আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৮৫৪৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ওযুর সময় ঘাড় মাসেহ করা কি বিদআত? ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত মুনাজাত কি বিদআত?

২৮ আগস্ট, ২০২১
92Q2+5WC

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


ওযুর মধ্যে ঘাড় বা গর্দান মাসাহ করা মুস্তাহাব। বিস্তারিত উত্তর নিচে দেয়া হল।

দোয়া ইবাদতের মূল মগজ। আল্লাহ তাআলার কাছে সব বিষয়ে দোয়া করা উচিত।
হাদীস শরীফে ফরয নামাযের পর দোয়া কবুলের ওয়াদা এসেছে।
অতএব এই মোক্ষম সুযোগ হাতছাড়া করা উচিৎ নয়।
তবে ফরয নামাযের পর সম্মিলিত দোয়া বাধ্যতামূলকভাবে করা, উচ্চস্বরে দোয়া করা বিদআতে পরিণত হয়। বিধায় নিজের প্রয়োজন গোপনে আল্লাহ তাআলার কাছে বলে দোয়া করবে।
এ সংক্রান্ত আরো বিস্তারিত জানতে মাসিক আলকাউসার এ দেখুন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেন:

ইসহাক মাহমুদ - মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

রেফারেন্স উত্তর :

প্রশ্নঃ ৭৭১৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ওযুর মধ্যে ঘাড় মাসেহ করা জায়েজ? কেননা অনেকের মতে বিদআত, আবার অনেকের মতে মুস্তাহাব

২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১
Faridpur

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


اَلسَّلاَمْ عَلَيْــــــــــــــــــــكُمْ وَ رَحْمَةُ اللہِ وَبَرَكَاتُهُ



ওযুর মধ্যে ঘাড় মাসেহ করা জায়েজ আছে।
যারা এটিকে বিদআত বলে থাকেন, এটা উক্ত ভাইরা না জানার কারণে বলে থাকেন। হাদীসে এ সংক্রান্ত বিধান এসেছে। বাকি এটি কোন জরুরী বিষয় নয়। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করা মোটেও উচিত নয়।

ওযুর মধ্যে ঘাড় বা গর্দান মাসাহ করা মুস্তাহাব।

এ সংক্রান্ত কিছু হাদীসঃ



عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: “مَنْ تَوَضَّأَ وَمَسَحَ بِيَدَيْهِ عَلَى عُنُقِهِ وُقِيَ الْغُلَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ”

হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি অজু করে এবং উভয় হাত দিয়ে গর্দান মাসাহ করে, তাহলে তাকে কিয়ামতের দিন [আযাবের] বেড়ি থেকে বাঁচানো হবে।

ইমাম আবুল হাসান ফারেছ রহঃ বলেছেনঃ

وَقَالَ هَذَا إنْ شَاءَ اللَّهُ حَدِيثٌ صَحِيحٌ

ইনশাআল্লাহ হাদীসটি সহীহ। [তালখীসুল হাবীর-১/৯৩, দারুল কুতুব প্রকাশনী-১/২৮৮,মুআসসা কুরতুবিয়্যাহ প্রকাশনী-১/১৬৩]

হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ বলেন-বর্ণনাটি সম্পর্কে একথা বলা যায় যে, যদিও তা একজন তাবেয়ীর কথা হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে তা রাসূলুল্লাহ সাঃ এর হাদীস গণ্য হবে। কেননা, তিনি ছাড়া অন্য কারো পক্ষে এমন সংবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। {আত তালখীসুল হাবীর-১/৯২, হাদীস নং-৯৭}



عَنِ ابْنِ عُمَرَ ” أَنَّهُ كَانَ إِذَا مَسَحَ رَأْسَهُ مَسَحَ قَفَاهُ مَعَ رَأْسِهِ “

হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি যখনি মাথা মাসাহ করতেন, তখন মাথা মাসাহের সাথে গর্দানও মাসাহ করতেন। [সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২৭৯]



عَنْ طَلْحَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ: «رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَوَضَّأَ فَمَسَحَ رَأْسَهُ هَكَذَا، وَأَمَرَّ حَفْصٌ بِيَدَيْهِ عَلَى رَأْسِهِ حَتَّى مَسَحَ قَفَاهُ

হযরত তালহা তিনি তার পিতা, তিনি তার দাদারসূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, আমি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি, তিনি অজু করছেন। তখন তিনি এভাবে মাথা মাসাহ করেছেন। উভয় হাতকে জমা করে পাস কাটিয়ে তা দিয়ে গর্দান মাসাহ করতেন। [মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫০]

এছাড়া আল্লামা বাগাভী রহঃ, ইবনে সাইয়িদুন্নাস রহঃ,লা-মাযহাবী, আহলে হাদীস ভাইদের কাছে মান্যবর ইমাম শাওকানী রহঃ প্রমূখও অযুতে গর্দান মাসাহ করার কথা বলেছেন। {নাইলুল আওতার-১/২০৪}

কথিত আহলে হাদীসদের বড় ইমাম নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান এ মতকে প্রাধান্য দিয়ে বলেন-গর্দান মাসাহ করাকে বিদআত বলা ভুল। আত তালখীসুল হাবীর গ্রন্থের উপরোক্ত বর্ণনা ও অন্যান্য বর্ণনা এ বিষয়ের দলিল হিসেবে গ্রহণযোগ্য। তাছাড়া এর বিপরীত বক্তব্য হাদীসে আসেনি। {বুদূরুল আহিল্যাহ-২৮}

সুতরাং গর্দান মাসাহকে প্রমাণহীন, ভিত্তিহীন বলার কোন সুযোগ নেই।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেন:

মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ
প্রসঙ্গসমূহ:

সম্মিলিত দুয়া مع الدلائل

প্রশ্নঃ ৩৬১৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, নামাজের পর সম্মিলিত ভাবে মোনাজাত করা, আবার কিছুু কিছু জায়গা যেমন মিলাদে, ওয়াজ মাহফিলে বা অন্য কোনো জায়গায় সম্মিলিত মোনাজাত করা এটা কি জায়েজ আছে?

২১ আগস্ট, ২০২৪
Jashai

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


দুআ অনেক বড় ইবাদত। হাদীস শরীফে এসেছে, দুআই ইবাদত। এই দুআ যেমন একা করা যায় তেমনি সম্মিলিতভাবেও করা যায়। সম্মিলিত দুআ সংক্রান্ত এক দুটি দলিল নিম্নে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হল-

১. কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-

قَالَ قَدْ اُجِیْبَتْ دَّعْوَتُكُمَا.

আল্লাহ তাআলা বললেন, তোমাদের দুজনের দুআ কবুল করা হয়েছে।
সূরা ইউনুস (১০) : ৮৯

এ আয়াতে তোমাদের দুজনের দুআ বলতে মূসা আ. ও হারূন আ.-এর দুআ বুঝানো হয়েছে। একাধিক সাহাবী ও তাবেয়ী ইমামের সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, হযরত মূসা আ. দুআ করেছেন এবং হারূন আ. আমীন বলেছেন। একেই আল্লাহ তাআলা দুজনের দুআ বলেছেন।
তাফসীরে ইবনে কাসীর ২/৬৬৫; আদ্দুররুল মানসূর ৩/৩৪১

তো এটা তাদের দুজনের সম্মিলিত দুআ ছিল, যা আল্লাহ তাআলা কবুল করেছেন এবং খোশখবরি শুনিয়েছেন যে, তোমাদের দুজনের দুআ কবুল করা হয়েছে।

২. একটি দীর্ঘ হাদীসে সাহাবীয়ে রাসূল হযরত হাবীব ইবনে মাসলামা আলফিহরী রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, তিনি ইরশাদ করেছেন-

لَا يَجْتَمِعُ مَلَأٌ فَيَدْعُو بَعْضُهُمْ وَيُؤَمِّنُ الْبَعْضُ إِلّا أَجَابَهُمُ اللهُ.

কিছু মানুষ যখন কোথাও একত্র হয়ে এভাবে দুআ করে যে, একজন দুআ করে এবং অন্যরা আমীন বলে সেক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাদের দুআ কবুল করেন। আলমুজামুল কাবীর, তবারানী, হাদীস ৩৫৩৬; মুসতাদরাকে হাকেম, হদীস ৫৪৭৮; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস ১৭৩৪৭

সম্মিলিত দুআ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে মাসিক আলকাউসার, শাবান-রমযান ১৪২৯; আগস্ট ২০০৮ সংখ্যায় হযরত মাওলানা আবদুল মালেক ছাহেব লিখিত ‘সম্মিলিত দুআ : একটি প্রশ্নের উত্তর’ প্রবন্ধটি পাঠ করুন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেন:

ইসহাক মাহমুদ, মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন