গুল সেবন করা
প্রশ্নঃ ২৪৪০০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, মানুষ যে মুখে গুল খায় বা নেয় এই গুল সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
গুল এক জাতীয় তামাক। সুরাতুল বাকারা ১৯৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তা'আলা নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে নিষেধ করেছেন।
لا تلقوا بأيديكم إلى التهلكة
গোটা পৃথিবীর সকল স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের মতামত হল, তামাক, ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য শুধু ক্ষতিকরই নয় বরং এসব মৃত্যুও ঘটায়। কাজেই এগুলো সকল ব্যবহার থেকে বিরতা থাকা আবশ্যক। আর কারো ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে ক্ষতিকর প্রমাণিত হলে তার জন্য তা খাওয়া নাজায়েয হবে। তবে যেহেতু এগুলো সরসরি হারাম নয় তাই এগুলোর বেচাবিক্রির আবকশ থাকলেও দ্বীন-শরীয়তকে ভালোবাসেন এমন মানুষের জন্য তা না করাই উত্তম।
(وَصَحَّ بَيْعُ غَيْرِ الْخَمْرِ) مِمَّا مَرَّ، وَمُفَادُهُ صِحَّةُ بَيْعِ الْحَشِيشَةِ (رد المحتار، كتاب الأشربة-10/35)
وَبِالْجُمْلَةِ إنْ ثَبَتَ فِي هَذَا الدُّخَانِ إضْرَارٌ صِرْفٌ خَالٍ عَنْ الْمَنَافِعِ فَيَجُوزُ الْإِفْتَاءُ بِتَحْرِيمِهِ وَإِنْ لَمْ يَثْبُتْ انْتِفَاعُهُ فَالْأَصْلُ حِلُّهُ مَعَ أَنَّ فِي الْإِفْتَاءِ بِحِلِّهِ دَفْعَ الْحَرَجِ عَنْ الْمُسْلِمِينَ فَإِنَّ أَكْثَرَهُمْ مُبْتَلُونَ بِتَنَاوُلِهِ مَعَ أَنَّ تَحْلِيلَهُ أَيْسَرُ مِنْ تَحْرِيمِهِ وَمَا خُيِّرَ رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – بَيْنَ أَمْرَيْنِ إلَّا اخْتَارَ أَيْسَرَهُمَا (العقود الدرية في تنقيح الفتاوى الحامدية، مَسَائِلُ وَفَوَائِدُ شَتَّى مِنْ الْحَظْرِ وَالْإِبَاحَةِ وَغَيْرِ ذَلِكَ، مَسْأَلَةٌ أَفْتَى أَئِمَّةٌ أَعْلَامٌ بِتَحْرِيمِ شُرْبِ الدُّخَانِ-2/332
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ২১৫৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ধুমপান করার হুকুম কী এবং জর্দা দিয়ে পান খাওয়া যাবে কি না? আর সিগারেট অথবা জর্দা দিয়ে পান খাওয়া লোক যদি নামায পড়ে এবং নামাযের মধ্যে মুখ থেকে গন্ধ আসে তাহলে ঐ নামাযের হুকুম কী হবে? এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চাই।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ধুমপান করা নাজায়েয। এতে আর্থিক অপচয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্যগত ক্ষতিও রয়েছে। জেনে শুনে নিজের জান-মালের ক্ষতি করা গুনাহ। অধিকন্তু ধুমপায়ীর মুখের দুর্গন্ধে অন্যের কষ্ট হয়, যা পৃথক একটি গুনাহ। তাই ধুমপান থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
আর দুর্গন্ধযুক্ত অবস্থায় নামাযে দাঁড়ানো মাকরূহে তাহরীমী। বরং এ অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করাও মাকরূহ। হাদীস শরীফে ধুমপানের চেয়ে অনেক কম দুর্গন্ধ বস্ত্ত কাঁচা পেঁয়াজ-রসুন খেয়ে মসজিদে প্রবেশ করতেও নিষেধ করা হয়েছে।
অতএব বিড়ি-সিগারেটের তীব্র দুর্গন্ধের সাথে মসজিদে প্রবেশ করা যে নিষিদ্ধ হবে তা তো সহজেই অনুমেয়। অবশ্য এ কারণে নামায ত্যাগ করা যাবে না এবং মসজিদে গমনাগমনও বন্ধ করা যাবে না। বরং অতি দ্রুত এ বদ অভ্যাস ত্যাগ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে হবে। আর নামায আদায়ের পূর্বে এবং মসজিদে প্রবেশের আগে ভালো করে মেসওয়াক বা ব্রাশ করে দুর্গন্ধ দূর করে নিতে হবে।
আরো প্রকাশ থাকে যে, ধুমপানের দুর্গন্ধ নিয়েও যদি কেউ নামায পড়ে নেয় তাহলে তার নামায আদায় হয়ে যাবে।
আর পানের সাথে জর্দা বা তামাক খাওয়াও ডাক্তারি মতে শারীরিক ক্ষতির কারণ। তাই যথাসম্ভব এ থেকেও বিরত থাকা উচিত। আর কারো ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে ক্ষতিকর প্রমাণিত হলে তার জন্য তা খাওয়া নাজায়েয হবে।
উল্লেখ্য যে, যারা পান-জর্দা খায় তাদের জন্যও নামায আদায়ের পূর্বে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করে নেওয়া কর্তব্য। যেন পানের কণাগুলো বের হয়ে যায় এবং গন্ধও না থাকে।
আরো উল্লেখ থাকে যে, মিসওয়াক ইসলামের দায়েমী একটি সুন্নত। এ সুন্নতটির প্রতি যত্নবান হয়ে দাঁত এবং মুখ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা প্রতিটি মুমিনের কর্তব্য।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন