাইয়া নিলেন এবং বলিলেনঃ হে আস্মা। মহিলা যখন বালেগ হয়, তখন তাহার শরীরের কোন অঙ্গ দেখা যাওয়া উচিত নহে, তবে কেবলমাত্র ইহা এবং ইহা—এই বলিয়া তিনি তাঁহার মুখ এবং তাঁহার দুই হাতলীর দিকে ইংগিত করিলেন। —আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪৩৭৩

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৭৩। আবু মতর হইতে বর্ণিত, তিনি বলিয়াছেন, একদা হযরত আলী (রাঃ) তিন দিরহামে একখানা কাপড় খরিদ করিলেন। যখন তিনি উহা পরিধান করিলেন, তখন এই দোআটি পড়িলেন, “আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী রাযাকানী মিনার রিয়াশে মা আতাজাম্মালু বিহী ফিন্নাসে ওয়া উয়ারী বিহী আওরাতী।” (অর্থঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি আমাকে পোশাক দান করিয়াছেন, আমি ইহার দ্বারা লোক সমাজে নিজের সৌন্দর্য প্রকাশ করার প্রয়াস পাইব এবং আমার সতর আবৃত করিব।) অতঃপর তিনি বলিলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে এইরূপ বলিতে শুনিয়াছি। – আহমদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪৩৭৪

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৭৪। হযরত আবু উমামা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) নূতন কাপড় পরিধান করিলেন এবং এই দো'আ পড়িলেন, “আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী কাসানী মা উয়ারী বিহী আওরাতী ওয়া আতাজাম্মালু বিহী ফী হায়াতী।” (অর্থঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি আমাকে ঐ পোশাকটি পরিধান করাইয়াছেন, যাহার দ্বারা আমি সতর আবৃত করিতে পারি এবং আমার (সামাজিক) জীবনকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করিতে পারি।) অতঃপর তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলিতে শুনিয়াছি, যে ব্যক্তি নূতন কাপড় পরিধান করিয়া উক্ত দো'আটি পাঠ করে এবং ব্যবহৃত পুরাতন কাপড়খানি সদকা করিয়া দেয়, সে জীবনে এবং মরণে (উভয় অবস্থায়) আল্লাহর পানাহতে আল্লাহর হেফাযতে এবং আল্লাহর আচ্ছাদনে অবস্থান করে। – আহমদ, তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ্ । ইমাম তিরমিযী বলিয়াছেন, উক্ত হাদীসটি গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪৩৭৫

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৭৫। হযরত আলকামা ইবনে আবু আলকামা তাহার মাতা হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলিয়াছেন, একদা হাফ্ছা বিনতে আব্দুর রহমান একখানা খুব পাতলা ওড়না পরিহিত অবস্থায় হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট গেলেন। তখন হযরত আয়েশা (রাঃ) উক্ত পাতলা ওড়নাখানা ছিঁড়িয়া ফেলিলেন এবং তাহাকে একখানা মোটা ওড়না পরাইয়া দিলেন। —মালেক

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪৩৭৬

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৭৬। হযরত আব্দুল ওয়াহেদ ইবনে আয়মান (রাঃ) তাঁহার পিতা হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলিয়াছেন, আমি এক সময় হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর কাছে গেলাম। দেখিলাম, তিনি পাঁচ দিরহাম মূল্যের মোটা সূতার একটি কামিজ পরিধান করিয়া আছেন। তিনি বলিলেন, আমার এই দাসীটাকে একটু চোখ তুলিয়া দেখ, (বাহিরের তো প্রশ্নই উঠে না) বাড়ীতেও সে ইহা ব্যবহার করিতে অস্বীকার করে। অথচ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর যুগে আমার ঐ রকমই একটি কামিজ ছিল, মদীনার কোন মেয়েকেই যখন (বিবাহ উপলক্ষে) সাজানো হইত, তখন লোক পাঠাইয়া আমার নিকট হইতে উহা আরিয়াত নিয়া যাইত। —বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪৩৭৭

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৭৭। হযরত জাবের (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলিয়াছেন, একদা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) একটি রেশমী কাবা (আলখেল্লা) পরিধান করিলেন, যাহা তাঁহাকে হাদিয়া দেওয়া হইয়াছিল। অতঃপর তিনি অতি সত্ত্বর উহাকে খুলিয়া ফেলিলেন এবং হযরত ওমর (রাঃ)-এর কাছে পাঠাইয়া দিলেন। তখন তাহাকে জিজ্ঞাসা করা হইল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি এত জলদি উহা খুলিয়া ফেলিলেন। তিনি বলিলেনঃ (এইমাত্র) হযরত জিবরাঈল (আঃ) আমাকে উহা পরিধান করিতে নিষেধ করিয়াছেন। পরে হযরত ওমর (রাঃ) কাঁদিতে কাঁদিতে আসিয়া বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি একটি জিনিস অপছন্দ করিলেন আর উহা আমাকে প্রদান করিলেন। সুতরাং আমার অবস্থা কি হইবে? তখন তিনি বলিলেন, মূলত আমি উহা তোমাকে পরিধান করার উদ্দেশ্যে দেই নাই; বরং উহা তোমাকে দিয়াছি যাহাতে তুমি উহা বিক্রয় করিয়া উপকৃত হও। হযরত ওমর (রাঃ) দুই হাজার দিরহামের বিনিময়ে উহা বিক্রয় করিলেন । —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪৩৭৮

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৭৮। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলিয়াছেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) শুধু রেশমে তৈয়ারী কাপড় পরিতে নিষেধ করিয়াছেন, তবে (চার অঙ্গুলী পরিমাণ) রেশমের ঝালর অথবা কাপড়ে তানা হিসাবে ব্যবহারে কোন দোষ নাই। –আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪৩৭৯

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৭৯। আবু রাজা (রঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলিয়াছেন, একদা হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন রেশমী বর্ডারের কাপড় পরিহিত অবস্থায় আমাদের সম্মুখে আসিলেন এবং বলিলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা যাহাকে কোন নিয়ামত দান করেন, নিশ্চয় আল্লাহ্ তা'আলা পছন্দ করেন যে, যেন তাঁহার দেওয়া সেই নিয়ামতের নিদর্শন তাঁহার বন্দাহর মধ্যে পরিলক্ষিত হয়। – আহমদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪৩৮০

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৮০। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলিয়াছেন, মনে যাহা চায় তাহা খাও এবং যাহা ইচ্ছা হয় পরিধান কর, যে পর্যন্ত না তুমি দুইটির মধ্যে পতিত হও—অপব্যয় ও অহংকার। (অর্থাৎ, খাওয়া ও পরার ব্যাপারে প্রত্যেকের পূর্ণ স্বাধীনতা রহিয়াছে। কিন্তু অপচয় কিংবা অপব্যয় আর অহংকার ও অহমিকা এই দুই জিনিস হইতে বাঁচিয়া থাকিতে হইবে।) —বুখারী, বুখারী অত্র হাদীসটি তাহার কিতাবের শিরোনামে বর্ণনা করিয়াছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪৩৮১

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৮১। হযরত আমর ইবনে শোআয়ব তাঁহার পিতা হইতে এবং তিনি তাঁহার দাদা হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ তোমরা খাও, পান কর, দান-সদকা কর এবং পরিধান কর যে পর্যন্ত না অপব্যয় ও অহংকারে পতিত হও। —আমদ, নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪৩৮২

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৮২। হযরত আবুদদারদা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেন যাহা পরিধান করিয়া তোমরা কবরে এবং মসজিদে আল্লাহর সহিত সাক্ষাৎ করিবে, তন্মধ্যে সর্বোত্তম হইল সাদা কাপড়। – ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান