রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ

رياض الصالحين من كلام سيد المرسلين

ভূমিকা অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ৬৭৯ টি

হাদীস নং: ৫০১
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি.-এর খাদ্যকষ্ট ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি মু'জিযা প্রকাশের ঘটনা
হাদীছ নং : ৫০১

অর্থ : হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর কসম, যিনি ছাড়া কোনও মা'বূদ নেই, আমি ক্ষুধার কারণে আমার বুক মাটির উপর চেপে ধরতাম এবং ক্ষুধার কারণে পেটে পাথর বেঁধে রাখতাম। একদিন আমি মানুষের চলাচলপথে বসে থাকলাম। এ অবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি আমাকে দেখে মুচকি হাসলেন এবং আমার চেহারা ও আমার মনের অবস্থা বুঝে ফেললেন। তিনি বললেন, হে আবু হিরর। আমি বললাম, লাব্বাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেন, আমার সঙ্গে এসো। তিনি চলতে থাকলেন। আমি তাঁর পেছনে পেছনে চললাম। তিনি ঘরে প্রবেশ করলেন। আমি অনুমতি চাইলাম। আমাকে অনুমতি দিলেন। সুতরাং আমি প্রবেশ করলাম। তিনি একটি পেয়ালায় কিছু দুধ পেলেন। জিজ্ঞেস করলেন, এ দুধ কোথা হতে? ঘরের লোকজন বলল, অমুক ব্যক্তি বা অমুক মহিলা আপনার জন্য হাদিয়া পাঠিয়েছে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আবু হিরর! আমি বললাম, লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেন, সুফফাবাসীদের কাছে যাও এবং তাদেরকে আমার কাছে নিয়ে এসো।
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. বলেন, সুফফাবাসীগন ছিলেন ইসলামের অতিথি। তাদের কোনও পরিবার-পরিজন, অর্থ-সম্পদ ছিল না এবং আশ্রয় নেওয়ার মত কোনও লোক তাদের ছিল না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট কোনও সদাকা আসলে তিনি তা তাদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। নিজে তা থেকে কিছু গ্রহণ করতেন না। আর যখন হাদিয়া আসত, তা তাদের কাছেও পাঠাতেন এবং নিজেও তা থেকে গ্রহণ করতেন আর তাদেরকে তাতে শরীক করতেন।
(আবু হুরায়রা রাযি. বলেন,) তাঁর এ কথা আমাকে চিন্তিত করল। আমি (মনে মনে) বললাম, এতটুকু দুধে সুফফাবাসীদের কী হবে? আমিই তো এ দুধ পান করে শক্তি অর্জনের বেশি হকদার ছিলাম। তারপর তারা যখন আসবে, তখন তিনি আমাকেই (পরিবেশনের) হুকুম দেবেন। আমি তাদেরকে তা দিতে থাকব আর সম্ভবত এ দুধ থেকে আমার ভাগে কিছুই পড়বে না। কিন্তু আল্লাহ তা'আলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদেশ পালন না করেও আমার কোনও উপায় ছিল না। সুতরাং আমি তাদের কাছে আসলাম এবং তাদেরকে ডাকলাম। তারা চলে আসল এবং প্রবেশের অনুমতি চাইল। তিনি তাদেরকে অনুমতি দিলেন। তারা ঘরে জায়গা নিয়ে বসে পড়ল।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আবু হিরর। আমি বললাম, লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেন, নাও, তাদেরকে দাও।
আবু হুরায়রা রাযি. বলেন, আমি পেয়ালা নিয়ে একেকজনকে দিতে থাকলাম। প্রত্যেকে পরিতৃপ্ত হয়ে পান করছিল, তারপর পেয়ালা আমার হাতে ফিরিয়ে দিচ্ছিল। তারপর আমি অন্যজনকে তা দিচ্ছিলাম। সেও পরিতৃপ্ত হয়ে পান করে আমার হাতে পেয়ালা ফিরিয়ে দিচ্ছিল। এভাবে সবশেষে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছলাম। তিনি ছাড়া উপস্থিত লোকদের সকলেই পরিতৃপ্ত হয়ে গেছে। তিনি পেয়ালাটি নিয়ে নিজ হাতে রাখলেন। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন।
তারপর বললেন, আবু হিরর। আমি বললাম, লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেন, এখন বাকি আছি আমি আর তুমি। আমি বললাম, ঠিক বলেছেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! বললেন, বস, পান কর। আমি বসে পান করলাম। তিনি বললেন, আরও পান কর আমি আরও পান করলাম। তিনি বলতে থাকলেন, পান কর। পরিশেষে আমি বললাম, আর না। যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন তাঁর কসম! পান করার জন্য (আমার পেটে আর খালি) জায়গা পাচ্ছি না। তিনি বললেন, তাহলে আমাকে তৃপ্ত কর। আমি পেয়ালাটি তাঁকে দিলাম। তিনি আলহামদুলিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ বলে অবশিষ্টটুকু পান করলেন- বুখারী।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
501 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - قَالَ: وَاللهِ الَّذِي لاَ إِلهَ إِلاَّ هُوَ، إنْ كُنْتُ لأَعْتَمِدُ بِكَبِدِي عَلَى الأَرْضِ مِنَ الجُوعِ، وَإنْ كُنْتُ لأَشُدُّ الحَجَرَ عَلَى بَطنِي مِنَ الْجُوعِ. وَلَقَدْ قَعَدْتُ يَومًا عَلَى طَرِيقِهِمُ الَّذِي يَخْرُجُونَ مِنْهُ، فَمَرَّ بِي النبي - صلى الله عليه وسلم - فَتَبَسَّمَ حِيْنَ رَآنِي، وَعَرَفَ مَا فِي وَجْهِي وَمَا فِي نَفْسِي، ثُمَّ قَالَ: «أَبَا هِرٍّ» قُلْتُ: لَبَّيْكَ يَا رسول الله، قَالَ: «الْحَقْ» وَمَضَى فَاتَّبَعْتُهُ، فَدَخَلَ فَاسْتَأذَنَ، فَأَذِنَ لِي فَدَخَلْتُ، فَوَجَدَ لَبَنًا في قَدَحٍ، فَقَالَ: «مِنْ أَيْنَ هَذَا اللَّبَنُ؟» قَالُوا: أهْدَاهُ لَكَ فُلانٌ - أَو فُلانَةٌ - قَالَ: «أَبَا هِرٍّ» قلتُ: لَبَّيْكَ يَا رسول اللهِ، قَالَ: «الْحَقْ إِلَى أهْلِ الصُّفَّةِ فَادْعُهُمْ لِي» قَالَ: وَأهْلُ الصُّفَّة أضْيَافُ الإِسْلاَمِ، لاَ يَأوُونَ علَى أهْلٍ وَلاَ مَالٍ وَلاَ عَلَى أحَدٍ، وَكَانَ إِذَا أتَتْهُ صَدَقَةٌ بَعَثَ بِهَا إلَيْهِمْ، وَلَمْ يَتَنَاوَلْ مِنْهَا شَيْئًا، وَإِذَا أتَتْهُ هَدِيَّةٌ أرْسَلَ إلَيْهِمْ، وَأصَابَ مِنْهَا، وأشْرَكَهُمْ فِيهَا. فَسَاءنِي ذَلِكَ، فَقُلْتُ: وَمَا هَذَا اللَّبَنُ في أهْلِ الصُّفَّةِ! كُنْتُ أحَقُّ أَنْ أُصِيبَ مِنْ هَذَا اللَّبَنِ شَرْبَةً أتَقَوَّى بِهَا، فَإذَا جَاءُوا وَأمَرَنِي فَكُنْتُ أنَا أُعْطِيهِمْ؛ وَمَا عَسَى أَنْ يَبْلُغَنِي مِنْ هَذَا اللَّبَنِ. وَلَمْ يَكُنْ مِنْ طَاعَةِ اللهِ وَطَاعَةِ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - بُدٌّ، فَأَتَيْتُهُمْ فَدَعَوْتُهُمْ، فَأقْبَلُوا وَاسْتَأذَنُوا، فَأَذِنَ لَهُمْ وَأخَذُوا مَجَالِسَهُمْ مِنَ الْبَيْتِ، قَالَ: «يَا أَبَا هِرٍّ» قُلْتُ: لَبَّيْكَ يَا رسول الله، قَالَ: «خُذْ فَأعْطِهِمْ» قَالَ: فَأخَذْتُ القَدَحَ، فَجَعَلْتُ أُعْطِيهِ الرَّجُل فَيَشْرَبُ حَتَّى يَرْوَى، ثُمَّ يَرُدُّ عَلَيَّ الْقَدَحَ، فَأُعْطِيهِ الرَّجُلَ فَيَشْرَبُ حَتَّى يَرْوَى، ثُمَّ يَرُدُّ عَلَيَّ الْقَدَحَ، فَأُعْطِيهِ الرَّجُلَ فَيَشْرَبُ حَتَّى يَرْوَى، ثُمَّ يَرُدُّ عَلَيَّ الْقَدَحَ حَتَّى انْتَهَيْتُ إِلَى النَّبيِّ - صلى الله عليه وسلم - وَقَدْ رَوِيَ الْقَوْمُ كُلُّهُمْ، فَأخَذَ الْقَدَحَ فَوضَعَهُ عَلَى يَدِهِ، فَنَظَرَ إليَّ فَتَبَسَّمَ، فَقَالَ: «أَبَا هِرٍّ» قُلْتُ: لَبَّيْكَ يَا رسول الله، قَالَ: «بَقيتُ أنَا وَأنْتَ» قُلْتُ: صَدَقْتَ يَا رسول الله، قَالَ: «اقْعُدْ فَاشْرَبْ» فَقَعَدْتُ فَشَرِبْتُ، فَقَالَ «اشْرَبْ» فَشَرِبْتُ، فَمَا زَالَ [ص:174] يَقُولُ: «اشْرَبْ» حَتَّى قُلْتُ: لا، وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالحَقِّ لاَ أجِدُ لَهُ مَسْلكًا! قَالَ: «فَأرِنِي» فَأعْطَيْتُهُ الْقَدَحَ، فَحَمِدَ الله تَعَالَى، وَسَمَّى وَشَرِبَ الفَضْلَةَ. رواه البخاري. (1)
হাদীস নং: ৫০২
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
ক্ষুধার কষ্টে হযরত আবু হুরায়রা রাযি.-এর বেহুঁশ হয়ে যাওয়া
হাদীছ নং: ৫০২

মুহাম্মাদ ইবন সীরীন রহ. থেকে বর্ণিত, হযরত আবু হুরায়রা রাযি. বলেন, আমি নিজেকে এমন অবস্থায় দেখেছি যে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিম্বর ও আয়েশা রাযি.-এর হুজরার মাঝখানে বেহুঁশ হয়ে পড়ে যেতাম। কোনও আগমনকারী এসে আমার ঘাড়ের উপর তার পা রাখত আর মনে করত, আমি একজন পাগল, অথচ আমার কোনও পাগলামি ছিল না; ছিল কেবলই ক্ষুধা - বুখারী।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
502 - وعن محمد بن سيرين، عن أَبي هريرة - رضي الله عنه - قَالَ: لَقَدْ رَأيْتُنِي وَإنِّي لأَخِرُّ فِيمَا بَيْنَ مِنْبَرِ رسولِ الله - صلى الله عليه وسلم - إِلَى حُجْرَةِ عائِشَةَ رضي الله عنها مَغْشِيًّا عَلَيَّ، فَيَجِيءُ الجَائِي، فَيَضَعُ رِجْلَهُ عَلَى عُنُقِي، وَيَرَى أنِّي مَجْنُونٌ وَمَا بِي مِنْ جُنُونٍ، مَا بِي إِلاَّ الْجُوعُ. رواه البخاري. (1)
হাদীস নং: ৫০৩
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
ওফাতকালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খাদ্যাভাব
হাদীছ নং : ৫০৩

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অবস্থায় ইন্তিকাল করেন যে, তাঁর বর্মটি ত্রিশ সা যবের বিনিময়ে জনৈক ইহুদীর কাছে বন্ধক রাখা ছিল - বুখারী ও মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
503 - وعن عائشة رضي الله عنها، قالت: تُوُفِّي رسول الله - صلى الله عليه وسلم - وَدِرْعُهُ مَرْهُونَةٌ عِنْدَ يَهُودِي في ثَلاثِينَ صَاعًا مِنْ شَعِير. متفق عَلَيْهِ. (1)
হাদীস নং: ৫০৪
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
অভাব-অনটনে উম্মাহাতুল মুমিনীনের সবর
হাদীছ নং : ৫০৪

হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বর্ম কিছু যবের বিনিময়ে বন্ধক রেখেছিলেন। আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে যবের রুটি ও বাসি চর্বি নিয়ে যাই। আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, মুহাম্মাদের পরিবারে সকালে এক সা' গমও থাকত না এবং সন্ধ্যায়ও না, অথচ তাঁরা ছিলেন ৯ ঘর - বুখারী।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
504 - وعن أنسٍ - رضي الله عنه - قَالَ: رَهَنَ النَّبيُّ - صلى الله عليه وسلم - دِرْعَهُ بِشَعِيرٍ، وَمَشَيْتُ إِلَى النَّبيِّ - صلى الله عليه وسلم - بخُبْزِ شَعِيرٍ وَإهَالَة سَنِخَةٍ، وَلَقَدْ سَمِعْتُهُ يَقُولُ: «مَا أصْبَحَ لآلِ مُحَمّدٍ صَاعٌ (1) وَلاَ أمْسَى» وَإنَّهُمْ لَتِسْعَةُ أبيَات. رواه البخاري. (2)
«الإهالَةُ» بكسر الهمزة: الشَّحْمُ الذَّائِبُ. وَ «السَّنِخَةُ» بالنون والخاء المعجمة: وَهِيَ المُتَغَيِّرَةُ.
হাদীস নং: ৫০৫
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
সুফ্ফাবাসী সাহাবীদের পোশাক কেমন ছিল
হাদীছ নং : ৫০৫

হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি সুফফাবাসীদের এমন সত্তরজনকে দেখেছি, যাদের মধ্যে এমন একজনও ছিল না, যার চাদর ছিল। হয়তো একটি লুঙ্গি ছিল কিংবা একটি কম্বল, যা তারা তাদের গলায় বেঁধে রাখতেন। আর কোনওটি আবার পায়ের গোছার অর্ধেক পর্যন্ত পৌঁছত। কোনওটি পৌঁছত হাঁটু পর্যন্ত। তারা সেটি হাত দিয়ে ধরে রাখতেন, যেন লজ্জাস্থান দেখা না যায় - বুখারী।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
505 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - قَالَ: لَقَدْ رَأَيْتُ سَبْعِينَ مِنْ أَهْلِ الصُّفَّةِ، مَا مِنْهُمْ رَجُلٌ عَلَيْهِ ردَاءٌ، إمَّا إزَارٌ وَإمَّا كِسَاءٌ، قَدْ رَبَطُوا في أعْنَاقِهِم مِنْهَا مَا يَبْلُغُ نِصْفَ السَّاقَيْن، وَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ الكَعْبَيْنِ فَيَجْمَعُهُ بِيَدِهِ كَرَاهِيَةَ أَنْ تُرَى عَوْرَتُهُ. رواه البخاري. (1)
হাদীস নং: ৫০৬
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিছানা
হাদীছ নং : ৫০৬

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের (একটি) বিছানা ছিল চামড়ার। ভেতরের পুর ছিল খেজুর গাছের বাকল– বুখারী।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
506 - وعن عائشة رضي الله عنها، قالت: كَانَ فِرَاشُ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - مِنْ أُدْمٍ (1) حَشْوُهُ لِيفٌ. رواه البخاري. (2)
হাদীস নং: ৫০৭
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
দৈন্যপীড়িত একদল সাহাবীসহ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রোগী দেখতে যাওয়া
হাদীছ নং : ৫০৭

হযরত ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে বসা ছিলাম। এমন সময় আনসারদের জনৈক ব্যক্তি এসে তাঁকে সালাম দিল। তারপর সে ফিরে চলল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ওহে আনসারদের ভাই! আমার ভাই সা'দ ইবন 'উবাদা কেমন আছে? সে বলল, ভালো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের মধ্যে কে তাকে দেখতে যাবে? এই বলে তিনি উঠলেন এবং আমরাও তাঁর সঙ্গে উঠলাম। আমরা ছিলাম দশজনেরও বেশি। আমাদের কারও পরিধানে জুতা, মোজা, টুপি ও জামা ছিল না। এ অবস্থায় আমরা লোনা ভূমির উপর দিয়ে চলছিলাম। যেতে যেতে আমরা তার কাছে এসে পৌঁছলাম। তার গোত্রের লোকজন তার চারপাশ থেকে সরে গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সঙ্গীগণ তাঁর কাছে চলে আসলেন– মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
507 - وعن ابن عمر رضي الله عنهما، قَالَ: كُنَّا جُلُوسًا مَعَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - إِذْ جَاءَ رَجُلٌ مِنَ الأنْصَارِ، فَسَلَّمَ عَلَيْهِ، ثُمَّ أدْبَرَ الأَنْصَاريُّ، فَقَالَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «يَا أخَا الأنْصَارِ، كَيْفَ أخِي سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ؟» فَقَالَ: صَالِحٌ، فَقَالَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «مَنْ يَعُودُهُ مِنْكُمْ؟» فَقَامَ وَقُمْنَا مَعَهُ، وَنَحْنُ بضْعَةَ عَشَرَ، مَا عَلَيْنَا نِعَالٌ، وَلاَ خِفَافٌ، وَلاَ قَلاَنِسُ (1)، وَلاَ قُمُصٌ، نَمْشِي في تِلك السِّبَاخِ، حَتَّى جِئْنَاهُ، فَاسْتَأْخَرَ قَوْمُهُ مِنْ حَوْله حَتَّى دَنَا رسول الله - صلى الله عليه وسلم - وَأصْحَابُهُ الَّذِينَ مَعَهُ. رواه مسلم. (2)
হাদীস নং: ৫০৮
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
শ্রেষ্ঠ যুগ : পরবর্তীকালীন লোকদের চরিত্র
হাদীছ নং : ৫০৮

হযরত ইমরান ইবনে হুসায়ন রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম হল আমার যুগের মানুষ। তারপর যারা তাদের পরবর্তী যুগে আসবে এবং তারপর যারা তাদের পরবর্তী যুগে আসবে। –ইমরান রাযি. বলেন, আমার মনে নেই, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথাটি দু'বার বলেছেন না তিনবার– তাদের পর এমন সম্প্রদায় আসবে, যারা সাক্ষ্য দেবে, অথচ তাদের কাছে সাক্ষ্য চাওয়া হবে না। তারা খেয়ানত করবে, আমানত রক্ষা করবে না। তারা মানত করবে, কিন্তু তা পূরণ করবে না এবং তাদের মধ্যে শারীরিক স্থূলতা প্রকট হবে – বুখারী ও মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
508 - وعن عِمْرَان بنِ الحُصَيْنِ رضي الله عنهما، عن النبي - صلى الله عليه وسلم - أنّه قَالَ: «خَيْرُكُمْ قَرْنِي، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ» قَالَ عِمْرَانُ: فَمَا أدْري قَالَ النبي - صلى الله عليه وسلم - مَرَّتَيْنِ أَو ثَلاَثًا «ثُمَّ يَكُونُ بَعْدَهُمْ قَوْمٌ يَشْهَدُونَ وَلاَ يُسْتَشْهَدُونَ، وَيَخُونُونَ وَلاَ يُؤْتَمَنُونَ، وَيَنْذِرُونَ وَلاَ يُوفُونَ، وَيَظْهَرُ فِيهمُ السَّمَنُ». متفقٌ عَلَيْهِ. (1)
হাদীস নং: ৫০৯
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চারটি বিশেষ নির্দেশনা
হাদীছ নং: ৫০৯

হযরত আবু উমামা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হে আদম সন্তান। তোমার অতিরিক্ত সম্পদ (সৎপথে) খরচ করাটা তোমার পক্ষে ভালো আর তা আটকে রাখা তোমার পক্ষে মন্দ। প্রয়োজন পরিমাণ সম্পদ রাখার কারণে তুমি নিন্দনীয় হবে না। তুমি যাদের ব্যয়ভার বহন কর, তাদের থেকে খরচের সূচনা করবে - তিরমিযী।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
509 - وعن أَبي أُمَامَة - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «يَا ابْنَ آدَمَ، إنَّكَ أَنْ تَبْذُلَ الفَضْلَ خَيرٌ لَكَ، وَأنْ تُمسِكَهُ شَرٌ لَكَ، ولاَ تُلاَمُ عَلَى كَفَافٍ، وَابْدأ بِمَنْ تَعُولُ». رواه الترمذي، (1) وقال: «حديث حسن صحيح».
হাদীস নং: ৫১০
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
বিশেষ তিনটি নি'আমত
হাদীছ নং : ৫১০

হযরত উবায়দুল্লাহ ইবনে মিহসান আনসারী রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তির ভোর হল এ অবস্থায় যে, সে নিজ ঘরে নিরাপদ, শারীরিকভাবে সুস্থ এবং তার কাছে সেই দিনের খাবার আছে, তাকে যেন দুনিয়ার যাবতীয় সম্পদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। - তিরমিযী
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
510 - وعن عُبيْدِ الله بنِ محْصن الأَنصَارِيِّ الخطميِّ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «مَنْ أصْبَحَ مِنْكُمْ آمِنًا في سربِهِ، مُعَافَىً في جَسَدِهِ، عِنْدَهُ قُوتُ يَوْمِهِ، فَكَأنَّمَا حِيزَتْ لَهُ الدُّنْيَا بِحَذَافِيرِهَا (1)». رواه الترمذي، (2) وقال: «حديث حسن».
«سِربه»: بكسر السين المهملة: أي نَفْسه، وَقِيلَ: قَومه.
হাদীস নং: ৫১১
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
সফল ব্যক্তির পরিচয়
হাদীছ নং : ৫১১

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ওই ব্যক্তি সফল হয়েছে, যে ইসলাম গ্রহণ করেছে, তার কাছে প্রয়োজন পরিমাণ জীবিকা আছে এবং আল্লাহ তা'আলা তাকে যা দিয়েছেন, তাতে তাকে সন্তুষ্ট রেখেছেন - মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
511 - وعن عبد الله بن عَمْرو بنِ العاص رضي الله عنهما: أن رسول الله - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «قَدْ أفْلَحَ مَنْ أسْلَمَ، وَكَانَ رِزْقُهُ كَفَافًا، وَقَنَّعَهُ اللهُ بِمَا آتَاهُ». رواه مسلم. (1)
হাদীস নং: ৫১২
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
হাদীছ নং : ৫১২

হযরত আবু মুহাম্মাদ ফাযালা ইবনে উবায়দ আনসারী রাযি. থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, ওই ব্যক্তির জন্য সুসংবাদ, যাকে ইসলামের হিদায়াত দেওয়া হয়েছে এবং যার প্রয়োজন পরিমাণ জীবিকা আছে আর তাতে সে সন্তুষ্ট - তিরমিযী ।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
512 - وعن أَبي محمدٍ فضَالَة بن عبيدٍ الأنصاريِّ - رضي الله عنه: أنه سمع رسول الله - صلى الله عليه وسلم - يقول: «طُوبَى لِمَنْ هُدِيَ لِلإسْلاَمِ، وَكَانَ عَيْشُهُ كَفَافًا وَقَنِعَ». رواه الترمذي، (1) وقال: «حديث حسن صحيح».
হাদীস নং: ৫১৩
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
নবী-পরিবারের দীর্ঘ অনাহার ও তাঁদের খাদ্য
হাদীছ নং : ৫১৩

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একনাগাড়ে কয়েক রাত অনাহারে কাটাতেন এবং তার পরিবারবর্গও। তাঁরা রাতের খাবার পেতেন না। তাদের অধিকাংশ রুটি হতো যবের রুটি – তিরমিযী |
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
513 - وعن ابن عباس رضي الله عنهما، قَالَ: كَانَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - يَبيتُ اللَّيَالِيَ الْمُتَتَابِعَةَ طَاوِيًا، وَأهْلُهُ لاَ يَجِدُونَ عَشَاءً، وَكَانَ أكْثَرُ خُبْزِهِمْ خُبزَ الشَّعيرِ. رواه الترمذي، (1) وقال: «حديث حسن صحيح».
হাদীস নং: ৫১৪
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
আসহাবুস সুফ্ফার খাদ্যাভাব ও তাদের ফযীলত
হাদীছ নং: ৫১৪

হযরত ফাযালা ইবনে উবায়দ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সাহাবীদের নিয়ে নামায পড়তেন, তখন নামাযে দাঁড়ানো ব্যক্তিবর্গের মধ্যে কতক লোক তীব্র ক্ষুধার করণে অচেতন হয়ে পড়ত। তারা হল আসহাবে সুফ্ফা। বেদুঈনরা বলত, এরা পাগল। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায শেষে তাদের দিকে ফিরে বলতেন, আল্লাহর কাছে তোমাদের জন্য কী সংরক্ষিত আছে তা যদি জানতে, তবে তোমরা অবশ্যই আরও বেশি ক্ষুধা ও অভাবগ্রস্ততা কামনা করতে- তিরমিযী।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
514 - وعن فُضَالَةَ بن عبيدٍ - رضي الله عنه: أنَّ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - كَانَ إِذَا صَلَّى بِالنَّاسِ، يَخِرُّ رِجَالٌ مِنْ قَامَتِهِمْ في الصَّلاةِ مِنَ الخَصَاصَةِ - وَهُمْ أصْحَابُ الصُّفَّةِ - حَتَّى يَقُولَ الأعْرَابُ: هؤُلاء مَجَانِينٌ. فَإذَا صلَّى رسول الله - صلى الله عليه وسلم - انْصَرَفَ إلَيْهِمْ، فَقَالَ: «لَوْ تَعْلَمُونَ مَا لَكُمْ عِنْدَ اللهِ تَعَالَى، لأَحْبَبْتُمْ أَنْ تَزْدَادُوا فَاقَةً وَحَاجَةً». رواه الترمذي، (1) وقال: «حديث صحيح».
«الخَصَاصَةُ»: الفَاقَةُ وَالجُوعُ الشَّدِيدُ.
হাদীস নং: ৫১৫
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
খাওয়ার পরিমাপ : উদরপূর্তি করে খাওয়ার অনিষ্টতা
হাদীছ নং: ৫১৫

হযরত আবু কারীমা মিকদাম ইবন মা'দীকারিব রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, কোনও মানুষ উদর অপেক্ষা নিকৃষ্টতর কোনও পাত্র কখনও ভর্তি করেনি। আদম সন্তানের এমন কয়েক লোকমা খাবারই যথেষ্ট, যা দ্বারা মেরুদণ্ড সোজা রাখতে পারে। একান্ত যদি আরও বেশি প্রয়োজনই হয়, তবে পেটের এক-তৃতীয়াংশ রাখবে খাদ্যের জন্য, এক-তৃতীয়াংশ পানির জন্য এবং এক-তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য - তিরমিযী।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
515 - وعن أَبي كريمة المقدام بن معد يكرِبَ - رضي الله عنه - قَالَ: سَمِعْتُ رسولَ الله - صلى الله عليه وسلم - يقول: «مَا مَلأَ آدَمِيٌّ وِعَاء شَرًّا مِنْ بَطْنٍ، بِحَسْبِ ابنِ آدَمَ أُكُلاَتٌ يُقِمْنَ صُلْبَهُ، فإنْ كانَ لا مَحالةَ فثُلُثٌ لِطَعَامِهِ، وَثُلُثٌ لِشَرابِهِ، وَثُلُثٌ لِنَفَسه». رواه الترمذي، (1) وقال: «حديث حسن».
«أكُلاَتٌ» أيْ: لُقَمٌ.
হাদীস নং: ৫১৬
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
সাদামাটা জীবনাচার ঈমানের অন্তর্ভুক্ত
হাদীছ নং: ৫১৬

হযরত আবু উমামা ইয়াস ইবনে ছা'লাবা হারিছী আনসারী রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণ তাঁর কাছে বসে দুনিয়ার বিষয় উল্লেখ করেছিলেন। তা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা কি শুনছ না, তোমরা কি শুনছ না, নিশ্চয়ই কৃচ্ছতা ঈমানের অন্তর্ভুক্ত, নিশ্চয়ই কৃচ্ছতা ঈমানের অন্তর্ভুক্ত - আবু দাউদ ।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
516 - وعن أَبي أُمَامَة إياسِ بن ثعلبةَ الأَنْصَارِيِّ الحارثي - رضي الله عنه - قَالَ: ذَكَرَ أصْحَابُ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - يَومًا عِنْدَهُ الدُّنْيَا، فَقَالَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «ألاَ تَسْمَعُونَ؟ ألاَ تَسْمَعُونَ؟ إنَّ البَذَاذَةَ مِنَ الإِيمَانِ، إنَّ البَذَاذَةَ مِنَ الإِيمَانِ» يَعْنِي: التَّقَحُّلَ. رواهُ أَبو داود. (1)
«البَذَاذَةُ» - بالباءِ الموحدةِ والذالين المعجمتين - وَهِيَ رَثَاثَةُ الهَيْئَةِ وَتَرْكُ فَاخِرِ اللِّبَاسِ. وَأَمَّا «التَّقَحُّلُ» فبالقافِ والحاء: قَالَ أهْلُ اللُّغَةِ: المُتَقَحِّلُ هُوَ الرَّجُلُ اليَابِسُ الجِلْدِ مِنْ خُشُونَةِ العَيْشِ وَتَرْكِ التَّرَفُّهِ.
হাদীস নং: ৫১৭
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
আবু উবায়দা রাযি.-এর নেতৃত্বাধীন এক যুদ্ধাভিযান, তাতে প্রচণ্ড খাদ্যসংকট, আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে আম্বর মাছের ব্যবস্থা
হাদীছ নং : ৫১৭

হযরত আবু আব্দুল্লাহ জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরাইশদের একটি কাফেলাকে পাকড়াও করার জন্য আমাদের প্রেরণ করেন। আবু উবায়দাকে আমাদের আমীর বানান। রসদ হিসেবে তিনি আমাদেরকে মাত্র এক থলি খেজুর দিয়েছিলেন। তিনি এছাড়া আমাদেরকে দেওয়ার জন্য আর কিছুই পাননি। আবু উবায়দাও আমাদেরকে একটি করে খেজুর দিতেন। তাকে বলা হল, মাত্র একটি খেজুর দিয়ে আপনারা কী করতেন? তিনি বললেন, শিশুরা যেমন চোষে, তেমনি আমরা সেটি চুষতাম। তারপর পানি পান করতাম। তাতেই রাত পর্যন্ত সে দিনটি আমাদের চলে যেত। আর আমরা লাঠি দ্বারা পিটিয়ে গাছের পাতা পাড়তাম। তারপর তা পানিতে ভিজিয়ে খেয়ে নিতাম।
হযরত জাবির রাযি. বলেন, আমরা সাগরের উপকূলে পৌঁছলাম। সাগরের অববাহিকায় বিশাল স্তুপের মত কিছু একটা আমাদের চোখে পড়ল। আমরা সেটির কাছে আসলাম দেখি কি সেটি আম্বর নামক এক সামুদ্রিক জীব। আবু উবায়দা বললেন, এটি মরা। তারপর বললেন, না, বরং আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রেরিত এবং আমরা আল্লাহর রাস্তায় আছি। আর তোমরা তো অপারগ হয়ে পড়েছ। সুতরাং তোমরা এটি খাও। আমরা একমাস সেটি খেয়েই থাকলাম।
আমরা ছিলাম তিনশ' জন। সেটি খেয়ে আমরা মোটাতাজা হয়ে গেলাম। আমি দেখেছি যে, আমরা সেটির চোখের কোটর থেকে মটকা ভরে তেল বের করছি এবং বলদের মত সেটির গোশত টুকরা টুকরা করে কাটছি। অথবা (বলেছেন,) বলদের পরিমাণ (বড় বড় খণ্ড করে কাটছি)।
আবু উবায়দা আমাদের তেরোজন লোককে ধরে সেটির কোটরে বসিয়ে দেন। তিনি সেটির পাঁজরের একটি হাড় নিয়ে দাঁড় করান। তারপর আমাদের সঙ্গে সবচে' বড় একটি উটের উপর হাওদা স্থাপন করেন। তারপর সে হাড়ের নিচ থেকে সেটি পার হয়ে গেল। আমরা রসদরূপে তার কিছু খণ্ড সঙ্গে নিয়ে নিলাম।
মদীনায় পৌঁছার পর আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসলাম এবং তাঁর কাছে সেটির বৃত্তান্ত উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, তা রিযিক, যা আল্লাহ তা'আলা তোমাদের জন্য (সাগর থেকে) বের করেছেন। তোমাদের সঙ্গে কি তার কিছু গোশত আছে? থাকলে আমাদের খাওয়াও। আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে তার কিছু পাঠালাম। তিনি তা খেলেন – মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
517 - وعن أَبي عبد الله جابر بن عبد الله رضي الله عنهما، قَالَ: بَعَثَنَا رسول الله - صلى الله عليه وسلم - وَأمَّرَ عَلَيْنَا أَبَا عُبَيْدَةَ - رضي الله عنه - نَتَلَقَّى عِيرًا لِقُرَيْشٍ، وَزَوَّدَنَا جِرَابًا مِنْ تَمْرٍ لَمْ يَجِدْ لَنَا غَيْرَهُ، فَكَانَ أَبو عُبيدَةَ يُعْطِينَا تَمْرَةً تَمْرَةً، فَقيلَ: كَيْفَ كُنْتُمْ تَصْنَعُونَ بِهَا؟ قَالَ: نَمَصُّهَا كَمَا يَمَصُّ الصَّبي، ثُمَّ نَشْرَبُ عَلَيْهَا مِنَ الْمَاءِ، فَتَكْفِينَا يَوْمَنَا إِلَى اللَّيْلِ، وَكُنَّا نَضْرِبُ بِعِصيِّنَا الخَبَطَ، ثُمَّ نَبُلُّهُ بِالماءِ فَنَأكُلُهُ. قَالَ: وَانْطَلَقْنَا عَلَى سَاحِلِ الْبَحْرِ، فَرُفِعَ لَنَا عَلَى سَاحِلِ الْبَحْرِ كَهَيْئَةِ الكَثِيبِ الضَّخْمِ، فَأَتَيْنَاهُ فَإذَا هِيَ دَابَّةٌ تُدْعَى الْعَنْبَرَ (1)، فَقَالَ أَبو عُبَيْدَةَ: مَيْتَةٌ، ثُمَّ قَالَ: لا، بَلْ نَحْنُ رُسُلُ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - وفي سبيل الله وَقَدِ اضْطُرِرْتُمْ فَكُلُوا، فَأقَمْنَا عَلَيْهِ شَهْرًا، وَنَحْنُ ثَلاَثُمِئَةٍ حَتَّى سَمِنَّا، وَلَقَدْ رَأيْتُنَا نَغْتَرِفُ مِن وَقْبِ عَيْنِهِ بِالقِلاَلِ الدُّهْنَ وَنَقْطَعُ مِنْهُ الفِدَرَ كالثَّوْرِ أَوْ كَقَدْرِ الثَّوْرِ، وَلَقَدْ أَخَذَ مِنَّا أَبو عُبَيْدَةَ ثَلاثَةَ عَشَرَ رَجُلًا فَأقْعَدَهُمْ في وَقْبِ عَيْنِهِ وَأخَذَ ضِلْعًا مِنْ أضْلاَعِهِ فَأقَامَهَا ثُمَّ رَحَلَ أعْظَمَ بَعِيرٍ مَعَنَا فَمَرَّ مِنْ تَحْتهَا وَتَزَوَّدْنَا مِنْ لَحْمِهِ وَشَائِقَ، فَلَمَّا قَدِمْنَا المَدِينَةَ أَتَيْنَا رسول الله - صلى الله عليه وسلم - فَذَكَرْنَا ذَلِكَ لَهُ، فَقَالَ: «هُوَ رِزْقٌ أخْرَجَهُ اللهُ لَكُمْ، فَهَلْ مَعَكُمْ مِنْ لَحْمِهِ شَيْءٌ فَتُطْعِمُونَا؟» فَأرْسَلْنَا إِلَى رسول الله - صلى الله عليه وسلم - مِنْهُ فَأكَلَهُ. رواه مسلم. (2)
«الجِرَابُ»: وِعَاءٌ مِنْ جِلْدٍ مَعْرُوفٌ، وَهُوَ بِكَسرِ الجيم وفتحها والكسر أفْصَحُ. قَوْلُهُ: «نَمَصُّهَا» بفتح الميم، وَ «الخَبَطُ»: وَرَقُ شَجَرٍ مَعْرُوفٍ تَأكُلُهُ الإبِلُ. وَ «الكَثِيبُ»: التَّلُّ مِنَ الرَّمْلِ، وَ «الوَقْبُ»: بفتح الواو وَإسكان القافِ وبعدها بَاءٌ موحدةٌ وَهُوَ نُقْرَةُ العَيْنِ. وَ «القِلاَلُ»: الجِرار. وَ «الفِدَرُ» بكسرِ الفاءِ وفتح الدال: القِطَعُ. «رَحَلَ البَعِيرَ» بتخفيف الحاءِ: أيْ جَعَلَ عَلَيْهِ الرَّحْلِ. «الوَشَائِقُ» بالشينِ المعجمةِ والقاف: اللَّحْمُ الَّذِي اقْتُطِعَ لِيُقَدَّدَ مِنْهُ، والله أعلم.
হাদীস নং: ৫১৮
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জামার হাতা কেমন হতো
হাদীছ নং : ৫১৮

হযরত আসমা বিনতে ইয়াযীদ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জামার আস্তিন ছিল কব্জি পর্যন্ত - আবু দাউদ ও তিরমিযী ।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
518 - وعن أسماء بنتِ يزيد رضي الله عنها، قالت: كَانَ كُمُّ قَمِيصِ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - إِلَى الرُّصْغِ. رواه أَبو داود والترمذي، (1) وقال: «حديث حسن». [ص:178]
«الرُّصْغُ» بالصاد وَالرُّسْغُ بالسينِ أيضًا: هُوَ المَفْصِلُ بَيْنَ الكفِّ والسَّاعِدِ.
হাদীস নং: ৫১৯
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
খন্দকের যুদ্ধকালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হযরত জাবির রাযি.-এর মেহমানদারি : খাদ্যের ভেতর মু'জিযার প্রকাশ
হাদীছ নং : ৫১৯

অর্থ : হযরত জাবির রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধকালে আমরা পরিখা খনন করছিলাম। এ অবস্থায় একটি বিরাট কঠিন পাথর প্রকাশ পেল। সাহাবীগণ নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, এই একটি কঠিন পাথর, পরিখার মধ্যে দেখা দিয়েছে। তিনি বললেন, আমি নামছি। এই বলে তিনি উঠলেন। তখন তাঁর পেটে একটি পাথর বাঁধা ছিল। –আমরা তিনদিন এভাবে কাটাচ্ছিলাম যে, কোনও খাদ্য চেখে দেখতে পারিনি– নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোদাল হাতে নিয়ে পাথরটিতে আঘাত করলেন। অমনি সেটি ঝরঝরে বালুরাশিতে পরিণত হয়ে গেল। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দিন।
আমি (বাড়িতে গিয়ে) স্ত্রীকে বললাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এমন অবস্থায় দেখেছি, যা সহ্য করা যায় না। তোমার কাছে কিছু আছে কি? তিনি বললেন, আমার কাছে কিছু যব ও একটি বকরির বাচ্চা আছে। আমি বাচ্চাটি জবাই করলাম এবং যব পিষলাম। তারপর হাঁড়িতে গোশত চড়িয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে চলে আসলাম। ততক্ষণে আটা নরম হয়ে রুটি তৈরির উপযুক্ত হয়ে গেছে আর চুলার উপর হাঁড়ি (-এর গোশত) প্রায় সেদ্ধ হয়ে এসেছে।
আমি বললাম, আমার ঘরে সামান্য কিছু খাবার আছে ইয়া রাসূলাল্লাহ, আপনি উঠুন এবং আপনার সঙ্গে দু'-একজন লোকও। তিনি বললেন, তা কী পরিমাণ? আমি তাঁর কাছে পরিমাণ বললাম। তিনি বললেন, প্রচুর (ও) উত্তম (খাবার)। তুমি তাকে (স্ত্রীকে) বলো, আমি না আসা পর্যন্ত যেন চুলা থেকে হাঁড়ি ও রুটি না নামায়।
তারপর বললেন, তোমরা চলো। অমনি মুহাজির ও আনসারগণ উঠে পড়লেন। আমি স্ত্রীর কাছে এসে বললাম, সর্বনাশ! নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং আনসার- মুহাজির ও তাঁদের সঙ্গের সকলে চলে এসেছেন। তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি আপনাকে কিছু জিজ্ঞেস করেছিলেন? বললাম, হাঁ।
তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা প্রবেশ করো কিন্তু ভীড় করো না। তিনি রুটি টুকরো টুকরো করে তার উপর গোশত রাখতে থাকলেন। প্রত্যেকবার তা নেওয়ার পর হাঁড়ি ও চুলা ঢেকে রাখছিলেন আর তা সাহাবীদের দিকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। তারপর আবার তা থেকে বের করছিলেন। এভাবে তিনি রুটি টুকরো টুকরো করতে থাকলেন এবং হাঁড়ি থেকেও গোশত নিতে থাকলেন। এমনকি সকলে পরিতৃপ্ত হয়ে গেলেন। তারপরও কিছু অবশিষ্ট থাকল। তিনি (জাবির রাযি. এর স্ত্রীকে) বললেন, তুমি এটি খাও এবং হাদিয়া দাও। মানুষ বড় ক্ষুধার্ত - বুখারী ও মুসলিম ।
অপর এক বর্ণনায় আছে, হযরত জাবির রাযি. বলেন, যখন পরিখা খনন করা হয়, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ক্ষুধার্ত দেখতে পেলাম। আমি স্ত্রীর কাছে ফিরে আসলাম। বললাম, তোমার কাছে কিছু আছে কি? আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত দেখেছি। সে আমার সামনে এক সা পরিমাণ যবের একটি থলি বের করল। আর আমাদের একটি পালিত ভেড়ার বাচ্চা ছিল। আমি সেটি জবাই করলাম আর স্ত্রী যব পিষল। আমার কাজ শেষ হতে হতে তারও কাজ শেষ হয়ে গেল। আমি গোশত টুকরো টুকরো করে হাঁড়িতে রাখলাম। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ছুটে চললাম।
স্ত্রী বললেন, দেখুন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সঙ্গীদের কাছে আমাকে যেন বেইজ্জত না করেন।
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসলাম এবং তাঁর কানে কানে বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা একটি ভেড়ার বাচ্চা জবাই করেছি আর আমার স্ত্রী এক সা পরিমাণ যব পেষণ করেছে। আপনি কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আসুন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উচ্চ আওয়াজে বললেন, ওহে পরিখা খননকারীগণ! জাবির তোমাদের জন্য ভোজের আয়োজন করেছে। তোমরা দ্রুত চলো। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, আমি না আসা পর্যন্ত তোমরা হাঁড়ি নামিয়ো না এবং খামিরা দিয়ে রুটি বানিয়ো না। আমি বাড়িতে চলে আসলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের সামনে সামনে আসতে থাকলেন।
বাড়ি এসে পৌঁছালে স্ত্রী আমাকে মুখঝামটা দিতে থাকলেন। আমি বললাম, তুমি আমাকে যা যা বলতে বলেছিলে তা তো বলেছি। যাহোক, তারপর তিনি খামির বের করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাতে নিজ থুতু ছিটিয়ে দিলেন এবং বরকতের দু'আ করলেন। তারপর হাঁড়ির কাছে আসলেন এবং তাতে থুতু ছিটিয়ে দিলেন ও বরকতের দু'আ করলেন। তারপর বললেন, কোনও রাঁধুনীকে ডাকো, সে এসে তোমার সঙ্গে রুটি তৈরি করুক। হাঁড়ি থেকে গোশত বের করো, কিন্তু চুলা থেকে নামিয়ো না ।
আগত লোকসংখ্যা ছিল এক হাজার। আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, তারা সকলেই (পেট ভরে) খেলেন এবং কিছু অবশিষ্টও রাখলেন। তারপর তারা চলে গেলেন। তখনও আমাদের হাঁড়ি আগের মতই শব্দ করে ফুটছিল এবং আমাদের খামির দ্বারা আগের মতোই রুটি তৈরি করা যাচ্ছিল।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
519 - وعن جابر - رضي الله عنه - قَالَ: إنَّا كُنَّا يَوْمَ الْخَنْدَقِ نَحْفِرُ، فَعَرَضَتْ كُدْيَةٌ شَدِيدَةٌ، فَجَاؤُوا إِلَى النبي - صلى الله عليه وسلم - فقالوا: هذِهِ كُدْيَةٌ عَرَضَتْ في الخَنْدَقِ. فَقَالَ: «أنَا نَازِلٌ» ثُمَّ قَامَ، وَبَطْنُهُ مَعْصُوبٌ بِحَجَرٍ، وَلَبِثْنَا ثَلاَثَة أيّامٍ لاَ نَذُوقُ ذَوَاقًا، فَأخَذَ النبي - صلى الله عليه وسلم - المِعْوَلَ، فَضَرَبَ فَعَادَ كَثيبًا أهْيَلَ أَو أهْيَمَ، فقلت: يَا رسول الله، ائْذَنْ لي إِلَى البَيْتِ، فقلتُ لامْرَأتِي: رَأيْتُ بالنَّبيِّ - صلى الله عليه وسلم - شَيئًا مَا في ذَلِكَ صَبْرٌ فَعِنْدَكِ شَيْءٌ؟ فقالت: عِنْدي شَعِيرٌ وَعَنَاقٌ (1)، فَذَبَحْتُ العَنَاقَ وَطَحَنْتُ الشَّعِيرَ حَتَّى جَعَلْنَا اللَّحْمَ في البُرْمَةِ، ثُمَّ جِئْتُ النبي - صلى الله عليه وسلم - وَالعَجِينُ قَدِ انْكَسَرَ، وَالبُرْمَةُ بَيْنَ الأثَافِيِّ قَدْ كَادَتْ تَنْضِجُ، فقلتُ: طُعَيْمٌ لي، فَقُمْ أنْتَ يَا رسول اللهِ وَرَجُلٌ أَوْ رَجُلانِ، قَالَ: «كَمْ هُوَ»؟ فَذَكَرْتُ لَهُ، فَقَالَ: «كثيرٌ طَيِّبٌ قُل لَهَا لاَ تَنْزَع البُرْمَةَ، وَلاَ الخبْزَ مِنَ التَّنُّورِحتى آتِي» فَقَالَ: «قُومُوا»، فقام المُهَاجِرُونَ وَالأنْصَارُ، فَدَخَلْتُ عَلَيْهَا فقلتُ: وَيْحَكِ قَدْ جَاءَ النبيُّ - صلى الله عليه وسلم - وَالمُهَاجِرُونَ وَالأنْصَارُ ومن مَعَهُمْ! قالت: هَلْ سَألَكَ؟ قُلْتُ: نَعَمْ، قَالَ: «ادْخُلُوا وَلاَ تَضَاغَطُوا» فَجَعَلَ يَكْسرُ الخُبْزَ، وَيَجْعَلُ عَلَيْهِ اللَّحْمَ، وَيُخَمِّرُ البُرْمَةَ (2) وَالتَّنُّور إِذَا أخَذَ مِنْهُ، وَيُقَرِّبُ إِلَى أصْحَابِهِ ثُمَّ يَنْزعُ، فَلَمْ يَزَلْ يِكْسِرُ وَيَغْرِفُ حَتَّى شَبِعُوا، وَبَقِيَ مِنْهُ، فَقَالَ: «كُلِي هَذَا وَأهِدي، فَإنَّ النَّاسَ أصَابَتْهُمْ مَجَاعَةٌ». متفقٌ عَلَيْهِ. (3)
وفي رواية قَالَ جابر: لَمَّا حُفِرَ الخَنْدَقُ رَأيْتُ بالنبيِّ - صلى الله عليه وسلم - خَمَصًا، فَانْكَفَأْتُ إِلَى امْرَأتِي، فقلت: هَلْ عِنْدَكِ شَيْءٌ؟ فَإنّي رَأيْتُ برسول الله - صلى الله عليه وسلم - خَمَصًا شَديدًا، فَأخْرَجَتْ إلَيَّ جِرَابًا فِيه صَاعٌ مِنْ شَعِيرٍ، وَلَنَا بَهِيمَةٌ دَاجِنٌ فَذَبَحْتُهَا، وَطَحَنتِ الشَّعِيرَ، فَفَرَغَتْ إِلَى فَرَاغي، وَقَطَعْتُهَا في بُرْمَتها، ثُمَّ وَلَّيْتُ إِلَى رسول الله - صلى الله عليه وسلم - فقالت: لاَ تَفْضَحْنِي برسول الله - صلى الله عليه وسلم - وَمَنْ مَعَهُ، فَجئتهُ فَسَارَرْتُهُ، فَقُلْتُ: يَا رسول الله، ذَبَحْنَا بهيمَة لَنَا، وَطَحَنْتُ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ، فَتَعَالَ أنْتَ وَنَفَرٌ مَعَكَ، فَصَاحَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - فَقَالَ: «يَا أهلَ الخَنْدَقِ: إنَّ جَابِرًا قَدْ صَنَعَ سُؤْرًا فَحَيَّهَلا بِكُمْ» فَقَالَ النبي - صلى الله عليه وسلم: «لاَ تُنْزِلُنَّ بُرْمَتَكُمْ وَلاَ تَخْبزنَّ عَجِينَكُمْ حَتَّى أجِيءَ» فَجِئْتُ، وَجَاءَ النبي - صلى الله عليه وسلم - يَقْدُمُ النَّاسَ، حَتَّى جِئْتُ امْرَأتِي،
فقالَتْ: بِكَ وَبِكَ! فقُلْتُ: قَدْ فَعَلْتُ الَّذِي قُلْتِ. فَأخْرَجَتْ عَجِينًا، فَبسَقَ فِيهِ وَبَاركَ، ثُمَّ عَمَدَ إِلَى بُرْمَتِنا فَبصَقَ وَبَارَكَ، ثُمَّ قَالَ: «ادْعِي خَابزَةً فَلْتَخْبِزْ مَعَكِ، وَاقْدَحِي مِنْ بُرْمَتِكُمْ، وَلاَ تُنْزِلُوها» وَهُم ألْفٌ، فَأُقْسِمُ بِالله لأَكَلُوا حَتَّى تَرَكُوهُ وَانْحَرَفُوا، وَإنَّ بُرْمَتَنَا لَتَغِطّ كَمَا هِيَ،
وَإنَّ عَجِينَنَا لَيُخْبَزُ كَمَا هُوَ.
قَوْله: «عَرَضَتْ كُدْيَةٌ» بضم الكاف وإسكان الدال وبالياء المثناة تَحْتَ، وَهِيَ قِطْعَةٌ غَلِيظَةٌ صُلْبَةٌ مِنَ الأرضِ لاَ يَعْمَلُ فِيهَا الفَأسُ، وَ «الكَثيبُ» أصْلُهُ تَلُّ الرَّمْل، وَالمُرَادُ هُنا: صَارَتْ تُرابًا نَاعِمًا، وَهُوَ مَعْنَى «أهْيَلَ». وَ «الأَثَافِيُّ»: الأحجَارُ الَّتي يكُونُ عَلَيْهَا القِدْرُ، وَ «تَضَاغَطُوا»: تَزَاحَمُوا. وَ «المَجَاعَةُ»: الجُوعُ، وَهُوَ بفتح الميم. وَ «الخَمَصُ»: بفتح الخاء المعجمة والميم: الجُوعُ، وَ «انْكَفَأتُ»: انْقَلَبْتُ وَرَجَعْتُ. و «البُهَيْمَةُ» بضم الباء، تصغير بَهْمَة وَهيَ، العَنَاقُ، بفتح العين. وَ «الدَّاجِنُ»: هِيَ الَّتي ألِفَتِ البَيْتَ: وَ «السُّؤْرُ» الطَّعَامُ الَّذِي يُدْعَى النَّاسُ إِلَيْهِ؛ وَهُوَ بالفَارِسيَّة. وَ «حَيَّهَلا» أيْ تَعَالُوا. وَقَوْلُهَا «بك وَبكَ» أيْ خَاصَمَتْهُ وَسَبَّتْهُ، لأَنَّهَا اعْتَقَدَتْ أنَّ الَّذِي عِنْدَهَا لاَ يَكْفِيهمْ، فَاسْتَحْيَتْ وَخَفِيَ عَلَيْهَا مَا أكْرَمَ الله سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى بِهِ نَبِيَّهُ - صلى الله عليه وسلم - مِنْ هذِهِ المُعْجِزَةِ الظَّاهِرَةِ وَالآية البَاهِرَةِ. «بَسَقَ» أيْ: بَصَقَ؛ وَيُقَالُ أيْضًا: بَزَقَ، ثَلاث لُغاتٍ. وَ «عَمَدَ» بفتح الميم، أيْ: قَصَدَ. وَ «اقْدَحي» أيْ: اغْرِفِي؛ وَالمِقْدَحَةُ: المِغْرَفَةُ. وَ «تَغِطُّ» أيْ: لِغَلَيَانِهَا صَوْتٌ، والله أعلم.
হাদীস নং: ৫২০
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও অন্যান্য সাহাবীদেরকে হযরত আবূ তালহা আনসারী রাযি.-এর দাওয়াত খাওয়ানো
হাদীছ নং : ৫২০

অর্থ : হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু তালহা রাযি. উম্মু সুলায়ম রাযি.-কে বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুর্বল কণ্ঠস্বর শুনেছি। আমি তাতে ক্ষুধা অনুভব করেছি। তোমার কাছে কিছু আছে কি? তিনি বললেন, হাঁ। এই বলে তিনি যবের কয়েক টুকরো রুটি বের করলেন। তারপর তার একটা ওড়না নিয়ে একাংশ দিয়ে রুটি পেঁচালেন এবং তা আমার কাপড়ের নিচে ঢুকিয়ে দিয়ে ওড়নার অপর অংশ আমার গায়ে জড়িয়ে দিলেন। তারপর আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে পাঠালেন। আমি তা নিয়ে গেলাম।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মসজিদে বসা পেলাম। তাঁর সঙ্গে লোকজন আছে। আমি তাদের সামনে দাঁড়ালাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, তোমাকে আবু তালহা পাঠিয়েছে? বললাম, হাঁ। তিনি বললেন, খাবার দিয়ে? বললাম, হাঁ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা ওঠো। তারা (উঠে আমাদের বাড়ির দিকে) চললেন। আমি তাদের আগে আগে চললাম। আবু তালহার কাছে এসে এ খবর তাকে দিলাম।
আবু তালহা রাযি. বললেন, হে উম্মু সুলায়ম! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকজন নিয়ে এসেছেন। আমাদের কাছে তো তাদেরকে খাওয়ানোর মত খাবার নেই! উম্মু সুলায়ম বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ভালো জানেন ।
তারপর আবু তালহা রাযি. এগিয়ে গিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে মিলিত হলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সঙ্গে এগিয়ে আসলেন। এসে তাঁরা দু'জন প্রবেশ করলেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে উম্মু সুলায়ম! তোমার কাছে যা আছে বের কর। উম্মু সুলায়ম রাযি. সেই রুটি নিয়ে আসলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিলে তা টুকরো টুকরো করা হল। উম্মু সুলায়ম তার উপর একটা কৌটা (থেকে ঘি) ঢেলে দিয়ে তরকারি বানালেন।
তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাতে আল্লাহ তা'আলার যা ইচ্ছা ছিল তাই বললেন। তারপর বললেন, দশজনকে অনুমতি দাও। তিনি তাদেরকে অনুমতি দিলেন। তারা পরিতৃপ্ত হয়ে খেলেন। তারপর বের হয়ে গেলেন। তারপর বললেন, দশজনকে অনুমতি দাও। তিনি তাদেরকে অনুমতি দিলেন। তারা পরিতৃপ্ত হয়ে খেলেন। তারপর বের হয়ে গেলেন। তারপর বললেন, দশজনকে অনুমতি দাও। তিনি তাদেরকে অনুমতি দিলেন। এভাবে উপস্থিত লোকদের সকলে পরিতৃপ্ত হয়ে খেলেন। লোকসংখ্যা ছিল সত্তর জন বা আশি জন - বুখারী ও মুসলিম।
অপর এক বর্ণনায় আছে, দশজন করে প্রবেশ করতে ও বের হতে থাকলেন। এমনকি তাদের একজনও বাকি থাকল না। প্রত্যেকেই ঢুকলেন এবং পরিতৃপ্ত হয়ে খেলেন। তারপর অবশিষ্ট খাবার একত্র করে দেখা গেল তা যখন তারা খাওয়া শুরু করেছিলেন তখনকার মতই আছে।
অপর এক বর্ণনায় আছে, তারা দশজন দশজন করে খেলেন। এভাবে আশি জনের সঙ্গে এরকম করলেন। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং ঘরের লোকজন খেলেন। তারপরও কিছু অবশিষ্ট রাখলেন।
অপর এক বর্ণনায় আছে, তারপর তারা এ পরিমাণ অবশিষ্ট রাখলেন, যা প্রতিবেশীদের কাছে তারা পৌঁছিয়েছিলেন।
অপর এক বর্ণনায় আছে, হযরত আনাস রাযি. বলেন, আমি একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসলাম। এসে দেখলাম তিনি সাহাবীগণের সঙ্গে বসা আছেন আর নিজ পেট একটি কাপড়ের টুকরো দ্বারা বেঁধে রেখেছেন। আমি তাঁর সঙ্গীদের কাউকে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাপড়ের টুকরো দ্বারা পেট বেঁধে রেখেছেন কেন? তারা বললেন, ক্ষুধার কারণে। আমি আবূ তালহার কাছে গেলাম। তিনি উম্মু সুলায়ম বিনতে মিলহানের স্বামী। বললাম, হে পিতা! আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একটি কাপড়ের টুকরো দ্বারা পেট বেঁধে রাখা অবস্থায় দেখেছি। আমি তাঁর সঙ্গীদের কাউকে জিজ্ঞেস করলে তারা বললেন, এটা ক্ষুধার কারণে। এ কথা শুনতেই আবু তালহা আমার মায়ের কাছে গেলেন। বললেন, কিছু আছে কি? তিনি বললেন, হাঁ, আমার কাছে রুটির কয়েকটি টুকরো ও কিছু খেজুর আছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একা আসলে তাঁকে তৃপ্তির সঙ্গে খাওয়াতে পারব। যদি তাঁর সঙ্গে অন্য কেউ আসে, তবে তাদের কম হয়ে যাবে। তারপর হযরত আনাস রাযি. পূর্ণ হাদীছটি বর্ণনা করেন।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
520 - وعن أنسٍ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ أَبو طَلْحَةَ لأُمِّ سُلَيمٍ: قَدْ سَمِعْتُ صَوْتَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - ضَعيفًا أعْرِفُ فيه الجُوعَ، فَهَلْ عِنْدَكِ مِنْ شَيْءٍ؟ فَقَالَتْ: نَعَمْ، فَأخْرَجَتْ أقْرَاصًا مِنْ شَعِيرٍ، ثُمَّ أخَذَتْ خِمَارًا لَهَا، فَلَفَّتِ الخُبْزَ بِبَعْضِهِ، ثُمَّ دَسَّتْهُ تَحْتَ ثَوْبِي وَرَدَّتْنِي بِبَعْضِهِ، ثُمَّ أرْسَلَتْني إِلَى رسولِ الله - صلى الله عليه وسلم - فَذَهَبتُ بِهِ، فَوَجَدْتُ رسولَ الله - صلى الله عليه وسلم - جَالِسًا في المَسْجِدِ، وَمَعَهُ النَّاسُ، فَقُمْتُ عَلَيْهمْ، فَقَالَ لي رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «أرْسَلَكَ أَبو طَلْحَةَ؟» فقلت: نَعَمْ، فَقَالَ: «ألِطَعَامٍ؟» فقلت: نَعَمْ، فَقَالَ رسولُ الله - صلى الله عليه وسلم: «قُومُوا» فَانْطَلَقُوا وَانْطَلَقْتُ بَيْنَ أيْدِيهِمْ حَتَّى جِئْتُ أَبَا طَلْحَةَ فَأخْبَرْتُهُ، فَقَالَ أَبو طَلْحَةَ: يَا أُمَّ سُلَيْمٍ، قَدْ جَاءَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - بالنَّاسِ وَلَيْسَ عِنْدَنَا مَا نُطْعِمُهُمْ؟ فَقَالَتْ: الله وَرَسُولُهُ أعْلَمُ.
فَانْطَلَقَ أَبو طَلْحَةَ حَتَّى لَقِيَ رسولَ الله - صلى الله عليه وسلم - فَأقْبَلَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - مَعَهُ حَتَّى دَخَلاَ، فَقَالَ رسولُ الله - صلى الله عليه وسلم: «هَلُمِّي مَا عِنْدَكِ يَا أُمَّ سُلَيْمٍ» فَأتَتْ بِذلِكَ الخُبْزِ، فَأمَرَ بِهِ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - فَفُتَّ، وَعَصَرَتْ عَلَيْهِ أمُّ سُلَيْمٍ عُكّةً فَآدَمَتْهُ، ثُمَّ قَالَ فِيهِ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَقُولَ، ثُمَّ قَالَ: «ائْذَنْ لِعَشْرَةٍ» فأذنَ لَهُمْ فَأكَلُوا حتى شَبِعُوا ثُمَّ خَرَجُوا، ثُمَّ قَالَ: «ائْذَنْ لِعَشْرَةٍ» فأذِنَ لهم حَتَّى أكَلَ الْقَوْمُ كُلُّهُمْ وَشَبِعُوا وَالقَوْمُ سَبْعُونَ رَجُلًا أَو ثَمَانُونَ. متفقٌ عَلَيْهِ. (1)
وفي رواية: فَمَا زَالَ يَدْخُلُ عَشرَة، وَيخرجُ عشرةٌ حَتَّى لَمْ يَبْقَ مِنْهُمْ أحَدٌ إِلاَّ دَخَلَ، فَأكَلَ حَتَّى شَبعَ، ثُمَّ هَيَّأهَا فَإذَا هِيَ مِثْلُهَا حِيْنَ أكَلُوا مِنْهَا.
وفي رواية: فَأَكَلُوا عَشرَةً عَشرةً، حَتَّى فَعَلَ ذَلِكَ بِثَمَانِينَ رَجُلًا، ثُمَّ أكَلَ النبيُّ - صلى الله عليه وسلم - بَعْدَ ذَلِكَ وَأهْلُ البَيْتِ، وَتَرَكُوا سُؤْرًا.
وفي رواية: ثُمَّ أفْضَلُوا مَا بَلَغُوا جيرانَهُمْ.
وفي رواية عن أنس، قَالَ: جِئتُ رسولَ الله - صلى الله عليه وسلم - يومًا، فَوَجَدْتُهُ جَالِسًا مَعَ أصْحَابِه، وَقَدْ عَصَبَ بَطْنَهُ، بِعِصَابَةٍ، فقلتُ لِبَعْضِ أصْحَابِهِ: لِمَ عَصَبَ رسولُ الله - صلى الله عليه وسلم - بَطْنَهُ؟ فقالوا: مِنَ الجوعِ، فَذَهَبْتُ إِلَى أَبي طَلْحَةَ، وَهُوَ زَوْجُ أُمِّ سُلَيْمٍ بِنْت مِلْحَانَ، فقلتُ: يَا أبتَاهُ، قَدْ رَأيْتُ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - عَصَبَ بَطْنَهُ بِعِصَابَةٍ، فَسَألْتُ بَعْضَ أصْحَابِهِ، فقالوا: من الجُوعِ. فَدَخَلَ أَبو طَلْحَةَ عَلَى أُمِّي، فَقَالَ: هَلْ مِنْ شَيءٍ؟ قالت: نَعَمْ، عِنْدِي كِسَرٌ مِنْ خُبْزٍ وَتَمَرَاتٌ، فَإنْ جَاءنَا رسول الله - صلى الله عليه وسلم - وَحْدَهُ أشْبَعْنَاهُ، وَإنْ جَاءَ آخَرُ مَعَهُ قَلَّ عَنْهُمْ ... وَذَكَرَ تَمَامَ الْحَدِيثِ.