মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৯- কুরআনের ফাযাঈল অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ২০ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ২১১৪

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১১৪। হযরত আবু মুসা আশআরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন সেই মু'মিনের উপমা–যে কোরআন পড়ে, যেন তুরঞ্জ ফল, যাহার গন্ধ উত্তম এবং স্বাদও উত্তম; আর সেই মুমিনের উপমা–যে কোরআন পড়ে না, যেন খেজুর, যাহার কোন গন্ধ নাই, তবে উহার স্বাদ উত্তম। আর সেই মুনাফেকের উপমা–যে কোরআন পড়ে না, যেন তিতফল, যাহার কোন গন্ধ নাই অথচ উহার স্বাদও কটু এবং সেই মুনাফেকের উপমা–যে কোরআন পড়ে, যেন সেই ফুল, যাহার গন্ধ আছে অথচ উহার স্বাদ কটু। — মোত্তাঃ অপর বর্ণনায় আছে। সেই মু'মিন—যে কোরআন পড়ে এবং উহাকে কার্যকরী করে, তুরঞ্জ ফলের ন্যায়, আর যে মু'মিন কোরআন পড়ে না, কিন্তু উহাকে কার্যকরী করে খেজুর ফলের ন্যায়।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১১৫

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১১৫। হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: এই কিতাব দ্বারা আল্লাহ্ তা'আলা উন্নত করেন কোন কোন জাতিকে। এবং অবনত করেন অপরদিগকে। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১১৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১১৬। হযরত আবু সায়ীদ খুদরী (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, সাহাবী উসাইদ ইবনে হুযাইর এক রাতে সূরা বাকারা পড়িতেছিলেন, তখন তাহার ঘোড়া বাঁধা ছিল তাহার কাছে। হঠাৎ ঘোড়া লাফাইয়া উঠিল। তিনি চুপ করিলেন, ঘোড়া শান্ত হইল। আবার তিনি পড়িতে লাগিলেন, আবার ঘোড়া লাফাইয়া উঠিল। তিনি চুপ করিলেন, ঘোড়া শান্ত হইল। পুনরায় তিনি পড়া আরম্ভ করিলেন, পুনরায় ঘোড়া লাফাইয়া উঠিল। এবার তিনি ক্ষান্ত দিলেন। কেননা, তাহার পুত্র ইয়াহ্ইয়া তাহার নিকটে শোয়ান ছিল। তিনি আশঙ্কা করিলেন পাছে তাহার কোন বিপদ হয়। যখন তিনি তাহাকে দূরে সরাইয়া আকাশের দিকে মাথা উঠাইলেন, তখন দেখিলেন— সামিয়ানার মত উহাতে বাতিসমূহের মত রহিয়াছে। যখন তিনি ভোরে উঠিলেন, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইহা জানাইলেন। শুনিয়া তিনি বলিলেন পড়িতে থাকিলে না কেন ইবনে হুযাইর! পড়িতে থাকিলে না কেন ইবনে হুযাইর ইবনে হুযাইর বলিলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আমি আশঙ্কা করিলাম পাছে ঘোড়া ইয়াহ্ইয়াকে না মাড়ায়; আর সে ছিল ঘোড়ার নিকটে,—অতএব, আমি ক্ষান্ত দিয়া তাহার নিকটে গেলাম এবং আকাশের দিকে মাথা উঠাইলাম, দেখি——সামিয়ানার মত, উহাতে বাতিসমূহের মত রহিয়াছে। অতঃপর আমি তথা হইতে বাহির হইলাম আর দেখিতে দেখিতে উহা অদৃশ্য হইয়া গেল। শুনিয়া হুযূর (ছাঃ) বলিলেন, ইহা কি ছিল জান। উসাইদ বলিলেন, জি না। হুযুর (ছাঃ) বলিলেন, ইহা ছিল ফিরিশতাদের দল, তোমার স্বর শুনিয়া ইহারা আসিয়াছিলেন। যদি তুমি পড়িতে থাকিতে তাঁহারা ভোর পর্যন্ত তথায় থাকিতেন, আর মানুষ তাহাদের দেখিতে পাইত, তাহারা মানুষ হইতে ছাপিতেন না। -বুখারী ও মুসলিম, তবে পাঠ বুখারীর। মুসলিমের বর্ণনায় রহিয়াছে, 'সামিয়ানা শূন্যে উঠিয়া গেল'—'আমি বাহির হইলাম'-এর স্থলে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১১৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১১৭। হযরত বারা (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি সূরা কাহফ পড়িতেছিল আর তাহার পার্শ্বে তাহার ঘোড়া বাধা ছিল দুইটি রশি দ্বারা। এসময় এক খণ্ড মেঘ তাহাকে ঢাকিয়া লইল এবং তাহার নিকট হইতে নিকটতর হইতে লাগিল আর তাহার ঘোড়া লাফাইতে লাগিল। সে যখন ভোরে উঠিল, তখন নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসিয়া উহার উল্লেখ করিল। তিনি বলিলেনঃ উহা ছিল রহমত—নামিয়া আসিয়াছিল কোরআনের কারণে। —মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১১৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১১৮। হযরত আবু সায়ীদ ইবনে মুআল্লা (রাঃ) বলেন, আমি মসজিদে নামায পড়িতেছিলাম, এমন সময় নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ডাকিলেন, আমি জবাব দিলাম না যাবৎ না নামায শেষ করিলাম। অতঃপর তাঁহার নিকট যাইয়া বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি নামায পড়িতেছিলাম। তিনি বলিলেন : আল্লাহ্ কি বলেন নাই যে, “আল্লাহ্ এবং রাসুলের জবাব দাও, যখন তাহারা ডাকেন।" অতঃপর হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, আমি কি তোমাকে শিখাইব না কোরআনের শ্রেষ্ঠতর সূর্য তোমার মসজিদ হইতে বাহির হইবার পূর্বেঃ অতঃপর তিনি আমার হাত ধরিলেন। তৎপর যখন আমরা বাহির হইতে ইচ্ছা করিলাম, আমি বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি না বলিয়াছিলেন, আমি তোমাকে কোরআনের শ্রেষ্ঠতর সুরা শিখাইব ? তখন তিনি বলিলেন, উহা হইল সূরা "আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন।” উহাই সেই সাতটি পুনরাবৃত্ত আয়াত এবং মহা কোরআন, যাহা আমাকে দেওয়া হইয়াছে। বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১১৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১১৯। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ তোমাদের ঘরসমূহকে গোরস্থানে পরিণত করিও না (উহাতে কোরআন পড়িও)। কেননা, শয়তান সেই ঘর হইতে পালায় যাহাতে সূরা বাকারা পড়া হয়। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১২০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১২০। হযরত আবু উমামা (রাঃ) বলেন, আমি নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলিতে শুনিয়াছি, তোমরা কোরআন পড়িবে। কেননা, উহা কেয়ামতের দিন উহার পাঠকদের জন্য সুপারিশকারীরূপে আসিবে। তোমরা দুই উজ্জ্বল সূরা বাকারা ও আলে ইমরান পড়িবে। কেননা, কেয়ামতের দিন ইহারা দুইটি মেঘখণ্ড অথবা দুইটি সামিয়ানা অথবা দুইটি পক্ষ প্রসারিত পক্ষী-ঝাকরূপে আসিবে এবং উহাদের পাঠকদের জন্য আল্লাহর নিকট অনুযোগ করিবে। বিশেষ করিয়া পড়িবে তোমরা সূরা বাকারা, কারণ, উহার অর্জন হইতেছে বরকত এবং বর্জন হইতেছে আক্ষেপ। উহা পড়িতে পারিবে না অলসরা। -মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১২১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১২১। হযরত নাওয়াস ইবনে সামআন (রাঃ) বলেন, আমি নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলিতে শুনিয়াছি, কেয়ামতের দিন উপস্থিত করা হইবে কোরআন এবং উহার পাঠকদের, যাহারা কোরআন অনুযায়ী আমল করিত। উহাদের আগে থাকিবে সূরা বাকারা ও আলে ইমরান, যেন তাহারা দুইটি মেঘখণ্ড অথবা দুইটি কাল ছায়া, যাহার মধ্যস্থলে থাকিবে দীপ্তি। অথবা দুইটি পক্ষ প্রসারিত পক্ষীর ঝাঁক, যাহারা অনুযোগ করিবে আল্লাহর নিকট তাহাদের পাঠকদের পক্ষে। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১২২

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১২২। হযরত উবাই ইবনে কা'ব (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলিলেন : আবুল মুনযের, বলিতে পার কি তোমার জানা আল্লাহর কিতাবের কোন্ আয়াতটি শ্রেষ্ঠতর ? আমি বলিলাম, আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলই ভাল জানেন। তিনি আবার বলিলেন, হে আবুল মুনযের! তুমি বলিতে পার কি তোমার জানা আল্লাহর কিতাবের কোন্ আয়াতটি শ্রেষ্ঠতর? এবার আমি বলিলাম, “আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যূম।” উবাই বলেন, এ সময় হুযূর (ছাঃ) আমার সিনায় হাত মারিয়া বলিলেন, জ্ঞান তোমাকে মোবারক হউক হে আবুল মুনযের! – মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১২৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১২৩। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, এক রাতে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ফিতরার মাল পাহারায় নিযুক্ত করিলেন। এসময় আমার নিকট এক ব্যক্তি। আসিল এবং অঞ্জলি ভরিয়া খাদ্য-শসা লইতে লাগিল। আমি তাহাকে ধরিয়া ফেলিলাম এবং বলিলাম, তোমাকে আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট লইয়া যাইব। সে বলিল, আমি একজন অভাবগ্রস্ত লোক, আমার বহু পোষ্য রহিয়াছে এবং আমার অভাবও নিদারুণ। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি তাহাকে ছাড়িয়া দিলাম। যখন ভোরে গেলাম, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলিলেনঃ আবু হুরায়রা। তোমার গত রাতের বন্দীর কি হইল? আমি বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। সে নিদারুণ অভাব ও বহু পোষ্যের অভিযোগ করিল, তাই আমি তাহার প্রতি দয়া করিলাম এবং তাহাকে ছাড়িয়া দিলাম। হুযূর (ছাঃ) বলিলেন, শুন, সে তোমার কাছে মিথ্যা বলিয়াছে এবং সে আবার আসিবে। [আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন,] আমি নিশ্চিত রকমে বুঝিলাম যে, সে আবার আসিবে, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বলার কারণে সে আবার আসিবে।" অতএব, আমি তাহার প্রতীক্ষায় রহিলাম। সে আবার আসিল এবং অঞ্জলি ভরিয়া খাদ্য-শস্য লইতে লাগিল। এসময় আমি তাহাকে ধরিয়া ফেলিলাম এবং বলিলাম, আমি তোমাকে রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট লইয়া যাইব। সে বলিল, এবারও আমাকে ছাড়, আমি বড় অভাবগ্রস্ত এবং আমার বহু পোষ্য রহিয়াছে; আমি আর আসিব না। [আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন,] এবারও আমি তাহার প্রতি দয়া করিলাম এবং তাহাকে ছাড়িয়া দিলাম। যখন আমি ভোরে উঠিলাম, রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলিলেন, আবু হুরায়রা! তোমার বন্দীর কি হইল ! আমি বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। সে নিদারুণ অভাব ও বহু পোষ্যের অভিযোগ করিল, তাই আমি তাহার প্রতি দয়া করিয়া তাহাকে ছাড়িয়া দিলাম। হুযূর (ছাঃ) বলিলেন, শুন, সে তোমার কাছে মিথ্যা বলিয়াছে, সে আবারও আসিবে। (আবু হুরায়রা বলেন, আমি বুঝিতে পারিলাম যে, সে আবার আসিবে। কারণ, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন " সে আবার আসিবে"। সুতরাং আমি তাহার প্রতীক্ষায় রহিলাম। সে আবার আসিল এবং অঞ্জলি ভরিয়া খাদ্য-শস্য লইতে লাগিল। আমি তাহাকে ধরিয়া ফেলিলাম এবং বলিলাম, আমি তোমাকে রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট লইয়া যাইব, ইহা তিনবারের শেষবার তুমি ওয়াদা করিয়াছিলে তুমি আর আসিবে না, অথচ তুমি আসিয়াছ। সে বলিল, এবারও আমাকে ছাড়, আমি তোমাকে এমন ক্যাটি বাক্য শিখাইব, যারা আল্লাহ তোমাকে উপকৃত করিবেন।
তাহা এই— যখন তুমি শয্যা গ্রহণ করিবে, 'আয়াতুল কুরসী' পড়িবে: "আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হওয়াল হাইয়্যুল কাইয়াম" আয়াতের শেষ পর্যন্ত। তাহা হইলে আল্লাহর তরফ হইতে সর্বদা তোমার জন্য একজন নেগাহবান থাকিবে এবং শয়তান তোমার নিকট আসিতে পারিবে না, যাবৎ না তুমি ভোরে উঠ। এবারও আমি তাহাকে ছাড়িয়া দিলাম। যখন ভোরে উঠিলাম, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলিলেন, তোমার বন্দীর কি হইল? আমি বলিলাম, (হুয়ূর।) সে বলিল, সে আমাকে এমন কয়টি কথা শিখাইবে, যাহার দ্বারা আল্লাহ্ আমাকে উপকৃত করিবেন। হুযূর (ছাঃ) বলিলেন, শুন, সে এবার তোমাকে সত্য বলিয়াছে, অথচ সে ডাহা মিথ্যুক। তুমি কি জান— তুমি তিন রাত্রি যাবৎ কাহার সাথে কথা বলিতেছ! আমি বলিলাম, জি না। তিনি বলিলেন, সে ছিল একটা শয়তান। —বুখারী
তাহা এই— যখন তুমি শয্যা গ্রহণ করিবে, 'আয়াতুল কুরসী' পড়িবে: "আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হওয়াল হাইয়্যুল কাইয়াম" আয়াতের শেষ পর্যন্ত। তাহা হইলে আল্লাহর তরফ হইতে সর্বদা তোমার জন্য একজন নেগাহবান থাকিবে এবং শয়তান তোমার নিকট আসিতে পারিবে না, যাবৎ না তুমি ভোরে উঠ। এবারও আমি তাহাকে ছাড়িয়া দিলাম। যখন ভোরে উঠিলাম, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলিলেন, তোমার বন্দীর কি হইল? আমি বলিলাম, (হুয়ূর।) সে বলিল, সে আমাকে এমন কয়টি কথা শিখাইবে, যাহার দ্বারা আল্লাহ্ আমাকে উপকৃত করিবেন। হুযূর (ছাঃ) বলিলেন, শুন, সে এবার তোমাকে সত্য বলিয়াছে, অথচ সে ডাহা মিথ্যুক। তুমি কি জান— তুমি তিন রাত্রি যাবৎ কাহার সাথে কথা বলিতেছ! আমি বলিলাম, জি না। তিনি বলিলেন, সে ছিল একটা শয়তান। —বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১২৪

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১২৪। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, এক সময় হযরত জিবরাঈল (আঃ) নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উপবিষ্ট ছিলেন, এমন সময় উপর দিক হইতে একটি দরজা খোলার শব্দ শুনিলেন। তিনি উপর দিকে মাথা উঠাইলেন এবং বলিলেন, আসমানের এই যে দরজাটি আজ খোলা হইল, ইহা আজিকার পূর্বে আর কখনও খোলা হয় নাই। (হুযুর বলেন) উহা হইতে একজন ফিরিশতা নামিলেন। তখন জিবরাঈল বলিলেন: এই যে ফিরিশতা যমীনে নামিলেন, ইনি আজকের এইদিন ছাড়া ইতঃপূর্বে আর কখনও যমীনে নামেন নাই। (হুয়ূর বলেন,) তিনি সালাম করিলেন, অতঃপর আমাকে বলিলেন, দুইটি নূরের (জ্যোতির সুসংবাদ গ্রহণ করুন, যাহা আপনাকে দেওয়া হইয়াছে এবং আপনার পূর্বে কোন নবীকে দেওয়া হয় নাই—সুরা ফাতেহা ও সূরা বাকারার শেষাংশ। আপনি উহাদের যেকোন বাক্যই পড়িবেন না কেন, নিশ্চয়, আপনাকে উহা দেওয়া হইবে। ——মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১২৫

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১২৫। ’আব্দুল্লাহ ইবনু মাস্’উদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রাতে সূরা আল বাকারার শেষ দু’টি আয়াত,পড়ে, সেটাই তার জন্য যথেষ্ট হবে। বুখারী, মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১২৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১২৬। হযরত আবুদ্দরদা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন যে ব্যক্তি সূরা কাহফের প্রথম দিকের দশটি আয়াত মুখস্থ করিবে, তাহাকে দাজ্জাল হইতে নিরাপদে রাখা হইবে। মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১২৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১২৭। হযরত আবুদ্দরদা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা বলিলেনঃ তোমাদের কেহ কি প্রতি রাতে এক-তৃতীয়াংশ কোরআন পড়িতে অক্ষম ? সাহাবীগণ উত্তর করিলেন, হুযূর কি করিয়া প্রতি রাতে এক-তৃতীয়াংশ কোরআন পড়িবে? তিনি বলিলেন, সূরা 'কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ' কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান। —মুসলিম।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১২৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১২৮। ইমাম বুখারী হাদীসটি আবু সা’ঈদ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১২৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১২৯। হযরত আয়েশা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, একবার নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে এক সেনাদলের সেনাপতি করিয়া পাঠাইলেন। সে তাহার সঙ্গীদের নামায পড়াইত এবং 'কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ' দ্বারা (কেরাআত) শেষ করিত। যখন তাহারা মদীনায় ফিরিলেন, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ইহার উল্লেখ করিলেন। তিনি বলিলেন তাহাকে জিজ্ঞাসা কর, সে কি কারণে এরূপ করে। তাহারা তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন। সে বলিল, কেননা, ইহাতে আল্লাহর গুণাবলী রহিয়াছে, আর আমি আল্লাহর গুণাবলী পাঠ করিতে ভালবাসি। তখন নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, তাহাকে জানাইয়া দাও যে, আল্লাহ্ তাহাকে ভালবাসেন। মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১৩০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১৩০। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, একদা এক ব্যক্তি বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি এই সূরা 'কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ কে ভালবাসি। হুযূর বলিলেন: তোমার উহাকে ভালবাসা তোমাকে বেহেশতে পৌঁছাইয়া দিবে। -তিরমিযী। আর বুখারী ইহার সমার্থ একটি হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১৩১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১৩১। হযরত ওকবা ইবনে আমের (রাঃ) বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন আশ্চর্য, আজ রাতে এমন কতক আয়াত নাযিল হইয়াছে, যাহার পূর্বে উহার অনুরূপ কোন আয়াত দেখা যায় নাই—'কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক' ও 'কুল আউযু বিরাব্বিন নাস'। মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১৩২

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১৩২। হযরত আয়েশা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন প্রত্যেক রাতে শয্যা গ্রহণ করিতেন, দুই হাতের তালু একত্র করিতেন; অতঃপর উহাতে 'কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ', 'কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক' ও 'কুল আউযু বিরাব্বিন নাস' পড়িয়া ফুঁ দিতেন। তৎপর উহাদের দ্বারা আপন শরীরের যাহা সম্ভবপর হইত মুছিয়া ফেলিতেন ।
আরম্ভ করিতেন মাথা ও চেহারা এবং শরীরের সম্মুখভাগ হইতে। এইরূপ তিনি তিনবার করিতেন। —মোত্তাঃ। আর হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ)-এর হাদীস لَمَّا أُسْرِيَ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ 'মেরাজ' অধ্যায়ে আমরা অচিরেই বর্ণনা করিব ইনশাআল্লাহ্।
আরম্ভ করিতেন মাথা ও চেহারা এবং শরীরের সম্মুখভাগ হইতে। এইরূপ তিনি তিনবার করিতেন। —মোত্তাঃ। আর হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ)-এর হাদীস لَمَّا أُسْرِيَ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ 'মেরাজ' অধ্যায়ে আমরা অচিরেই বর্ণনা করিব ইনশাআল্লাহ্।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২১৩৩

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
২১৩৩। হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আওফ (রাঃ) নবী করীম (ﷺ) হইতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলিয়াছেনঃ তিন জিনিস কেয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের নীচে থাকিবে। (১) কোরআন, উহা বান্দাদের (পক্ষে বা বিপক্ষে) আর্জি করিবে। উহার বাহির-ভিতর দুই-ই রহিয়াছে। (২) আমানত এবং (৩) আত্মীয়তা-বন্ধন। (ইহাদের প্রত্যেকে) ফরিয়াদ করিবে—ওহে! যে আমাকে রক্ষা করিয়াছে, আল্লাহ্ তাহাকে রক্ষা করুন এবং যে আমাকে ছিন্ন করিয়াছে, আল্লাহ্ তাহাকে ছিন্ন করুন। – বাগাবী — শরহুস সুন্নাহয়

তাহকীক:
তাহকীক চলমান