আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ

الترغيب والترهيب للمنذري

১২. অধ্যায়ঃ জিহাদ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ২৮৯ টি

হাদীস নং: ২১৪৪
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৪৪. মুজাহিদ সূত্রে হযরত ইয়াযীদ ইবন শাজারা (রা) থেকে বর্ণিত। ইয়াযীদ ইবন শাজারা ছিলেন সেই ব্যক্তি যাঁর কাজ তাঁর কথার সত্যতা প্রমাণ করত। তিনি একবার ভাষণে আমাদেরকে বললেনঃ হে লোক সকল। আল্লাহ্ তোমাদের কত সুন্দর নিয়ামত দান করেছেন। তোমরা আল্লাহর এসব নিয়ামতের কথা স্মরণ কর। এসব নিয়ামতের মধ্যে দেখা যায়, সবুজ, লাল ও হলুদ। আর পুরুষদের জন্য সেখানে কতই না বিচিত্র নিয়ামত রয়েছে। তিনি বলতেন, যখন মানুষ সালাতের জন্য এবং জিহাদের জন্য সারিবদ্ধ হয়, তখন আসমানে ও জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। জান্নাতী আয়তলোচনা হুরদেরকে সুসজ্জিত করা হয় এবং তারা উঁকি দেয়। যখন লোকটি জিহাদের জন্য অগ্রসর হয়, তখন তারা বলতে থাকে, হে আল্লাহ্। তাকে সাহায্য কর। আর যখন লোকটি পশ্চাদপসরণ করে, তখন তারা পর্দার অন্তরালে চলে যায়, আর বলে, হে আল্লাহ্। তাকে মাফ কর। অতএব তোমরা শত্রুর মুখে প্রচণ্ড আঘাত হানো। তোমাদের জন্য আমার পিতামাতা উৎসর্গিত হোন। তোমরা আয়তলোচনা হুরদেরকে অপমানিত করো না। কেননা প্রথম যে রক্তের ফোঁটাটি প্রবাহিত হয়, এরদ্বারাই তারকৃত সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। জান্নাতী আয়তলোচনা হুর তার দিকে এগিয়ে এসে তার চেহারার ধূলিবালি পরিষ্কার করে দেয়। তারা বলে, তোমার জন্য আমরা উৎসর্গিত। লোকটি বলে, আমিও তোমাদের জন্য উৎসর্গিত। তারপর মানুষের তৈরি পোশাকের অনুরূপ একশ পোশাক তাকে পরিয়ে দেয়া হয় কিন্তু আসলে এগুলো বেহেশতী পোশাক। যদি এগুলো দু'আঙ্গুলের ভিতর রাখা হয়, তবে রাখা যাবে।* তিনি বলতেন, আমি জ্ঞাত হয়েছি যে, তরবারি হলো জান্নাতের চাবিকাঠি।
(হাদীসটি তাবারানী দু'টি সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তন্মধ্যে একটি সূত্র বিশুদ্ধ। বায়হাকীও 'পুনরুত্থান অধ্যায়ে' হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি বলেনঃ
জিহাদের মধ্যে তোমাদের শরীর থেকে প্রথম যে রক্তের ফোঁটাটি পতিত হয়, আল্লাহ্ এরদ্বারাই সকল গুনাহ ঝরিয়ে দেন, যেমন করে গাছের পাতা ঝরে পড়ে। দু'জন আয়তলোচনা হুর তার দিকে দ্রুত এগিয়ে আসে এবং তার চেহারার ধূলিবালি ঝেড়ে পরিষ্কার করে। তারা বলতে থাকে, আমরা তোমার জন্য নিবেদিতা। সে লোকটি বলে, আমিও তোমাদের জন্য নিবেদিত। তারপর তাকে একশ'টি বেহেশতী পোশাক পরিয়ে দেয়া হয়। যদি এগুলো কেউ দু'আঙ্গুলের ভিতর রেখে দিতে ইচ্ছা করে, তা সে অনায়াসেই পারবে। তবে সেগুলো মানুষের বানানো কাপড় নয়, বেহেশতের তৈরি। তোমাদের নাম-ধাম আল্লাহর কাছে লিখা থাকে।
(হাদীসটি বাযযার বর্ণনা করেছেন। তাবারানীও ইয়াযীদ ইব্‌ন শাজারা থেকে সংক্ষিপ্তাকারে মারফূ‘ সূত্রে হাদীসটি উদ্বৃত করেছেন। জুদান সূত্রেও এটি মারফূ‘ পদ্ধতিতে বর্ণিত হয়েছে। তবে মাওকুফ বর্ণনাটিই শুদ্ধ। এখানে বলা যায় যে এরূপ বক্তব্য যেহেতু মনগড়াভাবে দেয়া যায় না, তাই মাওকুফ হলেও এটি অর্থগত দিক দিয়ে মারফূ‘ বলেই গণ্য হবে।)

* বেহেশতী বন্ত্রের সূক্ষ্মতা বুঝানো এ কথা বলার উদ্দেশ্যে।
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2144- وَعَن مُجَاهِد عَن يزِيد بن شَجَرَة وَكَانَ يزِيد بن شَجَرَة رَضِي الله عَنهُ مِمَّن يصدق قَوْله فعله خَطَبنَا فَقَالَ يَا أَيهَا النَّاس اذْكروا نعْمَة الله عَلَيْكُم مَا أحسن نعْمَة الله عَلَيْكُم ترى من بَين أَخْضَر وأحمر وأصفر وَفِي الرِّجَال مَا فِيهَا وَكَانَ يَقُول إِذا صف النَّاس للصَّلَاة وصفوا لِلْقِتَالِ فتحت أَبْوَاب السَّمَاء وأبواب الْجنَّة وغلقت أَبْوَاب النَّار وزين الْحور الْعين واطلعن فَإِذا أقبل الرجل قُلْنَ اللَّهُمَّ انصره وَإِذا أدبر احْتَجِبْنَ مِنْهُ وقلن اللَّهُمَّ اغْفِر لَهُ فانهكوا وُجُوه الْقَوْم فدى لكم أبي وَأمي وَلَا تخزوا الْحور الْعين فَإِن أول قَطْرَة تنضح من دَمه تكفر عَنهُ كل شَيْء عمله وَينزل إِلَيْهِ زوجتان من الْحور الْعين يمسحان التُّرَاب عَن وَجهه ويقولان فدانا لَك وَيَقُول فدانا لَكمَا ثمَّ يكسى مائَة حلَّة من نسج بني آدم وَلَكِن من نبت الْجنَّة لَو وضعن بَين أصبعين لوسعن وَكَانَ يَقُول نبئت أَن السيوف مَفَاتِيح الْجنَّة
رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ من طَرِيقين إِحْدَاهمَا جَيِّدَة صَحِيحَة وَالْبَيْهَقِيّ فِي كتاب الْبَعْث إِلَّا أَنه قَالَ فَإِن أول قَطْرَة تقطر من دم أحدكُم يحط الله عَنهُ بهَا خطاياه كَمَا يحط الْغُصْن من ورق الشّجر وتبتدره اثْنَتَانِ من الْحور الْعين وتمسحان التُّرَاب عَن وَجهه ويقولان فدانا لَك وَيَقُول فدانا لَكمَا فيكسى مائَة حلَّة لَو وضعت بَين أُصْبُعِي هَاتين لوسعتاهما لَيست من نسج بني آدم وَلكنهَا من نَبَات الْجنَّة مكتوبون عِنْد الله بأسمائكم وسماتكم
الحَدِيث
رَوَاهُ الْبَزَّار وَالطَّبَرَانِيّ أَيْضا عَن يزِيد بن شَجَرَة مَرْفُوعا مُخْتَصرا وَعَن جدان أَيْضا مَرْفُوعا وَالصَّحِيح الْمَوْقُوف مَعَ أَنه قد يُقَال إِن مثل هَذَا لَا يُقَال من قبل الرَّأْي فسبيل الْمَوْقُوف فِيهِ سَبِيل الْمَرْفُوع وَالله أعلم
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৪৫
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৪৫. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর কাছে শহীদ সম্পর্কে আলোচনা করা হলে তিনি বললেনঃ শহীদের খুন যমীন চুষে নেয়ার পূর্বেই জান্নাতী দু'জন হুর তার দিকে দ্রুত এগিয়ে আসে। যেমন করে মরুময় স্থানে দুধালো উটনী তার শাবককে ছায়া দেয়ার জন্য শশব্যস্ত হয়ে ফিরে আসে। উভয় হুরের হাতে থাকবে বেহেশতী পোশাক, যা দুনিয়া ও দুনিয়ার সমস্ত সম্পদের চেয়েও উত্তম।
(হাদীসটি ইবন মাজাহ শাহ্‌র ইবন হাওশাব সূত্রে হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন।)
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2145- وَعَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ ذكر الشَّهِيد عِنْد النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ لَا تَجف الأَرْض من دم الشَّهِيد حَتَّى تبتدره زوجتاه كَأَنَّهُمَا ظئران أظلتا فصيليهما فِي براح من الأَرْض وَفِي يَد كل وَاحِدَة مِنْهُمَا حلَّة خير من الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا

رَوَاهُ ابْن مَاجَه من رِوَايَة شهر بن حَوْشَب
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৪৬
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৪৬. হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -কে বলতে শুনেছিঃ শহীদ চার পর্যায়ের হয়ে থাকে। এক ব্যক্তি সে মু'মিন, তার ঈমান অত্যন্ত দৃঢ়, সে শত্রুর মুকাবিলা করে ঈমানদীপ্ত মনোভাব নিয়ে শহীদ হয়ে গেল। সে হলো ঐ পর্যায়ের শহীদ যাকে হাশরের দিন মানুষ এমনিভাবে চোখ উঁচু করে দেখবে। বর্ণনাকারী বলেন। এমনভাবে তিনি মাথা উঁচু করলেন, যেন তাঁর টুপি পড়ে গেল। তবে সে টুপি কি উমর(রা.)-এর ছিল, নাকি নবী করীম (ﷺ) -এর, তা আমার জানা নেই। দ্বিতীয় ঐ ব্যক্তি যে দৃঢ় ঈমানের অধিকারী মু'মিন, সে এমনভাবে দুশমনের মুখোমুখি হলো, যেন কাঁটাগাছের কাঁটা দ্বারা তার চর্মে আঘাত করা হয়েছে। এক অজ্ঞাত তীর এসে তাকে শহীদ করে দিয়েছে। এ ব্যক্তি হবে দ্বিতীয় পর্যায়ের শহীদ। তৃতীয় ঐ মু'মিন ব্যক্তি, যে নেক আমল ও বদ আমল দ্বারা মিশ্রিত। সে দুশমনের মুখোমুখি হয়ে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে শহীদ হয়ে গেছে। সে হলো তৃতীয় পর্যায়ের শহীদ। চতুর্থ ঐ মু'মিন ব্যক্তি যে নিজ প্রবৃত্তির উপর অত্যাচার করেছে। সে দুশমনের মুখোমুখি হয়ে আল্লাহকে সত্যজ্ঞান করে জিহাদ করে নিহত হয়, সে নিম্ন পর্যায়ের শহীদ।
(হাদীসটি তিরমিযী ও বায়হাকী বর্ণনা করেছেন। তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান-গরীব।)
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2146- وَعَن عمر بن الْخطاب رَضِي الله عَنهُ قَالَ سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول الشُّهَدَاء أَرْبَعَة رجل مُؤمن جيد الْإِيمَان لَقِي الْعَدو فَصدق الله حَتَّى قتل فَذَاك الَّذِي يرفع النَّاس إِلَيْهِ أَعينهم يَوْم الْقِيَامَة هَكَذَا وَرفع رَأسه حَتَّى وَقعت قلنسوته فَلَا أَدْرِي قلنسوة عمر أَرَادَ أم قلنسوة النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ وَرجل مُؤمن جيد الْإِيمَان لَقِي الْعَدو فَكَأَنَّمَا ضرب جلده بشوك طلح من الْجُبْن أَتَاهُ سهم غرب فَقتله فَهُوَ فِي الدرجَة الثَّانِيَة وَرجل مُؤمن خلط عملا صَالحا وَآخر سَيِّئًا لَقِي الْعَدو فَصدق الله حَتَّى قتل فَذَلِك فِي الدرجَة الثَّالِثَة وَرجل مُؤمن أسرف على نَفسه لَقِي الْعَدو فَصدق الله حَتَّى قتل فَذَلِك فِي الدرجَة الأولى

رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَالْبَيْهَقِيّ وَقَالَ التِّرْمِذِيّ حَدِيث حسن غَرِيب
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৪৭
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৪৭. হযরত ইব্‌ন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ শহীদগণ জান্নাতের দরজার সামনে বহমান স্বচ্ছ নদী তীরে সবুজ অট্টালিকায় অবস্থান করবে। সকাল-সন্ধ্যায় তাদেরকে জান্নাতী রিযিক দেয়া হবে।
(হাদীসটি আহমদ ও ইবন হিব্বান তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। হাকিমও হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেনঃ হাদীসটি মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ।)
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2147- وَعَن ابْن عَبَّاس رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم الشُّهَدَاء على بارق نهر بِبَاب الْجنَّة فِي قبَّة خضراء يخرج عَلَيْهِم رزقهم من الْجنَّة بكرَة وعشيا

رَوَاهُ أَحْمد وَابْن حبَان فِي صَحِيحه وَالْحَاكِم وَقَالَ صَحِيح على شَرط مُسلم
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৪৮
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৪৮. হযরত ইব্‌ন আব্বাস (রা) থেকেই বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ তোমাদের ভাইয়েরা যখন শহীদ হয়ে যায়, আল্লাহ্ তাদের রূহকে সবুজ পাখির উদরে পুরে দেন। তারা বেহেশতের নদী তীরে অবতরণ করে এবং বেহেশতী ফল আহার করে। আল্লাহর আরশের ছায়ার নীচে লটাকানো স্বর্ণের ঝাড়ে তারা আশ্রয় গ্রহণ করে। যখন তারা তাদের বেহেশতী আহার্য, পানীয় ও নিবাসের স্বাদ পেতে থাকবে, তখন জিজ্ঞেস করবে, কে এ সংবাদ আমাদের ভাইদের কাছে পৌঁছে দেবে যে, আমরা বেহেশতে জীবিতাবস্থায় আছি এবং আমাদের জন্য বেহেশতী রিযক পরিবেশন করা হয়ে থাকে- যাতে করে তারা জিহাদে অংশ গ্রহণে বিরত না থাকে এবং ভীরুর মত যুদ্ধ থেকে পশ্চাতে না থাকে। আল্লাহ বলবেন, আমি তোমাদের পক্ষ থেকে এ সংবাদ পৌছিয়ে দেব। তারপর মহান আল্লাহ্ আয়াত নাযিল করলেনঃ
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا إلى آخر الآية অর্থঃ "যারা আল্লাহ পথে মৃত্যুবরণ করেছে, তাদের তোমরা মৃত মনে করো না……………আয়াতের শেষ পর্যন্ত।"
(হাদীসটি আবূ দাউদ ও হাকিম বর্ণনা করেছেন। হাকিম বলেন, হাদীসটির সনদ সহীহ।)
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2148- وَعَن ابْن عَبَّاس أَيْضا رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم لما أُصِيب إخْوَانكُمْ جعل الله أَرْوَاحهم فِي جَوف طير خضر ترد أَنهَار الْجنَّة تَأْكُل من ثمارها وتأوي إِلَى قناديل من ذهب معلقَة فِي ظلّ الْعَرْش فَلَمَّا وجدوا طيب مَأْكَلهمْ وَمَشْرَبهمْ وَمَقِيلهمْ
قَالُوا من يبلغ إِخْوَاننَا عَنَّا أَنا أَحيَاء فِي الْجنَّة نرْزق لِئَلَّا يَزْهَدُوا فِي الْجِهَاد وَلَا ينكلُوا عَن الْحَرْب فَقَالَ الله تَعَالَى أَنا أبلغهم عَنْكُم
قَالَ فَأنْزل الله عز وَجل {وَلَا تحسبن الَّذين قتلوا فِي سَبِيل الله أَمْوَاتًا} آل عمرَان 961
إِلَى آخر الْآيَة

رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالْحَاكِم وَقَالَ صَحِيح الْإِسْنَاد
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৪৯
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৪৯. হযরত রাশিদ ইবন সা'দ (র) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। মু'মিনদের কি হলো যে, শহীদদের ছাড়া তাদের সবাইকে কবরের পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ শহীদের মাথার উপর তরবারির আঘাতটিই এ পরীক্ষার ক্ষেত্রে যথেষ্ট হয়ে যায়।
(হাদীট নাসাঈ বর্ণনা করেছেন।)
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2149- وَعَن رَاشد بن سعد رَضِي الله عَنهُ عَن رجل من أَصْحَاب النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أَن رجلا قَالَ يَا رَسُول الله مَا بَال الْمُؤمنِينَ يفتنون فِي قُبُورهم إِلَّا الشَّهِيد قَالَ كفى ببارقة السيوف على رَأسه فتْنَة

رَوَاهُ النَّسَائِيّ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৫০
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৫০. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর কাছে এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ। আমি একজন কাফ্রী। শরীর দুর্গন্ধময় ও চেহারা কুৎসিত; আমার কোন সম্পদও নেই। আমি যদি এদের বিরুদ্ধে জিহাদ করে নিহত হই, তখন আমার ঠিকানা কোথায় হবে? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, জান্নাতে। এরপর লোকটি জিহাদ করে শহীদ হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) লোকটির শবদেহের কাছে এসে বললেন, আল্লাহ্ তোমার চেহারা উজ্জ্বল ও শরীর সুগন্ধিময় করে দিয়েছেন এবং তোমাকে অধিক সম্পদের অধিকারী করে দিয়েছেন। তিনি ঐ ব্যক্তি বা অন্য কাউকে লক্ষ্য করে ঐ কথাও বলেছিলেনঃ আমি দেখেছি আয়তলোচনা হুরদের মধ্য থেকে তার স্ত্রী তার গায়ের পশমের জামাটি টেনে লোকটির সাথে জামার ভিতর ঢুকে যাচ্ছে।
(হাদীসটি হাকিম বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেনঃ মুসলিমের শর্তানুযায়ী হাদীসটি সহীহ।)
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2150- وَعَن أنس رَضِي الله عَنهُ أَن رجلا أسود أَتَى النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ يَا رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِنِّي رجل أسود منتن الرّيح قَبِيح الْوَجْه لَا مَال لي فَإِن أَنا قَاتَلت هَؤُلَاءِ حَتَّى أقتل فَأَيْنَ
أَنا قَالَ فِي الْجنَّة فقاتل حَتَّى قتل فَأَتَاهُ النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ قد بيض الله وَجهك وَطيب رِيحك وَأكْثر مَالك وَقَالَ لهَذَا أَو لغيره لقد رَأَيْت زَوجته من الْحور الْعين نازعته جُبَّة لَهُ من صوف تدخل بَينه وَبَين جبته

رَوَاهُ الْحَاكِم وَقَالَ صَحِيح على شَرط مُسلم
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৫১
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৫১. হযরত ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এক গ্রাম্য ব্যক্তির তাঁবুর পাশ দিয়ে যুদ্ধে যাচ্ছিলেন, গ্রাম্য লোকটি তাঁবুর কোণ উঁচিয়ে বলল, কাদের এই কাফেলা? বলা হল, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও সাহাবীগণ যুদ্ধে যাচ্ছেন। লোকটি বলল, পার্থিব কোন কিছু কি তারা পাবে? বলা হল, হ্যাঁ, তারা গনীমত পাবে এবং মুসলমানদের মধ্যে তা বণ্টিত হবে। এরপর লোকটি তার উটের কাছে চলে গেল এবং লাগাম লাগিয়ে সেটিকে সামনের দিকে হাঁকিয়ে তাঁদের সাথে রওয়ানা হল। লোকটি তার উটকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর দিকে হাঁকালে অন্যেরা তার উটটিকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এটি দেখে বললেন, এই নজদীকে আমার কাছে আসতে দাও। ঐ সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার জীবন। নিশ্চয়ই সে জান্নাতী রাজ-রাজড়াদের একজন হবে।
রাবী বলেন, এরপর তাঁরা সবাই শত্রুর মুখোমুখি হলেন এবং এই লোকটিও জিহাদ করে শহীদ হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর কাছে এ সংবাদ পৌঁছালে তিনি প্রশান্ত চিত্তে হাসতে হাসতে লোকটির পাশে এসে বসলেন। একটু পরেই তিনি লোকটির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, আমরা আপনাকে দেখলাম আনন্দে আপনি হাসছেন, কিন্তু পরক্ষণেই আপনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন? তিনি বললেনঃ তোমরা আমাকে আনন্দিত বা হাস্যোজ্জ্বল অবস্থায় যা দেখেছ, তখন আমি দেখছিলাম আল্লাহর কাছে লোকটির কত মর্যাদা। আর আমি তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলাম এ কারণে যে, তার মাথার কাছে আয়তলোনা হুরদের মধ্যকার তার স্ত্রী এসে হাযির হয়েছিল।
(হাদীসটি বায়হাকী হাসান সনদে বর্ণনা করেছেন।)
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2151- وَعَن ابْن عمر رَضِي الله عَنْهُمَا أَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مر بخباء أَعْرَابِي وَهُوَ فِي أَصْحَابه يُرِيدُونَ الْغَزْو فَرفع الْأَعرَابِي نَاحيَة من الخباء فَقَالَ من الْقَوْم فَقيل رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَأَصْحَابه يُرِيدُونَ الْغَزْو فَقَالَ هَل من عرض الدُّنْيَا يصيبون قيل لَهُ نعم يصيبون الْغَنَائِم ثمَّ تقسم بَين الْمُسلمين فَعمد إِلَى بكر لَهُ فاعتقله وَسَار مَعَهم فَجعل يدنو ببكره إِلَى رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَجعل أَصْحَابه يذودون بكره عَنهُ فَقَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم دعوا لي النجدي فوالذي نَفسِي بِيَدِهِ إِنَّه لمن مُلُوك الْجنَّة
قَالَ فَلَقوا الْعَدو فاستشهد فَأخْبر بذلك النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَأَتَاهُ فَقعدَ عِنْد رَأسه مُسْتَبْشِرًا أَو قَالَ مَسْرُورا يضْحك ثمَّ أعرض عَنهُ فَقُلْنَا يَا رَسُول الله رَأَيْنَاك مُسْتَبْشِرًا تضحك ثمَّ أَعرَضت عَنهُ فَقَالَ أما مَا رَأَيْتُمْ من استبشاري أَو قَالَ سروري فَلَمَّا رَأَيْت من كَرَامَة روحه على الله عز وَجل وَأما إعراضي عَنهُ فَإِن زَوجته من الْحور الْعين الْآن عِنْد رَأسه

رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ بِإِسْنَاد حسن
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৫২
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৫২. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত যে, উম্মু রুবাঈ বিনতে বারা (রা)-যিনি ছিলেন হারিসা বিনতে সুরাকার মাতা, তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর কাছে এসে বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ। আপনি হারিসা সম্পর্কে কিছু বলবেন কি? সে বদর যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। যদি সে জান্নাতে গিয়ে থাকে, তবে আমি ধৈর্যধারণ করব, আর যদি অন্য কিছু হয়ে থাকে, তাহলে আমি ওর জন্য অশ্রুপাত করব। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেনঃ হে হারিসার মা। জান্নাতের অনেকগুলো বাগানের মধ্যে তোমার ছেলে সর্বোচ্চ জান্নাতুল ফিরদাউস পেয়েছে।
(হাদীসটি বুখারী বর্ণনা করেছে।)
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2152- وَعَن أنس رَضِي الله عَنهُ أَن أم الرّبيع بنت الْبَراء رَضِي الله عَنْهَا وَهِي أم حَارِثَة بنت سراقَة أَتَت النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَت يَا رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أَلا تُحَدِّثنِي عَن حَارِثَة وَكَانَ قتل يَوْم بدر فَإِن كَانَ فِي الْجنَّة صبرت وَإِن كَانَ غير ذَلِك اجتهدت عَلَيْهِ بالبكاء فَقَالَ يَا أم حَارِثَة إِنَّهَا جنان فِي الْجنَّة وَإِن ابْنك أصَاب الفردوس الْأَعْلَى

رَوَاهُ البُخَارِيّ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৫৩
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৫৩. হযরত আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ মহান আল্লাহ্ খুশি হন ঐ ব্যক্তির প্রতি যে জিহাদে তার সাথীরা পরাজিত হয়ে চলে গেছে, সে পরাজিত হওয়ার পর শাস্তির কথা ভেবে আবার ফিরে এসে আমৃত্যু জিহাদ করে। তখন মহান আল্লাহ্ ফিরিশতাদের ডেকে বললেন, আমার ঐ বান্দাকে দেখ, সে আমার সন্তুষ্টি এবং শাস্তি থেকে পরিত্রাণ লাভের জন্য আমার জিহাদে ফিরে এসে আমৃত্যু জিহাদ করেছে।
(হাদীসটি আবু দাউদ আতা ইব্‌ন সায়িব সূত্রে মুররা থেকে বর্ণনা করেছেন।)
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2153- وَعَن عبد الله بن مَسْعُود رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم عجب رَبنَا تبَارك وَتَعَالَى من رجل غزا فِي سَبِيل الله فَانْهَزَمَ يَعْنِي أَصْحَابه فَعلم مَا عَلَيْهِ فَرجع حَتَّى أهريق دَمه فَيَقُول الله عز وَجل لملائكته انْظُرُوا إِلَى عَبدِي رَجَعَ رَغْبَة فِيمَا عِنْدِي وشفقة مِمَّا عِنْدِي حَتَّى أهريق دَمه

رَوَاهُ أَبُو دَاوُد عَن عَطاء بن السَّائِب عَن مرّة عَنهُ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৫৪
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৫৪. এ হাদীসটি আহমদ আবু ইয়ালা এবং ইব্‌ন হিব্বান তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। তাঁদের বর্ণিত শব্দসমূহ 'রাতের ইবাদত' পরিচ্ছেদে পূর্বে বর্ণিত হয়েছে। এ মর্মে হযরত আবুদ-দারদা (রা)-এর বর্ণিত হাদীসটিও ইতোপূর্বে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ তিন ব্যক্তিকে আল্লাহ্ ভালবাসেন ও তাদের প্রতি তাকিয়ে হাসতে থাকেন এবং তাদের দ্বারা আনন্দিত বোধ করেন। যখন সৈন্যরা যুদ্ধ থেকে পলায়ন করে যায়, তখন যে ব্যক্তি একাই শত্রুর মুকাবিলায় মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে যুদ্ধ করতে থাকে। আল্লাহ তাকে সাহায্য করুন বা মৃত্যু দান করুন এবং তার উদ্দেশ্যে সফল করুন। তখন আল্লাহ্ বলেনঃ হে ফিরিশতাগণ। তোমরা আমার বান্দাকে দেখ, সে আমার উপর ভরসা করে কেমনে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করছে। হাদীসের শেষ পর্যন্ত।
(এটি তাবারানী হাসান সনদে বর্ণনা করেছেন।)
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2154- وَرَوَاهُ أَحْمد وَأَبُو يعلى وَابْن حبَان فِي صَحِيحه وَتقدم لَفظهمْ فِي قيام اللَّيْل
وَتقدم فِيهِ أَيْضا حَدِيث أبي الدَّرْدَاء رَضِي الله عَنهُ عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم ثَلَاثَة يُحِبهُمْ الله ويضحك إِلَيْهِم ويستبشر بهم الَّذِي إِذا انكشفت فِئَة قَاتل وَرَاءَهَا بِنَفسِهِ لله عز وَجل فإمَّا أَن يقتل وَإِمَّا أَن ينصره الله ويكفيه فَيَقُول انْظُرُوا إِلَى عَبدِي هَذَا كَيفَ صَبر لي بِنَفسِهِ
الحَدِيث
رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ بِإِسْنَاد حسن
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৫৫
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৫৫. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কিছু লোক নবী করীম (ﷺ) -এর কাছে এসে বলল, কুরআন ও সুন্নাহর জ্ঞান দানের জন্য আমাদের সাথে কিছু লোক দিন। রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) তাদের সাথে সত্তর জন আনসারী সাহাবীকে পাঠিয়ে দেন। তাঁদেরকে কুর্‌রা বলে অভিহিত করা হতো। তাঁদের মধ্যে আমার মামা হারামও ছিলেন। তাঁরা রাতে নিজেরা কুরআন তিলাওয়াত করতেন এবং পাঠ গ্রহণ করতেন ও কুরআনের অর্থ নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতেন, আর দিনের বেলায় পানি এনে মসজিদে রাখতেন। দিনে কাঠ কেটে বাজারে বিক্রি করে আহলে সুফফা ও গরীবদের জন্য খাবার সংগ্রহ করতেন। নবী করীম আগন্তুক ব্যক্তিদের সাথে তাঁদেরকে পাঠিয়ে দিলেন, কিন্তু ঐ সব লোক গন্তব্যস্থলে পৌঁছার পূর্বেই এদের উপর চড়াও হয়ে তাঁদেরকে হত্যা করে। তাঁরা তখন ফরিয়াদ করে বলেছিলেনঃ "হে আল্লাহ্! আপনি আমাদের নবী (ﷺ) -এর কাছে আমাদের এ সংবাদ পৌঁছিয়ে দিন যে, আমরা আপনার সমীপে পৌছে গিয়েছি এবং আমরা আপনার প্রতি সন্তুষ্ট রয়েছি এবং আপনিও আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট।
রা'বী বলেন, এক ব্যক্তি আনাসের মামা হারামের পিছন দিকে থেকে এসে বল্লম দিয়ে আঘাত করায় তিনি পড়ে গেলেন, তাঁর মুখে উচ্চারিত হলঃ কা'বার মালিকের কসম! আমি সফল হয়ে গেছি। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ঘটনার সংবাদ দিয়ে বললেন, তোমাদের ভাইয়েরা শহীদ হয়ে গেছে। তারা বলেছিল, হে আল্লাহ্। আপনি আমাদের নবী (ﷺ) -এর কাছে এ সংবাদ পৌছিয়ে দিন যে, আমরা আপনার সমীপে পৌঁছে গিয়েছি। আমরা আপনার প্রতি সন্তুষ্ট আর আপনিও আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট।
(হাদীসটি বুখারী ও মুসলিম বর্ণনা করেছেন। বর্ণিত শব্দসমূহ মুসলিম-এর।)
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2155- وَعَن أنس رَضِي الله عَنهُ قَالَ جَاءَ أنَاس إِلَى النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أَن ابْعَثْ مَعنا رجَالًا يعلمونا الْقُرْآن وَالسّنة فَبعث إِلَيْهِم سبعين رجلا من الْأَنْصَار يُقَال لَهُم الْقُرَّاء فيهم خَالِي حرَام يقرؤون الْقُرْآن وَيَتَدَارَسُونَهُ بِاللَّيْلِ يتعلمون وَكَانُوا بِالنَّهَارِ يجيئون بِالْمَاءِ فيضعونه فِي الْمَسْجِد ويحتطبون فيبيعونه ويشترون بِهِ الطَّعَام لاهل الصّفة وللفقراء فبعثهم النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِلَيْهِم فعرضوا لَهُم فَقَتَلُوهُمْ قبل أَن يبلغُوا الْمَكَان فَقَالُوا اللَّهُمَّ أبلغ عَنَّا نَبينَا أَنا قد لقيناك فرضينا عَنْك ورضيت عَنَّا
قَالَ وأتى رجل حَرَامًا خَال أنس من خَلفه فطعنه بِرُمْح حَتَّى أنفذه فَقَالَ حرَام فزت وَرب الْكَعْبَة فَقَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِن إخْوَانكُمْ قد قتلوا وَإِنَّهُم قَالُوا اللَّهُمَّ أبلغ عَنَّا نَبينَا أَنا قد لقيناك فرضينا عَنْك ورضيت عَنَّا

رَوَاهُ البُخَارِيّ وَمُسلم وَاللَّفْظ لَهُ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৫৬
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৫৬. বুখারীর এক বর্ণনায় হযরত আনাস (রা) বলেন, বীরে মাউনায় যাদের হত্যা করা হয়েছিল, তাদের সম্পর্কে কুরমান মজীদের আয়াত নাযিল হয়েছিল। আমরা তা পাঠ করেছিলাম। কিন্তু সে অংশটুকু পরে রহিত হয়ে গেছে। আয়াতটুকু ছিল "হে আল্লাহ। আপনি আমাদের কওমের কাছে এ সংবাদটি পৌছিয়ে দিন যে, আমরা প্রভুর কাছে পৌছে গিয়েছি তিনি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং আমরাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছি।
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2156- وَفِي رِوَايَة للْبُخَارِيّ قَالَ أنس رَضِي الله عَنهُ أنزل فِي الَّذين قتلوا ببئر مَعُونَة قُرْآن قرأناه ثمَّ نسخ بعد بلغُوا قَومنَا أَنا قد لَقينَا رَبنَا فَرضِي عَنَّا ورضينا عَنهُ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৫৭
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৫৭. মাসরুক (র) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা হযরত আবদুল্লাহ (রা)-এর কাছে এ আয়াতের অর্থ জানতে চাইলামঃ وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا بَلْ أَحْيَاءٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ "যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়েছে, তাদেরকে তোমরা মৃত মনে করো না, বরং তারা জীবিত; আল্লাহর কাছ থেকে তাদেরকে রিযিক সরবরাহ করা হয়ে থাকে।" আবদুল্লাহ বলেনঃ আমরাও এর অর্থ সম্পর্কে রাসূলুল্লা (ﷺ) এর কাছে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বলেছেনঃ তাদের আত্মাসমূহকে এক প্রকার জান্নাতী সবুজ পাখির উদরে পুরে দেয়া হয়। আর সেটির জন্য রয়েছে আরশের নীচে লটকানো উজ্জ্বল ঝাড়। তারা জান্নাতের যথা ইচ্ছা বিচরণ করতে পারে, তবে তারা আবার সেই লটকানো ঝাড়ে এসে আশ্রয় গ্রহণ করে। আল্লাহ্ তাদের প্রতি উকি দিয়ে বলবেন। তোমাদের কি কোন কামনা আছে? তারা বলবে, আমাদের কি কামনা থাকবে, বেহেশতের যথা ইচ্ছা তো আমরা বিচরণ করছিই ? আল্লাহ্ তাদের প্রতি একথা তিনবার বলবেন, যখন তারা বুঝতে পারবে যে, কোন কিছু না চাইলে আর তাদের ছাড়া হচ্ছে না, তখন তারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবেঃ প্রভূ! আপনার কাছে আমাদের কামনা হচ্ছে আমাদের আত্মাগুলোকে পুনরায় আমাদের দেহে ফিরিয়ে দিন- যাতে করে আমরা আবার আপনার পথে শহীদ হতে পারি। যখন দেখা যাবে, তাদের কোন কামনাই অবশিষ্ট নেই, তখন তাদের ছেড়ে দেয়া হবে।
(হাদীসটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন। বর্ণিত শব্দসমূহ তাঁরই। তিরমিযী এবং অন্যান্যরাও এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2157- وَعَن مَسْرُوق رَضِي الله عَنهُ قَالَ سَأَلنَا عبد الله عَن هَذِه الْآيَة {وَلَا تحسبن الَّذين قتلوا فِي سَبِيل الله أَمْوَاتًا بل أَحيَاء عِنْد رَبهم يرْزقُونَ} آل عمرَان 961 فَقَالَ أما أَنا فقد سَأَلنَا عَن ذَلِك رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ أَرْوَاحهم فِي جَوف طير خضر لَهَا قناديل معلقَة بالعرش تسرح من الْجنَّة حَيْثُ شَاءَت ثمَّ تأوي إِلَى تِلْكَ الْقَنَادِيل فَاطلع عَلَيْهِم رَبهم اطلاعة
فَقَالَ هَل تشتهون شَيْئا قَالُوا أَي شَيْء نشتهي وَنحن نَسْرَح من الْجنَّة حَيْثُ شِئْنَا فَفعل ذَلِك بهم ثَلَاث مَرَّات فَلَمَّا رَأَوْا أَنهم لن يتْركُوا من أَن يسْأَلُوا
قَالُوا يَا رب نُرِيد أَن ترد أَرْوَاحنَا فِي أَجْسَادنَا حَتَّى نقْتل فِي سَبِيلك مرّة أُخْرَى فَلَمَّا رأى أَن لَيْسَ لَهُم حَاجَة تركُوا

رَوَاهُ مُسلم وَاللَّفْظ لَهُ وَالتِّرْمِذِيّ وَغَيرهمَا
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৫৮
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৫৮. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) সূত্রে নবী করীম (ﷺ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জিবরাঈল (আ)-কে এ আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেনঃ وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَصَعِقَ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ إِلَّا مَنْ شَاءَ اللَّهُ অর্থাৎ "যখন শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে, আসমান ও যমীনের সবই তখন বেঁহুশ হয়ে যাবে। তবে আল্লাহ্ যাদের রক্ষা করবেন, তারা বেঁহুশ হবে না (সূরা যুমার,আয়াত নং- ৬৮)।" আল্লাহ যাঁদেরকে বেঁহুশ করতে চাইবেন না তাঁরা কারা? জিবরাঈল বললেনঃ তারা হলো আল্লাহর পথের শহীদগণ।
(হাদীসটি হাকিম বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, সনদের দিক থেকে হাদীসটি সহীহ।)
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2158- وَعَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أَنه سَأَلَ جِبْرَائِيل عَلَيْهِ السَّلَام عَن هَذِه الْآيَة وَنفخ فِي الصُّور فَصعِقَ من فِي السَّمَوَات وَمن فِي الأَرْض إِلَّا من شَاءَ الله الزمر 86 من الَّذين لم يشإ الله أَن يصعقهم قَالَ هم شُهَدَاء الله

رَوَاهُ الْحَاكِم وَقَالَ صَحِيح الْإِسْنَاد
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৫৯
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৫৯. ইবন আবুদ-দুনিয়া ইসমাঈল ইবন আইয়্যাশ সূত্রে এ হাদীসটি আরো দীর্ঘকায় বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, তারা হলো আল্লাহর পথের শহীদগণ, যারা আল্লাহর আরশের চতুষ্পার্শ্বে ঘাড়ে তরবারি লটকানো অবস্থায় উঠবে। হাশরের ময়দানে একদল ফিরিশতা তাদের কাছে চুণি বর্ণের কিছু উন্নতজাতের দ্রুতগামী উষ্ট্রী নিয়ে আসবে। যেগুলোর লাগাম হবে শুভ্র মোতির, হাওদা হবে সোনার, আর আস্তর হবে রেশমের এবং গালিচা হবে রেশমের চেয়েও কোমল। এগুলোর পদক্ষেপ মানুষের দৃষ্টিসীমার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। তারা জান্নাতে ঘোড়ার উপর চড়ে ভ্রমণ করবে। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় এক সময় তারা বলবে, আমাদেরকে নিয়ে চল, আল্লাহ্ কিভাবে মানুষের বিচারকার্য করেন তা একটু দেখে আসি। আল্লাহ্ তাদেরকে দেখে হেসে উঠবেন। আর কোন ক্ষেত্রে আল্লাহ্ বান্দাকে দেখে যখন হেসে ফেলেন, তখন তার আর কোন হিসাব হয় না।
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2159 - ورواه ابن أبي الدنيا من طريق اسمعيل بن عياش أطول منه، وقال فيه : هم الشهداء يبْعَثُهُمُ الله متقلدين أسيافهم حول عَرْشِهِ فَأَتَاهُمْ مَلَائِكَةُ مِنَ الْمَحْشَرِ بِنَجَائِبِ مِنْ ياقوت أزمتها الدر الأبيض برِحَالِ الذهب أعنتها السُّنْدُسُ وَالاسْتَبْرَقُ، وَنَمارِقُهَا الين مِنَ الْحَرِيرِ مَد خطاها مد أبصار الرِّجَالِ يَسِيرُونَ فِي الْجَنَّةِ عَلَى خَيولٍ يَقُولُونَ عِنْدَ طولِ النُّزْهَةِ: انْطَلِقُوا بِنَا نَنْظُرُ كَيْفَ يَقْضى اللَّهُ بَيْنَ خَلْقِهِ يَضْحَك اللَّهُ إِلَيْهِمْ وَإِذَا صَحِكَ الله إلى عبد فِي مَوْطِنٍ فَلَا حِسَابٍ عَلَيْهِ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৬০
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৬০. হযরত আমির ইবন সা'দ (রা) তাঁর পিতা সূত্রে বর্ণনা করেন যে, এক ব্যক্তি সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে আসল, তখন নবী করীম (ﷺ) সালাতে রত ছিলেন। সালাতের সারি যখন শেষ হলো, তখন লোকটি বলল, হে আল্লাহ! তুমি নেককার বান্দাদের, যে পুরস্কার দান কর, তার উত্তম পুরস্কারটি তুমি আমাকে দান কর। নবী সালাত শেষ করে বললেন, একটু আগে এখানে কে কথা বলছিল? লোকটি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ। আমি (কথা বলেছিলাম)। তিনি বললেন, তাহলে তোমার ঘোড়াটির পা কেটে দেয়া হবে এবং তুমি নিজে শহীদ হয়ে যাবে।
(হাদীসটি আবু ইয়ালা ও বাযযার বর্ণনা করেছেন। ইব্‌ন হিব্বান তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে এবং হাকিমও এটি বর্ণনা করেছেন। হাকিম বলেন, হাদীসটি মুসলিমের শর্তানুসারে সহীহ।)
كتاب الْجِهَاد
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2160- وَعَن عَامر بن سعد رَضِي الله عَنهُ عَن أَبِيه أَن رجلا جَاءَ إِلَى الصَّلَاة وَالنَّبِيّ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يُصَلِّي فَقَالَ حِين انْتهى الصَّفّ اللَّهُمَّ آتني أفضل مَا تؤتي عِبَادك الصَّالِحين فَلَمَّا قضى النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم الصَّلَاة قَالَ من الْمُتَكَلّم آنِفا فَقَالَ الرجل أَنا يَا رَسُول الله
قَالَ إِذا يعقر جوادك وتستشهد

رَوَاهُ أَبُو يعلى وَالْبَزَّار وَابْن حبَان فِي صَحِيحه وَالْحَاكِم وَقَالَ صَحِيح على شَرط مُسلم
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৬১
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ জিহাদ করা ও জিহাদের সংকল্প ছাড়া মৃত্যুবরণ করার ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন ও বিভিন্ন পর্যায়ের মৃত্যু যাতে মানুষ শহীদের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয় এবং প্লেগ মহামারী থেকে পলায়নের হুঁশিয়ারী প্রসঙ্গে
২১৬১. হযরত আবূ ইমরান (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রোম শহরে ছিলাম, তখন আমাদের বিরুদ্ধে এক বিরাট রোমান বাহিনী বেরিয়ে আসল। এদের মুকাবিলার জন্য সমপরিমাণ বা সমধিক মুসলিম সৈন্য বেরিয়ে আসে। তখন মিসরের শাসক ছিলেন হযরত উক্‌বা ইবন আমির (রা)। সেনা প্রধান ছিলেন হযরত ফুযালা ইবন উবাইদ (রা)। মুসলিম বাহিনীর এক সৈনিক অগ্রসর হতে হতে রোমান বাহিনীর মধ্যে ঢুকে পড়ল। তা লক্ষ্য করে লোকজন চিৎকার দিয়ে উঠল, 'সুবহানাল্লাহ্।' লোকটি নিজেকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিল। তখন হযরত আবু আইউব (রা) দাঁড়িয়ে বললেন, "হে লোক সকল। তোমরা এমন অপব্যাখ্যা করছো? অথচ এ আয়াতটি আনসার সাহাবীদের ব্যাপারে নাযিল হয়েছিল। যখন আল্লাহ ইসলামকে সম্মানিত করেছিলেন এবং ইসলামের সাহায্যকারীও ছিলেন অনেক। তখন আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর অগোচরে বলাবলি করতাম, শুধু শুধু আমাদের সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে। অথচ আল্লাহ্ তা'আলা ইসলামকে শক্তিশালী করেছেন এবং ইসলামের সাহায্যকারীও রয়েছে প্রচুর। আমরা যদি আমাদের মাল-সম্পদ ধরে থাকতাম এবং যা ক্ষতি হয়ে গিয়েছে তা ঠিক করে নিতাম। তখন আল্লাহ্ তা'আলা আমাদের ধারণার বিপক্ষে, নবী করীম (ﷺ) -এর কাছে আয়াত নাযিল করলেন ঃ وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إلى التهلكة "তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করো না।” প্রকৃতপক্ষে মাল-সম্পদ আঁকড়ে থাকা ও সম্পদ ঠিক রাখা এবং যুদ্ধ ত্যাগ করাতেই আমাদের ধ্বংস। এর পর হযরত আবু আইউব (রা) আল্লাহর পথে জিহাদে নিয়োজিত থাকলেন, এবং শেষ পর্যন্ত রোমের মাটিতেই* সমাহিত হলেন।
(হাদীসটি তিরমিযী বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, হাদীসটি গরীব ও সহীহ।)

* সেকালে ভ্যাটিক্যান সিটির মতই বাইজান্টায়ন সাম্রাজ্য তথা খ্রীস্টজগতের শীর্ষস্থান ও অন্যতম রাজধানী ছিল কনস্টান্টিনাপল বা কাস্তানতুনিয়া। সেই গুরুত্বপূর্ণ নগরীর প্রাচীরের কোল ঘেঁষেই হযরত আবু আইউব আনসারী (রা)-কে তাঁর অন্তিম ইচ্ছা অনুসারে দাফন করা হয়।
كتاب الْجِهَاد
التَّرْهِيب من أَن يَمُوت الْإِنْسَان وَلم يغز وَلم ينْو الْغَزْو وَذكر أَنْوَاع من الْمَوْت تلْحق أَرْبَابهَا بِالشُّهَدَاءِ والترهيب من الْفِرَار من الطَّاعُون
2161- عَن أبي عمرَان رَضِي الله عَنهُ قَالَ كُنَّا بِمَدِينَة الرّوم فأخرجوا إِلَيْنَا صفا عَظِيما من الرّوم فَخرج إِلَيْهِم من الْمُسلمين مثلهم أَو أَكثر وعَلى أهل مصر عقبَة بن عَامر رَضِي الله عَنهُ وعَلى الْجَمَاعَة فضَالة بن عبيد رَضِي الله عَنهُ فَحمل رجل من الْمُسلمين على صف الرّوم حَتَّى دخل بَينهم فصاح النَّاس وَقَالُوا سُبْحَانَ الله يلقِي بِيَدِهِ إِلَى التَّهْلُكَة فَقَامَ أَبُو أَيُّوب فَقَالَ أَيهَا النَّاس إِنَّكُم لتأولون هَذَا التَّأْوِيل وَإِنَّمَا نزلت هَذِه الْآيَة لبَعض سرا دون رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِن أَمْوَالنَا قد ضَاعَت وَإِن الله تَعَالَى قد أعز الْإِسْلَام وَكثر ناصروه فَلَو أَقَمْنَا فِي أَمْوَالنَا وأصلحنا مَا ضَاعَ مِنْهَا فَأنْزل الله تَعَالَى على نبيه صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مَا يرد علينا مَا قُلْنَا وللفقراء فِي سَبِيل الله {وَلَا تلقوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَة} الْبَقَرَة 691 وَكَانَت التَّهْلُكَة الْإِقَامَة على الْأَمْوَال وإصلاحها فِينَا معشر
الْأَنْصَار لما أعز الله الْإِسْلَام وَكثر ناصروه فَقَالَ بَعْضنَا وَتَركنَا الْغَزْو فَمَا زَالَ أَبُو أَيُّوب شاخصا فِي سَبِيل الله حَتَّى دفن بِأَرْض الرّوم

رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَقَالَ حَدِيث غَرِيب صَحِيح
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৬২
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ জিহাদ করা ও জিহাদের সংকল্প ছাড়া মৃত্যুবরণ করার ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন ও বিভিন্ন পর্যায়ের মৃত্যু যাতে মানুষ শহীদের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয় এবং প্লেগ মহামারী থেকে পলায়নের হুঁশিয়ারী প্রসঙ্গে
২১৬২. হযরত ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ যখন তোমরা নগদ ক্রয়-বিক্রয়ে লিপ্ত হয়ে যাবে এবং গরুর লেজ ধরে থাকবে, কৃষিকার্যেই নিজেকে সুখী মনে করবে এবং জিহাদ ছেড়ে দিবে, তখন তোমাদের উপর আল্লাহর পক্ষ থেকে লাঞ্ছনা নেমে আসবে। যাবৎ না তোমরা তোমাদের দীনের দিকে প্রত্যাবর্তন করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ্ তোমাদের লাঞ্ছনার অবসান ঘটাবেন না।
(হাদীসটি আবু দাউদ ও অন্যান্যরা মিসর প্রবাসী ইসহাক ইবন উসায়ন সূত্রে বর্ণনা করেছেন।)
كتاب الْجِهَاد
التَّرْهِيب من أَن يَمُوت الْإِنْسَان وَلم يغز وَلم ينْو الْغَزْو وَذكر أَنْوَاع من الْمَوْت تلْحق أَرْبَابهَا بِالشُّهَدَاءِ والترهيب من الْفِرَار من الطَّاعُون
2162- وَعَن ابْن عمر رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِذا تبايعتم بالعينة وأخذتم أَذْنَاب الْبَقر ورضيتم بالزرع وتركتم الْجِهَاد سلط الله عَلَيْكُم ذلا لَا يَنْزعهُ حَتَّى ترجعوا إِلَى دينكُمْ

رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَغَيره من طَرِيق إِسْحَاق بن أسيد نزيل مصر
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২১৬৩
অধ্যায়ঃ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ জিহাদ করা ও জিহাদের সংকল্প ছাড়া মৃত্যুবরণ করার ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন ও বিভিন্ন পর্যায়ের মৃত্যু যাতে মানুষ শহীদের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয় এবং প্লেগ মহামারী থেকে পলায়নের হুঁশিয়ারী প্রসঙ্গে
২১৬৩. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জিহাদ না করে মৃত্যুবরণ করল এবং জিহাদের ইচ্ছার উদ্রেকও তার অন্তরে হল না, সে এক প্রকার মুনাফিকী তথা কপটতা নিয়েই মৃত্যুবরণ করল।
(হাদীসটি আবু দাউদ, মুসলিম ও নাসাঈ বর্ণনা করেছেন।)
كتاب الْجِهَاد
التَّرْهِيب من أَن يَمُوت الْإِنْسَان وَلم يغز وَلم ينْو الْغَزْو وَذكر أَنْوَاع من الْمَوْت تلْحق أَرْبَابهَا بِالشُّهَدَاءِ والترهيب من الْفِرَار من الطَّاعُون
2163- وَعَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم من مَاتَ وَلم يغز وَلم يحدث بِهِ نَفسه مَاتَ على شُعْبَة من النِّفَاق

رَوَاهُ مُسلم وَأَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ
tahqiq

তাহকীক: