দাফনের সময় مِنۡہَا خَلَقۡنٰکُمۡ পড়ার বিধান
প্রশ্নঃ ৭৪১৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, সূরা নম্বরঃ ১৬, আয়াত নম্বরঃ ৫৫
مِنۡہَا خَلَقۡنٰکُمۡ وَ فِیۡہَا نُعِیۡدُکُمۡ وَ مِنۡہَا نُخۡرِجُکُمۡ تَارَۃً اُخۡرٰی ﴿۵۵﴾
মৃত ব্যাক্তিকে কবরে শায়িত করে মাটি দেওয়ার পূর্বে মাটি হাতে নিয়ে উপরের আয়াতটি পড়া হয়।এটা কতটা যুক্তিসঙ্গত? আমার মনে হয় এটা এ ভাবে বললে "আল্লাহ মানুষকে এই মাটি থেকেই সৃষ্টি করেছেন ও এই মাটিতে ফিরিয়ে নিচ্ছেন এবং এই মাটি থেকেই পুনরায় বের করবেন" তা হলে মনে হয় শিরক থেকে বেচে যাব।আশা করি আমার চিন্তায় ভুল হলে সংশোধন করে দিবেন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
১-
হ্যাঁ, এ আমলের ভিত্তি রয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মেয়ে উম্মে কুলসুম রাঃ কে কবরে রাখার সময় এ দুআ পড়েছেন।
হাদীসে এসেছে-
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ قَالَ: لَمَّا وُضِعَتْ أُمُّ كُلْثُومٍ ابْنَةُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْقَبْرِ. قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” {مِنْهَا خَلَقْنَاكُمْ وَفِيهَا نُعِيدُكُمْ، وَمِنْهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً أُخْرَى} [طه: 55
হযরত আবু উমামা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসূল সাঃ এর মেয়ে উম্মে কুলসুম রাঃ কে কবরে রাখা হয়, তখন রাসূল সাঃ পড়েন মিনহা খালকনাকুম ওয়াফীহা নুয়ীদুকুম ওয়ামিনহা নুখরিজুকুম তারাতান উখরা।
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২১৮৭।
মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং-৩৪৩৩।
সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৬৭২৬।
খুলাসাতুল আহকাম, হাদীস নং-৩৬৫১।
জামেউল মাসানীদ ওয়াস সুনান, হাদীস নং-১১০২৪।
মাযমাউজ যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-৪২৩৯।
কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-১৮৮১।
আলমুসনাদুল জামে, হাদীস নং-৫২৫৩।
মুহাদ্দিসীনে কেরাম উক্ত হাদীসকে জঈফ তথা দুর্বল বলে মন্তব্য করেছেন।
হাদীসটি সনদের দিক থেকে দুর্বল হলেও ফযীলত ও আদাবের ক্ষেত্রে গ্রহনযোগ্য, উসুলে হাদীস না জেনে শুধুমাত্র সনদের দুর্বলতার অজুহাতে হাদিসকে পরিত্যাজ্য ঘোষণা করা শরীয়তের মেজাযের পরিপন্থী যেমনটি কেউ কেউ করেছেন, আমরা আদাবের ক্ষেত্রে হওয়ায় হাদিসটিকে উল্লেখ করেছি।
২- দাফনের সময় উপস্থিত ব্যক্তিদের জন্য কবরে তিন মুষ্ঠি মাটি দেওয়া মুস্তাহাব। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক সাহাবীর দাফনের সময় লাশের মাথার দিকে তিন মুষ্ঠি মাটি দিয়েছেন। -ইবনে মাজাহ ১১৩, বায়হাকী ৩/৪১০
উল্লেখ্য, তিন মুষ্ঠি মাটি দেওয়ার ক্ষেত্রে মাটির চাক দেওয়া কাম্য নয়, তদ্রুপ এক মুষ্ঠিতে তিন চাক মাটি দিলে তা এক মুষ্ঠিই গণ্য হবে।
-সুনানে ইবনে মাজাহ ১১৩, ইলাউস্ সুনান ৮/৩১৬, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৬, রদ্দুল মুহতার ২/১৩৬, মারাকিল ফালাহ ৩৩৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ زِيَادٍ يَعْنِي ابْنَ ثَعْلَبٍ، عَنْ أَبِي الْمُنْذِرِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «حَثَا فِي قَبْرٍ ثَلَاثًا»
নবীজী সাঃ কবরে তিনবার মাটি দিয়েছেন। (মারাসীল আবু দাউদ)
وَأَخْبَرَنَا أَبُو عَبْدِ اللهِ الْحَافِظُ، وَأَبُو بَكْرٍ أَحْمَدُ بْنُ الْحَسَنِ الْقَاضِي قَالَا: ثنا أَبُو الْعَبَّاسِ مُحَمَّدُ بْنُ يَعْقُوبَ، ثنا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ، أنبأ عَلِيُّ بْنُ حَفْصٍ الْمَدَائِنِيُّ، ثنا الْقَاسِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ يَعْنِي الْعُمَرِيَّ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: " رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ دَفَنَ عُثْمَانَ بْنَ مَظْعُونٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَصَلَّى عَلَيْهِ وَكَبَّرَ عَلَيْهِ أَرْبَعًا، وَحَثَا بِيَدَيْهِ ثَلَاثَ حَثَيَاتٍ مِنَ التُّرَابِ وَهُوَ قَائِمٌ عَلَى الْقَبْرِ ". إِسْنَادُهُ ضَعِيفٌ، إِلَّا أَنَّ لَهُ شَاهِدًا مِنْ جِهَةِ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُرْسَلًا، وَيُرْوَى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ مَرْفُوعًا، وَاللهُ أَعْلَمُ (সুনানে কুবরা ৬৭৩০)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন