মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

مسند الامام الأعظم أبي حنيفة رحـ برواية الحصكفي

২৭. অসীয়ত ও ফারাইযের বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৫১৫
অসীয়ত ও ফারাইযের বর্ণনা
অসীয়ত ও ফারাইয়ের বর্ণনা
হাদীস নং- ৫১৫

হযরত সাআদ ইব্ন আবী ওয়াক্কাস (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমার অসুস্থতার সময় আমাকে দেখার জন্য আগমণ করেন। তখন আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আমার সমস্ত মাল ও সম্পদ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ওসীয়ত করতে চাই। তিনি বললেন না। আমি বললাম, তা হলে এর অর্ধেক। তিনি বললেন না। আমি বললাম, তাহলে এক তৃতীয়াংশ। তিনি বললেনঃ এক-তৃতীয়াংশও অনেক। স্বীয় পরিবারবর্গকে এ অবস্থায় ত্যাগ করে যেও না, যাতে তারা মানুষের কাছে হাত পেতে বেড়ায়।
অপর এক রিওয়ায়েতে আছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সাআদ ইব্ন আবী ওয়াক্কাস (রাযিঃ)-এর অসুস্থতার সময় তাকে দেখার জন্য তাঁর নিকট গমন করেন। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, তুমি কি তসীয়ত করেছ? হযরত সাআদ (রাযিঃ) বলেন, জ্বি হ্যাঁ! আমি আমার সমস্ত সম্পদ অসীয়ত করেছি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বারবার এর পরিমাণ হ্রাস করতে থাকেন। অবশেষে হযরত সাআদ (রাযিঃ) এক-তৃতীয়াংশের কথা বললেন। তখন নবী করীম (ﷺ) বললেনঃ এক-তৃতীয়াংশও অধিক।
অন্য এক রিওয়ায়েতে আছে, হযরত সাআদ (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমার অনুস্থতার কারণে আমাকে দেখার জন্য আগমণ করেন। আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল। আমি আমার সম্পূর্ণ সম্পদ ওসীয়ত করে যাচ্ছি। তিনি বললেন না। আমি তখন বললাম, তাহলে অর্ধেক। তিনি বললেন না। আমি পুনরায় বললাম, তাহলে এক-তৃতীয়াংশ। তিনি বললেনঃ এক-তৃতীয়াংশ, তবে এটাও অধিক। কেননা তোমার পরিবারবর্গকে সম্পদশালী রেখে যাওয়া উত্তম এর থেকে যে, তুমি তাদেরকে দরিদ্র রেখে যাবে এবং তারা লোকজনের কাছে সাহায্যের জন্য হাত প্রসারিত করবে।
كتاب الوصايا والفرائض
عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ أَبِيْهِ، عَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِيْ وَقَّاصٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، قَالَ: دَخَلَ عَلَيَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعُوْدُنِيْ فِيْ مَرَضِيْ، قُلْتُ: يَا رَسُوْلَ اللهِ! أُوْصِيْ بِمَالِيْ كُلِّهِ؟ قَالَ: «لَا»، قُلْتُ: فَنِصْفُهُ؟ قَالَ: «لَا»، قُلْتُ: فَثُلُثُهُ؟ قَالَ: «وَالثُّلُثُ كَثِيْرٌ، لَا تَدَعْ أَهْلَكَ يَتَكَفَّفُوْنَ النَّاسَ».
وَفِيْ رِوَايَةٍ: أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ عَلَى سَعْدٍ يَعُوْدُهُ، قَالَ: «أَوْصَيْتَ»؟ قَالَ: نَعَمْ، أَوْصَيْتُ بِمَالِيْ كُلِّهِ، فَلَمْ يَزَلْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُنَاقِصُهُ، حَتَّى قَالَ: «الثُّلُثُ وَالثُّلُثُ كَثِيْرٌ».
وَفِيْ رِوَايَةٍ: عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ أَبِيْهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنْ سَعْدٍ، قَالَ: دَخَلَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعُوْدُنِيْ، فَقُلْتُ: يَا رَسُوْلَ اللهِ! أُوْصِيْ بِمَالِيْ كُلِّهِ؟ قَالَ: «لَا»، قُلْتُ: فَبِالنِّصْفِ؟ قَالَ: «لَا»، قُلْتُ: فَبِالثُّلُثِ؟ قَالَ: «فَبِالثُّلُثِ وَالثُّلُثُ كَثِيْرٌ، إِنْ تَدَعْ أَهْلَكَ بِخَيْرٍ، خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَدَعَهُمْ عَالَةً، وَيَتَكَفَّفُوْنَ النَّاسَ»
হাদীস নং: ৫১৬
অসীয়ত ও ফারাইযের বর্ণনা
অসীয়ত ও ফারাইয়ের বর্ণনা
হাদীস নং-৫১৬

হযরত জাবির ইব্ন আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন : মুসলমান একজন নাসারা বা খ্রীস্টানের উত্তরাধিকার হতে পারবে না। তবে যদি নাসারা মুসলমানের গোলাম অথবা দাসী হয়।
كتاب الوصايا والفرائض
عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَرِثُ الْمُسْلِمُ النَّصْرَانِيَّ، إِلَّا أَنْ يَكُوْنَ عَبْدَهُ أَوْ أَمَتَهُ»
হাদীস নং: ৫১৭
অসীয়ত ও ফারাইযের বর্ণনা
অসীয়ত ও ফারাইয়ের বর্ণনা
হাদীস নং-৫১৭

হযরত ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: তোমরা মীরাসের নির্ধারিত অংশ এর হকদারকে প্রদান কর এবং যা অতিরিক্ত থাকে, তা নিকট-আত্মীয়কে (আসাবা হিসেবে, প্রাপ্ত বয়স্ক হোক অথবা অপ্রাপ্ত) দিয়ে দাও।
كتاب الوصايا والفرائض
عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلْحِقُوا الْفَرَائِضَ بِأَهْلِهَا، فَمَا بَقِيَ فَهُوَ لِأَوْلَى رَجُلٍ ذَكَرٍ»
হাদীস নং: ৫১৮
অসীয়ত ও ফারাইযের বর্ণনা
অসীয়ত ও ফারাইয়ের বর্ণনা
হাদীস নং-৫১৮

হযরত আব্দুল্লাহ ইব্ন শাদ্দাদ (রাহঃ) থেকে বর্ণিত,হযরত হামযা (রাযিঃ)-এর কন্যা একটি গোলাম আযাদ করেন। এরপর উক্ত গোলাম মৃত্যুবরণ করে এবং সে একটি কন্যা সন্তান রেখে যায়। তখন নবী করীম (ﷺ) তার কন্যাকে তার সম্পত্তির অর্ধাংশ প্রদান করেন এবং হামযা (রাযিঃ)-এর কন্যাকে বাকী অর্ধেক দান করেন।
كتاب الوصايا والفرائض
عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَدَّادٍ: أَنَّ ابْنَةً لِحَمْزَةَ أَعْتَقَتْ مَمْلُوكًا، فَمَاتَ، فَتَرَكَ ابْنَةً، فَأَعْطَى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الِابْنَةَ النِّصْفَ، وَأَعْطَى ابْنَةَ حَمْزَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا النِّصْفَ "
হাদীস নং: ৫১৯
অসীয়ত ও ফারাইযের বর্ণনা
অসীয়ত ও ফারাইয়ের বর্ণনা
হাদীস নং-৫১৯

হযরত আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: যখন এ আয়াত নাযিল হলো :
إِنَّ الَّذِينَ يَأْكُلُونَ أَمْوَالَ الْيَتَامَى ظُلْمًا إِنَّمَا يَأْكُلُونَ فِي بُطُونِهِمْ نَارًا وَسَيَصْلَوْنَ سَعِيرًا
“নিশ্চয়ই যারা অন্যায়ভাবে ইয়াতীমের সম্পদ খেয়ে থাকে অর্থাৎ ভোগ করে, তারা যেন তাদের পেটে অগ্নি খেল এবং তারা অচিরেই দোযখে প্রবেশ করবে।”
সুতরাং যারা ইয়াতীমের সম্পদ দেখাশোনা, রক্ষণাবেক্ষণ করে, তারা যেন সমস্ত মাল থেকে দূরে থাকে, এ মাল হিফাযত করা তাদের উপর কঠিন হয়ে যায়। কেননা তারা এ ব্যাপারে নিজের পাপে লিপ্ত হওয়ার ভয় করে। তখন আল্লাহ তা'আলা এ আয়াত নাযিল করেনঃ وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْيَتَامَى قُلْ إِصْلَاحٌ لَهُمْ خَيْرٌ وَإِنْ تُخَالِطُوهُمْ الآية তারা আপনার নিকট ইয়াতীমদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। আপনি তাদেরকে বলুন, তাদের জন্য মীমাংসা করা হলো উত্তম। যদি (ব্যয় ইত্যাদিতে) তাদের সাথে মিলে মিশে থাকে, তা হলে তারা তোমাদের ভাই।"
كتاب الوصايا والفرائض
عَنِ الْهَيْثَمِ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: " لَمَّا نَزَلَتْ: {إِنَّ الَّذِينَ يَأْكُلُونَ أَمْوَالَ الْيَتَامَى ظُلْمًا إِنَّمَا يَأْكُلُونَ فِي بُطُونِهِمْ نَارًا وَسَيَصْلَوْنَ سَعِيرًا} [النساء: 10] عَدَلَ مَنْ كَانَ يَعُولُ أَمْوَالَ الْيَتَامَى، فَلَمْ يَقْرَبُوهَا وَشَقَّ عَلَيْهِمْ حِفْظُهَا، وَخَافُوا الْإِثْمَ عَلَى أَنْفُسِهِمْ، فَنَزَلَتِ الْآيَةُ، فَخَفَّفَ عَلَيْهِمْ: {وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْيَتَامَى قُلْ إِصْلاحٌ لَهُمْ خَيْرٌ وَإِنْ تُخَالِطُوهُمْ فَإِخْوَانُكُمْ} [البقرة: 220] الْآيَةُ "