আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ

الترغيب والترهيب للمنذري

১. ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ৬০ টি

হাদীস নং: ৪১
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৪১. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: শেষ যামানায় এমন এক শ্রেণীর লোক বের হবে, তারা দ্বীনের দ্বারা প্রতারণা করে দুনিয়া হাসিল করবে, তারা লোকদের সাথে কোমল ভেড়ার চামড়া পরে থাকবে, তাদের ভাষা হবে মধু অপেক্ষা অধিকতর মিষ্ট অথচ অন্তর হবে নেকড়ে বাঘের ন্যায়, আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, "তারা কি আমার সাথে প্রতারণা করছে নাকি আমার সাথে দুঃসাহস দেখাচ্ছে? আমি আমার সত্তার শপথ করে বলছি যে, আমি অবশ্যই তাদেরকে কঠিন বিপদে নিপতিত করব যা পরম ধৈর্যশীলকেও অস্থির করে তুলবে।"
(ইয়াহইয়া ইব্ন উবায়দ সূত্রে ইমাম তিরমিযী (র) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে আবু হুরায়রা (রা) সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করতে শুনেছি। অতঃপর তিনি হাদীসটি বর্ণনা করেন। হযরত ইবন উমর (রা) সূত্রে তাঁর রিওয়ায়াতটি সংক্ষিপ্ত। ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী (র) বলেন, হাদীসটি হাসান।)
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
41 - وَعَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يخرج فِي آخر الزَّمَان رجال يختلون الدُّنْيَا بِالدّينِ يلبسُونَ للنَّاس جُلُود الضَّأْن من اللين ألسنتهم أحلى من الْعَسَل وَقُلُوبهمْ قُلُوب الذئاب يَقُول الله عز وَجل أبي يغترون أم عَليّ يجترئون فَبِي حَلَفت لَأَبْعَثَن على أُولَئِكَ مِنْهُم فتْنَة تدع الْحَلِيم حيران
رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ من رِوَايَة يحيى بن عبيد سَمِعت أبي يَقُول سَمِعت أَبَا هُرَيْرَة فَذكره وَرَوَاهُ مُخْتَصرا من حَدِيث ابْن عمر وَقَالَ حَدِيث حسن
হাদীস নং: ৪২
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৪২. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: লোকে যা পসন্দ করে সেভাবে কাজ করে যে জনপ্রিয় হবার চেষ্টা করে এবং লোকে যা অপসন্দ করে সে বিষয়ে সে আল্লাহর মুকাবিলা করে, সে আল্লাহর সাথে এমনভাবে সাক্ষাত করবে যে, তিনি তার প্রতি ক্রদ্ধ থাকবেন।
(ইমাম তাবরানী তাঁর 'আওসাত' গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
42 - وَرُوِيَ عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم من تحبب إِلَى النَّاس بِمَا يحبونَ وبارز الله بِمَا يكْرهُونَ لَقِي الله وَهُوَ عَلَيْهِ غَضْبَان
رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْأَوْسَط
হাদীস নং: ৪৩
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৪৩. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকেই বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেনঃ তোমরা দুঃখকূপ হতে আল্লাহর কাছে আশ্রয়প্রার্থী হও। সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! দুঃখকূপ কি? তিনি বললেন, জাহান্নামের এমন একটি উপত্যকা যার থেকে জাহান্নাম, প্রত্যহ একশবার পানাহ চায়। বলা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। কে তাতে প্রবেশ করবে? তিনি বললেন, ঐ সমস্ত কুরআনবিদ যারা নিজ আমলের প্রদর্শনী করে।
(তিরমিযী হাদীসটি বর্ণনা করেন। ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী (র) বলেন, হাদীসটি গরীব সনদে বর্ণিত। ইব্ন মাজাহ নিজ শব্দযোগে বর্ণনা করেন যে, "তোমরা দুঃখকূপ থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাও। সাহাবায়ে কিরাম বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! দুঃখকূপ কি? তিনি বললেন, জাহান্নামের এমন একটি উপত্যকা যা থেকে জাহান্নাম প্রত্যহ চারশবার পানাহ চায়। বলা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তাতে কারা প্রবেশ করবে? তিনি বললেন, ঐ সকল কুরআনবিদ যারা লোক দেখানোর জন্য আমল করে। আল্লাহর কাছে সব চেয়ে নিকৃষ্ট 'আলিম' তারা, যারা রাজা-বাদশাহদের কাছে ধর্ণা দেয়।"
অন্য সূত্রে আছে, "যালিম রাজা-বাদশাহদের কাছে ধর্ণা দেয়।" তাবরানীর আওসাত গ্রন্থে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে তিনি বলেছেন, "প্রতারকদের জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে, বলা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! প্রতারক কারা? তিনি বললেন, যারা দুনিয়াতে প্রদর্শনীমূলক কাজ করে, তারাই প্রতারক।")
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
43 - وَرُوِيَ عَنهُ أَيْضا قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم تعوذوا بِاللَّه من جب الْحزن
قَالُوا يَا
رَسُول الله وَمَا جب الْحزن قَالَ وَاد فِي جَهَنَّم تتعوذ مِنْهُ جَهَنَّم كل يَوْم مائَة مرّة وَمِائَة قيل يَا رَسُول الله وَمن يدْخلهُ قَالَ الْقُرَّاء المراؤون بأعمالهم
رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَقَالَ حَدِيث غَرِيب وَابْن مَاجَه وَلَفظه تعوذوا بِاللَّه من جب الْحزن
قَالُوا يَا رَسُول الله وَمَا جب الْحزن قَالَ وَاد فِي جَهَنَّم تتعوذ مِنْهُ جَهَنَّم كل يَوْم أَرْبَعمِائَة مرّة قيل يَا رَسُول الله وَمن يدْخلهُ قَالَ أعد للقراء المرائين بأعمالهم وَإِن من أبْغض الْقُرَّاء إِلَى الله عز وَجل الَّذين يزورون الْأُمَرَاء
وَفِي بعض النّسخ الْأُمَرَاء الجورة
وَرَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْأَوْسَط بِنَحْوِهِ إِلَّا أَنه قَالَ يلقى فِيهِ الغرارون
قيل يَا رَسُول الله وَمَا الغرارون قَالَ المراؤون بأعمالهم فِي الدُّنْيَا
হাদীস নং: ৪৪
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৪৪. হযরত ইব্ন আব্বাস (রা) থেকে নবী (সা) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: জাহান্নামের এমন একটি উপত্যকা রয়েছে যা থেকে জাহান্নাম প্রত্যহ চারশবার পানাহ চায়, তা প্রস্তুত রাখা হয়েছে উম্মতে মুহাম্মদীর রিয়াকার হাফিযে কুরআন, গায়রুল্লাহর নামে সদকাদাতা, হাজী এবং আল্লাহর পথের মুজাহিদের জন্য
([হাফিয মুনযিরী] (র) বলেনঃ ইবন আব্বাসের মারফু' হাদীস গরীব সনদে বর্ণিত হয়েছে। সম্ভবতঃ তা মাওকূফ । আল্লাহ সর্বজ্ঞ।)
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
44 - وَرَوَاهُ أَيْضا عَن ابْن عَبَّاس عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ إِن فِي جَهَنَّم لواديا تستعيذ جَهَنَّم من ذَلِك الْوَادي فِي كل يَوْم أَرْبَعمِائَة مرّة أعد ذَلِك الْوَادي للمرائين من أمة مُحَمَّد صلى الله عَلَيْهِ وَسلم لحامل كتاب الله والمتصدق فِي غير ذَات الله والحاج إِلَى بَيت الله وللخارج فِي سَبِيل الله
قَالَ الْحَافِظ رفع حَدِيث ابْن عَبَّاس غَرِيب وَلَعَلَّه مَوْقُوف وَالله أعلم
হাদীস নং: ৪৫
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৪৫. হযরত ইব্ন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি লোক দেখানোর জন্য উত্তমরূপে সালাত আদায় করল, তারপর আবার একান্তে সালাতের প্রতি অমনোযোগী হল, এটা হল এমনি অবমাননা যদ্বারা সে তার প্রতিপালককেই অবমাননা করে।
(ইমাম আবদুর রাযযাক তাঁর কিতাবে এবং আবু ইয়া'লা হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তাঁরা উভয়ে ইবরাহীম ইব্ন মুসলিম হাজারী থেকে আবুল আহওয়াস সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি (আবুল আহওয়াস) ইব্ন জারীর তাবারী সূত্রে মারফু ও মাওকূফ সনদে হযরত ইব্‌ন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণনা করেন, এটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ অভিমত।)
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
45 - وَعَن ابْن مَسْعُود رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم من أحسن الصَّلَاة حَيْثُ يرَاهُ النَّاس وأساءها حَيْثُ يَخْلُو فَتلك استهانة استهان بهَا ربه تبَارك وَتَعَالَى
رَوَاهُ عبد الرَّزَّاق فِي كِتَابه وَأَبُو يعلى كِلَاهُمَا من رِوَايَة إِبْرَاهِيم بن مُسلم الهجري عَن أبي الْأَحْوَص عَنهُ
وَرَوَاهُ من هَذِه الطّرق ابْن جرير الطَّبَرِيّ مَرْفُوعا أَيْضا وموقوفا على ابْن مَسْعُود وَهُوَ أشبه
হাদীস নং: ৪৬
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৪৬. হযরত শাদ্দাদ ইব্‌ন আওস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী করীম (সা) -কে বলতে শুনেছেন, যে ব্যক্তি প্রদশনীমূলক সিয়াম পালন করে, সে শিরক করল। যে ব্যক্তি প্রদশর্নীমূলক সালাত আদায় করল, সেও শিরক করল এবং যে প্রদর্শনীমূলক দান-খয়রাত করল, সেও শিরক করল।
(ইমাম বায়হাকী (র) আবদুল মজীদ ইব্‌ন বাহরাম সূত্রে, তিনি শাহর ইব্‌ন হাওশাব থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেন। পূর্ণ হাদীসটি শীঘ্রই আসবে ইনশা আল্লাহ।)
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
46 - وَعَن شَدَّاد بن أَوْس رَضِي الله عَنهُ أَنه سمع النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول من صَامَ يرائي فقد أشرك وَمن صلى يرائي فقد أشرك وَمن تصدق يرائي فقد أشرك
رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ من طَرِيق عبد الْمجِيد بن بهْرَام عَن شهر بن حَوْشَب وَسَيَأْتِي أتم من هَذَا إِن شَاءَ الله تَعَالَى
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪৭
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৪৭. রুবাইহ ইব্ন আবদুর রহমান তাঁর পিতা সূত্রে তাঁর দাদা হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা মাসীহ দাজ্জাল সম্পর্কে আলাপরত ছিলাম। এমন সময় রাসূলুল্লাহ (সা) আমাদের কাছে এলেন। তিনি বললেন, আমি মাসীহ দাজ্জাল অপেক্ষাও তোমাদের জন্য যা অধিকতর ভয়ংকর মনে করি, সে সম্পর্কে কি তোমাদেরকে অবহিত করব না? আমরা বললামঃ হ্যাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তিনি বললেনঃ তা হল গুপ্ত শিরক, আর তা হল, কোন ব্যক্তি সালাতে দাঁড়াল এবং উত্তমরূপে সালাত আদায় করল, যাতে সে অন্য লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে।
(ইমাম ইব্ন মাজাহ ও বায়হাকী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
47 - وَعَن ربيح بن عبد الرَّحْمَن بن أبي سعيد الْخُدْرِيّ عَن أَبِيه عَن جده قَالَ خرج علينا رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَنحن نتذاكر الْمَسِيح الدَّجَّال فَقَالَ أَلا أخْبركُم بِمَا هُوَ أخوف عَلَيْكُم عِنْدِي من الْمَسِيح الدَّجَّال فَقُلْنَا بلَى يَا رَسُول الله فَقَالَ الشّرك الْخَفي أَن يقوم الرجل فَيصَلي فيزين صلَاته لما يرى من نظر رجل
رَوَاهُ ابْن مَاجَه وَالْبَيْهَقِيّ
হাদীস নং: ৪৮
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৪৮. হযরত মাহমূদ ইব্‌ন লাবীদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (সা) ঘর থেকে বেরিয়ে এতে বললেন: মানব মণ্ডলী! তোমরা গোপনীয় শিরক থেকে বেঁচে থাক। তাঁরা (সাহাবায়ে কিরাম) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! গোপনীয় শিরক কি? তিনি বললেন: কোন ব্যক্তি সালাত আদায় করল এবং তার সালাতকে সুষমামণ্ডিত করল এবং চেষ্টা করল লোকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য। আর এটাই হল গোপনীয় শিরক।
(ইমাম ইব্ন খুযায়মা তাঁর 'সহীহ্' গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
48 - وَعَن مَحْمُود بن لبيد قَالَ خرج النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ يَا أَيهَا النَّاس إيَّاكُمْ وشرك السرائر قَالُوا يَا رَسُول الله وَمَا شرك السرائر قَالَ يقوم الرجل فَيصَلي فيزين صلَاته جاهدا لما يرى من نظر النَّاس إِلَيْهِ فَذَلِك شرك السرائر
رَوَاهُ ابْن خُزَيْمَة فِي صَحِيحه
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৪৯
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৪৯. হযরত যায়দ ইব্‌ন আসলাম তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন যে, হযরত উমর (রা) একদা মসজিদের দিকে বের হয়ে রাসুলুল্লাহ (সা) এর রওযার কাছে হযরত মু'আয (রা)-কে ক্রন্দনরত অবস্থায় দেখতে পান। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কিসে তোমাকে কাঁদাচ্ছে হে? তিনি বললেন, একটি হাদীস যা আমি রাসূলুল্লাহ্ (সা) থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ সূক্ষ্ম প্রদর্শনেচ্ছাও শিরক স্বরূপ। যে ব্যক্তি আল্লাহর ওলীগণের সাথে শত্রুতা করে, সে যেন আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হল। আল্লাহ্ ভালবাসেন সৎকর্মপরায়ণদের, মুত্তাকীদের, গোপনে ইবাদতকারীদের, যারা অনুপস্থিত থাকলে কেউ তাদের খোঁজ করে না। উপস্থিত থাকলে তাদেরকে চেনা যায় না। তাদের অন্তরগুলো হিদায়াতের মশাল, তারা ধূলিধূসর অন্ধকারের মধ্য থেকে আত্মপ্রকাশ করে।
(এ হাদীসটি ইমাম ইব্ন মাজাহ, হাকিম এবং বায়হাকী (র) যুহদ অধ্যায়ে এবং অন্যান্য অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন। ইমাম হাকিম (র) বলেছেন, হাদীসটি ত্রুটিমুক্ত সনদে বর্ণিত।)
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
49 - وَعَن زيد بن أسلم عَن أَبِيه أَن عمر رَضِي الله عَنهُ خرج إِلَى الْمَسْجِد فَوجدَ معَاذًا عِنْد قبر رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يبكي فَقَالَ مَا يبكيك قَالَ حَدِيث سمعته من رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ الْيَسِير من الرِّيَاء شرك وَمن عادى أَوْلِيَاء الله فقد بارز الله بالمحاربة إِن الله يحب الْأَبْرَار الأتقياء الأخفياء الَّذين إِن غَابُوا لم يفتقدوا وَإِن حَضَرُوا لم يعرفوا قُلُوبهم مصابيح الْهدى يخرجُون من كل غبراء مظْلمَة
رَوَاهُ ابْن مَاجَه وَالْحَاكِم وَالْبَيْهَقِيّ فِي كتاب الزّهْد لَهُ وَغَيره قَالَ الْحَاكِم صَحِيح وَلَا عِلّة لَهُ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫০
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
২৩. হযরত মাহমূদ ইব্‌ন লাবীদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেনঃ আমি তোমাদের ব্যাপারে শিরক-ই (১) আসগরকে সর্বাধিক ভয় করি। তাঁরা (সাহাবায়ে কিরাম) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! শিরক-ই আসগর কি? তিনি বললেন: রিয়া (প্রদর্শনেচ্ছা) আর আল্লাহ্ যখন মানুষের আমলের জাযা (প্রতিদান) দিবেন তখন বলবেন, দুনিয়াতে যাদের দেখানোর উদ্দেশ্যে তোমরা আমল করতে, তাদের কাছে যাও; দেখ তাদের কাছে তোমাদের প্রতিদান পাও কি-না।
(ইমাম আহমদ উত্তম সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেন এবং ইব্‌ন আবিদ-দুনিয়া ও বায়হাকী (র) জুহদ অধ্যায় ও অন্যান্য অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন।)
[হাফিয মুনযিরী (র) বলেনঃ] হযরত মাহমুদ ইব্‌ন লাবীদ (রা) নবী-কে দেখেছেন অথচ আমার মতে তাঁর সনদটি সহীহ বলে মনে হয় না। অবশ্য আবু বাকর ইব্‌ন খুযায়মা (র) তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে তাঁর সনদে হাদীসটি মুরসালরূপে বর্ণিত হয়নি। ইব্‌ন আবূ হাতিম (র) বর্ণনা করেন যে, ইমাম বুখারী (র) বলেন, তিনি নবী করীম (সা) এর সাহচর্য লাভ করেছেন। তিনি বলেন, আমার পিতা বলেছেন, তিনি নবী (সা) এর সাহচর্য লাভ করেছেন বলে জানা যায়নি। ইব্‌ন আবদুল বার (র) তাঁর সাথে নবী (সা)এর সাহচর্যের পক্ষকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। ইমাম তাবারানী (র) উত্তম সনদে উক্ত হাদীসটি মাহমূদ ইবন লাবীদ সূত্রে হযরত রাফি ইবন খাদীজ (রা) থেকে বর্ণনা করেন। কেউ কেউ বলেন, মাহমুদের হাদীসটি সহীহ কিন্তু রাফি ইব্‌ন খাদীজের সূত্রে নয়। আল্লাহ সর্বজ্ঞ।

(১) আবরী আসগর শব্দটি 'আকবর'-এর বিপরীত শব্দ। আসগর মানে সবচাইতে ছোট এবং 'সাগীর'- এর Superlative Degree। সাগীর মানে ছোট-সম্পাদক
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
50 - وَعَن مَحْمُود بن لبيد أَن رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ إِن أخوف مَا أَخَاف عَلَيْكُم الشّرك الْأَصْغَر
قَالُوا وَمَا الشّرك الْأَصْغَر يَا رَسُول الله قَالَ الرِّيَاء يَقُول الله عز وَجل إِذا جزى النَّاس بأعمالهم اذْهَبُوا إِلَى الَّذين كُنْتُم تراؤون فِي الدُّنْيَا فانظروا هَل تَجِدُونَ عِنْدهم جَزَاء
وَرَوَاهُ أَحْمد بِإِسْنَاد جيد وَابْن أبي الدُّنْيَا وَالْبَيْهَقِيّ فِي الزّهْد وَغَيره
قَالَ الْحَافِظ رَحمَه الله ومحمود بن لبيد رأى النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَلم يَصح لَهُ مِنْهُ سَماع فِيمَا أرى
وَقد خرج أَبُو بكر بن خُزَيْمَة حَدِيث مَحْمُود الْمُتَقَدّم فِي صَحِيحه مَعَ أَنه لَا يخرج فِيهِ شَيْئا من الْمَرَاسِيل وَذكر ابْن أبي حَاتِم أَن البُخَارِيّ قَالَ لَهُ صُحْبَة
قَالَ وَقَالَ أبي لَا يعرف لَهُ صُحْبَة وَرجح ابْن عبد الْبر أَن لَهُ صُحْبَة وَقد رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ بِإِسْنَاد جيد عَن مَحْمُود بن لبيد عَن رَافع بن خديج وَقيل إِن حَدِيث مَحْمُود هُوَ الصَّوَاب دون ذكر رَافع بن خديج فِيهِ وَالله أعلم
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫১
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৫১. হযরত আবু সাঈদ ইব্‌ন আবু ফাযালা (রা) থেকে বর্ণিত। আর হযরত আবু ফাযালা (রা) সাহাবী ছিলেন। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সা)-কে বলতে শুনেছি! আল্লাহ্ তা'আলা যখন কিয়ামতের দিন, যে দিনের ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই, পূর্বাপর লোকদের একত্রিত করবেন, তখন একজন আহ্বানকারী ডেকে বলবেঃ যে ব্যক্তি এক আল্লাহ্ ব্যতীত অন্যকে তার আমলে শরীক করেছে, সে যেন তার সওয়াব সে শরীকের কাছে চেয়ে নেয়, কেননা আল্লাহ্ তা'আলা মুশরিকদের শিরকের ধার ধারেন না।
(ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী তাঁর 'জামে' গ্রন্থের তাফসীর অধ্যায়ে এবং ইব্ন মাজাহ ও ইব্ন হিববান তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে ও ইমাম বায়হাকী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
51 - وَعَن أبي سعيد بن أبي فضَالة وَكَانَ من الصَّحَابَة قَالَ سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم
يَقُول إِذا جمع الله الْأَوَّلين والآخرين يَوْم الْقِيَامَة ليَوْم لَا ريب فِيهِ نَادَى مُنَاد من كَانَ أشرك فِي عمله لله أحدا فليطلب ثَوَابه من عِنْده فَإِن الله أغْنى الشُّرَكَاء عَن الشّرك
رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ فِي التَّفْسِير من جَامعه وَابْن مَاجَه وَابْن حبَان فِي صَحِيحه وَالْبَيْهَقِيّ
হাদীস নং: ৫২
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৫২. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন, আল্লাহ্ তা'আলা ইরশাদ করেছেনঃ আমি মুশরিকদের শিরক থেকে অভাবমুক্ত। যে ব্যক্তি আমার উদ্দেশ্যে কোন কাজ করল, তারপর তাতে অন্য কাউকে শরীক করল, আমি তা থেকে দায়িত্বমুক্ত। তা কেবল তারই জন্যে থাকে, যাকে সে শরীক স্থাপন করেছে।
(ইমাম ইবন মাজাহ (র) নিজ শব্দযোগে হাদীসটি বর্ণনা করেন এবং ইব্‌ন খুযায়মা (র) তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে এবং বায়হাকী বর্ণনা করেছেন। তবে ইব্‌ন মাজাহ (র) বর্ণিত রিওয়ায়াতটি বিশ্বস্ত সনদে বর্ণিত।)
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
52 - وَعَن أبي هُرَيْرَة أَن رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ قَالَ الله عز وَجل أَنا أغْنى الشُّرَكَاء عَن الشّرك فَمن عمل لي عملا أشرك فِيهِ غَيْرِي فَأَنا مِنْهُ بَرِيء وَهُوَ للَّذي أشرك
رَوَاهُ ابْن مَاجَه وَاللَّفْظ لَهُ وَابْن خُزَيْمَة فِي صَحِيحه وَالْبَيْهَقِيّ
ورواة ابْن مَاجَه ثِقَات
হাদীস নং: ৫৩
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৫৩. শাহর ইব্ন হাওশাব (র) থেকে আবদুর রহমান ইবন গুনম সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল-জাবিয়া মসজিদে প্রবেশ করে হযরত উবাদা ইব্‌ন সামিত (রা) এর সাক্ষাত পেলাম। তিনি আমাকে তাঁর বাম হাত দিয়ে এবং আবুদ-দারদা বাম হাত তাঁর ডান হাত দিয়ে চেপে ধরলেন, তারপর তিনি আমাদের দু'জনের উপর ভর করে হাঁটতে লাগলেন এবং আমরা মনে মনে কথাবার্তা বলছিলাম যা আল্লাহ্-ই ভাল জানেন। হযরত উবাদা ইব্ন সামিত (রা) বলেন, তোমাদের একজন যদি অপরজন অপেক্ষা দীর্ঘায়ু হও অথবা উভয়ে যদি দীর্ঘজীবী হও, অচিরেই মুসলমানদের মধ্যে হাফিযে কুরআনদের দেখতে পাবে যারা কুরআন হিফয করেছে এবং হালালকে হালাল ও হারামকে হারাম জেনেছে, মুহাম্মদ (সা) এর ভাষায় রিয়া করছে তাদের অবস্থা মৃত গর্দভের মাথা তুল্য বৈ কিছু নয়। তিনি বললেন, ইতিমধ্যে আমাদের নিকট শাদ্দাদ ইব্‌ন আউস এবং আউফ ইব্‌ন মালিক (রা) এসে বসে পড়লেন। হযরত শাদ্দাদ (রা) বললেন হে লোকেরা! আমি রাসূলুল্লাহ্ (সা) থেকে যা শুনেছি, তন্মধ্যে তোমাদের জন্য সুপ্ত প্রবৃত্তি ও শিরককে সর্বাধিক ভয় করি। উবাদা ইব্‌ন সামিত ও আবু-দারদা (রা) বললেন, হে আল্লাহ্! আমাদের পাপরাশি ক্ষমা কর। রাসূলুল্লাহ (সা) কি আমাদের উদ্দেশ্যে বলেননি: আরব উপদ্বীপে শয়তান তার ইবাদত থেকে নিরাশ হয়েছে। সুপ্ত প্রবৃত্তি তো আমরা চিনি। তা হল পার্থিব লোভ ও নারীর প্রতি মোহ। ওহে শাদ্দাদ। তাহলে আপনি আমাদের কোন্ শিরক-এর ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করছেন? হযরত শাদ্দাদ (রা) বললেন, তোমরা ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে কি মনে কর, যে লোক দেখানোর নিমিত্তে সালাত আদায় করে, সিয়াম পালন করে এবং সাদকা প্রদান করে, সে তো নির্ঘাত শিরক করছে। হযরত আউফ ইব্‌ন মালিক (রা) বললেন, আল্লাহ্ তা'আলা কি তাঁর উদ্দেশ্যে কৃত খালিস আমলগুলো কবুল করবেন না যদি সে শিরক পরিহার করে? হযরত শাদ্দাদ (রা) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সা) কে বলতে শুনেছি: আল্লাহ্ তা'আলা ইরশাদ করেনঃ "আমি হলাম তার উত্তম অংশীদার যে আমার সাথে শরীক করে।" যে আমার সাথে কিছু শরীক স্থাপন করে, তার আমল কম হোক আর বেশি হোক, তা কেবল ঐ শরীকের জন্যে যাকে সে শরীক করেছে, আমি তা থেকে পুতঃপবিত্র।
(হাদীসটি ইমাম আহমদ বর্ণনা করেছেন। আর শাহর সম্বন্ধে বর্ণনা সামনে আসছে। বায়হাকীও হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তাঁর শব্দমালা হলঃ হযরত আবদুর রহমান ইব্‌ন গুনম (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি দামেশকের একটি মসজিদে রাসূলুল্লাহ (সা) এর কয়েকজন আসহাবের সাথে উপবিষ্ট ছিলেন। তন্মধ্যে হযরত মু'আয ইব্ন জাবাল (রা)-ও ছিলেন। আবদুর রহমান বলেন, হে লোকেরা! তোমাদের জন্য আমি গুপ্ত শিরককে (শিরকে খফী) সর্বাধিক ভয় করি। হযরত মু'আয ইব্ন জাবাল (রা) বললেন, হে আল্লাহ্। ক্ষমা করুন। অতঃপর (তিনি বললেন) তুমি কি রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শোননি যে, বিদায়ের সময় তিনি বলেছেনঃ তোমাদের এই একটা দ্বীপে শয়তান তার ইবাদত থেকে নিরাশ হয়ে গেছে। কিন্তু তোমরা যে আমলগুলোকে তুচ্ছ জ্ঞান করবে, তাতেই শয়তান সন্তুষ্ট হয়ে যাবে। হযরত আবদুর রহমান (রা) বললেন, আল্লাহর শপথ করে বলছি, হে মু'আয। আপনি কি রাসূলুল্লাহ (সা)-কে বলতে শুনেন নি যে, যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর জন্য সিয়াম পালন করে, সে শিরক করল এবং যে ব্যক্তি লোক দেখানোর জন্য সাদকা করল, সেও শিরক করল। তারপর তিনি হাদীসটি উল্লেখ করলেন। তবে সনদের দিক থেকে হাদীসটি শক্তিশালী নয়। উল্লেখিত হাদীসটি আহমদ (র)-ও বর্ণনা করেছেন।
ইমাম হাকিম (র) আবদুল ওয়াহিদ ইব্‌ন যায়দ সূত্রে উবাদা ইবন নুসাঈ (র) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, হযরত শাদ্দাদ ইব্‌ন আউস (রা) মুসাল্লায় বসে কাঁদছেন এ অবস্থায় আমি তাঁর নিকট গেলাম। আমি বললাম, হে আবূ আবদুর রহমান! কি সে আপনাকে কাঁদালো? তিনি বললেন, একটি হাদীস, যা আমি রাসূলুল্লাহ (সা) থেকে শুনেছি। আমি বললাম, সেটি কোন হাদীস? তিনি বললেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ (সা) -এর কাছে দণ্ডায়মান ছিলাম, ইত্যবসরে তাঁর চেহারায় বিবর্ণ ভাব ফুটে উঠতে দেখলাম। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতামাতা আপনার জন্য কুরবান, কিসে আপনার চেহারা বিমর্ষ করল? তিনি বললেনঃ আমার উম্মতের জন্য আমি শিরক ও সুপ্ত প্রবৃত্তি সম্পর্কে খুবই আশংকা করছি। আমি বললাম, আপনার পরে কি আপনার উম্মত শিরক করবে? তিনি বললেন, হে শাদ্দাদ। তারা সূর্য, মূর্তি ও প্রস্তরখণ্ডের পূজা করবে না কিন্তু তারা গায়রুল্লাহর (লোক দেখানোর) জন্য কাজ করবে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ। রিয়া কি শিরক? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, সুপ্ত প্রবৃত্তি কি? তিনি বললেন, তাদের কেউ ভোরে সিয়ামরত অবস্থায় উঠবে, তারপর দুনিয়ার মোহে পড়ে সিয়াম ভংগ করে ফেলবে। হাকিম হাদীসটি স্বীয় শব্দযোগে সহীহ সনদে বর্ণনা করেন।)
[হাফিয মুনযিরী (র) বলেনঃ] কিভাবে হাদীসটি সহীহ সনদে বর্ণিত? অথচ আবদুল ওয়াহিদ ইব্ন যায়দ আয-যাহিদ মুহাদ্দিসগণের নিকট পরিত্যাক্ত। ইব্ন মাজাহ (র) সংক্ষেপে অন্য বর্ণনায় রাওয়াদ ইবনুল জাররাহ (র) হযরত শাদ্দাদ (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন। রাওয়াদ ইব্‌ন জাররাহ (র) আমের ইবন আবদুল্লাহ-হাসান ইব্‌ন যাকওয়ান-উবাদা ইব্‌ন নাসাঈ হযরত শাদ্দাদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন: আমি আমার উম্মতের উপর সর্বাধিক ভয় করি শিরকের। তবে আমি একথা বলি না যে, তারা সূর্য, চন্দ্র ও মূর্তিপূজা করবে, বরং তারা গায়রুল্লাহর উদ্দেশ্যে কাজ করবে, আর তাই হবে সুপ্ত প্রবৃত্তি। আমের ইব্ন আবদুল্লাহ অজ্ঞাত ব্যক্তি। ইমাম বায়হাকীর রিওয়ায়াতে আছে যে, ই'য়ালা ইব্ন শাদ্দাদ তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, আমরা নবী করীম (সা) এর যুগে রিয়াকে শিরকে আসগর (ছোট শিরক) বলে গণ্য করতাম।
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
53 - وَعَن شهر بن حَوْشَب عَن عبد الرَّحْمَن بن غنم قَالَ لما دخلت مَسْجِد الْجَابِيَة ألفينا عبَادَة بن الصَّامِت فَأخذ يَمِيني بِشمَالِهِ وشمال أبي الدَّرْدَاء بِيَمِينِهِ فَخرج يمشي بَيْننَا وَنحن ننتجي وَالله أعلم بِمَا نتناجى فَقَالَ عبَادَة بن الصَّامِت لَئِن طَال بكما عمر أَحَدكُمَا أَو كلاكما لتوشكان أَن تريا الرجل من ثبج الْمُسلمين يَعْنِي من وسط قراء الْقُرْآن على لِسَان مُحَمَّد صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قد أَعَادَهُ وأبداه فأحل حَلَاله وَحرم حرَامه وَنزل عِنْد مَنَازِله لَا يحور مِنْهُ إِلَّا كَمَا يحور رَأس الْحمار الْمَيِّت
قَالَ فَبَيْنَمَا نَحن كَذَلِك إِذْ طلع علينا شَدَّاد بن أَوْس وعَوْف بن مَالك رَضِي الله عَنْهُمَا فَجَلَسَا إِلَيْهِ فَقَالَ شَدَّاد إِن أخوف مَا أَخَاف عَلَيْكُم أَيهَا النَّاس لما سَمِعت من رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول من الشَّهْوَة الْخفية والشرك فَقَالَ عبَادَة بن الصَّامِت وَأَبُو الدَّرْدَاء اللَّهُمَّ غفرا أولم يكن رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قد حَدثنَا أَن الشَّيْطَان قد يئس أَن يعبد فِي جَزِيرَة الْعَرَب فَأَما الشَّهْوَة الْخفية فقد عرفناها هِيَ شهوات الدُّنْيَا من نسائها وشهواتها فَمَا هَذَا الشّرك الَّذِي تخوفنا بِهِ يَا شَدَّاد فَقَالَ شَدَّاد أَرَأَيْتُم لَو رَأَيْتُمْ رجلا يُصَلِّي لرجل أَو يَصُوم لرجل أَو يتَصَدَّق لَهُ لقد أشرك قَالَ عَوْف بن مَالك عِنْد ذَلِك أَفلا يعمد الله إِلَى مَا ابْتغِي بِهِ وَجهه من ذَلِك الْعَمَل كُله فَيقبل مَا خلص لَهُ ويدع مَا أشرك بِهِ قَالَ شَدَّاد عِنْد ذَلِك فَإِنِّي سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول إِن الله عز وَجل قَالَ أَنا خير قسيم لمن أشرك بِي من أشرك بِي شَيْئا فَإِن جسده وَعَمله وقليله وَكَثِيره لشَرِيكه الَّذِي أشرك بِهِ أَنا عَنهُ غَنِي
رَوَاهُ أَحْمد وَشهر يَأْتِي ذكره وَرَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ وَلَفظه عَن عبد الرَّحْمَن بن غنم أَنه كَانَ
فِي مَسْجِد دمشق مَعَ نفر من أَصْحَاب النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فيهم معَاذ بن جبل فَقَالَ عبد الرَّحْمَن يَا أَيهَا النَّاس إِن أخوف مَا أَخَاف عَلَيْكُم الشّرك الْخَفي فَقَالَ معَاذ بن جبل اللَّهُمَّ غفرا أوما سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول حَيْثُ وَدعنَا إِن الشَّيْطَان قد يئس أَن يعبد فِي جزيرتكم هَذِه وَلَكِن يطاع فِيمَا تَحْتَقِرُونَ من أَعمالكُم فقد رَضِي بذلك فَقَالَ عبد الرَّحْمَن أنْشدك الله يَا معَاذ أما سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول من صَامَ رِيَاء فقد أشرك وَمن تصدق رِيَاء فقد أشرك
فَذكر الحَدِيث وَإِسْنَاده لَيْسَ بالقائم وَرَوَاهُ أَحْمد أَيْضا وَالْحَاكِم من رِوَايَة عبد الْوَاحِد بن زيد عَن عبَادَة بن نسي قَالَ دخلت على شَدَّاد بن أَوْس فِي مُصَلَّاهُ وَهُوَ يبكي فَقلت يَا أَبَا عبد الرَّحْمَن مَا الَّذِي أبكاك قَالَ حَدِيث سمعته من رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم
قلت وَمَا هُوَ قَالَ بَيْنَمَا أَنا عِنْد رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِذْ رَأَيْت بِوَجْهِهِ أمرا سَاءَنِي فَقلت بِأبي وَأمي يَا رَسُول الله مَا الَّذِي أرى بِوَجْهِك
قَالَ أمرا أتخوفه على أمتِي الشّرك وشهوة خُفْيَة
قلت وتشرك أمتك من بعْدك قَالَ يَا شَدَّاد إِنَّهُم لَا يعْبدُونَ شمسا وَلَا وثنا وَلَا حجرا وَلَكِن يراؤون النَّاس بأعمالهم
قلت يَا رَسُول الله الرِّيَاء شرك هُوَ قَالَ نعم
قلت فَمَا الشَّهْوَة الْخفية قَالَ يصبح أحدهم صَائِما فتعرض لَهُ شَهْوَة من شهوات الدُّنْيَا فيفطر
قَالَ الْحَاكِم وَاللَّفْظ لَهُ صَحِيح الْإِسْنَاد
قلت كَيفَ وَعبد الْوَاحِد بن زيد الزَّاهِد مَتْرُوك وَرَوَاهُ ابْن مَاجَه مُخْتَصرا من رِوَايَة رواد بن الْجراح عَن عَامر بن عبد الله عَن الْحسن بن ذكْوَان عَن عبَادَة بن نسي عَن شَدَّاد قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِن أخوف مَا أَخَاف على أمتِي الْإِشْرَاك بِاللَّه أما إِنِّي لست أَقُول يعْبدُونَ شمسا وَلَا قمرا وَلَا وثنا وَلَكِن أعمالا لغير الله وشهوة خُفْيَة
وعامر بن عبد الله لَا يعرف ورواد يَأْتِي الْكَلَام عَلَيْهِ إِن شَاءَ الله تَعَالَى وروى الْبَيْهَقِيّ عَن يعلى بن شَدَّاد عَن أَبِيه قَالَ كُنَّا نعد الرِّيَاء فِي زمن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم الشّرك الْأَصْغَر
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৪
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৫৪. হযরত কাসিম ইব্ন মুখায়মিরা (রা) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা) বলেছেনঃ যে আমলে সরিষা পরিমাণ রিয়া রয়েছে আল্লাহ্ তা'আলা তা কবুল করেন না।
(ইব্ন জারীর তাবারী মুরসাল সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেন।)
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
54 - وَعَن الْقَاسِم بن مخيمرة أَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ لَا يقبل الله عملا فِيهِ مِثْقَال حَبَّة من خَرْدَل من رِيَاء
رَوَاهُ ابْن جرير الطَّبَرِيّ مُرْسلا
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৫৫. হযরত আদী ইব্ন হাতিম (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: কিয়ামতের দিন লোকদের জান্নাতের কাছে আনয়নের নির্দেশ দেওয়া হবে, তাদেরকে জান্নাতের এত সন্নিকটে নিয়ে আসা হবে যে, তারা জান্নাতের সুবাস পেতে থাকবে এবং জান্নাতের বালাখানা এবং জান্নাতে জান্নাতীদের জন্য আল্লাহ্ যা নির্ধারণ করে রেখেছেন, সেগুলোর প্রতি দৃষ্টিপাত করবে। তাদের ডেকে বলা হবে, তাদেরকে জান্নাতের নিকট থেকে সরিয়ে নাও। তাদের জন্য জান্নাতে কোন হিস্সা নেই। তারা এমন লজ্জাবনত মস্তকে প্রত্যাবর্তনে বাধ্য হবে যে, পূর্ববর্তী কাউকে তেমনটি করতে হয়নি। তারা বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আপনার বন্ধুদের জন্য জান্নাতে যে নিয়ামতরাশি রেখেছেন তা আমাদের না দেখিয়ে যদি (আমাদের) জাহান্নামে প্রবেশ করাতেন, তাহলে তা আমাদের জন্য সহজতর হতো। তিনি বলবেন, আমি তোমাদের জন্য এরূপই ইচ্ছা পোষণ করেছি। তোমরা নির্জনে জঘন্যতম অপরাধ করতে আর যখন লোকের সাথে সাক্ষাত হতো নিজদেরকে আল্লাহভীরু বলে যাহির করতে। তোমাদের অন্তরের বিপরীত কর্মকাণ্ড করতে লোকদের দেখানোর জন্য আর ভয় করতে মানুষকে, আমাকে ভয় করতে না। মানুষকে বড় ভাবতে, আমাকে পরোয়া করতে না। লোকের ভয়ে তোমরা মন্দকাজ পরিহার করতে কিন্তু আমার ভয়ে নয়। আজ আমি তোমাদের সওয়াব থেকে বঞ্চিত করে মর্মান্তিক শাস্তি আস্বাদন করাব।
(ইমাম তাবরানী 'কাবীর' গ্রন্থে এবং ইমাম বায়হাকী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
55 - وَرُوِيَ عَن عدي بن حَاتِم قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يُؤمر يَوْم الْقِيَامَة بناس من النَّاس إِلَى الْجنَّة حَتَّى إِذا دنوا مِنْهَا واستنشقوا رِيحهَا ونظروا إِلَى قُصُورهَا وَمَا أعد الله
لاهلها فِيهَا نُودُوا أَن اصرفوهم عَنْهَا لَا نصيب لَهُم فِيهَا فيرجعون بحسرة مَا رَجَعَ الْأَولونَ بِمِثْلِهَا فَيَقُولُونَ رَبنَا لَو أدخلتنا النَّار قبل أَن ترينا مَا أريتنا من ثوابك وَمَا أَعدَدْت فِيهَا لاوليائك كَانَ أَهْون علينا قَالَ ذَاك أردْت بكم كُنْتُم إِذا خلوتم بارزتموني بالعظائم وَإِذا لَقِيتُم النَّاس لقيتموهم مخبتين تراؤون النَّاس بِخِلَاف مَا تعطوني من قُلُوبكُمْ هبتم النَّاس وَلم تهابوني وأجللتم النَّاس وَلم تجلوني وتركتم للنَّاس وَلم تتركوني الْيَوْم أذيقكم أَلِيم الْعَذَاب مَعَ مَا حرمتم من الثَّوَاب
رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْكَبِير وَالْبَيْهَقِيّ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৬
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৫৬. হযরত আবুদ-দারদা (রা) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন: কোন আমলের ইখলাস ও নিষ্ঠা স্বয়ং আমল থেকে উত্তম। যদি খালিসভাবে কোন সৎকাজ গোপনে করে, তাকে সত্তর গুণ সওয়াব দেওয়া হয়। তারপর শয়তান তার নেক আমলকে লোকালয়ে আলোচনা করে এবং তা প্রকাশ করে দেয়। অতঃপর তার বাহ্যিক আমলের সওয়াব লেখা হয় এবং তাঁর বর্ধিত সওয়াব মিটিয়ে দেয়। তারপর সে কামনা করে যে, তা প্রচার করা হোক, প্রশংসা করা হোক। ফলে তার প্রকাশ্য সওয়াব বিনষ্ট করে দেওয়া হয় এবং লিখা হয় রিয়া। অতএব ঐ ব্যক্তি মুত্তাকী যে তার নিজ দ্বীনের হিফাযত করে। কেননা রিয়া হল শিরক। (বায়হাকী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, বাকিয়া এককভাবে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তাঁর শায়খগণ অজ্ঞাত।)
[হাফিয আবদুল আযীম (র) বলেনঃ] আমার ধারণায় হাদীসটি মাওকূফ। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
56 - وروى عن أبي الدرداء عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: إن الاتقاء (10) على العمل أشدُّ من العمل، وإن الرجلُ ليعمل العمل فيكتبُ له عمل صالح معمول به في السر علانية ويُمْحى تضيف أجره كله، ثم لا يزال به الشيطان حتى يذكره للناس الثانية، ويُحِبُّ أن يُذْكَرَ به، ويُحْمَدَ عليه فَيُمْحى من العلانية، ويُكْتَبَ رياء، فاتقى الله امرؤ صان دينه، وإن الرياء شرك.
رواه البيهقى، وقال: هذا من أفراد بقية عن شيوخه المجهولين.
قال الحافظ عبد العظيم: أظنه موقوفاً. والله أعلم.
হাদীস নং: ৫৭
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৫৭. হযরত আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন: শেষ যামানায় আমার উম্মত তিন দলে বিভক্ত হয়ে পড়বে। একদল নিষ্ঠার সাথে ইবাদত করবে। আরেক দল আল্লাহর ইবাদত করবে লোক দেখানোর জন্য। আরেক দল ইবাদত করবে লোকদের কাছ থেকে সম্পদ আহরণের উদ্দেশ্যে। কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাদের একত্রিত করবেন এবং যে ব্যক্তি লোকদের নিকট থেকে সম্পদ আহরণ করত, তাকে জিজ্ঞেস করবেন, তুই আমার মাহাত্ম্য ও মর্যাদার শপথ করে বল, আমার ইবাদত দ্বারা তোর অভীষ্ট কি ছিল? সে বলবে, আপনার মাহাত্ম্য ও বুযর্গীর শপথ, আমি লোকদের নিকট থেকে সম্পদ পাওয়ার উদ্দেশ্যে ইবাদত করতাম। তিনি বলবেন, তোর সম্পদ তোর কোন কাজে আসেনি। তোমরা (ফিরিশতাকুল!) তাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাও। তারপর তিনি রিয়াকার ইবাদতকারীকে বলবেন, তুই আমার মাহাত্ম্য ও বুযর্গীর শপথ করে বল, আমার ইবাদতের দ্বারা তোর অভীষ্ট কি ছিল? সে বলবে, আপনার মাহাত্ম্য ও বুযর্গীর শপথ, লোক দেখানো এর উদ্দেশ্য ছিল। তিনি বলবেন, তাই তোর ইবাদতের কানাকড়িও আমার কাছে পৌঁছেনি। তোমরা (ফিরিশতাকুল) তাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাও! তারপর তিনি খালিস ইবাদতকারীকে বলবেন, আমার মাহাত্ম্য ও বুযর্গীর শপথ করে বল, আমার ইবাদতের দ্বারা তোমার অভীষ্ট কি ছিল? সে বলবে, আপনার মাহাত্ম্য ও বুযর্গীর শপথ করে বলছি, আপনিই সর্বাধিক জ্ঞাত যে, আমি কার উদ্দেশ্যে ইবাদত করেছি। আমি আপনার উদ্দেশ্যে এবং আপনার সন্তুষ্টির জন্যই ইবাদত করেছি। তিনি বলবেন, আমার বান্দা যথার্থই বলেছে। তোমরা তাকে জান্নাতে নিয়ে যাও।
(এই হাদীসটি ইমাম তাবরানী (র) তাঁর 'আওসাত' গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন, যা উবায়দ ইবন ইসহাক আত্তার (র)-এর কয়েকটি রিওয়ায়াতের একটি। তাঁর অপরাপর বর্ণনাগুলো বিশ্বস্ত সনদে বর্ণিত। এ হাদীসটি ইমাম বায়হাকী (র) হযরত আনাস ইব্ন মালিক (রা)-এর মুক্ত দাস থেকে বর্ণনা করেছেন, যার নাম তিনি উল্লেখ করেন নি। হযরত আনাস (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন... অতঃপর তিনি হাদীসটি সংক্ষেপে বর্ণনা করেন।)
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
57 - وَعَن أنس بن مَالك رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِذا كَانَ آخر الزَّمَان صَارَت أمتِي ثَلَاث فرق فرقة يعْبدُونَ الله خَالِصا وَفرْقَة يعْبدُونَ الله رِيَاء وَفرْقَة يعْبدُونَ الله ليستأكلوا بِهِ النَّاس فَإِذا جمعهم الله يَوْم الْقِيَامَة قَالَ للَّذي يستأكل النَّاس بعزتي وَجَلَالِي مَا أردْت بعبادتي فَيَقُول وَعزَّتك وجلالك أستأكل بِهِ النَّاس قَالَ لم ينفعك مَا جمعت انْطَلقُوا بِهِ إِلَى النَّار ثمَّ يَقُول للَّذي كَانَ يعبده رِيَاء بعزتي وَجَلَالِي مَا أردْت بعبادتي قَالَ بعزتك وجلالك رِيَاء النَّاس قَالَ لم يصعد إِلَيّ مِنْهُ شَيْء انْطَلقُوا بِهِ إِلَى النَّار ثمَّ يَقُول للَّذي كَانَ يعبده خَالِصا بعزتي وَجَلَالِي مَا أردْت بعبادتي قَالَ بعزتك وجلالك أَنْت أعلم بذلك من أردْت بِهِ أردْت بِهِ ذكرك ووجهك قَالَ صدق عَبدِي انْطَلقُوا بِهِ إِلَى الْجنَّة
رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْأَوْسَط من رِوَايَة عبيد بن إِسْحَاق الْعَطَّار وَبَقِيَّة رُوَاته ثِقَات وَالْبَيْهَقِيّ عَن مولى أنس وَلم يسمه قَالَ قَالَ أنس قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَذكره بِاخْتِصَار
হাদীস নং: ৫৮
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৫৮. হযরত আনাস ইব্ন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: কিয়ামতের দিন এমন আমলসমূহ আল্লাহর সম্মুখে পেশ করা হবে, যা থাকবে মোহরাঙ্কিত। আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন, তার এই আমল ছুঁড়ে মার এবং এগুলো কবুল কর। ফিরিশতাগণ বলবেন, হে পরওয়ারদিগার! আপনার মাহাত্ম্য ও বুযর্গীর কসম, আমরা তো কল্যাণ ও নেক আমলই দেখছি। আল্লাহ্ বলবেন, সে এগুলো আমি ব্যতীত অপরের সন্তুষ্টি বিধানের উদ্দেশ্যে করেছে। যে আমল আমার উদ্দেশ্যে করা হয়নি, তা আমি কবুল করব না।
(ইমাম বাযযার এবং তাবরানী দুটি সনদে এ হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। সনদ দু'টির একটি সহীহ সনদে বর্ণিত। বায়হাকীও হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
58 - وَعنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يُؤْتى يَوْم الْقِيَامَة بصحف مختمة فتنصب بَين
يَدي الله تَعَالَى فَيَقُول تبَارك وَتَعَالَى ألقوا هَذِه واقبلوا هَذِه فَتَقول الْمَلَائِكَة وَعزَّتك وجلالك مَا رَأينَا إِلَّا خيرا فَيَقُول الله عز وَجل إِن هَذَا كَانَ لغير وَجْهي وَإِنِّي لَا أقبل إِلَّا مَا ابْتغِي بِهِ وَجْهي
رَوَاهُ الْبَزَّار وَالطَّبَرَانِيّ بِإِسْنَادَيْنِ رُوَاة أَحدهمَا رُوَاة الصَّحِيح وَالْبَيْهَقِيّ
হাদীস নং: ৫৯
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ রিয়া সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন এবং রিয়ার আশংকাকালীন দু'আ
৫৯. হযরত মু'আয ইব্ন জাবাল (রা) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি বলল, আমাকে এমন একটি হাদীস শোনান যা আপনি রাসুলুল্লাহ্ (সা) থেকে শুনেছেন। সে বলল, হযরত মু'আয (রা) কেঁদে উঠলেন। এমনকি আমি মনে করলাম, তিনি বুঝি আর কান্না থামাবেন না। তারপর তিনি কান্না বন্ধ করলেন এবং বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা) -কে আমাকে লক্ষ্য করে বলতে শুনেছিঃ হে মু'আয! আমি তাঁকে বললাম, আমার পিতামাতা আপনার জন্য কুরবান, আমি হাযির আছি। তিনি বললেনঃ আমি তোমাকে একটি হাদীস শোনাব, যদি তুমি তা সংরক্ষণ কর, তাহলে উপকৃত হবে আর যদি সংরক্ষণ না কর, তাহলে কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে দলীল পেশ করতে পারবে না। হে মু'আয! আল্লাহ্ তা'আলা আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টির পূর্বে সাতজন ফিরিশতাকে সৃষ্টি করেন। তারপর আসমানসমূহ সৃষ্টি করেন। সাতটি আসমানের প্রত্যেকটির দরজায় একজন করে ফিরিশতাকে পাহারাদাররূপে নিযুক্ত করেন। তাদেরকে আল্লাহ্ তা'আলা বিপুল সম্মান দান করেন। তারপর আমল সংরক্ষণকারী ফিরিশতা বান্দার আমল নিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আকাশের উদ্দেশ্যে ঊর্ধ্বে আরোহণ করে। সূর্যের জ্যোতির ন্যায় রয়েছে তার জ্যোতি। এমনকি ফিরিশতা দুনিয়ার নিকটবর্তী আকাশে আরোহণ করেন এবং তিনি আমলের আধিক্য উল্লেখ করেন। (প্রথম আসমানে দায়িত্বে নিয়োজিত) ফিরিশতা আমল সংরক্ষণকারী ফিরিশতাকে বলেন, এই আমল আমলকারীর মুখের উপর ছুঁড়ে মার। আমি গীবতকারীর আমলসমূহকে প্রতিরোধের দায়িত্বে নিয়োজিত। আমার প্রতিপালক মানুষের গীবতকারীর আমল আমাকে অতিক্রম করে যাতে উপরের দিকে যেতে না পারে, তজ্জন্য আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, তারপর আমল সংরক্ষণকারী ফিরিশতা বান্দার আমল নিয়ে উপরের দিকে উঠে এবং এই আমলের পবিত্রতা বর্ণনা করে এবং এগুলোর আধিক্যের কথা উল্লেখ করে। এমনকি যখন সে দ্বিতীয় আসমানে গিয়ে পৌছে, তখন দ্বিতীয় আসমানে নিয়োজিত ফিরিশতা সংরক্ষণকারী ফিরিশতাকে বলেন, তোমরা থাম এবং এই আমলকারীর আমল তার মুখের উপর ছুঁড়ে মার। কেননা আমলকারী তার এ আমল পার্থিব সম্পদ অর্জনের উদ্দেশ্যে করেছে। আমার প্রতিপালক তার আমল যাতে আমাকে অতিক্রম করে উপরের দিকে যেতে না পারে, তার নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন। কেননা সে মানব সমাজে অহংকার করে বেড়াত। তারপর তিনি বলেন, এভাবে আমল সংরক্ষণকারী ফিরিশতা বান্দার দান, সিয়াম, সালাত ইত্যাদি নেক কার্যাবলী যা উজ্জ্বল তারকাসম উজ্জ্বল, যা সংরক্ষণকারী ফিরিশতাদের পুলকিত করে, তারা তৃতীয় আসমানের দিকে অতিক্রম করতে চেষ্টা করবে। তারপর তৃতীয় আসমানের দায়িত্বে নিয়োজিত ফিরিশতা বলবেন, তোমরা থাম এবং এই আমল আমলকারীর মুখের উপর ছুঁড়ে মার। আমি অহংকারীর আমল প্রতিরোধের দায়িত্বে নিয়োজিত ফিরিশতা। আমার প্রতিপালক অহংকারীর আমল আমাকে অতিক্রম করে যাতে যেতে না পারে তার প্রতিরোধ করার দায়িত্বে নিয়োজিত রেখেছেন। নিশ্চয়ই এই লোকটি লোকালয়ে জনসমাবেশে অহংকার করে বেড়াত। তিনি বলেন, আমল সংরক্ষণকারী ফিরিশতা কোন কোন নেককার বান্দার আমল যা আকাশের নক্ষত্ররাজির ন্যায় উজ্জ্বল, যার মধ্যে তাসবীহ, সালাত, হজ্জ, উমরা ইত্যাদি সৎকর্মাদির নূর চমকাতো, এমন কি যখন ফিরিশতা তা নিয়ে চতুর্থ আসমানের দিকে অতিক্রম করে যায়, তখন চতুর্থ আসমানের দায়িত্বে নিয়োজিত ফিরিশতা তাঁদের বলেন, তোমরা থাম এবং তার আমল তার মুখের উপর ছুঁড়ে মার এবং তার পিঠে এবং পেটে আঘাত কর। আমি হলাম আত্মবিমোহিতদের আমল প্রতিরোধের দায়িত্বপ্রাপ্ত। আমার প্রতিপালক আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে আত্মবিমোহিত ব্যক্তির আমল আমাকে অতিক্রম করে সামনে যেতে না পারে। এই লোকটি যখন আমল করত, তখন তার আমল তার কাছে খুবই পসন্দনীয় মনে হতো। তিনি আরো বলেন, বান্দার আমল-সংরক্ষণকারী ফিরিশতাগণ কোন কোন বান্দার আমল নিয়ে যখন পঞ্চম আসমানের দিকে অতিক্রম করে যায়, আর বান্দার সে আমলগুলো যেন ফুল সজ্জিতা নব বধূ তার স্বামীর নিকট যেমন মোহনীয় (তদ্রুপ আকর্ষণীয়)। অতঃপর পঞ্চম আসমানে নিয়োজিত ফিরিশতা বলবে, তোমরা থাম এবং এই আমল আমলকারীর মুখের উপর ছুঁড়ে মার এবং তার আমল তার কাঁধে ঝুলিয়ে দাও। আমি হিংসুকের আমল প্রতিরোধের দায়িত্বে নিয়োজিত। এই লোকটি ইলমে দীন শিক্ষাকারীর সাথে হিংসা করত অথচ সে তাদের মতই আমল করত। সেই সকল লোকদেরও হিংসা করত যাঁরা ইবাদত করে মর্যাদা লাভ করেছেন। অথচ সে নিজেও তাদের মধ্যে অবস্থান করত। আমার প্রতিপালক আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, হিংসুকের আমল আমাকে অতিক্রম করে যাতে উপরে উঠতে না পারে। তিনি আরো বলেন, বান্দার আমল সংরক্ষণকারী ফিরিশতা যেমন সালাত, যাকাত, হজ্জ, উমরা, সিয়াম ইত্যাদি আমল নিয়ে যখন ষষ্ঠ আসমানের দিকে অতিক্রম করে যায় তখন তার দায়িত্বে নিয়োজিত ফিরিশতা তাদের বলেন, তোমরা থাম এবং এই আমল আমলকারীর মুখের উপর তার আমল ছুঁড়ে মার। কেননা সে কখনো কোন মানুষের প্রতি দয়া প্রদর্শন করত না। যখন কেউ বিপদগ্রস্ত হতো তখন সে আনন্দিত হতো। আমি দয়ালু ফিরিশতা। আমার প্রতিপালক আমাকে এই (নিষ্ঠুর) ব্যক্তির আমল যাতে অতিক্রম করতে না পারে, তার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আমল সংরক্ষণকারী ফিরিশতা বান্দার আমল যেমন সিয়াম, সালাত, দান-সাদকা, ইজতিহাদ, তার তাকওয়া যার মধ্যে বজ্রের ন্যায় নিনাদ রয়েছে এবং যার উজ্জ্বলতা সূর্যের কিরণের ন্যায় দীপ্ত তিন হাজার ফিরিশতা তাকে নিয়ে যাচ্ছে, যখন তারা সপ্তম আসমানের দিকে অতিক্রম করে, তখন ঐ আসমানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফিরিশতা তাঁদের বলেন, তোমরা থাম এবং আমলকে তার মুখের উপর ছুঁড়ে মার এবং তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে আঘাত কর, তার অন্তরকে তালাবদ্ধ কর। নিশ্চয়ই আমি সর্বশক্তি নিয়োগ করে আমার প্রতিপালক হতে ঐ আমল রুখে দাঁড়াব যা আল্লাহর উদ্দেশ্যে করা হয়নি। নিশ্চয়ই সে তার আমলের দ্বারা গায়রুল্লাহর সন্তুষ্টির কামনা করেছে। সে ফিকহবিদদের নিকট মর্যাদা লাভ, আলিম সমাজের নিকট আলোচিত ব্যক্তি হওয়া এবং শহরে নগরে খ্যাতিমান হওয়ার উদ্দেশ্যে আমল করেছে। আমার প্রতিপালক আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন তার আমল আমাকে অতিক্রম করে অন্যের কাছে পৌছতে না পারে। যে আমল আল্লাহর উদ্দেশ্যে না হয়ে অন্যের উদ্দেশ্যে হয়, তাই রিয়া। আর আল্লাহ তা'আলা রিয়াকারের আমল গ্রহণ করেন না।
তিনি বলেন, বান্দার আমল সংরক্ষণকারী ফিরিশতাগণ বান্দার সালাত, যাকাত, সিয়াম, হজ্জ, উমরা, সচ্চরিত্র মৌনতাগুণ এবং আল্লাহর যিকর ইত্যাদি আমল নিয়ে আসমানের দিকে উঠবেন। আর আসমানের ফিরিশতাগণ আমল এগিয়ে নেবে। এমনকি যাবতীয় প্রতিবন্ধকতা ডিঙ্গিয়ে তাঁরা আল্লাহর সম্মুখে গিয়ে উপস্থিত হবেন এবং তাঁরা তার সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবেন যে, সে একান্তভাবে আল্লাহর উদ্দেশ্যেই আমল করেছে। তিনি (নবী (সা) বলেন, আল্লাহ্ তাঁদের বলবেন? তোমরা (তো) আমার বান্দার আমলের সংরক্ষণকারী আর আমি তার সত্তার প্রতি তীক্ষ্ম দৃষ্টি দানকারী, সে এই আমল আমার উদ্দেশ্যে করেনি, বরং আমাকে ছাড়া অন্য কারো উদ্দেশ্যে করেছে। কাজেই তার প্রতি আমার অভিসম্পাত। অতঃপর সকল ফিরিশতা বলবেন, তার উপর আপনার এবং আমাদের অভিসম্পাত। প্রত্যেক আসমান বলবে, তার প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত এবং আমাদের অভিসম্পাত এবং তার প্রতি সপ্ত আসমান এবং তন্মধ্যস্থ সবাই তার প্রতি অভিসম্পাত বর্ষণ করে। হযরত মু'আয (রা) বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আপনি আল্লাহর রাসূল আর আমি তো মু'আয। তিনি বললেন: তুমি আমাকে অনুসরণ কর যদি তোমার আমল কমও হয়। হে মু'আয! কুরআন সংরক্ষণকারী তোমার ভাইয়ের প্রতি কটুক্তি করা থেকে তোমার জিহবা সংযত কর। তোমার পাপের বোঝা তোমার কাঁধেই বহন কর এবং তা তাদের প্রতি চাপিয়ে দিও না। তাদের নিন্দা করে নিজের প্রশংসা ও পবিত্রতা বর্ণনা করো না। তাদের মুকাবিলায় নিজকে শ্রেষ্ঠ মনে করো না। আখিরাতের আমলের মধ্যে দুনিয়ার আমল দাখিল করো না। জনসমাবেশে তুমি অহংকার করো না যাতে তোমার অশোভন আচরণকে মানুষ ভয় করে। তোমার কাছে কোন এক (১) ব্যক্তি থাকাকালে অন্য কারো সাথে কানে কানে কথা বলো না। মানুষের উপর নিজেকে বড় মনে করো না, তাহলে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ তোমা থেকে অপসৃত হবে। তুমি মানুষকে (দলে-উপদলে) বিভক্ত করো না, তাহলে কিয়ামতের দিন জাহান্নামের কুকুর তোমাকে টুকরা টুকরা করে ফেলবে, আল্লাহ্ তা'আলা বলেন: وَالنَّاشِطَاتِ نَشْطًا (যারা মৃদুভাবে বন্ধনমুক্ত করে দেয়)। হে মুআয। তুমি কি জান, তা কি? আমি বললাম, আমার পিতামাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোন, তা কি (ইয়া রাসূলাল্লাহ্!)? তিনি বললেন, জাহান্নামের কুকুর, তার গোশত ও হাড়গুলো ছিড়ে ছিড়ে আলাদা করবে। আমি বললাম, এই সকল গুণসম্পন্ন হওয়ার কার সামর্থ্য আছে এবং কে তা থেকে মুক্তি পাবে? তিনি বললেনঃ হে মু'আয এতো কেবল ঐ ব্যক্তির জন্য সহজ, যার জন্য আল্লাহ্ তা সহজ করে দেবেন। বর্ণনাকারী বলেন, এই হাদীসে বর্ণিত বিবরণের পর মু'আয (রা) অপেক্ষা আমি আর কাউকে ভয়ে এত বেশি কুরআন তিলাওয়াত করতে দেখিনি।
(ইব্ন মুবারক তাঁর যুহদ অধ্যায়ে এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)

(১)একাধিক ব্যক্তির উপস্থিতিতে অপর কোন এক ব্যক্তির সাথে একান্তে কথা বলতে আপত্তি নেই। কেবল এক ব্যক্তির উপস্থিতিতে তৃতীয় ব্যক্তির সাথে কানে কানে কথা বলায় তা ঐ ব্যক্তির মনোকষ্ট বা ভুল বোঝাবুঝির কারণ হতে পারে বিধায় তা নিষিদ্ধ। -সম্পাদক
كتاب الإخلاص
التَّرْهِيب من الرِّيَاء وَمَا يَقُوله من خَافَ شَيْئا مِنْهُ
59 - وَرُوِيَ عَن معَاذ رَضِي الله عَنهُ أَن رجلا قَالَ حَدثنِي حَدِيثا سمعته من رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ فَبكى معَاذ حَتَّى ظَنَنْت أَنه لَا يسكت ثمَّ سكت ثمَّ قَالَ سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ لي يَا معَاذ قلت لَهُ لبيْك بِأبي أَنْت وَأمي
قَالَ إِنِّي محدثك حَدِيثا إِن أَنْت حفظته نفعك وَإِن أَنْت ضيعته وَلم تحفظه انْقَطَعت حجتك عِنْد الله يَوْم الْقِيَامَة يَا معَاذ إِن الله خلق سَبْعَة أَمْلَاك قبل أَن يخلق السَّمَوَات وَالْأَرْض ثمَّ خلق السَّمَوَات فَجعل لكل سَمَاء من السَّبْعَة ملكا بوابا عَلَيْهَا قد جللها عظما فتصعد الْحفظَة بِعَمَل العَبْد من حِين أصبح إِلَى أَن أَمْسَى لَهُ نور كنور الشَّمْس حَتَّى إِذا صعدت بِهِ إِلَى السَّمَاء الدُّنْيَا ذكرته فكثرته فَيَقُول الْملك للحفظة اضربوا بِهَذَا الْعَمَل وَجه صَاحبه أَنا صَاحب الْغَيْبَة أَمرنِي رَبِّي أَن لَا أدع عمل من اغتاب النَّاس يجاوزني إِلَى غَيْرِي قَالَ ثمَّ تَأتي الْحفظَة بِعَمَل صَالح من أَعمال العَبْد فتمر فتزكيه وتكثره حَتَّى تبلغ بِهِ إِلَى السَّمَاء الثَّانِيَة فَيَقُول لَهُم الْملك الْمُوكل بالسماء الثَّانِيَة قفوا واضربوا بِهَذَا الْعَمَل وَجه صَاحبه إِنَّه أَرَادَ بِعَمَلِهِ هَذَا عرض الدُّنْيَا أَمرنِي رَبِّي أَن لَا أدع عمله يجاوزني إِلَى غَيْرِي إِنَّه كَانَ يفتخر على النَّاس فِي مجَالِسهمْ قَالَ وتصعد الْحفظَة بِعَمَل العَبْد يبتهج نورا من صَدَقَة وَصِيَام وَصَلَاة قد أعجب الْحفظَة فتجاوزوا بِهِ إِلَى السَّمَاء الثَّالِثَة فَيَقُول لَهُم الْملك الْمُوكل بهَا قفوا واضربوا بِهَذَا الْعَمَل وَجه صَاحبه أَنا ملك الْكبر أَمرنِي رَبِّي أَن لَا أدع عمله يجاوزني إِلَى غَيْرِي إِنَّه كَانَ يتكبر على النَّاس فِي مجَالِسهمْ
قَالَ وتصعد الْحفظَة بِعَمَل العَبْد يزهر كَمَا يزهر الْكَوْكَب الدُّرِّي لَهُ دوِي من تَسْبِيح وَصَلَاة وَحج وَعمرَة حَتَّى يجاوزوا بِهِ إِلَى السَّمَاء الرَّابِعَة فَيَقُول لَهُم الْملك الْمُوكل بهَا قفوا واضربوا بِهَذَا الْعَمَل وَجه صَاحبه اضربوا ظَهره وبطنه أَنا صَاحب الْعجب أَمرنِي رَبِّي أَن لَا أدع عمله يجاوزني إِلَى غَيْرِي إِنَّه كَانَ إِذا عمل عملا أَدخل الْعجب فِي عمله
قَالَ وتصعد الْحفظَة بِعَمَل العَبْد حَتَّى يجاوزوا بِهِ إِلَى السَّمَاء الْخَامِسَة كَأَنَّهُ الْعَرُوس المزفوفة إِلَى بَعْلهَا فَيَقُول لَهُم الْملك الْمُوكل بهَا قفوا واضربوا بِهَذَا الْعَمَل وَجه صَاحبه واحملوه على عَاتِقه أَنا ملك الْحَسَد إِنَّه كَانَ يحْسد النَّاس مِمَّن يتَعَلَّم وَيعْمل بِمثل عمله وكل من كَانَ يَأْخُذ فضلا من الْعِبَادَة يحسدهم وَيَقَع فيهم أَمرنِي رَبِّي أَن لَا أدع عمله يجاوزني إِلَى غَيْرِي قَالَ وتصعد الْحفظَة بِعَمَل العَبْد من صَلَاة وَزَكَاة وَحج وَعمرَة وَصِيَام فيجاوزون بِهِ إِلَى السَّمَاء السَّادِسَة فَيَقُول لَهُم الْملك الْمُوكل بهَا قفوا واضربوا بِهَذَا الْعَمَل وَجه صَاحبه إِنَّه كَانَ لَا يرحم إنْسَانا قطّ من عباد الله أَصَابَهُ بلَاء أَو ضرّ بل كَانَ يشمت بِهِ أَنا ملك الرَّحْمَة أَمرنِي رَبِّي أَن لَا أدع
عمله يجاوزني إِلَى غَيْرِي قَالَ وتصعد الْحفظَة بِعَمَل العَبْد إِلَى السَّمَاء السَّابِعَة من صَوْم وَصَلَاة وَنَفَقَة واجتهاد وورع لَهُ دوِي كَدَوِيِّ الرَّعْد وضوء كضوء الشَّمْس مَعَه ثَلَاثَة آلَاف ملك فيجاوزون بِهِ إِلَى السَّمَاء السَّابِعَة فَيَقُول لَهُم الْمُوكل بهَا قفوا واضربوا بِهَذَا الْعَمَل وَجه صَاحبه واضربوا جوارحه اقفلوا على قلبه إِنِّي أحجب عَن رَبِّي كل عمل لم يرد بِهِ وَجه رَبِّي إِنَّه أَرَادَ بِعَمَلِهِ غير الله إِنَّه أَرَادَ بِهِ رفْعَة عِنْد الْفُقَهَاء وذكرا عِنْد الْعلمَاء وصوتا فِي الْمَدَائِن أَمرنِي رَبِّي أَن لَا أدع عمله يجاوزني إِلَى غَيْرِي وكل عمل لم يكن لله خَالِصا فَهُوَ رِيَاء وَلَا يقبل الله عمل الْمرَائِي قَالَ وتصعد الْحفظَة بِعَمَل العَبْد من صَلَاة وَزَكَاة وَصِيَام وَحج وَعمرَة وَخلق حسن وَصمت وَذكر لله تَعَالَى وتشيعه مَلَائِكَة السَّمَوَات حَتَّى يقطعوا بِهِ الْحجب كلهَا إِلَى الله عز وَجل فيقفون بَين يَدَيْهِ وَيشْهدُونَ لَهُ بِالْعَمَلِ الصَّالح المخلص لله قَالَ فَيَقُول الله لَهُم أَنْتُم الْحفظَة على عمل عَبدِي وَأَنا الرَّقِيب على نَفسه إِنَّه لم يردني بِهَذَا الْعَمَل وَأَرَادَ بِهِ غَيْرِي فَعَلَيهِ لَعْنَتِي فَتَقول الْمَلَائِكَة كلهَا عَلَيْهِ لعنتك ولعنتنا وَتقول السَّمَوَات كلهَا عَلَيْهِ لعنة الله ولعنتنا وتلعنه السَّمَوَات السَّبع وَمن فِيهِنَّ
قَالَ معَاذ قلت يَا رَسُول الله أَنْت رَسُول الله وَأَنا معَاذ قَالَ اقتد بِي وَإِن كَانَ فِي عَمَلك تَقْصِير يَا معَاذ حَافظ على لسَانك من الوقيعة فِي إخوانك من حَملَة الْقُرْآن واحمل ذنوبك عَلَيْك وَلَا تحملهَا عَلَيْهِم وَلَا تزك نَفسك بذمهم وَلَا ترفع نَفسك عَلَيْهِم وَلَا تدخل عمل الدُّنْيَا فِي عمل الْآخِرَة وَلَا تتكبر فِي مجلسك لكَي يحذر النَّاس من سوء خلقك وَلَا تناج رجلا وعندك آخر
وَلَا تتعظم على النَّاس فَيَنْقَطِع عَنْك خير الدُّنْيَا وَالْآخِرَة وَلَا تمزق النَّاس فتمزقك كلاب النَّار يَوْم الْقِيَامَة فِي النَّار قَالَ الله تَعَالَى والناشطات نشطا النازعات 2 أَتَدْرِي مَا هن يَا معَاذ
قلت مَا هن بِأبي أَنْت وَأمي قَالَ كلاب فِي النَّار تنشط اللَّحْم والعظم
قلت بِأبي أَنْت وَأمي فَمن يُطيق هَذِه الْخِصَال وَمن ينجو مِنْهَا قَالَ يَا معَاذ إِنَّه ليسير على من يسره الله عَلَيْهِ
قَالَ فَمَا رَأَيْت أَكثر تِلَاوَة لِلْقُرْآنِ من معَاذ للحذر مِمَّا فِي هَذَا الحَدِيث
رَوَاهُ ابْن الْمُبَارك فِي كتاب الزّهْد عَن رجل لم يسمه عَن معَاذ وَرَوَاهُ
ابْن حبَان فِي غير الصَّحِيح وَالْحَاكِم وَغَيرهمَا وَرُوِيَ عَن عَليّ وَغَيره وَبِالْجُمْلَةِ فآثار الْوَضع ظَاهِرَة عَلَيْهِ فِي جَمِيع طرقه وبجميع أَلْفَاظه
হাদীস নং: ৬০
ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত
পরিচ্ছেদঃ অনুচ্ছেদ
৬০. বানু কাহিলের আবু আলী (র) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত আবূ মূসা আশআরী (রা) আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। তিনি বললেন, হে মানব মণ্ডলী। তোমরা এই শিরককে ভয় কর। কেননা তা পিপীলিকার পদধ্বনি অপেক্ষাও সুক্ষ্মতর। আবদুল্লাহ ইব্‌ন হাযান এবং কায়স ইব্ন মুযারিব তাঁর দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে যান। তাঁরা বললেন, আল্লাহর শপথ। তুমি যা বলেছ তার স্বপক্ষে দলীল আনবে নতুবা আমরা তোমাকে উমর (রা)-এর নিকট নিয়ে যাব, চাই তুমি যেতে চাও আর নাই চাও। তিনি বললেন, বরং আমি যা বলেছি তার স্বপক্ষে দলীল পেশ করব। একবার রাসূলুল্লাহ্ (সা) আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। তিনি বললেন, হে মানব মণ্ডলী! তোমরা এই শিরককে ভয় কর। কেননা তা পিপীলিকার পদধ্বনি অপেক্ষাও সূক্ষ্মতর। তখন যার বলাটা আল্লাহর অভিপ্রেত ছিল, সে ব্যক্তি বললেন, তাহলে আমরা কিভাবে পিপীলিকার পদধ্বনি অপেক্ষাও সূক্ষতর শিরক থেকে বাঁচবো ইয়া রাসূলুল্লাহ্! তিনি বললেন: তোমরা বলবে-
اللَّهُمَّ إِنَّا نَعُوذ بك من أَن نشْرك بك شَيْئا نعلمهُ ونستغفرك لما لَا نعلمهُ
“হে আল্লাহ্! আমরা যে শিরক সম্পর্কে অবহিত, তোমার সাথে এমন শিরক করা থেকে পানাহ চাই এবং যে শিরকের বিষয় আমরা অবহিত নই, তা থেকে আমরা মাগফিরাত কামনা করছি।"
(ইমাম আহমদ ও তাবারানী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আবু আলী পর্যন্ত তাঁর বর্ণনাকারীদের রিওয়ায়াত দলীল হিসেবে গ্রহণ করা বিশুদ্ধ। ইবন হিব্বান (র) আবূ আলী (র)-কে বিশ্বস্ত বলেছেন। তিনি বলেন, আমি কাউকে তাঁকে অভিযুক্ত করতে দেখিনি। আবু ই'য়ালা (র) হুযায়ফার অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন, তবে তিনি বলেছেন, (দু'আটি) প্রত্যহ তিনবার পাঠ করবে।)
كتاب الإخلاص
فصل
60 - عَن أبي عَليّ رجل من بني كَاهِل قَالَ خَطَبنَا أَبُو مُوسَى الْأَشْعَرِيّ فَقَالَ يَا أَيهَا النَّاس اتَّقوا هَذَا الشّرك فَإِنَّهُ أخْفى من دَبِيب النَّمْل فَقَامَ إِلَيْهِ عبد الله بن حزن وَقيس بن الْمضَارب
فَقَالَا وَالله لَنخْرجَنَّ مِمَّا قلت أَو لنأتين عمر مَأْذُونا لنا أَو غير مَأْذُون
فَقَالَ بل أخرج مِمَّا قلت خَطَبنَا رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم ذَات يَوْم فَقَالَ يَا أَيهَا النَّاس اتَّقوا هَذَا الشّرك فَإِنَّهُ أخْفى من دَبِيب النَّمْل
فَقَالَ لَهُ من شَاءَ الله أَن يَقُول وَكَيف نتقيه وَهُوَ أخْفى من دَبِيب النَّمْل يَا رَسُول الله قَالَ قُولُوا اللَّهُمَّ إِنَّا نَعُوذ بك من أَن نشْرك بك شَيْئا نعلمهُ ونستغفرك لما لَا نعلمهُ
رَوَاهُ أَحْمد وَالطَّبَرَانِيّ وَرُوَاته إِلَى أبي عَليّ مُحْتَج بهم فِي الصَّحِيح
وَأَبُو عَليّ وَثَّقَهُ ابْن حبَان وَلم أر أحدا جرحه وَرَوَاهُ أَبُو يعلى بِنَحْوِهِ من حَدِيث حُذَيْفَة إِلَّا أَنه قَالَ فِيهِ يَقُول كل يَوْم ثَلَاث مَرَّات
tahqiq

তাহকীক: