শবে-মেরাজ উপলক্ষে নির্ধারিত কোন আমল আছে কি?
প্রশ্নঃ ১৪৬৪৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, হজরত শবে-মেরাজের কি কোন রোযা আছে? যদি থাকে তাহলে কয়টি রোযা রাখতে হবে? এছাড়া শবে-মেরাজ উপলক্ষে নির্ধারিত কোন আমল আছে কি?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
লাইলাতুল মিরাজ বা মিরাজের রজনীর ব্যাপারে আমাদের সমাজের অনেকেরই ধারণা স্পষ্ট নয়। শবে মিরাজকে কেন্দ্র করে নানান ধরনের কথা প্রচলিত আছে। কিন্তু বাস্তবতা অনেক ব্যতিক্রম।
মেরাজ উপলক্ষে শরিয়ত কর্তৃক নির্ধারিত কোনো আমল নেই। সাহাবা-তাবেঈন থেকে মেরাজ উপলক্ষে কোনো কিছু পালন বা আমল করার কোন দলীল পাওয়া যায় না। এতে করণীয় কিছু থাকলে অবশ্যই তাঁরা করতেন। মেরাজ উপলক্ষে মসজিদে সমবেত হওয়া, অধিক বাতি জালানো, ওয়াজের আয়োজন করা, ‘মেরাজের নামায’ হিসেবে নামায পড়া ও পরের দিন রোযা রাখা- এ সবই শরীয়ত বহির্ভূত ও বিদআতের অন্তর্ভূক্ত।
ইমাম তকীউদ্দীন সুবকী রাহ. (মৃ. ৭৫৬ হি.) বলেছেন, ২৭ই রজব মেরাজ উপলক্ষে অনুষ্ঠান করা বিদআত। (আস-সায়ফুল মাসলূল পৃ. ৪৯২)
ইবনে তাইমিয়া রাহ. বলেন, মেরাজ মনে করে কোন রাত নির্ধারণ করে ইবাদত বা অন্য কিছু করা মুসলমানদের জন্য জায়েয নেই। (যাদুল মা’আদ, ১/৫৮)
মুহাদ্দিস আজলূনী রাহ. (মৃ. ১১৬২ হি.) লিখেন,
وكذا صلاة عاشوراء وصلاة الرغائب موضوع بالاتفاق، وكذا صلاة ليالي رجب وليلة السابع والعشرين من رجب.
আশুরার নামায, সালাতুর রাগায়িব ও রজবের রাতসমূহে এবং রজবের ২৭ তারিখের রাতের নামায সংক্রান্ত বর্ণনাগুলো সর্বসম্মতিক্রমে জাল ও বানোয়াট। (কাশফুল খাফা ২/৪১০)
অনুরূপ ‘যে ব্যক্তি রজবের ২৭ তারিখে রোযা রাখবে, আল্লাহ তার আমল নামায় ৬০ মাস রোযা রখার সাওয়াব লিখে দিবেন।’ বর্ণনাটিও জাল ও বানোয়াট। (দেখুন, আদ-দ্বীনুল খালিস, মাহমুদ সুবকী মালেকী ৮/৪৩০; আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৫/২১৪)
সুতরাং নির্ভরযোগ্য হাদীসে রজব মাস অথবা এর কোনো দিন বা রাতের কোনো ফযীলত নেই। কাজেই ‘বার মাসের ফযীলত’ বা এ জাতীয় বই-পুস্তকে এ মাস সম্পর্কে যা বলা হয়েছে, তা সঠিক নয়।
সারকথা, রজব মাস কুরআনে বর্ণিত চার সম্মানিত মাসের একটি, সুতরাং এর পুরোটাই বরকতময়। তাই এ মাসের সবকটি দিন ও রাতেই ইবাদত-বন্দেগীর ব্যাপারে যত্নবান হওয়া চাই। রাসূল সা. রজব মাসে, ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ও শাবান ওবাল্লিগনা রামাদান’ এই দোয়া বেশি বেশি পাঠ করতেন বলে কিছু কিছু বর্ণনায় পাওয়া যায়। বর্ণিত দু’আটি পড়া যায়। আর কোন নির্দিষ্ট রাতে বা দিনে বিশেষ আমল বা নামায-রোযা এবং রসম-রেওয়াজ পরিত্যাগ করা অপরিহার্য কর্তব্য।
لم يقم دليل معلوم لا على شهرها، ولا على عشرها، ولا على عينها، بل النقول في ذلك منقطعة مختلفة، ليس فيها ما يقطع به.
زاد المعاد، ابن القيم، ١/٥٨
وأما ليلة الإسراء فلم يأت فى أرجحية العمل فيها حديث صحيح ولا ضعيف. ولذلك لم يعينها النبى صلى الله عليه وسلم لأصحابه، ولا عينها أحد من الصحابة بإسناد صحيح، ولا صح إلى الآن ولا إلى أن تقوم الساعة فيها شىء، ومن قال فيها شيئا فإنما قاله من كيسه لمرجح ظهر له استأنس به، ولهذا تصادمت الأقوال فيها وتباينت، ولم يثبت الأمر فيها على شىء، ولو تعلق بها نفع للأمة - ولو بذرة - لبينه لهم نبيهم صلى الله عليه وسلم.
المواهب اللدنية، القسطلاني، ٣/١٤
وكذا صلاة عاشوراء وصلاة الرغائب موضوع بالاتفاق، وكذا صلاة ليالي رجب وليلة السابع والعشرين من رجب.
كشف الخفا، ٢/٤١٠
وأما الصيام: فلم يصح في فضل صوم رجب بخصوصه شيء عن النبي صلى الله عليه وسلم ولا عن أصحابه.
لطائف المعارف، ص. ٢٢٨
لم يرد في فضل شهر رجب، ولا في صيامه، ولا في صيام شيء منه معين، ولا في قيام ليلة مخصوصة فيه حديث صحيح يصلح للحجة.
تبيين العجب بما ورد في فضائل رجب، ص. ١١
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন