জিনা থেকে বাঁচতে কি মাস্টারবেশন করা যাবে?
প্রশ্নঃ ২৫৯৭৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
আচ্ছা যদি কারোর বিবাহ করিবার সামর্থ না থাকে,যেমন থাকার ঘরবাড়ি নেই,বেকার,প্রায় অর্ধেক সময় বন্ধুর বাড়িতে থেকে রাত কাটাতে হয়,সে যদি কারোর সাথে জিনা না করে মাস্টারবিউস করে নিজের সেক্সকে কন্ট্রোল এ রাখে তাহলে ও কি সেটা কবীরা গোনাহ???
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সম্মানিত প্রশ্নকারী!
কিছুতেই অনুমতি নাই। আল্লাহ তায়ালার কাছে সম্পদের দোয়া করুন। বেশীবেশী লা হাওলা ওয়ালা কুউয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ পাঠ করুন। মুফতি মুশতাকুন্নবী কাসেমী সাহেবের লা হাওলার এই বয়ানটি শুনুন। সেই অনুপাতে আমল করুন ইনশাআল্লহ আল্লাহ তায়ালা অবস্থা পরিবর্তন করে দিবেন।
https://www.youtube.com/watch?v=eNxvRIRNBbg
নিচের রেফারেন্স উত্তরটি দেখুন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ৯৭২৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি বারবার হস্তমৈথুন করি এবং বারবার আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই এবং তওবা করি। এরকম করাটা কি আল্লাহর সাথে বেয়াদবি হয়ে যাচ্ছে। বুঝতে পারছিনা কি করবো।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
হস্তমৈথুন একটি মহামারি। এর কারণে মানুষের জীবন-যৌবন, ইমান-আমল সব শেষ হয়ে যেতে পারে। তাই এর থেকে বেঁচে থাকা অবশ্যক।
মানব প্রকৃতি গুনাহের দিকে ধাবিত হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে গুনাহ হয়ে যাওয়ার পর মুমিন বান্দা বসে থাকতে পারে না। তাওবা না করা পর্যন্ত তার মনে স্থীরতা আসে না। কাজেই যখনই কোনো গুনাহ হয়ে যাবে সাথে সাথে তাওবা করে নিতে হবে। আর বারবার তাওবা করা এটাই মুমিনের শান । তবে তাওবা হতে হবে খাঁটি দ্বিলে।
আপনি ওই গর্হিত কাজ পরিহার করে আল্লাহ তায়ালার দরবারে তাওবা করে ফিরে আসুন।
এই মহামারী থেকে বাঁচার উপায়
(১) সদাসর্বদা নিজের মধ্যে আল্লাহ তায়ালার ধ্যান ও খেয়াল জাগ্রত রাখুন এবং এই পাপকাজ থেকে বাঁচতে সর্বদা আল্লাহ তায়ালার সাহায্য কামনা করুন। আপনি যেখানেই থাকুন আল্লাহ তায়ালা আপনাকে দেখছেন। আপনি কি আপানার পিতা-মাতা কিংবা উস্তাত-শিক্ষকের সামনে এই গর্হিত কাজ করতে পারবেন? নিশ্চয়ই না! কেননা, তাদের ভক্তি-শ্রদ্ধা, ভয়-ভালোবাসা আপনাকে এই পাপাচারে লিপ্ত হতে দিবে না। তাহলে যিনি আমার খালিক, আমার মালিক, আমার দিবিনিশি, যার সামনে। আমাকে চাইলে যিনি এক মুহূর্তে তুলে নিতে পারেন। যার হাতে আমার জান, যার হাতে আমার প্রাণ-সেই মহান রাজাধীরাজ বিশ্বচরাচরের একচ্ছত্র অধিপতি মহান আল্লাহ তায়ালার সামনে আমি কি করে এই পাপ করি। এই খেয়াল ও অনুভূতি যদি কোনো মানুষের মধ্যে থাকে তাহলে তার দ্বারা ইনশাআল্লাহ কোনো গুনাহ হতে পারে না। আল্লাহ তায়ালা আমাকে আমল করার তাওফিক দান করুন।
(২) অশ্লীল ছবি, ভিডিও, সিনেমা, গেইম এবং যৌনউত্তেজক কোনো বই, গল্প, উপন্যাস, ফিচার, নিউজ পড়া , শোনা এবং দেখা থেকে বিরত থাকুন। পরনারী, গার্লফ্রেন্ড, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো… ইত্যাদী বোনদের সাথে দেখা-সাক্ষাত, একান্ত কথাবার্তা ও অপ্রয়োনীয় আলাপচারিতা পরিহার করুন। মনেরাখবেন বাইরের অশ্লীলতাই আস্তে আস্তে আপনাকে ভিতরের অশ্লীলতার দিকে নিয়ে যাবে।
(৩) যথাসম্ভব নিজেকে কোনো না কোনো কাজে ব্যস্ত রাখুন। কারণ অবসরতাই এজাতীয় গুনাহের অন্যতম হাতিয়ার।
(৪) হস্ত মৈথুন খারাপভাবে এডিক্টেড হলে কখনোই একা একা থাকবেন না। দ্রুত আপনার অবস্থান পরিবর্তন করুন। বসে থাকলে দাঁড়িয়ে যান। শুয়ে থাকলে ওঠে হাঁটাহাঁটি শুরু করুন। আসতাগফিরুল্লাহ্, দুরুদশরীফ, লা হাওলা ইত্যাদী পড়তে থাকুন। শরীয়তে সীমার মধ্য খেলাধুলা করুন। শরীরচর্চা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করুন। ছাত্র হলে ক্লাস বন্ধুদের সাথে পড়াশুনা শুরু করুন। লাইব্রেরি বা কফি দোকানে গিয়ে কিছুটা রিফ্রেশ হয়ে আসুন।
(৫) সন্ধ্যায় সময় কখনই ঘুমাবেন না। কিছু করার না থাকলে কুরআন তেলাওয়াত করুন, দ্বিনী বই-পুস্তক পড়ুন।
(৬) যে সময়গুলোতে হস্তমৈথুন বেশী হয় বলে মনে করেন সেই সময়গুলো মার্ক করুন। বাথরুমে বা ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি উত্তেজিত থাকেন, হঠাৎ কোনও সময়ে যদি হস্ত মৈথুনের ইচ্ছে জাগে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই কোনো না কোনো শারীরিক পরিশ্রমের কাজে বা ব্যায়াম করতে লেগে যান। যতক্ষণ পর্যন্ত শরীর ক্লান্ত না হয়, এবং হস্তমৈথুন করার শক্তি ও ইচ্ছা নিশেঃষ না হয়।
গোসলের সময় হস্তমৈথুনের ইচ্ছে জাগলে শুধুমাত্র ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করুন এবং দ্রুত সময়ে বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসুন।
(৭) নির্জনতা পরিহার করে বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সাথে বেশি বেশি সময় কাটান। হঠাৎ বিছানায় শুয়ে পড়বেন না। যথাসম্ভব কোল বালিশব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
(৮) ফোন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের অযাচিত ব্যবহার রোধ করুন।
গুনাহ্ বর্জনের প্রবল ইচ্ছাশক্তি এবং আল্লাহ তায়ালার সাহায্যই আমাদের সবচে বড় ও মজবুত হাতিয়ার। সুতরাং, হস্তমৈথুন নামক যৌনবিকৃতি থেকে সবসময় দূরে থাকুন। মহান আল্লাহ্ তায়ালার সাহায্য প্রার্থনা করুন এবং তার আজাবকে সবসময় ভয় করুন।
রসূলুল্লাহ্ (সঃ) ইরশাদ করেন, "যে ব্যক্তি আমাকে তার দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী জিনিস (জিহ্বার) এবং দুই পায়ের মধ্যবর্তী জিনিস (যৌনাঙ্গ) নিশ্চয়তা দেবে আমি তার বেহেশতের নিশ্চয়তা দিব।" (বুখারী ও মুসলিম)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন