আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ

الترغيب والترهيب للمنذري

২৫. অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ১১১ টি

হাদীস নং: ৫৫৪০
অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: শাফা'আত ইত্যাদির বর্ণনা
৫৫৪০. হযরত হুযায়ফা ও আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ তা'আলা (কিয়ামতের দিন) মানুষকে সমবেত করবেন। তিনি বলেন, মু'মিনগণ দাঁড়াবে। তাদের জন্য জান্নাত নিকটবর্তী করে দেওয়া হবে। তারা আদম (আ)-এর কাছে যাবে এবং বলবে, হে আমদের পিতা। আমাদের জন্য জান্নাতের দরজা খোলার আবেদন করুন। তিনি বলবেন, তোমাদের পিতার (আমার) অপরাধই তোমাদেরকে জান্নাত থেকে বের করেছে। আমি এর অধিকারী নই। তোমরা আমার সন্তান ইব্রাহীম খলীলুল্লাহর কাছে যাও। তিনি বলেন, তখন ইব্রাহীম (আ) বলবেন, আমি এর অধিকারী নই। আমি তো উপরে উপরে 'খলীল' ছিলাম। তোমরা মূসা (আ)-এর কাছে যাও, যাঁর সাথে আল্লাহ তা'আলা একান্তে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, তখন তারা মুসা (আ)-এর কাছে যাবে। তিনি বলবেন, আমি এর অধিকারী নই। তোমরা ঈসা কালিমাতুল্লাহ ও রূহুল্লাহর কাছে যাও। তখন ঈসা (আ) বলবেন, আমি এর অধিকারী নই। এরপর তারা মুহাম্মদ (ﷺ)-এর কাছে যাবে। তিনি দাঁড়াবেন, তাঁকে (সুপারিশের) অনুমতি দেওয়া হবে এবং আমানত ও আত্মীয়তার বন্ধনকে পাঠানো হবে। তারা পুলসিরাতের ডানে ও বামে দুই পার্শ্বে দাঁড়াবে। তখন তোমাদের মধ্যে প্রথম ব্যক্তিটি বিদ্যুতের গতিতে পার হয়ে যাবে।
আবু হুরায়রা (রা) বলেন, আমার পিতা-মাতা আপনার প্রতি কুরবান হোক। বিদ্যুতের গতি কি? তিনি বলবেন, তোমরা বিদ্যুতের গতি দেখ না, বিদ্যুৎ চোখের পলকের মধ্যে কিভাবে যায় এবং কিভাবে ফিরে আসে? এরপর পাখির গতির মত এবং হাওদায় আরোহনের মত তাদের আমল তাদেরকে নিয়ে যাবে এবং তোমাদের নবী (ﷺ) পুলসিরাতের গোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকবেন। তিনি বলবেন, হে আমার প্রতিপালক। নিরাপদে রাখুন। নিরাপদ রাখুন।। এরপর ক্রমশ বান্দাদের আমল দুর্বল হয়ে যাবে। তখন এক ব্যক্তি আসবে। সে হামাগুড়ি দেয়া ব্যতীত চলতে পারবে না। তিনি বলেন, এবং পুলসিরাতের দু'পার্শ্বে থাকতে বহু ঝুলন্ত হুক, যার ব্যাপারে হুকুম করা হবে, তাকে ধরার ব্যাপারে তারা আদিষ্ট থাকবে। তখন আঁচড় খাওয়া ব্যক্তি মুক্তিপ্রাপ্ত হবে এবং আটক ব্যক্তি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আবূ হুরায়রার প্রাণ রয়েছে, নিশ্চয় জাহান্নামের গভীরতা সত্তর বছর দূরত্ব।
(মুসলিম (র) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب البعث
فصل فِي الشَّفَاعَة وَغَيرهَا
5540- وَعَن حُذَيْفَة وَأبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَا قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يجمع الله تبَارك وَتَعَالَى النَّاس قَالَ فَيقوم الْمُؤْمِنُونَ حَتَّى تزلف لَهُم الْجنَّة فَيَأْتُونَ آدم فَيَقُولُونَ يَا أَبَانَا استفتح لنا الْجنَّة فَيَقُول وَهل أخرجكم من الْجنَّة إِلَّا خَطِيئَة أبيكم لست بِصَاحِب ذَلِك اذْهَبُوا إِلَى ابْني إِبْرَاهِيم خَلِيل الله قَالَ فَيَقُول إِبْرَاهِيم لست بِصَاحِب ذَلِك إِنَّمَا كنت خَلِيلًا من وَرَاء وَرَاء اعمدوا إِلَى مُوسَى الَّذِي كَلمه الله تكليما قَالَ فَيَأْتُونَ مُوسَى فَيَقُول لست بِصَاحِب ذَلِك اذْهَبُوا إِلَى عِيسَى كلمة الله وروحه فَيَقُول عِيسَى لست بِصَاحِب ذَلِك فَيَأْتُونَ مُحَمَّدًا صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَيقوم فَيُؤذن لَهُ وَترسل الْأَمَانَة وَالرحم فيقومان جنبتي الصِّرَاط يَمِينا وَشمَالًا فيمر أولكم كالبرق
قَالَ قلت بِأبي وَأمي أَي شَيْء كالبرق قَالَ ألم تروا إِلَى الْبَرْق كَيفَ يمر وَيرجع فِي طرفَة عين ثمَّ كمر الطير وَشد الرّحال تجْرِي بهم أَعْمَالهم ونبيكم قَائِم على الصِّرَاط يَقُول رب سلم سلم حَتَّى تعجز أَعمال الْعباد حَتَّى يَجِيء الرجل فَلَا يَسْتَطِيع السّير إِلَّا زحفا قَالَ وَفِي حافتي الصِّرَاط كلاليب معلقَة مأمورة بِأخذ من أمرت بِهِ فمخدوش نَاجٍ ومكدوش فِي النَّار وَالَّذِي نفس أبي هُرَيْرَة بِيَدِهِ إِن قَعْر جَهَنَّم لسَبْعين خَرِيفًا

رَوَاهُ مُسلم
হাদীস নং: ৫৫৪১
অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: শাফা'আত ইত্যাদির বর্ণনা
৫৫৪১. হযরত আবু সাঈদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আমি কিয়ামতের দিন আদম সন্তানের সর্দার হব। এতে (আমার কোন) গর্ব নেই এবং আমার হাতে হামদের ঝান্ডা থাকবে। এতে (আমার কোন) গর্ব নেই। সেদিন সমস্ত আদম সন্তান আমার ঝাণ্ডার নিচে থাকবে। এবং আমিই সে ব্যক্তি (কিয়ামতের দিন) সর্বপ্রথম যার উপর থেকে ভূমি বিদীর্ণ হবে। এতে (আমার কোন) গর্ব নেই। তিনি বলেন, মানুষ তিনবার ভীত-শংকিত হবে। তারা আদম (আ)-এর কাছে যাবে।..... অতঃপর হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, তখন তারা আমার কাছে আসবে। আমি তাদের সাথে যাব। ইবন জুদ'আন বলেন, আনাস (রা) বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে দেখতে পাচ্ছি। তিনি বলেন, তারপর আমি জান্নাতের দরজার কড়া ধরব এবং তা নাড়াতে থাকব। বলা হবে, কে তুমি? (জবাবে) বলা হবে, মুহাম্মদ। তখন তারা আমার জন্য দরজা খুলবে এবং তারা খোশ-আমদেদ জানাবে তারা বলবে, মারহাবা। আমি সিজদাবনত হব। আল্লাহ তা'আলা আমাকে তা'রীফ ও প্রশংসা শিক্ষা দেবেন। আমাকে বলা হবে, আপনি আপনার মাথা উঠান। আপনি প্রার্থনা করুন, তা পূর্ণ করা হবে। আপনি সুপারিশ করুন, আপনার সুপারিশ মঞ্জুর করা হবে। আপনি বলুন, আপনার কথা শোনা হবে। এটাই সেই মাকামে মাহমূদ (প্রশংসিত স্থান), যার সম্পর্কে আল্লাহ্ তা'আলা বলেছেন عَسَى أَنْ يَبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَحْمُودًا "আশা এই যে, আপনার বর আপনাকে মাকামে মাহমূদে উন্নীত করবেন।" (১৭: ৭৯)
(তিরমিযী হাদীসটি বর্ণনা করে বলেন, হাদীসটি হাসান। ইবন মাজাহ হাদীসটির শুরুর অংশ বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি আদম সন্তানের সর্দার হব, এতে (আমার কোন) গর্ববোধ নেই, আমিই সে ব্যক্তি হব, যার উপর থেকে কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম ভূমি বিদীর্ণ হবে। এতে কোন গর্ব নেই। আমি সর্বপ্রথম সুপারিশকারী হব এবং সর্বপ্রথম আমার সুপারিশই গৃহীত হবে। এতে কোন গর্ব নেই। কিয়ামতের দিন প্রশংসার ঝান্ডা আমার হাতে থাকবে। এতে কোন গর্ব নেই। উভয়ের সনদে আলী ইব্‌ন ইয়াযীদ ইব্‌ন জুদ্'আন নামক একজন সন্দিগ্ধ রাবী রয়েছেন।)
كتاب البعث
فصل فِي الشَّفَاعَة وَغَيرهَا
5541- وَعَن أبي سعيد رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أَنا سيد ولد آدم يَوْم الْقِيَامَة وَلَا فَخر وَبِيَدِي لِوَاء الْحَمد وَلَا فَخر وَمَا من بني آدم يَوْمئِذٍ فَمن سواهُ إِلَّا تَحت لِوَائِي وَأَنا أول من تَنْشَق عَنهُ الأَرْض وَلَا فَخر قَالَ فَيفزع النَّاس ثَلَاث فَزعَات فَيَأْتُونَ آدم فَذكر الحَدِيث إِلَى أَن قَالَ فَيَأْتُوني فأنطلق مَعَهم قَالَ ابْن جدعَان قَالَ أنس فَكَأَنِّي أنظر إِلَى رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ فآخذ بِحَلقَة بَاب الْجنَّة فأقعقعها فَيُقَال من هَذَا
فَيُقَال مُحَمَّد فيفتحون لي ويرحبون فَيَقُولُونَ مرْحَبًا فَأخر سَاجِدا فيلهمني الله من الثَّنَاء وَالْحَمْد فَيُقَال لي ارْفَعْ رَأسك سل تعطه وَاشْفَعْ تشفع وَقل يسمع لِقَوْلِك وَهُوَ الْمقَام الْمَحْمُود الَّذِي قَالَ الله عَسى أَن يَبْعَثك رَبك مقَاما مَحْمُودًا الْإِسْرَاء 97

رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَقَالَ حَدِيث حسن وروى ابْن مَاجَه صَدره قَالَ أَنا سيد ولد آدم وَلَا فَخر وَأَنا أول من تَنْشَق عَنهُ الأَرْض يَوْم الْقِيَامَة وَلَا فَخر وَأَنا أول شَافِع وَأول مُشَفع وَلَا فَخر ولواء الْحَمد بيَدي يَوْم الْقِيَامَة وَلَا فَخر
وَفِي إسنادهما عَليّ بن يزِيد بن جدعَان
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৪২
অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: শাফা'আত ইত্যাদির বর্ণনা
৫৫৪২. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী (ﷺ)-এর সঙ্গে এক দা'ওয়াতে ছিলাম। তাঁকে একটি (বকরীর) বাহু পেশ করা হল। এটা তাঁর পছন্দনীয় ছিল। তিনি তা থেকে দাঁত দিয়ে গোশত ছিঁড়লেন, আর বললেন, আমি কিয়ামতের দিন মানব জাতির সর্দার থাকব। তোমরা কি জান এটা কিভাবে হবে? আল্লাহ্ তা'আলা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সমস্ত মানুষকে একটি ভূমিতে সমবেত করবেন। একজন দর্শক তাদেরকে দেখবে, একজন আহ্বানকারী তাদেরকে (ঘোষণা) শোনাবে এবং সূর্য তাদের নিকটবর্তী হবে। দুঃখ ও কষ্টে মানুষের এমন অবস্থা সৃষ্টি হবে, যা তাদের সহ্য হবে না এবং তারা বরদাশত করতে পারবে না। মানুষ বলাবলি করবে, তোমরা যে কী অবস্থার সম্মুখীন এবং কী অবস্থা যে তোমাদের হয়েছে, তা কি তোমরা লক্ষ্য করছ না? এবং কে তোমাদের জন্য তোমাদের প্রতিপালকের সমীপে সুপারিশ করবে, তা কি তোমরা চিন্তা করবে না? তখন মানুষ একে অপরকে বলবে, তোমাদের পিতা আদম (আ)। তখন তারা তাঁর কাছে যাবে এবং বলবে, হে আদম (আ) আপনি মানব জাতির পিতা, আল্লাহ্ তা'আলা আপনাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন। তিনি নিজের পক্ষ থেকে আপনার মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করেছেন, তিনি ফিরিশতাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, যার ফলে তারা আপনাকে সিজদা করেছে এবং তিনি আপনাকে জান্নাতে স্থান দিয়েছেন। আপনি কি আপনার প্রতিপালকের দরবারে আমাদের জন্য সুপারিশ করবেন না? আমরা যে কী (নিদারুণ) পরিস্থিতির সম্মুখীন এবং আমাদের যে কী অবস্থা হয়েছে, তাকি আপনি লক্ষ্য করছেন না? তিনি বলবেন, নিশ্চয় আমার প্রতিপালক আজ এমনি রুষ্ট হয়েছেন, যেমনটি ইতিপূর্বে কখনও হননি এবং যেমনটি রুষ্ট এর পরেও কখনও তিনি হবেন না। তিনি একটি নির্দিষ্ট বৃক্ষের ফল খেতে নিষেধ করেছিলেন কিন্তু, আমি তা অমান্য করেছি। এখন শুধু নাফসী। নাফসী। নাফসী। (আমার কী হবে হায়, আমার কী হবে। আমার পরবর্তী তোমরা অন্য কারো কাছে যাও।
তোমরা নূহ (আ)-এর কাছে যাও। তারা তখন হযরত নূহ (আ)-এর কাছে যাবে এবং বলবে, হে নূহ। আপনি পৃথিবী বাসীর কাছে প্রেরিত সর্বপ্রথম রাসূল। আল্লাহ্ তা'আলা আপনাকে 'কৃতজ্ঞ বান্দা" আখ্যা দিয়েছেন, আপনি কি আমরা যে নিদারুণ পরিস্থিতির সম্মুখীন, তা লক্ষ্য করছেন না? এবং আপনি কি আমাদের যে অবস্থা কী হয়েছে তা প্রত্যক্ষ করছেন না? আপনি কি আপনার প্রতিপালকের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করবেন না? তিনি বলবেন, নিশ্চয় আমার প্রশ্ন আজ এমনি রুষ্ট হয়েছেন, যেমনটি রুষ্ট ইতিপূর্বে কোনদিন তিনি হন নি এবং যেমনটি রুষ্ট এর পরও কোনদিন হবেন না। আমার একটি দু'আর অধিকার ছিল, তদ্দ্বারা আমি আমার সম্প্রদায়ের জন্য বদদু'আ করেছি। সুতরাং এখন কেবল নাফসী! নাফসী!! নাফসী!!! তোমরা বরং আমার পরিবর্তে অন্য কারে কাছে যাও। তোমরা ইবরাহীম (আ)-এর কাছে যাও।।
তারা তখন ইব্‌রাহীম (আ)-এর কাছে যাবে এবং বলবে, আপনি সমগ্র পৃথিবীবাসীর মধ্যে আল্লাহর নবী ও তাঁর অন্তরঙ্গ। আপনি আপনার প্রভুর কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আমরা যে কী নিদারুণ পরিস্থিতির সম্মুখীন, তা কি আপনি কি লক্ষ্য করলেন না? তিনি তাদেরকে বলবেন, নিশ্চয় আমার প্রভু আজ এমনি রুষ্ট হয়েছেন, যেমনটি রুষ্ট ইতিপূর্বে তিনি কোন দিন হন নি এবং এরপরও যেমনটি রুষ্ট কোন দিন হবেন না। আমি (বাহ্যিক অর্থের বিপরীত হিসেবে) তিনটি মিথ্যা কথা বলেছিলাম। এ বলে তিনি কথাগুলো উল্লেখ করবেন। সুতরাং আজ কেবল নাফসী! নাফসী!! নাফসী!!! তোমরা বরং আমার পরিবর্তে অন্য কারো কাছে যাও। তোমরা মূসা (আ)-এর কাছে যাও!!!
তারা তখন মূসা (আ)-এর কাছে যাবে এবং বলবে, হে মূসা! আপনি আল্লাহর রাসূল। আপনাকে আল্লাহ্ তা'আলা নিজ রিসালাত ও কালাম দিয়ে সমগ্র মানব জাতির উপর মর্যাদা মণ্ডিত করেছেন। আপনি আপনার প্রভুর কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আমরা যে কী নিদারুণ পরিস্থিতির সম্মুখীন, তা কি আপনি দেখছেন না। তিনি বলবেন, নিশ্চয় আমার প্রভু আজ এমন রুষ্ট হয়েছেন, যেমনটি রুষ্ট ইতিপূর্বে তিনি কখনও হন নি এবং এরপরও যেমনটি রুষ্ট কখনও হবেন না। আমি এমন একটি লোককে হত্যা করেছিলাম, যাকে হত্যা করতে আমাকে হুকুম দেওয়া হয়নি। সুতরাং আজ কেবল নাফসী! নাফসী!! নাফসী!!! তোমরা বরং আমার পরিবর্তে অন্য কারো- কাছে যাও। তোমরা ঈসা (আ)-এর কাছে যাও।
তারা ঈসা (আ)-এর কাছে যাবে এবং বলবে, হে ঈসা (আ)। আপনি আল্লাহর রাসূল ও তাঁর কালেমা বা পূতবাণী যা তিনি মারইয়াম (আ)-এর কাছে আমানত রেখেছেন এবং তাঁর পক্ষ থেকে প্রদত্ত অহী। আপনি দোলনায় থাকা অবস্থায় মানুষের সাথে কথা বলেছেন। আপনি আপনার প্রভুর কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আমরা কী নিদারুণ পরিস্থিতির সম্মুখীন তা কি আপনি দেখছেন না? ঈসা (আ) বলবেন, প্রভু আজ এমনি রুষ্ট, যেমনটি রুষ্ট ইতিপূর্বে তিনি কখনো হন নি এবং এরপরও এমন রুষ্ট কখনো হবেন না। কিন্তু তিনি কোন অপরাধের উল্লেখ করবেন না। সুতরাং আজ কেবল নাফসী! মাফসী!! নাফসী !!! তোমরা বরং আমার পরিবর্তে অন্য কারো কাছে যাও। তোমরা মুহাম্মদ-এর কাছে যাও। তখন তারা আমার কাছে আসবে এবং বলবে, হে মুহাম্মদ। আপনি আল্লাহর রাসূল ও সর্বশেষ নবী। আল্লাহ্ তা'আলা আপনার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সমস্ত ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করে দিয়েছেন। আপনি আপনার প্রভুর কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আমরা যে কী নিদারুণ পরিস্থিতির সম্মুখীন, তা কি আপনি লক্ষ করছেন না? তখন আমি চলতে চলতে আরশের নিচে গিয়ে পৌঁছাব এবং আমার প্রভুর সম্মুখে সিজদাবনত হব। এরপর আল্লাহ্ তা'আলা আমাকে তাঁর এমন প্রশংসা ও হামদ শিখাবেন, যা আমার পূর্বে কাউকেই তিনি শিখান নি। তারপর বলা হবে, হে মুহাম্মদ! আপনি আপনার মাথা তুলুন। আপনি প্রার্থনা করুন। তা পূর্ণ করা হবে। আপনি সুপারিশ করুন। আপনার সুপারিশ মঞ্জুর করা হবে। তখন আমি আমার মাথা তুলব এবং বলব, হে আমার রব। আমার উম্মত! হে আমার রব আমার উম্মত!! হে আমার রব। আমার উম্মত!!! উত্তরে বলা হবে, হে মুহাম্মদ। আপনার উম্মতের মধ্যে যাদের হিসাব-নিকাশ নেই, তাদেরকে জান্নাতের দরজাসমূহের মধ্যে ডান দিকের দরজা দিয়ে দাখিল করুন। তারা এ দরজা ব্যতীত অন্যান্য দরজাসমূহে মানুষের সাথে শরীক থাকবে। অতঃপর বললেন, সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, নিশ্চয় জান্নাতের দরজার পার্টসমূহের মধ্যে দুই পাটের মধ্যবর্তী স্থান হবে মক্কা ও হাজারের মধ্যবর্তী স্থানের সমান। অথবা মক্কা ও বুসরার মধ্যবর্তী স্থানের সমান।
(বুখারী ও মুসলিম (র) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب البعث
فصل فِي الشَّفَاعَة وَغَيرهَا
5542- وَعَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِي فِي دَعْوَة فَرفع إِلَيْهِ الذِّرَاع وَكَانَت تعجبه فنهس مِنْهَا نهسة وَقَالَ أَنا سيد النَّاس يَوْم الْقِيَامَة
هَل تَدْرُونَ مِم ذَاك يجمع لله الْأَوَّلين والآخرين فِي صَعِيد وَاحِد فَيبْصرُهُمْ النَّاظر وَيسْمعهُمْ الدَّاعِي وتدنو مِنْهُم الشَّمْس فَيبلغ النَّاس من الْغم وَالْكرب مَا لَا يُطِيقُونَ وَلَا يحْتَملُونَ فَيَقُول النَّاس أَلا ترَوْنَ إِلَى مَا أَنْتُم فِيهِ وَإِلَى مَا بَلغَكُمْ أَلا تنْظرُون من يشفع لكم إِلَى ربكُم فَيَقُول بعض النَّاس لبَعض أبوكم آدم فيأتونه فَيَقُولُونَ يَا آدم أَنْت أَبُو الْبشر خلقك الله بِيَدِهِ وَنفخ فِيك من روحه وَأمر الْمَلَائِكَة فسجدوا لَك وأسكنك الْجنَّة أَلا تشفع لنا إِلَى رَبك أَلا ترى مَا نَحن فِيهِ وَمَا بلغنَا فَقَالَ إِن رَبِّي غضب الْيَوْم غَضبا لم يغْضب قبله مثله وَلَا يغْضب بعده مثله وَإنَّهُ نهاني عَن الشَّجَرَة فعصيت نَفسِي نَفسِي نَفسِي ذَهَبُوا إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوا إِلَى نوح فَيَأْتُونَ نوحًا فَيَقُولُونَ يَا نوح أَنْت أول الرُّسُل إِلَى أهل الأَرْض وَقد سماك لله عبدا شكُورًا أَلا ترى إِلَى مَا نَحن فِيهِ أَلا ترى إِلَى مَا بلغنَا أَلا تشفع لنا إِلَى رَبك فَيَقُول إِن رَبِّي غضب الْيَوْم غَضبا لم يغْضب قبله مثله وَلنْ يغْضب بعده مثله وَإنَّهُ قد كَانَ لي دَعْوَة دَعَوْت بهَا على قومِي نَفسِي نَفسِي نَفسِي ذَهَبُوا إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوا إِلَى إِبْرَاهِيم فَيَأْتُونَ إِبْرَاهِيم فَيَقُولُونَ أَنْت نَبِي الله وخليله من أهل الأَرْض شفع لنا إِلَى رَبك أَلا ترى إِلَى مَا نَحن فِيهِ فَيَقُول لَهُم إِن رَبِّي قد غضب الْيَوْم غَضبا لم يغْضب قبله مثله وَلنْ يغْضب بعده مثله وَإِنِّي كنت كذبت ثَلَاث كذبات فَذكرهَا نَفسِي نَفسِي نَفسِي ذَهَبُوا إِلَى غَيْرِي ذَهَبُوا إِلَى مُوسَى فَيَأْتُونَ مُوسَى فَيَقُولُونَ يَا مُوسَى أَنْت رَسُول الله فضلك الله بِرِسَالَاتِهِ
وبكلامه على النَّاس شفع لنا إِلَى رَبك أما ترى إِلَى مَا نَحن فِيهِ فَيَقُول إِن رَبِّي قد غضب الْيَوْم غَضبا لم يغْضب قبله مثله وَلنْ يغْضب بعده مثله وَإِنِّي قد قتلت نفسا لم أومر بقتلها نَفسِي نَفسِي نَفسِي ذَهَبُوا إِلَى غَيْرِي ذَهَبُوا إِلَى عِيسَى فَيَأْتُونَ عِيسَى فَيَقُولُونَ يَا عِيسَى أَنْت رَسُول الله وكلمته أَلْقَاهَا إِلَى مَرْيَم وروح مِنْهُ وَكلمت النَّاس فِي المهد شفع لنا إِلَى رَبك أَلا ترى إِلَى مَا نَحن فِيهِ فَيَقُول عِيسَى إِن رَبِّي قد غضب الْيَوْم غَضبا لم يغْضب قبله مثله وَلنْ يغْضب بعده مثله وَلم يذكر ذَنبا نَفسِي نَفسِي نَفسِي اذْهَبُوا إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوا إِلَى مُحَمَّد فَيَأْتُوني فَيَقُولُونَ يَا مُحَمَّد أَنْت رَسُول الله وَخَاتم الْأَنْبِيَاء وَقد غفر الله لَك مَا تقدم من ذَنْبك وَمَا تَأَخّر اشفع لنا إِلَى رَبك أَلا ترى إِلَى مَا نَحن فِيهِ فأنطلق فَآتي تَحت الْعَرْش فأقع سَاجِدا لرَبي ثمَّ يفتح الله عَليّ من محامده وَحسن الثَّنَاء عَلَيْهِ شَيْئا لم يَفْتَحهُ على أحد قبلي ثمَّ يُقَال يَا مُحَمَّد رفع رَأسك سل تعطه وَاشْفَعْ تشفع فأرفع رَأْسِي فَأَقُول أمتِي يَا رب أمتِي يَا رب أمتِي يَا رب فَيُقَال يَا مُحَمَّد أَدخل من أمتك من لَا حِسَاب عَلَيْهِم من الْبَاب الْأَيْمن من أَبْوَاب الْجنَّة وهم شُرَكَاء النَّاس فِيمَا سوى ذَلِك من الْأَبْوَاب ثمَّ قَالَ وَالَّذِي نَفسِي بِيَدِهِ إِن مَا بَين المصراعين من مصاريع الْجنَّة كَمَا بَين مَكَّة وهجر أَو كَمَا بَين مَكَّة وَبصرى

رَوَاهُ البُخَارِيّ وَمُسلم
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৪৩
অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: শাফা'আত ইত্যাদির বর্ণনা
৫৫৪৩. হযরত হুযায়ফা (রা)-এর সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবরাহীম (আ) কিয়ামতের দিন বলবেন, হে আমার প্রতিপালক। আল্লাহ তা'আলা বলবেন, হে ইবরাহীম! আমি হাযির। ইব্‌রাহীম (আ) বলবেন, প্রভু। আপনি আমার সন্তানদেরকে পুড়িয়ে ফেলছেন। তিনি বলবেন, যাদের অন্তরে একটি কথা অথবা একটি যব পরিমাণ ঈমান রয়েছে তাদেরকে তোমরা জাহান্নাম থেকে বের করে লও।
(ইব্ন হিব্বান তাঁর 'সহীহ'-এ কিতাবে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসের সনদের ব্যাপারে কোন আপত্তি আমার জানা নেই। তাবারানী ইয়াযীদ রাক্কাশীর সূত্রে আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ্ তা'আলা কিয়ামতের দিন আদম (আ)-এর সন্তানদের থেকে এগার কোটি (দশ কোটি + এক কোটি) লোকের ব্যাপারে আদম (আ)-এর সুপারিশ গ্রহণ করবেন।)
كتاب البعث
فصل فِي الشَّفَاعَة وَغَيرهَا
5543- وَعَن حُذَيْفَة رَضِي الله عَنهُ عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ يَقُول إِبْرَاهِيم يَوْم الْقِيَامَة يَا رباه فَيَقُول الرب جلّ وَعلا يَا لبيكاه فَيَقُول إِبْرَاهِيم يَا رب حرقت بني فَيَقُول أخرجُوا من النَّار من كَانَ فِي قلبه ذرة أَو شعيرَة من إِيمَان

رَوَاهُ ابْن حبَان فِي صَحِيحه وَلَا أعلم فِي إِسْنَاده مطعنا
وروى الطَّبَرَانِيّ عَن زيد الرقاشِي عَن أنس بن مَالك قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يشفع الله تبَارك وَتَعَالَى آدم يَوْم الْقِيَامَة من ذُريَّته فِي مائَة ألف ألف وَعشرَة آلَاف ألف
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৪৪
অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: শাফা'আত ইত্যাদির বর্ণনা
৫৫৪৪. হযরত আব্দুল্লাহ্ ইব্‌ন শাকীক (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এমন কিছু লোকের সাথে বসলাম, যাদের মধ্যে চতুর্থ ব্যক্তি হলাম আমি। তাদের মধ্য থেকে একজন বলল, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, আমার উম্মতের মধ্য থেকে এক ব্যক্তির সুপারিশে বণু তামীম গোত্রের চেয়ে অধিক লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। সে লোকটি কি আপনি ব্যতীত অন্য কেউ? তিনি বললেন, আমি ব্যতীত।
আমি তখন জিজ্ঞেস করলাম, এ হাদীসটি কি আপনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ।
যখন লোকটি দাঁড়াল, আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ লোকটি কে? উপস্থিত লোকজন বলল, ইবন জাদু'আ। অথবা বলেছেন, ইবন আবুল জাদু'আ।
(ইবন হিব্বান তাঁর 'সহীহ' কিতাবে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইবন মাজাহও হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি বলেন, শাকীকের সূত্রে আব্দুল্লাহ ইবন আবুল জাদু'আ (রা) থেকে বর্ণিত।)
كتاب البعث
فصل فِي الشَّفَاعَة وَغَيرهَا
5544- وَعَن عبد الله بن شَقِيق قَالَ جَلَست إِلَى قوم أَنا رابعهم فَقَالَ أحدهم سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول ليدخلن الْجنَّة بشفاعة رجل من أمتِي أَكثر من بني تَمِيم
قُلْنَا سواك يَا رَسُول الله قَالَ سواي
قلت أَنْت سَمِعت هَذَا من رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ
نعم فَلَمَّا قَامَ قلت من هَذَا قَالُوا ابْن الجدعاء أَو ابْن أبي الجدعاء

رَوَاهُ ابْن حبَان فِي صَحِيحه وَابْن مَاجَه إِلَّا أَنه قَالَ عَن شَقِيق عَن عبد الله بن أبي الجدعاء
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৪৫
অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: শাফা'আত ইত্যাদির বর্ণনা
৫৫৪৫. হযরত আবু উমামা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, নবী (ﷺ) নন, এমন এক ব্যক্তির সুপারিশে রাবী'আ ও মুযার দুই গোত্রের সমান লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে। এক ব্যক্তি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। রাবী'আ কি মুযার গোত্রের শাখা নয়? তিনি বললেন, আমি যা বলছি, তাই বলব।
(আহমাদ উৎকৃষ্ট সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب البعث
فصل فِي الشَّفَاعَة وَغَيرهَا
5545- وَعَن أبي أُمَامَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول ليدخلن الْجنَّة بشفاعة رجل لَيْسَ بِنَبِي مثل الْحَيَّيْنِ ربيعَة وَمُضر فَقَالَ رجل يَا رَسُول الله أَو مَا ربيعَة من مُضر قَالَ إِنَّمَا أَقُول مَا أَقُول

رَوَاهُ أَحْمد بِإِسْنَاد جيد
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৪৬
অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: শাফা'আত ইত্যাদির বর্ণনা
৫৫৪৬. হযরত আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, নিশ্চয় একজন
লোক দু'জন অথবা তিনজনের জন্য সুপারিশ করবে।
(বাযযার হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসের বর্ণনাকারীগণ সহীহ হাদীসের রাবী।)
كتاب البعث
فصل فِي الشَّفَاعَة وَغَيرهَا
5546- وَعَن أنس بن مَالك رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِن الرجل ليشفع للرجلين وَالثَّلَاثَة

رَوَاهُ الْبَزَّار وَرُوَاته رُوَاة الصَّحِيح
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৪৭
অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: শাফা'আত ইত্যাদির বর্ণনা
৫৫৪৭. হযরত ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, নবীগণের জন্য নূরের মিম্বর স্থাপন করা হবে। তাঁরা তাঁর উপর বসবেন। আমার মিম্বর বাকি থাকবে, আমি তাতে বসব না। অথবা বলেছেন, আমি তার উপর বসব না, আমি আমার রবের সামনে এ ভয়ে দাঁড়িয়ে থাকব যে, আমাকে জান্নাতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে এবং আমার (চলে যাওয়ার) পর আমার উম্মত বুঝি রয়ে যাবে? তাই আমি বলব, প্রভু আমার উম্মত! আমার উম্মাত!! আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন হে মুহাম্মদ। আপনার উম্মতের ব্যাপারে আমাকে কি করতে বলেন? আমি বলব, পরোয়ারদিগার। তাদের হিসাব-নিকাশ দ্রুত সম্পন্ন করুন। তখন তাদেরকে ডাকা হবে এবং তাদের হিসাব নেওয়া হবে। তন্মধ্যে কেউ আল্লাহর রহমতে জান্নাতে প্রবেশ করবে, কেউ আমার শাফা'আতে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এরপর আমি সুপারিশ করতে থাকব, যে পর্যন্ত না যাদেরকে জাহান্নামে প্রেরণ করা হয়েছে তাদের তালিকা আমাকে দেওয়া হয়। অবশেষে জাহান্নামের হিসাব রক্ষক "মালিক" বলবেন, হে মুহাম্মদ! আপনি তো আপনার প্রতিপালকের ক্রোধের জন্য আপনার উম্মতের মধ্যে কোন আযাব বাকি রাখেন নি।
(তাবারানী 'আল-কাবীর' ও 'আল-আওসাতে' এবং বায়হাকী 'আল বা'ছ'-এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। উভয়ের সনদে 'মাতরূক' কোন রাবী নেই।)
كتاب البعث
فصل فِي الشَّفَاعَة وَغَيرهَا
5547- وَرُوِيَ عَن ابْن عَبَّاس رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يوضع للأنبياء مَنَابِر من نور يَجْلِسُونَ عَلَيْهَا وَيبقى منبري لَا أَجْلِس عَلَيْهِ أَو قَالَ لَا أقعد عَلَيْهِ قَائِما بَين يَدي رَبِّي مَخَافَة أَن يبْعَث بِي إِلَى الْجنَّة وَتبقى أمتِي بعدِي فَأَقُول يَا رب أمتِي أمتِي فَيَقُول الله عز وَجل يَا مُحَمَّد مَا تُرِيدُ أَن أصنع بأمتك فَأَقُول يَا رب عجل حسابهم فيدعى بهم فيحاسبون فَمنهمْ من يدْخل الْجنَّة برحمته وَمِنْهُم من يدْخل الْجنَّة بشفاعتي فَمَا أَزَال أشفع حَتَّى أعْطى صكاكا بِرِجَال قد بعث بهم إِلَى النَّار حَتَّى إِن مَالِكًا خَازِن النَّار ليقول يَا مُحَمَّد مَا تركت لغضب رَبك فِي أمتك من نقمة

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْكَبِير والأوسط وَالْبَيْهَقِيّ فِي الْبَعْث وَلَيْسَ فِي إسنادهما من ترك
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৪৮
অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: শাফা'আত ইত্যাদির বর্ণনা
৫৫৪৮. হযরত আলী ইবন আবু তালিব (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আমি আমার উম্মতের জন্য সুপারিশ করব, যে পর্যন্ত না আমার মহিমান্বিত প্রতিপালক আমাকে ডেকে বলেন, হে মুহাম্মদ! আপনি কি সন্তুষ্ট হয়েছেন? আমি বলব, জ্বী হ্যাঁ, হে আমার রব। আমি সন্তুষ্ট হয়েছি।
(বাযযার ও তাবারানী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এর সনদ ইনশাআল্লাহ্ হাসান।)
كتاب البعث
فصل فِي الشَّفَاعَة وَغَيرهَا
5548- وَعَن عَليّ بن أبي طَالب رَضِي الله عَنهُ أَن رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ أشفع لأمتي حَتَّى يناديني رَبِّي تبَارك وَتَعَالَى فَيَقُول أقد رضيت يَا مُحَمَّد فَأَقُول إِي رب قد رضيت

رَوَاهُ الْبَزَّار وَالطَّبَرَانِيّ وَإِسْنَاده حسن إِن شَاءَ الله
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৪৯
অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: শাফা'আত ইত্যাদির বর্ণনা
৫৫৪৯. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আমার শাফা'আত হবে আমার উম্মাতের কবীরা গুণাহগারদের জন্য
(আবু দাউদ, বাযযার তাবারানী, ইবন হিব্বান তাঁর 'সতীত্ব'-এ- এবং বায়হাকী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। হিব্বান এবং বায়হাকী জাবির (রা)-এর রিওয়ায়েতে ও হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب البعث
فصل فِي الشَّفَاعَة وَغَيرهَا
5549- وَعَن أنس رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم شَفَاعَتِي لأهل الْكَبَائِر من أمتِي

رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالْبَزَّار وَالطَّبَرَانِيّ وَابْن حبَان فِي صَحِيحه وَالْبَيْهَقِيّ وَرَوَاهُ ابْن حبَان أَيْضا وَالْبَيْهَقِيّ من حَدِيث جَابر
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৫০
অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ: শাফা'আত ইত্যাদির বর্ণনা
৫৫৫০. হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবন উমর (রা) এর সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, শাফা'আত অথবা আমার অর্ধেক উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করা এ দু'টি বিষয়ের মাঝে আমাকে ইখতিয়ার দেওয়া হয়েছে। আমি শাফা'আতকে গ্রহণ করেছি। কেননা, এটা ব্যাপক ও যথেষ্ট। তবে এ শাফা'আত প্রথম যুগের মু'মিনদের জন্য নয়; বরং এটা গুনাহগার, অপরাধি পাপী লোকদের জন্য।
(আহমাদ ও তাবারানী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। হাদীসটির উল্লিখিত পাঠ তাবারানী বর্ণিত। এর সনদ উৎকৃষ্ট। ইবন মাজাহ আবু মূসা আশ'আরী (রা)-এর রিওয়ায়েতে এরূপ সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
[হাফিয (র) বলেন], "জিহাদ" অধ্যায়ে শহীদদের শাফা'আত সম্পর্কিত বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে। শাফা'আত সম্পর্কে বহু হাদীস রয়েছে। তবে আমি যা উল্লেখ করেছি, তাতে সবগুলো উল্লেখ না করলেও যথেষ্ট হবে। আল্লাহই তাওফীকদাতা।)
كتاب البعث
فصل فِي الشَّفَاعَة وَغَيرهَا
5550- وَعَن عبد الله بن عمر رَضِي الله عَنْهُمَا عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ خيرت بَين الشَّفَاعَة أَو يدْخل نصف أمتِي الْجنَّة فاخترت الشَّفَاعَة لِأَنَّهَا أَعم وأكفى أما إِنَّهَا لَيست للْمُؤْمِنين الْمُتَقَدِّمين وَلكنهَا للمذنبين الْخَطَّائِينَ المتلوثين

رَوَاهُ أَحْمد وَالطَّبَرَانِيّ وَاللَّفْظ لَهُ وَإِسْنَاده جيد وَرَوَاهُ ابْن مَاجَه من حَدِيث أبي مُوسَى الْأَشْعَرِيّ بِنَحْوِهِ
قَالَ الْحَافِظ وَتقدم فِي الْجِهَاد أَحَادِيث فِي شَفَاعَة الشُّهَدَاء وَأَحَادِيث الشَّفَاعَة كَثِيرَة وَفِيمَا ذَكرْنَاهُ غنية عَن سائرها وَالله الْمُوفق
tahqiq

তাহকীক: