আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ

الترغيب والترهيب للمنذري

২২. অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ৭৫৪ টি

হাদীস নং: ৪১৭২
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ মানুষের সাথে মেলামেশায় নিরাপত্তাহীনতার আশংকা থাকলে নির্জনতা অবলম্বনের প্রতি অনুপ্রেরণা
৪১৭২. হযরত মাকহুল (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে? তিনি বলেন: প্রশ্নকারী অপেক্ষা প্রশ্নকৃত ব্যক্তি অধিক জ্ঞাত নয়। তবে তার কতগুলো লক্ষণ রয়েছে। তা হল: তাকারুবু আসওয়াক। সাহাবায়ে কিরাম বলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! 'তাকারুবু আস্ওয়াক' কি? তিনি বলেন: বাজার পড়ে যাওয়া, ফলন না হওয়া, বৃষ্টি হওয়া সত্ত্বেও ফসল না হওয়া, গীবত ছড়িয়ে পড়া, জারজ সন্তানের আধিক্য হওয়া, সম্পদশালীকে সম্মান প্রদর্শন করা, মসজিদে পাপাচারীদের উচ্চকণ্ঠ হওয়া, অসত্যবাদীদের বিজয় লাভ করা। তখন এক ব্যক্তি বলল। ঐ সময়ে আপনি আমাকে কি কাজ করার নির্দেশ দেন? তিনি বলেনঃ তুমি সমাজ থেকে দ্বীন নিয়ে পালিয়ে যাবে এবং তুমি তোমার ঘরে চাদর মুড়ি দিয়ে থাকবে।
(ইবনে আবুদ দুনিয়া এরূপ মুরসাল সূত্রে বর্ণনা করেন।)
كتاب الأدب
التَّرْغِيب فِي الْعُزْلَة لمن لَا يَأْمَن على نَفسه عِنْد الِاخْتِلَاط
4172- وَعَن مَكْحُول رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رجل مَتى قيام السَّاعَة يَا رَسُول الله قَالَ مَا المسؤول عَنْهَا بِأَعْلَم من السَّائِل وَلَكِن لَهَا أَشْرَاط وتقارب أسواق
قَالُوا يَا رَسُول الله وَمَا تقَارب أسواقها قَالَ كسادها ومطر وَلَا نَبَات وَأَن تَفْشُو الْغَيْبَة وتكثر أَوْلَاد البغية وَأَن يعظم رب المَال وَأَن تعلو أصوات الفسقة فِي الْمَسَاجِد وَأَن يظْهر أهل الْمُنكر على أهل الْحق قَالَ رجل فَمَا تَأْمُرنِي قَالَ فر بِدينِك وَكن حلسا من أحلاس بَيْتك

رَوَاهُ ابْن أبي الدُّنْيَا هَكَذَا مُرْسلا
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪১৭৩
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ মানুষের সাথে মেলামেশায় নিরাপত্তাহীনতার আশংকা থাকলে নির্জনতা অবলম্বনের প্রতি অনুপ্রেরণা
৪১৭৩. হযরত আবু মুসা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন: ঘোর অন্ধকার রাতের একাংশের ন্যায় ফিনা সংঘটিত হবে। তাতে কোন ব্যক্তি সকালে মু'মিন এবং বিকেলে কাফির এবং বিকেলে মু'মিন আর সকালে কাফির হবে। তাতে উপবিষ্ট ব্যক্তি দত্তয়মান ব্যক্তি হতে উত্তম হবে। আর পদচারী ব্যক্তি দ্রুতগামী ব্যক্তি অপেক্ষা উত্তম হবে। সাহাবায়ে কিরাম বলেনঃ আপনি ঐ সময়ে আমাদের কী কাজের নির্দেশ দেন? তিনি বলেন, তোমরা বস্ত্রাচ্ছাদিত অবস্থায় নিজ ঘরে অবস্থান করবে।
(আবু দাউদ (র) বর্ণিত। উপরোক্ত অর্থবোধক বহু হাদীস সহীহ্ গ্রন্থে ও অন্যান্য হাদীস গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। الحلس ঐ চাদর, যা উটের পালানের নিচে স্থাপন করা হয়। হাদীসের মর্ম হল: ফিতনার সময় তোমরা নিজ ঘরকে অবলম্বন করবে, যেরূপ বাহনের পিঠে বসার গদিতে চাদর মোড়ানো থাকে।)
كتاب الأدب
التَّرْغِيب فِي الْعُزْلَة لمن لَا يَأْمَن على نَفسه عِنْد الِاخْتِلَاط
4173- وَعَن أبي مُوسَى رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِن بَين أَيْدِيكُم فتنا كَقطع اللَّيْل المظلم يصبح الرجل فِيهَا مُؤمنا ويمسي كَافِرًا ويمسي مُؤمنا وَيُصْبِح كَافِرًا الْقَاعِد فِيهَا خير من الْقَائِم والقائم فِيهَا خير من الْمَاشِي والماشي فِيهَا خير من السَّاعِي
قَالُوا فَمَا تَأْمُرنَا قَالَ كونُوا أحلاس بُيُوتكُمْ

رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَفِي هَذَا الْمَعْنى أَحَادِيث كَثِيرَة فِي الصِّحَاح وَغَيرهَا
الحلس هُوَ الكساء الَّذِي يَلِي ظهر الْبَعِير تَحت القتب يَعْنِي الزموا بُيُوتكُمْ فِي الْفِتَن كلزوم الحلس لظهر الدَّابَّة
হাদীস নং: ৪১৭৪
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ মানুষের সাথে মেলামেশায় নিরাপত্তাহীনতার আশংকা থাকলে নির্জনতা অবলম্বনের প্রতি অনুপ্রেরণা
৪১৭৪. হযরত মিকদাদ ইবনে আসওয়াদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি। ঐ ব্যক্তি ভাগ্যবান, যাকে ফিতনা থেকে দূরে রাখা হয়েছে, ঐ ব্যক্তি ভাগ্যবান, যাকে ফিতনা থেকে দূরে রাখা হয়েছে, ঐ ব্যক্তি ভাগ্যবান, যাকে ফিতনা থেকে দূরে রাখা হয়েছে এবং ঐ ব্যক্তিও ভাগ্যবান, যে বিপদে ধৈর্যধারণ করে, আর তা কতই চমৎকার।
(আবু দাউদ বর্ণিত।
واها পরিতাপ অর্থে ব্যবহৃত হয়, আবার কখনো কখনো পসন্দনীয় অর্থেও ব্যবহৃত হয়।)
كتاب الأدب
التَّرْغِيب فِي الْعُزْلَة لمن لَا يَأْمَن على نَفسه عِنْد الِاخْتِلَاط
4174- وَعَن الْمِقْدَاد بن الْأسود قَالَ ايم الله لقد سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول إِن السعيد لمن جنب الْفِتَن إِن السعيد لمن جنب الْفِتَن إِن السعيد لمن جنب الْفِتَن وَلمن ابْتُلِيَ فَصَبر فواها

رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
واها كلمة مَعْنَاهَا التلهف وَقد تُوضَع للإعجاب بالشَّيْء
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪১৭৫
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ মানুষের সাথে মেলামেশায় নিরাপত্তাহীনতার আশংকা থাকলে নির্জনতা অবলম্বনের প্রতি অনুপ্রেরণা
৪১৭৫. হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে ঘিরে বসে ছিলাম, আর তখন তিনি ফিতনা সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন, তিনি বলেনঃ তোমরা যখন মানুষকে তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করতে দেখবে, আমানতদারী লংঘিত হতে দেখবে। আর তাদের অবস্থা এরূপ হবে- একথা বলে তিনি তার এক হাতের আংগুল অপর হাতের মধ্যে প্রবিষ্ট করে দেখান। সে বলল: আমি দাঁড়িয়ে গেলাম এবং বললাম। আপনার জন্য আমার জীবন আল্লাহ উৎসর্গীত করুন, ঐ সময় আমি কী করব? তিনি বলেন: তুমি তোমার বাসস্থানকে আবশ্যক করে নেবে, তুমি নিজের মুক্তির জন্য কাঁদবে, তুমি তোমার রসনা নিজের জন্য সংযত করা অপরিহার্য করে নেবে, ভাল কাজ গ্রহণ করবে এবং অন্য সাধারণের ব্যাপার ছেড়ে দেবে।
(আবু দাউদ ও নাসাঈ হাসান সনদে বর্ণনা করেন।
مرجت বিশৃংখলা, বাহ্যিক অর্থ হচ্ছে, আমানত উঠে যাওয়া অর্থাৎ আমানতে ঘাটতি দেখা দেয়া, যেমন আরবীবিদদের কথায় خف القوم অর্থাৎ তারা সংখ্যায় কম। আল্লাহ সর্বজ্ঞ।)
كتاب الأدب
التَّرْغِيب فِي الْعُزْلَة لمن لَا يَأْمَن على نَفسه عِنْد الِاخْتِلَاط
4175- وَعَن ابْن عَبَّاس رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَ بَيْنَمَا نَحن حول رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِذْ ذكر الْفِتْنَة فَقَالَ إِذا رَأَيْتُمْ النَّاس قد مرجت عهودهم وَخفت أماناتهم وَكَانُوا هَكَذَا وَشَبك بَين أَصَابِعه قَالَ فَقُمْت إِلَيْهِ فَقلت كَيفَ أفعل عِنْد ذَلِك جعلني الله تبَارك وَتَعَالَى فدَاك قَالَ الزم بَيْتك وابك على نَفسك واملك عَلَيْك لسَانك وَخذ مَا تعرف ودع مَا تنكر وَعَلَيْك بِأَمْر خَاصَّة نَفسك ودع عَنْك أَمر الْعَامَّة

رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ بِإِسْنَاد حسن
مرجت أَي فَسدتْ وَالظَّاهِر أَن معنى قَوْله خفت أماناتهم أَي قلت من قَوْلهم خف الْقَوْم أَي قلوا وَالله أعلم
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪১৭৬
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ মানুষের সাথে মেলামেশায় নিরাপত্তাহীনতার আশংকা থাকলে নির্জনতা অবলম্বনের প্রতি অনুপ্রেরণা
৪১৭৬. হযরত ইবনে উমার (রা) থেকে বর্ণিত। একদা উমার (রা) মসজিদের দিকে বেরিয়ে যান। এ সময় তিনি মু'আয (রা)-কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর রওযার কাছে ক্রন্দনরত দেখতে পান। তিনি তাঁর কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করেন। উত্তরে তিনি বলেন: একটি হাদীস স্মরণ করে আমি কাঁদছি, যা আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে শুনেছি: তিনি বলেছেন: প্রদর্শনেচ্ছা (রিয়া)ও ক্ষুদ্র শিরকের অন্তর্ভুক্ত। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর ওলীর সাথে বৈরিতা পোষণ করে, সে যেন স্বয়ং আল্লাহর সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করল। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ভালবাসেন ঐ সকল নেক্কার, আল্লাহ্ ভীরু, এবং গোপনে সৎকর্ম সম্পাদনকারীদেরকে, যারা অনুপস্থিত থাকলেও কেউ খোঁজ করে না, উপস্থিত থাকলেও পরিচয় নেয় না, তাদের অন্তর হিদায়েতের জ্যোতিতে জ্যোতির্ময় এবং তারা ফিতনা ও নাফরমানী থেকে দূরে থাকে।
(ইবনে মাজা, হাকিম ও বায়হাকী যুহদ অধ্যায়ে বর্ণনা করেন। ইমাম হাকিম (র) বলেন: হাদীসটির সনদ বিশুদ্ধ ও ত্রুটিমুক্ত।)
كتاب الأدب
التَّرْغِيب فِي الْعُزْلَة لمن لَا يَأْمَن على نَفسه عِنْد الِاخْتِلَاط
4176- وَعَن ابْن عمر رَضِي الله عَنْهُمَا أَن عمر خرج إِلَى الْمَسْجِد فَوجدَ معَاذًا عِنْد قبر رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يبكي فَقَالَ مَا يبكيك قَالَ حَدِيث سمعته من رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ الْيَسِير من الرِّيَاء شرك وَمن عادى أَوْلِيَاء الله فقد بارز بالمحاربة
إِن الله يحب الْأَبْرَار الأتقياء الأخفياء الَّذين إِن غَابُوا لم يفتقدوا وَإِن حَضَرُوا لم يعرفوا قُلُوبهم مصابيح الْهدى يخرجُون من كل غبراء مظْلمَة

رَوَاهُ ابْن مَاجَه وَالْحَاكِم وَالْبَيْهَقِيّ فِي الزّهْد وَقَالَ الْحَاكِم صَحِيح وَلَا عِلّة لَهُ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪১৭৭
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ মানুষের সাথে মেলামেশায় নিরাপত্তাহীনতার আশংকা থাকলে নির্জনতা অবলম্বনের প্রতি অনুপ্রেরণা
৪১৭৭. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন: এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে এবং এক গর্ত থেকে অন্য গর্তে পালানো ব্যতীত কোন মানুষ তার দীনকে নিরাপদ রাখতে পারবে না। যখন অবস্থা এরূপ হবে, তখন আল্লাহর নাফরমানী ব্যতীত জীবন ধারণ সম্ভব হবে না। আর অবস্থা যখন এরূপই হবে, তখন লোক তার স্ত্রীর অথবা তার সন্তানের হাতে ধ্বংস হবে। আর যদি তার স্ত্রী অথবা সন্তান না থাকে, তবে সে তার পিতামাতার হাতে ধ্বংস হবে। যদি তার পিতামাতা না থাকে, তবে তার ধ্বংস নিকটাত্মীয় ও প্রতিবেশীর হাতে হবে। সাহাবায়ে কিরাম বলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! তা কিরূপে হবে। তিনি বলেন: দরিদ্র হওয়ায় তারা তাকে তিরস্কার করবে। ফলে, সে ঐ সময় নিজকে ধ্বংসের মুখে পতিত করবে এবং এতে তার ধ্বংস হবে।
(বায়হাকী (র) কিতাবুয যুহদে অত্র হাদীসখানা বর্ণনা করেন।)
كتاب الأدب
التَّرْغِيب فِي الْعُزْلَة لمن لَا يَأْمَن على نَفسه عِنْد الِاخْتِلَاط
4177- وَرُوِيَ عَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَأْتِي على النَّاس زمَان لَا يسلم لذِي دين دينه إِلَّا من هرب بِدِينِهِ من شَاهِق إِلَى شَاهِق وَمن جُحر إِلَى جُحر فَإِن كَانَ ذَلِك كَذَلِك لم تنَلْ الْمَعيشَة إِلَّا بسخط الله فَإِذا كَانَ ذَلِك كَذَلِك كَانَ هَلَاك الرجل على يَدي زَوجته وَولده فَإِن لم يكن لَهُ زَوْجَة وَلَا ولد كَانَ هَلَاكه على يَدي أَبَوَيْهِ فَإِن لم يكن لَهُ أَبَوَانِ كَانَ هَلَاكه على يَدي قرَابَته أَو الْجِيرَان
قَالُوا كَيفَ ذَلِك يَا رَسُول الله قَالَ يُعَيِّرُونَهُ بِضيق الْمَعيشَة فَعِنْدَ ذَلِك يُورد نَفسه الْمَوَارِد الَّتِي يهْلك فِيهَا نَفسه

رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ فِي كتاب الزّهْد
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪১৭৮
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ মানুষের সাথে মেলামেশায় নিরাপত্তাহীনতার আশংকা থাকলে নির্জনতা অবলম্বনের প্রতি অনুপ্রেরণা
৪১৭৮. হযরত ইমরান ইবনে হুসায়ন (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন: যে ব্যক্তি দুনিয়ার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে, যাবতীয় বিপদাপদে আল্লাহর সাহায্য তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যায় এবং তিনি তাকে এমনভাবে রিযক দেন যে, সে ধারণাও করতে পারে না। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে দুনিয়ার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে, আল্লাহ্ তাকে দুনিয়ার সাথে জড়িয়ে দেন।
(তাবারানী, আবু শায়খ, ইবনে হিব্বান তার সাওয়াব গ্রন্থে বর্ণনা করেন। তাবারানীর সনদ তার (ইবনে হিব্বান) সনদের কাছাকাছি। উপরোক্ত মর্মে نظائر في الإقتصاد والحرص অনুচ্ছেদে আমি অনুরূপ অনেক হাদীস বর্ণনা করেছি। ইনশাআল্লাহ্ যুহদ অধ্যায়ে এ সম্পর্কীত হাদীস আসবে।)
كتاب الأدب
التَّرْغِيب فِي الْعُزْلَة لمن لَا يَأْمَن على نَفسه عِنْد الِاخْتِلَاط
4178- وَعَن عمرَان بن حُصَيْن رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم من انْقَطع إِلَى الله كَفاهُ الله كل مُؤنَة ورزقه من حَيْثُ لَا يحْتَسب وَمن انْقَطع إِلَى الدُّنْيَا وَكله الله إِلَيْهَا

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ وَأَبُو الشَّيْخ وَابْن حبَان فِي الثَّوَاب وَإسْنَاد الطَّبَرَانِيّ مقارب وأملينا لهَذَا الحَدِيث نَظَائِر فِي الاقتصاد والحرص وَيَأْتِي لَهُ نَظَائِر فِي الزّهْد إِن شَاءَ الله تَعَالَى
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪১৭৯
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ ক্রোধের প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং তা দূর করা ও সংবরণ করার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং ক্রোধের সময় করণীয়
৪১৭৯. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। একদা এক ব্যক্তি নবী (ﷺ)-কে বলল: আমাকে উপদেশ দিন। তিনি বলেনঃ তুমি রাগ করবে না। লোকটি একথাটি কয়েকবার জিজ্ঞাসা করলে, তিনি বলেনঃ তুমি রাগ করবে না।
(বুখারী বর্ণিত।)
كتاب الأدب
التَّرْهِيب من الْغَضَب وَالتَّرْغِيب فِي دَفعه وكظمه وَمَا يفعل عِنْد الْغَضَب
4179- عَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ أَن رجلا قَالَ للنَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أوصني قَالَ لَا تغْضب فردد مرَارًا قَالَ لَا تغْضب

رَوَاهُ البُخَارِيّ
হাদীস নং: ৪১৮০
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ ক্রোধের প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং তা দূর করা ও সংবরণ করার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং ক্রোধের সময় করণীয়
৪১৮০. হুমায়দ ইবনে আবদুর রহমান (র) থেকে, তিনি নবী (ﷺ)-এর এক সাহাবী থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলল: ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমাকে উপদেশ দিন। তিনি বলেন, তুমি রাগ করবে না। সে
বলল: আমি তাঁর উপদেশাবলী নিয়ে চিন্তা করলাম। আমি দেখতে পেলাম যে, ক্রোধেই যাবতীয় অনিষ্টের মূল।
(আহমাদ বর্ণিত। তাঁর বর্ণনকারীদের বর্ণনা দলীলরূপে গ্রহণ করা বিশুদ্ধ।)
كتاب الأدب
التَّرْهِيب من الْغَضَب وَالتَّرْغِيب فِي دَفعه وكظمه وَمَا يفعل عِنْد الْغَضَب
4180- وَعَن حميد بن عبد الرَّحْمَن عَن رجل من أَصْحَاب النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ قَالَ رجل يَا رَسُول الله أوصني
قَالَ لَا تغْضب
قَالَ ففكرت حِين قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مَا قَالَ فَإِذا الْغَضَب يجمع الشَّرّ كُله

رَوَاهُ أَحْمد وَرُوَاته مُحْتَج بهم فِي الصَّحِيح
হাদীস নং: ৪১৮১
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ ক্রোধের প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং তা দূর করা ও সংবরণ করার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং ক্রোধের সময় করণীয়
৪১৮১. হযরত ইবনে উমার (রা) থেকে বর্ণিত। একদা তিনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে জিজ্ঞাসা করেন। কোন বস্তু আমাকে আল্লাহর ক্রোধ থেকে দূরে রাখবে? তিনি বলেনঃ তুমি রাগ করবে না।
(আহমাদ ও ইবনে হিব্বানের সহীহ গ্রন্থে বর্ণিত। তবে ইবনে হিব্বানের সহীহ গ্রন্থে: ما يباعدوني শব্দের স্থলে مایمنعنی রয়েছে।)
كتاب الأدب
التَّرْهِيب من الْغَضَب وَالتَّرْغِيب فِي دَفعه وكظمه وَمَا يفعل عِنْد الْغَضَب
4181- وَعَن ابْن عمر رَضِي الله عَنْهُمَا أَنه سَأَلَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مَا يباعدني من غضب الله عز وَجل قَالَ لَا تغْضب

رَوَاهُ أَحْمد وَابْن حبَان فِي صَحِيحه إِلَّا أَنه قَالَ مَا يَمْنعنِي
হাদীস নং: ৪১৮২
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ ক্রোধের প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং তা দূর করা ও সংবরণ করার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং ক্রোধের সময় করণীয়
৪১৮২. হযরত জারীয়া ইবনে কুদামা (রা) থেকে বর্ণিত। একদা এক ব্যক্তি বলল: ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে অল্প কথায় এমন একটি উপদেশ দিন, যা আমি সংরক্ষণ করতে পারি। তিনি বলেন: তুমি রাগ করবে না। সে কথাটি বেশ কয়েকবার বলল। আর তিনি প্রত্যেকবারই বললেন: তুমি রাগ করবে না।
(আহমাদ নিজ শব্দে বর্ণনা করেন। তাঁর বর্ণনাকারীদের বর্ণনা বিশুদ্ধ, ইবনে হিব্বানের সহীহ গ্রন্থ, তাবারানীর কাবীর ও আওসাত গ্রন্থ বর্ণিত। তবে তাঁর বর্ণনার সূত্র এরূপঃ আহনাফ ইবনে কায়স হতে, তিনি তাঁর চাচা জারীয়া ইবনে কুদামা (রা) হতে বর্ণিত। সে বলল: ইয়া রাসূলাল্লাহ্! "আপনি আমাকে এমন একটি কথা বলুন, যদ্দ্বারা আল্লাহ্ আমাকে উপকৃত করবেন।" উপরোক্ত হাদীসটি আবু ই'আলা বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন: জারীয়া ইবনে কুদামা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার পিতার চাচা বলেছেন: তিনি নবী (ﷺ)-কে বলেছেন। এরপর তিনি উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তাঁর বর্ণনাকারীদের বর্ণনা বিশুদ্ধ।)
كتاب الأدب
التَّرْهِيب من الْغَضَب وَالتَّرْغِيب فِي دَفعه وكظمه وَمَا يفعل عِنْد الْغَضَب
4182- وَعَن جَارِيَة بن قدامَة أَن رجلا قَالَ يَا رَسُول الله قل لي قولا وأقلل لعَلي أعيه قَالَ لَا تغْضب
فَأَعَادَ عَلَيْهِ مرَارًا كل ذَلِك يَقُول لَا تغْضب

رَوَاهُ أَحْمد وَاللَّفْظ لَهُ وَرُوَاته رُوَاة الصَّحِيح وَابْن حبَان فِي صَحِيحه وَرَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْكَبِير والأوسط إِلَّا أَنه قَالَ عَن الْأَحْنَف بن قيس عَن عَمه وَعَمه جَارِيَة بن قدامَة أَنه قَالَ يَا رَسُول الله قل لي قولا يَنْفَعنِي الله بِهِ فَذكره
وَأَبُو يعلى إِلَّا أَنه قَالَ عَن جَارِيَة بن قدامَة أَخْبرنِي عَم أبي أَنه قَالَ للنَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَذكر نَحوه وَرُوَاته أَيْضا رُوَاة الصَّحِيح
হাদীস নং: ৪১৮৩
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ ক্রোধের প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং তা দূর করা ও সংবরণ করার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং ক্রোধের সময় করণীয়
৪১৮৩. হযরত আবু দারদা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলল: এমন কাজ বাতলে দিন, যা আমাকে জান্নাতবাসী করবে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন: তুমি রাগ করবে না, আর তাহলে তুমি জান্নাতী হবে।
(তাবারানী দু'টি সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেন, তবে তাঁর একটি সনদ বিশুদ্ধ।)
كتاب الأدب
التَّرْهِيب من الْغَضَب وَالتَّرْغِيب فِي دَفعه وكظمه وَمَا يفعل عِنْد الْغَضَب
4183- وَعَن أبي الدَّرْدَاء رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رجل لرَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم دلَّنِي على عمل يدخلني الْجنَّة قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم لَا تغْضب وَلَك الْجنَّة

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ بِإِسْنَادَيْنِ أَحدهمَا صَحِيح
হাদীস নং: ৪১৮৪
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ ক্রোধের প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং তা দূর করা ও সংবরণ করার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং ক্রোধের সময় করণীয়
৪১৮৪. হযরত ইবনে মুসায়্যিব (রা) থেকে বর্ণিত। একদিন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁর সাহাবীদের নিয়ে বসাছিলেন। হঠাৎ এক ব্যক্তি হযরত আবু বকর (রা)-কে (গালমন্দ করে) কষ্ট দিল। হযরত আবু বকর (রা) নীরব থাকলেন। এরপর সে দ্বিতীয়বারের মত তাঁকে কষ্ট দিল। হযরত আবু বকর (রা) এবারও নীরব থাকলেন। পরে সে তাঁকে তৃতীয়বারের মত কষ্ট দিল। তখন হযরত আবু বকর (রা) তার (জবাব দিয়ে) প্রতিশোধ নেন। এ সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) চলে যান। হযরত আবু বকর (রা) বলেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি কি আমার প্রতি অসন্তুষ্ট হলেন? বাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন: সে যা বলছিল, একজন ফিরিশতা আসমান থেকে অবতীর্ণ হয়ে তা মিথ্যা প্রতিপন্ন করছিল। আর যখন তুমি প্রতিশোধ নিলে, তখন ফিরিশতা চলে গেল এবং শয়তান সেখানে বসে গেল। সুতরাং আমি শয়তানের সাথে বসার নই।
(আবু দাউদ (র) মুরসাল সনদে আর মুত্তাসিল সুত্রে মুহাম্মাদ ইবনে গায়লান হতে, তিনি সাঈদ ইবনে আবু সাঈদ মাকবুরী হতে, তিনি হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেন। বুখারী, (র) তাঁর তারীখ গ্রন্থে মুরসাল সূত্রকে বিশুদ্ধ বলেছেন।)
كتاب الأدب
التَّرْهِيب من الْغَضَب وَالتَّرْغِيب فِي دَفعه وكظمه وَمَا يفعل عِنْد الْغَضَب
4184- وَعَن ابْن الْمسيب رَضِي الله عَنهُ قَالَ بَيْنَمَا رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم جَالس وَمَعَهُ أَصْحَابه وَقع رجل بِأبي بكر رَضِي الله عَنهُ فآتاه فَصمت عَنهُ أَبُو بكر ثمَّ آذاه الثَّانِيَة فَصمت عَنهُ أَبُو بكر ثمَّ آذاه الثَّالِثَة فانتصر أَبُو بكر فَقَامَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ أَبُو بكر رَضِي الله عَنهُ أوجدت عَليّ يَا رَسُول الله فَقَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم نزل ملك من السَّمَاء يكذبهُ بِمَا قَالَ لَك فَلَمَّا انتصرت ذهب الْملك وَقعد الشَّيْطَان فَلم أكن لأجلس إِذن مَعَ الشَّيْطَان

رَوَاهُ أَبُو دَاوُد هَكَذَا مُرْسلا ومتصلا من طَرِيق مُحَمَّد بن غيلَان عَن سعيد بن أبي سعيد المَقْبُري عَن أبي هُرَيْرَة بِنَحْوِهِ وَذكر البُخَارِيّ فِي تَارِيخه أَن الْمُرْسل أصح
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪১৮৫
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ ক্রোধের প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং তা দূর করা ও সংবরণ করার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং ক্রোধের সময় করণীয়
৪১৮৫. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। নবী (ﷺ) বলেছেন: কাউকে যমীনে ধরাশায়ী করা বীরত্ব নয়, বরং যে ব্যক্তি ক্রোধের সময় তা সংবরণ করতে পারে, সেই প্রকৃত বীর।
(বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্যগণ বর্ণিত।)
كتاب الأدب
التَّرْهِيب من الْغَضَب وَالتَّرْغِيب فِي دَفعه وكظمه وَمَا يفعل عِنْد الْغَضَب
4185- وَعَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ أَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ لَيْسَ الشَّديد بالصرعة إِنَّمَا الشَّديد الَّذِي يملك نَفسه عِنْد الْغَضَب

رَوَاهُ البُخَارِيّ وَمُسلم وَغَيرهمَا
হাদীস নং: ৪১৮৬
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ ক্রোধের প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং তা দূর করা ও সংবরণ করার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং ক্রোধের সময় করণীয়
৪১৮৬. ইবনে হিব্বান (র) তাঁর সহীহ গ্রন্থে সংক্ষেপে বর্ণনা করেছেন যে, "যে ব্যক্তি মানুষকে পরাভূত করে, সে প্রকৃত বীর নয়। পক্ষান্তরে, যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির উপর বিজয়ী হয়, সেই প্রকৃতপক্ষে বীর।"
كتاب الأدب
التَّرْهِيب من الْغَضَب وَالتَّرْغِيب فِي دَفعه وكظمه وَمَا يفعل عِنْد الْغَضَب
4186- وَرَوَاهُ ابْن حبَان فِي صَحِيحه مُخْتَصرا لَيْسَ الشَّديد من غلب النَّاس إِنَّمَا الشَّديد من غلب نَفسه
হাদীস নং: ৪১৮৭
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ ক্রোধের প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং তা দূর করা ও সংবরণ করার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং ক্রোধের সময় করণীয়
৪১৮৭. ইমাম আহমাদ (র) একটি দীর্ঘ সূত্রে এই হাদীসটি এমন একজন অজ্ঞাতনামা সাহাবী থেকে বর্ণনা করেন, যিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর ভাষণ দানের সময় উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, এরপর নবী (ﷺ) বলেছেন। বীরত্ব কি? সে বলল, সাহাবায়ে কিরাম বলেন: প্রকৃতপক্ষে বীরত্ব। প্রকৃতপক্ষে বীরত্ব। প্রকৃতপক্ষে বীরত্ব ঐ ব্যক্তির জন্য, যে ব্যক্তি ক্রোধান্বিত হয়, এরপর সে চরম পর্যায়ে পৌঁছে, এমনকি তার চেহরা রক্তিমবর্ণ হয়ে যায়, শরীরের পশম ক্রোধে দাঁড়িয়ে যায়, এমতাবস্থায় সে তার ক্রোধ সংবরণ করে।
(হাফিয মুনযিরী (র) বলেন: الصرعة যে ব্যক্তি নিজ ক্ষমতায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাউকে পরাভূত করে। الصرعة অর্থ হল : ঐ ব্যক্তি যাকে পরাভূত করলে অন্যের সাহায্য ব্যতীত দাঁড়াতে পারে না। কোন ব্যক্তি থেকে যদি অধিকাংশ ক্ষেত্রে এরূপ হয়, তবে فعلة ওযনে ব্যবহৃত হবে। যেমন এ সব শব্দের সাদৃশ্যপূর্ণ শব্দমালা হল: حفظة، خدعة ، ضحكة তবে .ع. বর্ণের উপর সাকিন হলে বিপরীত অর্থে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ তাকে পরাভূত করা হয়।
كتاب الأدب
التَّرْهِيب من الْغَضَب وَالتَّرْغِيب فِي دَفعه وكظمه وَمَا يفعل عِنْد الْغَضَب
4187- وَرَوَاهُ أَحْمد فِي حَدِيث طَوِيل عَن رجل شهد رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يخْطب وَلم يسمه وَقَالَ فِيهِ ثمَّ قَالَ النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مَا الصرعة قَالَ قَالُوا الصريع
قَالَ فَقَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم الصرعة كل الصرعة الصرعة كل الصرعة الصرعة كل الصرعة الرجل الَّذِي يغْضب فيشتد غَضَبه ويحمر وَجهه ويقشعر جلده فيصرع غَضَبه
قَالَ الْحَافِظ الصرعة بِضَم الصَّاد وَفتح الرَّاء هُوَ الَّذِي يصرع النَّاس كثيرا بقوته وَأما الصرعة بِسُكُون الرَّاء فَهُوَ الضَّعِيف الَّذِي يصرعه النَّاس حَتَّى لَا يكَاد يثبت مَعَ أحد وكل من يكثر عَنهُ الشَّيْء يُقَال فِيهِ فعلة بِضَم الْفَاء وَفتح الْعين مثل حفظَة وخدعة وضحكة وَمَا أشبه ذَلِك فَإِذا سكنت ثَانِيه فعلى الْعَكْس أَي الَّذِي يفعل بِهِ ذَلِك كثيرا
হাদীস নং: ৪১৮৮
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ ক্রোধের প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং তা দূর করা ও সংবরণ করার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং ক্রোধের সময় করণীয়
৪১৮৮. হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাদের আসরের সালাতের ইমামতি করেন। সালাত শেষে তিনি ভাষণ দানের উদ্দেশ্যে দাঁড়ান। কিয়ামত পর্যন্ত যা হওয়ার তা তাঁর ভাষণে আমাদের জানাতে একটি অংশও ছাড়লেন না। আমাদের মধ্যে যে মুখস্ত রাখার সে মুখস্ত রেখেছে এবং যে ভুলে যাওয়ার সে ভুলে গেছে। তিনি তাঁর ভাষণের এক পর্যায়ে বলেনঃ সাবধান! নিশ্চয়ই দুনিয়া সবুজ শ্যামল সুমিষ্ট। বহু জাতিকে ধ্বংস করার পর আল্লাহ্ তোমাদের দুনিয়ায় খিলাফত দান করেছেন। এরপর তিনি দেখছেন, তোমরা কি করছ। সাবধান! তোমরা দুনিয়া থেকে সতর্ক থেকো এবং তোমরা নারী জাতির ব্যাপারে সাবধান থাক। অত্র হাদীসের এক অংশে তিনি বলেন: সাবধান! তুমি যা সত্য বলে জান, তা যেন মানুষের ভয়ে বলতে তুমি বিরত না হও। সে বলল: তখন হযরত আবু সাঈদ (রা) কেঁদে উঠেন। তিনি বলেন: আমাদের জীবনে এমন ঘটনা ঘটেছে যে, আমরা জানা সত্ত্বেও সত্য কথা বলতে ভয় করেছি। বর্ণনাকারী বলেন, হাদীসের বর্ণনায় তিনি আরো বলেনঃ সাবধান! কিয়ামতের দিন প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতকের জন্য বিশ্বাসঘাতকতা পরিমাণে তার পতাকা উড্ডীয়মান থাকবে। জনগণের শাসক যদি বিশ্বাসঘাতকতা করে, তবে কিয়ামতের দিন সে হবে সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতক এবং তার নিতম্বের উপর বিশ্বাসঘাতকতার পতাকা স্থাপন করা হবে। বর্ণিত হাদীসের কিয়দংশ সে দিন যা আমরা মুখস্থ করেছি, তার অংশ হচ্ছে এই: জেনে রাখ, বনী আদমকে কয়েক ভাগে বিভক্ত করে সৃষ্টি করা হয়েছে। সাবধান! তাদের মধ্যে একশ্রেণীর লোক রয়েছে, যাদের ক্রোধ ধীরে ধীরে আসে, তাড়াতাড়ি চলে যায়। আর এক শ্রেণী লোকের ক্রোধ তাড়াতাড়ি আসে, আবার তাড়াতাড়ি চলে যায়। এদের মধ্যে সর্বপেক্ষা নিকৃষ্টদল হল তারা যাদের ক্রোধ তাড়াতাড়ি আসে, আর ধীরে ধীরে যায়। সাবধান! ক্রোধ হচ্ছে বনী আদমের অন্তরে একটি জ্বলন্ত অঙ্গার। তোমরা কি লক্ষ্য কর না যে, ক্রোধের সময় ক্রোধান্বিত ব্যক্তির দুই চোখ রক্তিমবর্ণ ধারণ করে এবং তার কণ্ঠনালীর শিরাগুলো স্ফীত হয়ে উঠে। কাজেই, তোমাদের কারো এমন অবস্থা হলে সে যেন মাটিতে বসে পড়ে।
(তিরমিযী বর্ণিত। তিনি বলেন: হাদীসটি হাসান।)
كتاب الأدب
التَّرْهِيب من الْغَضَب وَالتَّرْغِيب فِي دَفعه وكظمه وَمَا يفعل عِنْد الْغَضَب
4188- وَعَن أبي سعيد الْخُدْرِيّ رَضِي الله عَنهُ قَالَ صلى بِنَا رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَوْمًا صَلَاة الْعَصْر ثمَّ قَامَ خَطِيبًا فَلم يدع شَيْئا يكون إِلَى قيام السَّاعَة إِلَّا أخبرنَا بِهِ حفظه من حفظه ونسيه من نَسيَه وَكَانَ فِيمَا قَالَ إِن الدُّنْيَا خضرَة حلوة وَإِن الله مستخلفكم فِيهَا فناظر كَيفَ تَعْمَلُونَ أَلا فَاتَّقُوا الدُّنْيَا وَاتَّقوا النِّسَاء وَكَانَ فِيمَا قَالَ أَلا لَا يمنعن رجلا هَيْبَة النَّاس أَن يَقُول بِحَق إِذا علمه
قَالَ فَبكى أَبُو سعيد وَقَالَ وَقد وَالله رَأينَا أَشْيَاء فهبنا وَكَانَ فِيمَا قَالَ أَلا إِنَّه ينصب لكل غادر لِوَاء يَوْم الْقِيَامَة بِقدر غدرته وَلَا غدرة أعظم من غدرة إِمَام عَامَّة يركز لِوَاءُهُ عِنْد استه
وَكَانَ فِيمَا حفظناه يَوْمئِذٍ أَلا إِن بني آدم خلقُوا على طَبَقَات أَلا وَإِن مِنْهُم البطيء الْغَضَب السَّرِيع الْفَيْء
وَمِنْهُم سريع الْغَضَب سريع الْفَيْء فَتلك بِتِلْكَ
أَلا وَإِن مِنْهُم سريع الْغَضَب بطيء الْفَيْء
أَلا وَخَيرهمْ بطيء الْغَضَب سريع الْفَيْء وشرهم سريع الْغَضَب بطيء الْفَيْء أَلا وَإِن الْغَضَب جَمْرَة فِي قلب ابْن آدم أما رَأَيْتُمْ إِلَى حمرَة عَيْنَيْهِ وانتفاخ أوداجه فَمن أحس بِشَيْء من ذَلِك فليلصق بِالْأَرْضِ

رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَقَالَ حَدِيث حسن
হাদীস নং: ৪১৮৯
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ ক্রোধের প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং তা দূর করা ও সংবরণ করার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং ক্রোধের সময় করণীয়
৪১৮৯. হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে মহান আল্লাহর বাণী : ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ (মন্দ প্রতিহত কর উৎকৃষ্ট দারা) এ মর্মে বর্ণিত। তিনি বলেন, ক্রোধের সময় ধৈর্যধারণ করা এবং কারো দুর্ব্যবহার ক্ষমা করা, এ কাজ যারা করবে, আল্লাহ্ তাদের নিরাপদ রাখবেন এবং তাদের দুশমনকে (তাদের জন্য) পরাভূত করে দেবেন। উক্ত হাদীসটি (ইমাম বুখারী (র) তা'লীক হিসেবে বর্ণনা করেন।)
كتاب الأدب
التَّرْهِيب من الْغَضَب وَالتَّرْغِيب فِي دَفعه وكظمه وَمَا يفعل عِنْد الْغَضَب
4189- وَعَن ابْن عَبَّاس رَضِي الله عَنْهُمَا فِي قَوْله تَعَالَى ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أحسن الْمُؤْمِنُونَ 69
قَالَ الصَّبْر عِنْد الْغَضَب وَالْعَفو عِنْد الْإِسَاءَة فَإِذا فعلوا عصمهم الله وخضع لَهُم عدوهم

ذكره البُخَارِيّ تَعْلِيقا
হাদীস নং: ৪১৯০
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ ক্রোধের প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং তা দূর করা ও সংবরণ করার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং ক্রোধের সময় করণীয়
৪১৯০. হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন: যার মধ্যে তিনটি স্বভাব থাকবে, আল্লাহ্ তাকে নিজ রহমতের আঁচলে অশ্রয় দেবেন, নিজ রহমত দ্বারা তার ত্রুটিগুলো ঢেকে দেবেন এবং তাকে তাঁর প্রিয়জনের অন্তর্ভুক্ত করে নেবেন। তাহল : ১. তাকে দান করা হলে, সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, ২. প্রতিশোধ নেয়ার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে শত্রুকে ক্ষমা করে এবং ৩. সে ক্রোধান্বিত হলে ক্রোধ সংবরণ করে।
(হাকিম (র) উমার ইবনে রাশিদ হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন: হাদীসটির সনদ সহীহ।)
كتاب الأدب
التَّرْهِيب من الْغَضَب وَالتَّرْغِيب فِي دَفعه وكظمه وَمَا يفعل عِنْد الْغَضَب
4190- وَعَن ابْن عَبَّاس رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم ثَلَاث من كن فِيهِ آواه الله فِي كنفه وَستر عَلَيْهِ برحمته وَأدْخلهُ فِي محبته من إِذا أعطي شكر وَإِذا قدر غفر وَإِذا غضب فتر

رَوَاهُ الْحَاكِم من رِوَايَة عمر بن رَاشد وَقَالَ صَحِيح الْإِسْنَاد
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪১৯১
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
পরিচ্ছেদঃ ক্রোধের প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং তা দূর করা ও সংবরণ করার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং ক্রোধের সময় করণীয়
৪১৯১. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজ ক্রোধ দমন
করে, আল্লাহ তাকে শাস্তি থেকে মুক্তি দেবেন। যে ব্যক্তি নিজ রসনা সংযম রাখে, আল্লাহ তার ত্রুটি বিচ্যুতি গোপন করে রাখবেন।
(তাবারানীর আওসাত গ্রন্থে বর্ণিত।)
كتاب الأدب
التَّرْهِيب من الْغَضَب وَالتَّرْغِيب فِي دَفعه وكظمه وَمَا يفعل عِنْد الْغَضَب
4191- وَرُوِيَ عَن أنس رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم من دفع غَضَبه دفع الله عَنهُ عَذَابه وَمن حفظ لِسَانه ستر الله عَوْرَته

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْأَوْسَط
tahqiq

তাহকীক: