আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

বাইতুল্লাহ তাওয়াফের ফযীলত জানতে চাই

প্রশ্নঃ ১০০৩৩৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, বাইতুল্লাহ শরীফে তওয়াফ করার ফজিলত

২৩ এপ্রিল, ২০২৫
ঢাকা ১২১২

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


বাইতুল্লাহ তাওয়াফের ফযীলত:

১- হুমায়দ ইব্‌ন আবু সাবিয়া (রাহঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি ইবন হিশামকে রুকনে ইয়ামানী সম্পর্কে আতা ইব্‌ন আবু রাবাহ–এর নিকট জিজ্ঞেস করতে শুনেছি। তিনি তখন বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করছেন। আতা বলেন, আবু হুরায়রা (রাযিঃ) আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ (রুকনে ইয়ামানীতে) সত্তরজন ফিরিশতা মোতায়েন রয়েছে। অতএব যে ব্যক্তি বলে––“আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকাল আফওয়া, ওয়াল আফিয়াতা ফি'দ দুনয়া ওয়াল্–আখিরাতে,

রাব্বানা আতিনা ফিদ’–দুনয়া হাসানাতান ওয়া–ফি’ল–আখিরাতে হাসানাতান ওয়াকিনা আযাবান–নার"––তখন ফিরিশতাগণ বলেনঃ আমীন। (অর্থঃ “ইয়া আল্লাহ! আপনার নিকট ক্ষমা ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করি দুনিয়া আখিরাতের। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দুনিয়ার কল্যাণ দান করুন এবং আখিরাতেও কল্যাণ দান করুন এবং আমাদের দোযখের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন")।

আতা (রাহঃ) রুকনুল–আসওয়াদে (হাজারুল আসওয়াদ) পৌঁছলে ইব্‌ন হিশাম বলেন, হে আবু মুহাম্মাদ! এই রুকনুল আসওয়াদ সম্পর্কে আপনি কি জানতে পেরেছেন ? আতা (রাহঃ) বলেন, আবু হুরায়রা (রাযিঃ) আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)–কে বলতে শুনেছেনঃ “যে কেউ তার সামনা–সামনি হলো, সে যেন দয়াময় আল্লাহর হাতের সামনা–সামনি হলো।” ইব্‌ন হিশাম (রাহঃ) তাঁকে পুনরায় জিজ্ঞেস করেন, হে আবু মুহাম্মাদ! তাওয়াফ সম্পর্কে কি এসেছে? আতা বলেনঃ আমার নিকট আবু হুরায়রা (রাযিঃ) হাদীস বর্ণনা করেন যে, তিনি নবী (ﷺ)–কে বলতে শুনেছেনঃ “যে ব্যক্তি সাতবার বায়তুল্লাহ্ তাওয়াফ করে এবং কোন কথা না বলে নিম্নোক্ত দোয়া পড়ে “সুবহানাল্লাহ্ ওয়াল–হামদুলিল্লাহ ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ্"– তার দশটি গুনাহ মুছে যাবে, তার জন্য দশটি নেকী লেখা হবে এবং তার মর্যাদা দশগুণ বর্ধিত করা হবে। আর যে ব্যক্তি তাওয়াফ করে এবং এ .অবস্থায় কথা বলে, সে তার পদদ্বয় কেবল রহমতের মধ্যে ডুবিয়ে রাখে; যেমন কারো পদদ্বয় পানিতে ডুবিয়ে রাখে।
(সুনানে ইবনে মাজা, হাদীস নং ২৯৫৭)
https://muslimbangla.com/hadith/28248

২- হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত:
আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে এ কথা বলতে শুনেছি: যে ব্যক্তি তাওয়াফের সাত চক্কর হিসাব করে (মনোযোগ সহকারে) পূর্ণ করে এবং পরে দুই রাকাআত সালাত আদায় করে, তা তার জন্য একজন দাস মুক্ত করার সমপরিমাণ সওয়াব হবে।"
(أخبار مكة للفاکهي, হাদীস নম্বর: ২৯২)

৩-হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
"আল্লাহ্‌ তা'আলা প্রতিদিন বায়তুল্লাহর উপর একশ বিশটি (১২০টি) রহমত অবতীর্ণ করেন—এর মধ্যে ষাটটি (৬০টি) তাওয়াফকারীদের জন্য, চল্লিশটি (৪০টি) নামায আদায়কারীদের জন্য এবং বিশটি (২০টি) কা‘বা ঘরের দিকে তাকানোকারীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়।"
(أخبار مكة للأزرقي, হাদীস নম্বর: ৫৬০)

৪- ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) বলেছেন, বায়তুল্লাহর চারদিকে তাওয়াফ করা নামায আদায় করার মতই। তবে নামাযে তোমরা কথা বলতে পার না কিন্তু এতে কথা বলতে পার। সুতরাং এ সময় ভাল কথা ছাড়া কিছূ বলবে না।
(জামে' তিরমিযী, হাদীস নং: ৯৬০)
https://muslimbangla.com/hadith/30597

والله اعلم بالصواب

শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী মুফতী, ফাতাওয়া বিভাগ, মুসলিম বাংলা গবেষক, হাদীস বিভাগ, মুসলিম বাংলা খতীব, রৌশন আলী মুন্সীবাড়ী জামে মসজিদ, ফেনী

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন