প্রবন্ধ
সুন্নী নামধারী বক্তাদের ভন্ডামী বিধর্মীদের ইসলাম গ্রহণে প্রধান বাঁধা!
এক ধর্ম থেকে অন্য ধর্মে মানুষ কেন ডাইভার্ট হয়?
ক) বৈশিষ্ট্য দেখে।
খ) সৌন্দর্য দেখে।
গ) আখলাক আমল দেখে।
ঘ) স্বতন্ত্র ইবাদত পদ্ধতি দেখে।
ঙ) ভদ্রতা, সভ্যতা ও অনুপম কর্মপদ্ধতিতে মুগ্ধ হয়ে।
চ) আকীদার বিশুদ্ধতা ও বাস্তবসম্মত ঐশী কথায় বিমোহিত হয়ে।
ছ) আবেগ উচ্ছাসে পরিমিতিবোধ এবং পরিশীলিত বিশ্বাসের ক্ষুরধার সম্মোহনী শক্তি দেখে।
ইত্যাদি সৌন্দর্য যে ধর্মে পরিস্ফুটিত থাকে। সেই ধর্মের প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হয়। নিজের অসাড় ধর্মকে বিসর্জন করে ঐশী চিরসুন্দর বাস্তব ধর্মের দীক্ষা গ্রহণে আগ্রহী হয়। সত্য ধর্মে গ্রহণে শত বাঁধা আসলেও তা হাসিমুখে বরণ করে নিতে প্রস্তুত থাকে।
যে আকর্ষণে কোটি বিধর্মী যুগ যুগ ধরে ইসলাম নামক চির ভাস্বর শ্বশত ধর্মের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে।
আমাদের পূর্বসূরীরাও ছিল এক সময় কুফরীর অন্ধকারে। মূর্তি আর প্রকৃতি পূজায় নিমজ্জিত মানুষগুলো এক সময় তাওহীদী আকীদার ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছিল। কট্টর হিন্দুত্ববাদী পরিবার থেকে আবুল হুসাইন ভট্টচার্যরা ইসলাম গ্রহণ করে প্রমাণ করেছে এ ধর্ম অনন্য ধর্ম। স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যময় ধর্ম। পৌত্তলিকতা আর বহুদেবতার ধর্মের জগাখিচুরীমুক্ত একটি পবিত্র ধর্ম।
কিন্তু আফসোস। বড়ই আফসোস। আজ সে পবিত্র ধর্মের মাঝে পৌত্তলিকতার ছায়া ভয়াবহ রূপ পরিগ্রহ করছে। এক মালিক রেখে লক্ষ্য প্রভুর আর্চনার শিরকী ধর্মের অনুপ্রবেশ করছে কতিপয় নামধারী মুসলিমেরই হাত ধরে।
নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে একবার তাকিয়ে দেখুন সুন্নী নামধারী বক্তাদের বক্তৃতা এবং তাদের কার্যক্রম!
আল্লাহর কসম! আপনি হিন্দু ধর্মের কার্যক্রম আর এসব সুন্নীদের কার্যক্রমের মাঝে তিল পরিমাণ কোন পার্থক্য খুঁজে পাবেন না!
ক) খাজা গরীবে নেওয়াজ রহঃ, আব্দুল কাদীর জিলানী রহঃ ও অন্যান্য আল্লাহর ওলীদের সব কিছু করার ক্ষমতাশীন বলে সুরে সুরে বয়ান করা হচ্ছে।
হিন্দুদের দেবতাদের ক্ষমতার আকীদা আর ওলীদের ক্ষমতার আকীদার মাঝে পার্থক্য কী?
খ) কবরে পূজা চলছে। কালি পূজা আর দুর্গা পূজার মতই।
গ) হিন্দুদের মতই নানা রঙ বেরঙ এর বাহারী জামা গায়ে দিয়ে পাগড়ির উপর আঁকা হচ্ছে সিঁদূরের মতই চিহ্ন।
ঘ) জিকিরের নামে ড্যান্স পার্টি, উদ্দাম নাচুন, কুদুন।
ঙ) অশ্লীল ভঙ্গিমায় শামা গীত, বাউল গান।
চ) হিন্দুদের প্রসাদের নকলে তাবাররুক বিতরণ।
ছ) মূর্তির সামনে সেজদার নকলে পীরের পায়ে সেজদা।
জ) মূর্তির নামে বলির নকলে পীরের নামে প্রাণী মান্নত।
ঝ) মূর্তির নামে পূজার নকলে উরস উদযাপন।
ঞ) হিন্দুদের জন্মাষ্টমী আর খৃষ্টানদের বড়দিনের নকলে মীলাদুন্নবী উদযাপন।
চ) মঠ মন্দিরে বাতি প্রজ্জলন নকল করে পীরের কবরে বাতি প্রজ্জলন চাদর পরিবর্তন রুসুম।
ছ) হিন্দুদের ফুুলখানীর নকলে কুলখানী আর চেহলাম।
জ) খৃষ্টানদের ত্রিত্ববাদের আকীদার অনুসরণে আল্লাহ ও নবীকে এক জাত সাব্যস্ত করা।
ঝ) মন্দীরে আর্জি নিয়ে যাবার নকলে মাজারে উদ্দেশ্য পূরণের আব্দার।
এক কথায় এ উপমহাদেশে যত বিধর্মী আছে, তারা যা করে সুন্নী নামধারী মুসলিমগুলো হুবহু তা’ই করে। ইসলাম ধর্মের আলাদা কোন বৈশিষ্ট্যই বিধর্মীদের কাছে প্রতিভাত হতে দেয় না।
একজন হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান যখন দেখে, তাদের ধর্মে যা আছে, ইসলাম ধর্মেও একই রুসুম রেওয়াজ, একই আকীদা, তাহলে সে কেন ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হবে?
একই টাইপের আমল ও আকীদা দেখে সে কেন তার ধর্ম পাল্টাবে?
বরং এসব সুন্নী নামধারীদের অশ্লীল জিকিরের যে হালাত, তা দেখে যে কোন ভদ্র ঘরের সন্তান লজ্জায় চোখ ফিরিয়ে নিবে। বক্তৃতায় যে নোংরা ভাষা ব্যবহার করে তা দেখে যেকোন সভ্য মানুষ ঘৃণায় মুখ লুকাবে।
সেখানে ধর্মান্তর হয়ে ইসলাম গ্রহণ করাতো বহু দূরের কথা।
তাই।
এখনি সময়।
আওয়াজ তুলুন।
নিজের অবস্থান থেকে। নিজের সাধ্যের সবটুকু দিয়ে। হিন্দুত্ব্ববাদী সুন্নীদের ভন্ডামী থেকে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রক্তে ভেজা তাওহীদী দ্বীনকে হিফাযতে এগিয়ে আসুন।
এসব সুন্নী নামধারী হিন্দুত্ববাদীদের বয়কট করুন। ইসলামের স্বাতন্ত্র বৈশিষ্ট্য, তাওহীদী আহবান ছড়িয়ে দিন দিক থেকে দিগন্তে।
বাংলার আকাশ মুক্ত হোক ভন্ডামী হুহ হু থেকে। অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির নোংরা শামা গীতের বেহায়াপনা থেকে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সহায়। সাহস হারাবেন না। বিপদ আসবে। ধৈর্য ধরুন। হকের বিজয় হবেই ইনশাআল্লাহ।
মন্তব্য (...)
এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ
নাজাতের জন্য শিরকমুক্ত ঈমান ও বিদ'আতমুক্ত আমল জরুরী
[প্রদত্ত বয়ান থেকে সংগৃহীত] الحمد لله وكفى وسلام على عباده الذين اصطفى، أما بعد فأعوذ بالله من الشي...
মুফতী মনসূরুল হক দাঃ বাঃ
১০ নভেম্বর, ২০২৪
৬৭৮০ বার দেখা হয়েছে
চারদিনা-চল্লিশা শরয়ী বিধান
...
মুফতী আমীর হোসাইন
১১ নভেম্বর, ২০২৪
২০৬২৩ বার দেখা হয়েছে
কবরকে কেন্দ্র করে যে সকল কুসংস্কার সমাজে বহুল প্রচলিত
কবরকে ঘিরে কিছু ভুল বিশ্বাস, কুসংস্কার আমাদের সমাজে আছে। পৃথিবীর প্রায় অঞ্চলে এই কুসংস্কারগুলো না...
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী
১০ নভেম্বর, ২০২৪
৬১৪৬ বার দেখা হয়েছে
আখেরি চাহার শোম্বা কি উদযাপনের দিবস?
সর্বপ্রথম একটি দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, বহু মানুষ সফর মাসের শেষ বুধবারকে একটি বিশেষ দ...
মাসিক আলকাউসার
১১ নভেম্বর, ২০২৪
১৭৭৯১ বার দেখা হয়েছে
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন