মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

২৭. অসীয়ত ও ফারাইযের বর্ণনা

হাদীস নং: ৫১৬
অসীয়ত ও ফারাইয়ের বর্ণনা
হাদীস নং-৫১৬

হযরত জাবির ইব্ন আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন : মুসলমান একজন নাসারা বা খ্রীস্টানের উত্তরাধিকার হতে পারবে না। তবে যদি নাসারা মুসলমানের গোলাম অথবা দাসী হয়।
عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَرِثُ الْمُسْلِمُ النَّصْرَانِيَّ، إِلَّا أَنْ يَكُوْنَ عَبْدَهُ أَوْ أَمَتَهُ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

মুসলমান ও কাফিরের মধ্যে উত্তরাধিকারের মাসয়ালার ব্যাখ্যা হলো এই যে, কাফির মুসলমানের উত্তরাধিকার হতে পারবে না, এ ব্যাপারে সবার ঐকমত্য রয়েছে। কিন্তু মুসলমান কাফিরের উত্তরাধিকার হতে পারবে কিনা এ বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। জমহুর সাহাবা,তাবেঈন ও চারজন ইমামের মত হলো এই যে, মুসলমান কাফিরের উত্তরাধিকার হতে পারবে না। তাঁদের দলীল বর্ণিত হাদীসসহ এরূপ আরো হাদীসসমূহ যাতে সুস্পষ্টভাবে উত্তরাধিকারের ব্যাপারে নিষেধ করা হয়েছে। তবে নাসারা পুরুষ যদি গোলাম হয় অথবা মহিলা যদি দাসী হয়, তবে (এটা হতে পারবে)।
হযরত মুয়ায ইব্ন জাবাল, হযরত মুআবিয়া, হযরত সাঈদ ইব্ন মুসাইয়্যেব (রা) এবং মাসরূক (র) এদের মতে ওয়ারিস হতে পারবে। তাঁরা দলীল হিসেবে এ হাদীস পেশ করেনঃ الإسلام يعلوا ولا يعلى (ইসলাম বিজয়ী হয়, পরাজিত হয় না)। কিন্তু এ দলীল অত্যন্ত দুর্বল। কেননা এ হাদীসে শুধু ইসলামের ফযীলতের উল্লেখ রয়েছে, উত্তরাধিকারের ব্যাপারে নয়। পক্ষান্তরে প্রথমোক্ত মাযহাবের পেশকৃত হাদীসে উত্তরাধিকারের বিষয়ে স্পষ্টভাবে নিষেধ করা হয়েছে। এছাড়া ইরশাসে সারীয়া (ارشاد ساريه) গ্রন্থে বলা হয়েছে, নাসারা যদি মুসলমানের গোলাম হয়, তাহলে নাসারার মৃত্যুর পর মুসলমান মনিব তার সম্পদের হকদার বা মালিক এ জন্য হয়ে থাকে যে, গোলামের মালের মালিক সে নয়, বরং প্রকৃত অর্থে তা অভিভাবকের। সুতরাং মুসলমান অভিভাবক হওয়ার কারণে তার মালের দাবিদার হয়ে থাকে, উত্তরাধিকার হিসেবে নয়।
মুসনাদে আবু হানীফা রহঃ - হাদীস নং ৫১৬ | মুসলিম বাংলা