বরের খরচে কনের বাড়িতে খাবারের আয়োজন করা
প্রশ্নঃ ২৬৩৪২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের দেশে রীতি অনুযায়ী বিবাহে বর পক্ষ কনে পক্ষে বাড়িতে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে যেটা সঠিক নয়।আমার প্রশ্ন হলো আমি যদি কনের বাবাকে এই বিষয়টাতে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করি এটা বৈধ হবে? মানে খরচটা আমি বহন করার আসল উদ্দেশ্য হলো যাতে আমাদের উপর দাবি না রাখে এবং কিয়ামতে যাতে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিনের কাছে হিসেব দিতে না হয়।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সম্মানিত ভাই!
আপনি যদি কনের বাড়ির খাবারের খরচ বহন করেন এবং তাতে কনের পরিবারের কোনো আপত্তি না থাকে তাহলে শরঈ দৃষ্টিকোণ থেকে যদিও এটা নিষিদ্ধ নয় তবে এখানে আরেকটি নতুন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এবং আমাদের সমাজের রুসুম রেওয়াজগুলো এভাবেই সূচিত হয়েছে। সেটা হলো এর মাধ্যমে ধীরে ধীরে সমাজের কনে পক্ষের মনে এই ধারণা জন্মাতে পারে যে, আমরা যতই খরচ করি বরপক্ষ তো তার আংশিক কিংবা পূর্ণ বহন করবেই!!
তখন এক প্রথা রোধ করতে গিয়ে আরেকটি প্রথার জন্ম নিবে। কাজেই আমাদের কাছে মনে হচ্ছে এরচেয়ে বরং আপনি আপনার মেহমানদের নিজ খরচে আপনার বাড়ীতে কিংবা অন্যকোনো স্থানে অলিমার আয়োজন করুন। এতে করে সুন্নতও আদায় হবে এবং সমাজের কুপ্রথাও দূরীভূত হবে।
নিচের রেফারেন্স উত্তরটি দেখুন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ১৩৯৪৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, কনে পক্ষ আকদের দিনে দুই পক্ষ মেহমানদারি ভাত খাওয়ার আয়োজন করা যাবে কি-না দয়াকরে উত্তর খুব জরুরি। ধন্যবাদ।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
বিবাহের ক্ষেত্রে ছেলের জন্য সাধ্যানুযায়ী অলিমা করা সুন্নত।
বাংলাভাষায় যাকে বৌভাত বলে।হাদিস শরিফের অসংখ্য বর্ণনায় তার ফাজায়েল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আমাদের দেশে কণের বাড়িতে যে ভোজের আয়োজন করা হয়, তা শরিয়তসম্মত নয়। যা বহন করা অনেক নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য কষ্টসাধ্য। অন্যভাবে বলতে গেলে, মেয়ের বিয়ের দিনে মেয়ের পিতার ওপর দিয়ে একটা ছোটখাটো কেয়ামত বয়ে যায়। অথচ বিয়েতে কনের পক্ষের কোনোরূপ খরচ করার কথা নয়। এরপরও যেটা করা হয়, সেটা সৌজন্যমূলক আপ্যায়নমাত্র। (বুখারি, হাদিস নম্বর-৬০১৮)।
অথচ বর্তমান যুগে অলিমার এই সুন্নত বর্জনের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা বাঞ্ছনীয় নয়। বিশেষত কনেপক্ষের ওপর আপ্যায়নের যে চাপ সৃষ্টি করা হয়, তা সম্পূর্ণ হারাম। সর্বোপরি শর্ত আরোপ করে বরযাত্রীর নামে বরের সঙ্গে অধিকসংখ্যক লোক নিয়ে যাওয়া এবং কনের বাড়িতে মেহমান হয়ে কনের পিতার ওপর বোঝা সৃষ্টি করা আজকের সমাজের একটি জঘন্য কুপ্রথা, যা সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করা আবশ্যক। (মুসনাদে আহমাদ: ২০৭২২, বুখারি: ২৬৯৭)।
কনেপক্ষের অনিচ্ছাকৃত বা চাপের মুখে বাধ্যতামূলক আপ্যায়ন ও মেহমানদারি সম্পূর্ণ নাজায়েজ। এতে অংশগ্রহণ করাও হারাম ও পাপ কাজ। কারও ওপর জোর প্রয়োগ করে কোনো খাবার গ্রহণ করা জুলুমের শামিল। (বাদায়েউস সানায়ে, কিতাবুন নিকাহ; দুররুল মুখতার, রদ্দুল মুহতার)। (সংগৃহিত ও সংযোজিত)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন