প্রশ্নঃ ৩৬৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার জানার বিষয় হল যে, আমার আলআরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ও এনআরসি ব্যাংকে সেভিং একাউন্টে কিছু টাকা জমা আছে। এই টাকা দিয়ে বসুন্ধরা গ্রæপ, সিটি গ্রæপ, মেঘনা গ্রæপ, টি কে গ্রæপসহ অন্যান্য কোম্পানির নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী যেমন, আটা, ময়দা, চিনি, তৈল, ডালডা, ভুসি ইত্যাদি পণ্য দাম যখন কম থাকে তখন পণ্যগুলো কোম্পানি থেকে ক্রয় করা হয়। পণ্যের মূল্য তাদের ব্যাংক একাউন্টে নগদ জমা করা হয়। তারা পণ্য প্রদানের একটি তারিখ দিয়ে শুধু পণ্যের ¯িøপ দিয়ে দেয়। এই ¯িøপটিকে ব্যবসার ভাষায় ডিও বলা হয়। ডিও কিনে তাতে উল্লেখিত পণ্যসামগ্রী সংশ্লিষ্ট কোম্পানির গোডাউনে মজুদ রাখা হয়। কোনো পণ্যসামগ্রী আমি স্ব-চোখে দেখিও না এবং আমার গোডাউনেও আনি না, কেবলমাত্র কোম্পানীর দায়িত্বশীল প্রতিনিধির সাথে সরাসরি বা মোবাইলে কথা বলে পণ্যসামগ্রী কিনে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ব্যাংক একাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দিলে কোম্পানি আমাকে ঐ ডিও লেটার দিয়ে দেয়, পরবর্তীতে উল্লেখিত পণ্যসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি হলে, উক্ত ডিও লেটার কাগজটি অন্য আরেকজন ব্যবসায়ীর কাছে কিছু লাভ করে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এই ধরনের ব্যবসা করা জায়েয কি না? এই ব্যবসা করা যাবে কি না? জানালে খুবই উপকৃত হব।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ডিও মানে হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার। আপনি যে পণ্যের টাকা পরিশোধ করেছেন তা কোন তারিখে আপনাকে দেওয়া হবে তার স্বীকারোক্তি। এটি কোনো পণ্য নয়। তাই এ কাগজ বিক্রি করা জায়েয হবে না। ডিওতে যে পণ্যের কথা বলা হয়েছে তা আপনার দখলে আসার পূর্বে সেটি আপনার জন্য বিক্রিযোগ্যই নয়। হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা এসেছে। হাকীম ইবনে হিযাম রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
لَا تَبِيعَنّ شَيْئًا حَتّى تَقْبِضَهُ.
কোনো বস্তু হস্তগত করার আগ পর্যন্ত তা বিক্রি করবে না। -সুনানে কুবরা, বাইহাকী ৫/৩১৩
এধরনের কারবার করে ফেললে আপনার জন্য এর মুনাফা ভোগ করা জায়েয হবে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কোনো বস্তুর দায়িত্ব ও ঝুঁকি গ্রহণের পূর্বে তার লাভ ভোগ করা বৈধ নয়। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১২৩৪
উল্লেখ্য, ডিও এমন মালেরও হয়ে থাকে, যা ডিও লেখার সময় প্রস্তুত থাকে না। সেক্ষেত্রে ডিও বিক্রি করলে হাদীসের নিষিদ্ধ معدوم (অস্তিত্বহীন) বস্তুর বিক্রয় হয়। এটাও সম্পূর্ণ নাজায়েয। তাই মুসলমানদের জন্য এমন ক্রয়-বিক্রয় থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন