কুরবানীর নিয়তে ক্রয়করা পশুতে মান্নতের কুরবানীর নিয়ত করা যাবে কী?
প্রশ্নঃ ১০৬০৬২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, একটি গরুতে এক ভাগ ওয়াজীব কুরবানী ও আরেক ভাগ মান্নতের কুরবানি এভাবে নিয়ত করলে আদায় হবে কি দুনোটাই?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
কুরবানীর যেসকল পশুতে একাধিক ব্যক্তি শরীক হওয়া জায়েজ সেসকল পশুতে কুরবানী ও মান্নত উভয়টির নিয়ত করা জায়েজ আছে। তবে একাধিক ওয়াজিব বিষয়কে এক পশুতে একত্রিত করা অনুত্তম। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কুরবানীর নির্ধারিত অংশ ছাড়া বাকি অংশে মান্নতের নিয়ত করা ও গোশত আলাদা করা জরুরী। কেননা, মান্নতের গোশত মান্নতকারী খেতে পারবে না। সদকা করে দেয়া অত্যাবশ্যক।
এক্ষেত্রে পদ্ধতিটি হবে এমন যে, কুরবানীর জন্য উদাহরণত পাঁচ অংশ, মান্নতের জন্য দুই অংশ।
শরঈ দলীল:
" وَلَوْ أَرَادُوا الْقُرْبَةَ - الْأُضْحِيَّةَ أَوْ غَيْرَهَا مِنْ الْقُرَبِ - أَجْزَأَهُمْ سَوَاءٌ كَانَتْ الْقُرْبَةُ وَاجِبَةً أَوْ تَطَوُّعًا أَوْ وَجَبَ عَلَى الْبَعْضِ دُونَ الْبَعْضِ، وَسَوَاءٌ اتَّفَقَتْ جِهَاتُ الْقُرْبَةِ أَوْ اخْتَلَفَتْ بِأَنْ أَرَادَ بَعْضُهُمْ الْأُضْحِيَّةَ وَبَعْضُهُمْ جَزَاءَ الصَّيْدِ وَبَعْضُهُمْ هَدْيَ الْإِحْصَارِ وَبَعْضُهُمْ كَفَّارَةً عَنْ شَيْءٍ أَصَابَهُ فِي إحْرَامِهِ وَبَعْضُهُمْ هَدْيَ التَّطَوُّعِ وَبَعْضُهُمْ دَمَ الْمُتْعَةِ أَوْ الْقِرَانِ وَهَذَا قَوْلُ أَصْحَابِنَا الثَّلَاثَةِ رَحِمَهُمْ اللَّهُ تَعَالَى، وَكَذَلِكَ إنْ أَرَادَ بَعْضُهُمْ الْعَقِيقَةَ عَنْ وَلَدٍ وُلِدَ لَهُ مِنْ قَبْلُ، كَذَا ذَكَرَ مُحَمَّدٌ - رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى - فِي نَوَادِرِ الضَّحَايَا، وَلَمْ يَذْكُرْ مَا إذَا أَرَادَ أَحَدُهُمْ الْوَلِيمَةَ وَهِيَ ضِيَافَةُ التَّزْوِيجِ وَيَنْبَغِي أَنْ يَجُوزَ، وَرُوِيَ عَنْ أَبِي حَنِيفَةَ - رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى - أَنَّهُ كَرِهَ الِاشْتِرَاكَ عِنْدَ اخْتِلَافِ الْجِهَةِ، وَرُوِيَ عَنْهُ أَنَّهُ قَالَ: لَوْ كَانَ هَذَا مِنْ نَوْعٍ وَاحِدٍ لَكَانَ أَحَبَّ إلَيَّ، وَهَكَذَا قَالَ أَبُو يُوسُفَ - رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى -، وَإِنْ كَانَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ صَبِيًّا أَوْ كَانَ شَرِيكُ السَّبْعِ مَنْ يُرِيدُ اللَّحْمَ أَوْ كَانَ نَصْرَانِيًّا وَنَحْوَ ذَلِكَ لَا يَجُوزُ لِلْآخَرَيْنِ أَيْضًا كَذَا فِي السِّرَاجِيَّةِ".
الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (6 / 326):
" قَدْ عُلِمَ أَنَّ الشَّرْطَ قَصْدُ الْقُرْبَةِ مِنْ الْكُلِّ، وَشَمِلَ مَا لَوْ كَانَ أَحَدُهُمْ مُرِيدًا لِلْأُضْحِيَّةِ عَنْ عَامِهِ وَأَصْحَابُهُ عَنْ الْمَاضِي تَجُوزُ الْأُضْحِيَّةَ عَنْهُ وَنِيَّةُ أَصْحَابِهِ بَاطِلَةٌ وَصَارُوا مُتَطَوِّعِينَ، وَعَلَيْهِمْ التَّصَدُّقُ بِلَحْمِهَا وَعَلَى الْوَاحِدِ أَيْضًا لِأَنَّ نَصِيبَهُ شَائِعٌ كَمَا فِي الْخَانِيَّةِ، وَظَاهِرُهُ عَدَمُ جَوَازِ الْأَكْلِ مِنْهَا تَأَمَّلْ، وَشَمِلَ مَا لَوْ كَانَتْ الْقُرْبَةُ وَاجِبَةً عَلَى الْكُلِّ أَوْ الْبَعْضِ اتَّفَقَتْ جِهَاتُهَا أَوْ لَا: كَأُضْحِيَّةٍ وَإِحْصَارٍ وَجَزَاءِ صَيْدٍ وَحَلْقٍ وَمُتْعَةٍ وَقِرَانٍ خِلَافًا لِزُفَرَ، لِأَنَّ الْمَقْصُودَ مِنْ الْكُلِّ الْقُرْبَة"۔
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী, ফাতাওয়া বিভাগ, মুসলিম বাংলা
লেখক ও গবেষক, হাদীস বিভাগ, মুসলিম বাংলা
খতীব, রৌশন আলী মুন্সীবাড়ী জামে মসজিদ, ফেনী
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ২৫৪৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার একটি ছেলেসন্তান হয়েছে। জন্মের কিছুদিন পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই আমি মান্নত করেছিলাম, ছেলে সুস্থ হলে একটি খাশি আকীকা করব। আল্লাহর মেহেরবানিতে ছেলে সুস্থ হয়ে গেছে। এখন আমার প্রশ্ন হল, ছেলের আকীকা করতেই হবে কি না? না করার কোনো সুযোগ আছে কি? আকীকা করতে হলে খাশিই করতে হবে কি না?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আকীকা করা মুস্তাহাব। প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ছেলে সুস্থ হলে আকীকা করব-এ কথা বলার দ্বারা আপনার জন্য আকীকা করা জরুরি হয়ে যায়নি। তবে মুস্তাহাব হুকুম পালনের অঙ্গীকার করার দ্বারা এর গুরুত্ব আরো বেড়েছে। তাই সামর্থ্য থাকলে আল্লাহ তাআলার সাথে কৃত এই ওয়াদা পূরণ করাই বাঞ্ছনীয়।
একবছর বয়সী যেকোনো ছাগল দ্বারা আকীকা করা যাবে।
ছেলে সন্তানের জন্য দুটি ছাগল আকীকা করা উত্তম। বিশিষ্ট সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান ও হুসাইন রা.-এর পক্ষ থেকে দুটি করে দুম্বা আকীকা করেছেন। (সুনানে নাসায়ী ২/১৬৭)
প্রকাশ থাকে যে, প্রশ্নে আকীকার অঙ্গীকারকে আমি মান্নত করেছিলাম বলে ব্যক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এভাবে বলার দ্বারাও তা মান্নত হবে না। কারণ শরীয়তে যে সমস্ত ইবাদত ফরয বা ওয়াজিব যেমন, নামায-রোযা, সদকা, কুরবানী কেবল এ ধরনের ইবাদতের মান্নত করা সহীহ। এছাড়া অন্যান্য ইবাদতের মান্নত করলেও তা মান্নত হয় না।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন