রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ

رياض الصالحين من كلام سيد المرسلين

ভূমিকা অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ৬৭৯ টি

হাদীস নং: ৪৬১
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
জান্নাতের সুখ ও জাহান্নামের কষ্টের বিপরীতে দুনিয়ার সুখ ও কষ্টের তুচ্ছতা
হাদীছ নং : ৪৬১

হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন জাহান্নামীদের মধ্য থেকে দুনিয়ার সর্বাপেক্ষা সম্পদশালী ব্যক্তিকে হাজির করা হবে। তারপর তাকে ক্ষণিকের জন্য জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তারপর বলা হবে, হে আদম সন্তান! তুমি কি কখনও কোনও কল্যাণ দেখেছ? তোমার কি কখনও কোনও সুখের সময় কেটেছে? সে বলবে, না, আল্লাহর কসম, হে আমার রব্ব! এমনিভাবে জান্নাতবাসীদের মধ্য থেকে দুনিয়ার সর্বাপেক্ষা কষ্ট-ক্লেশপ্রাপ্ত লোককে উপস্থিত করা হবে। তাকে ক্ষণিকের জন্য জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। তারপর বলা হবে, হে আদম সন্তান! তুমি কি কখনও কষ্ট-ক্লেশ দেখেছ? তোমার উপর দিয়ে কি কখনও কোনও কঠিন সময় অতিবাহিত হয়েছে? সে বলবে, না, আল্লাহর কসম! আমার উপর দিয়ে কখনও কষ্ট-ক্লেশ যায়নি এবং আমি কখনও কোনও সংকট দেখিনি – মুসলিম ।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
461 - وعنه، قَالَ: قَالَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «يُؤْتَى بِأَنْعَمِ أَهْلِ الدُّنْيَا مِنْ أَهْلِ النَّارِ يَوْمَ القِيَامَةِ، فَيُصْبَغُ في النَّارِ صَبْغَةً (1)، ثُمَّ يُقَالُ: يَا ابْنَ آدَمَ، هَلْ رَأيْتَ خَيْرًا قَطُّ؟ هَلْ مَرَّ [ص:163] بِكَ نَعِيمٌ قَطُّ؟ فَيَقُولُ: لاَ وَاللهِ يَا رَبِّ، وَيُؤْتَى بِأشَدِّ النَّاسِ بُؤسًا في الدُّنْيَا مِنْ أهْلِ الجَنَّةِ، فَيُصْبَغُ صَبْغَةً في الجَنَّةِ، فَيُقَالُ لَهُ: يَا ابْنَ آدَمَ، هَلْ رَأيْتَ بُؤسًا قَطُّ؟ هَلْ مَرَّ بِكَ شِدَّةٌ قَطُّ؟ فيَقُولُ: لاَ وَاللهِ، مَا مَرَّ بِي بُؤْسٌ قَطُّ، وَلاَ رَأيْتُ شِدَّةً قَطُّ». رواه مسلم. (2)
হাদীস নং: ৪৬২
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
আখিরাতের তুলনায় দুনিয়ার প্রাচুর্যের স্বল্পতা
হাদীছ নং : ৪৬২

হযরত মুসতাওরিদ ইবনে শাদ্দাদ রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আখিরাতের তুলনায় দুনিয়ার দৃষ্টান্ত কেবল এরকম যে, তোমাদের কেউ সাগরে একটা আঙ্গুল ডুবিয়ে দেখুক তা কী নিয়ে ফেরে- মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
462 - وعن المُسْتَوْرِد بن شَدَّاد - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «مَا الدُّنْيَا فِي الآخِرَةِ إِلاَّ مِثْلُ مَا يَجْعَلُ أَحَدُكُمْ أُصْبُعَهُ في اليَمِّ (1)، فَلْيَنْظُرْ بِمَ يَرْجِعُ!». رواه مسلم. (2)
হাদীস নং: ৪৬৩
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
আল্লাহর কাছে দুনিয়ার হীনতা
হাদীছ নং : ৪৬৩

হযরত জাবির রাযি. থেকে বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাজারের উপর দিয়ে যাচ্ছিলেন। লোকজন (সাহাবীগণ) তাঁর দু'পাশে। তিনি একটি মরা কানকাটা ছাগলছানার পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তিনি সেটির কান ধরে তুললেন, তারপর বললেন, তোমাদের মধ্যে কে এটি এক দিরহামের বিনিময়ে নিতে পসন্দ করবে? তারা বললেন, আমরা কোনওকিছুর বিনিময়েই এটি নিতে পসন্দ করব না। আমরা এটি দিয়ে করব কী? তারপর তিনি বললেন, তোমরা কি এটি এমনিই নিতে পসন্দ করবে? তারা বললেন, আল্লাহর কসম, এটি যদি জীবিতও থাকত, তবুও তো কানকাটা হওয়ায় ত্রুটিপূর্ণ হতো। সুতরাং মরা অবস্থায় এটি কেমন (আগ্রহের বস্তু) হতে পারে? তিনি বললেন, আল্লাহর কসম, তোমাদের কাছে এ মৃত ছাগলছানাটি যেমন তুচ্ছ, আল্লাহর কাছে দুনিয়া এরচে'ও বেশি তুচ্ছ - মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
463 - وعن جابر - رضي الله عنه: أنَّ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - مَرَّ بالسُّوقِ وَالنَّاسُ كَنَفَتَيْهِ، فَمَرَّ بِجَدْيٍ أَسَكَّ مَيِّتٍ، فَتَنَاوَلَهُ فَأَخَذَ بِأُذُنِهِ، ثُمَّ قَالَ: «أَيُّكُم يُحِبُّ أَنْ يَكُونَ هَذَا لَهُ بِدرْهَم؟» فقالوا: مَا نُحِبُّ أنَّهُ لَنَا بِشَيْءٍ وَمَا نَصْنَعُ بِهِ؟ ثُمَّ قَالَ: «أَتُحِبُّونَ أَنَّهُ لَكُمْ؟» قَالُوا: وَاللهِ لَوْ كَانَ حَيًّا كَانَ عَيْبًا، إنَّهُ أسَكُّ فَكَيْفَ وَهُوَ ميِّتٌ! فقال: «فوَاللهِ للدُّنْيَا أهْوَنُ عَلَى اللهِ مِنْ هَذَا عَلَيْكُمْ». رواه مسلم. (1)
قوله: «كَنَفَتَيْهِ» أيْ: عن جانبيه. وَ «الأَسَكُّ»: الصغير الأذُن.
হাদীস নং: ৪৬৪
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
অর্থ-সম্পদের প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিরাসক্তি এবং শিরকমুক্ত অবস্থায় মৃত্যুলাভের ফযীলত
হাদীছ নং : ৪৬৪

হযরত আবু যর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে মদিনার হাররায় (কালো কংকরময় ভূমি) হাঁটছিলাম। আমাদের সামনে উহুদ পাহাড় পড়ল। তিনি বললেন, হে আবু যার। আমি বললাম, লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ। তিনি বললেন, আমার জন্য এটি আনন্দদায়ক হতো না যে, এই উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ আমার কাছে থাকবে আর আমার উপর দিয়ে এভাবে তিনদিন গত হবে যে, তা থেকে একটি মাত্র দীনারও আমার কাছে থাকবে কেবল ওই সামান্য কিছু ছাড়া, যা আমি ঋণ পরিশোধের জন্য রাখব। আমি তো আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে তা এভাবে এভাবে এভাবে বিতরণ করতাম- তিনি তাঁর ডান দিক, বাম দিক ও পেছন দিকে ইশারা করে দেখালেন।
তারপর তিনি এগিয়ে চললেন। তারপর বললেন, কিয়ামতের দিন সম্পদশালীরাই হবে অভাবগ্রস্ত, তবে যে তার সম্পদ এভাবে এভাবে ও এভাবে বিলায়। তিনি তাঁর ডান দিকে, বাম দিকে ও পেছন দিকে ইঙ্গিত করে দেখালেন। (তারপর বললেন,) অথচ এরকম লোক বড় কম।
তারপর আমাকে বললেন, তুমি তোমার স্থানে থাকবে। আমি না আসা পর্যন্ত সরবে না। তারপর তিনি রাতের অন্ধকারে চলতে থাকলেন এমনকি দৃষ্টির আড়াল হয়ে গেলেন। পরক্ষণে আমি একটি উঁচু আওয়াজ শুনতে পেলাম। আমি আশঙ্কাবোধ করলাম, না জানি কোনও লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ক্ষতি করে বসে! সুতরাং আমি তাঁর কাছে চলে যেতে উদ্যত হলাম। অমনি তাঁর কথা মনে পড়ল যে, আমি না আসা পর্যন্ত তুমি সরবে না।
সুতরাং আমি সেখানেই থাকলাম। অবশেষে তিনি আমার কাছে আসলেন। আমি বললাম, একটা আওয়াজ শুনে আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমি পূর্ণ বিষয়টি তাঁর কাছে উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, তুমি কি তা শুনতে পেয়েছ? আমি বললাম, জ্বী। তিনি বললেন, উনি জিবরীল আঃ । তিনি আমার কাছে এসেছিলেন। তিনি বলেছেন, আপনার উম্মতের মধ্যে যে-কেউ এ অবস্থায় মারা যাবে যে, সে আল্লাহর সঙ্গে কোনওকিছুকে শরীক করে না, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি বললাম, যদিও সে ব্যভিচার করে এবং যদিও সে চুরি করে? তিনি বললেন, যদিও সে ব্যভিচার করে, যদিও সে চুরি করে– বুখারী ও মুসলিম। এটা বুখারীর ভাষা ।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
464 - وعن أَبي ذر - رضي الله عنه - قَالَ: كُنْتُ أَمْشِي مَعَ النَّبي - صلى الله عليه وسلم - في حَرَّةٍ (1) بِالمَدِينَةِ، فَاسْتَقْبَلَنَا أُحُدٌ، فقال: «يَا أَبَا ذَرٍّ» قلت: لَبَّيْكَ يَا رسولَ الله. فقال: «مَا يَسُرُّنِي أنَّ عِنْدِي مِثْلَ أُحُدٍ هَذَا ذَهَبًا تَمْضي عَلَيَّ ثَلاَثَةُ أيّامٍ وَعِنْدِي مِنْهُ دِينَارٌ، إِلاَّ شَيْءٌ أرْصُدُهُ لِدَيْنٍ، إِلاَّ أَنْ أقُولَ بِهِ في عِبَادِ الله هكذا وَهَكَذَا وَهكَذَا» عن يَمِينِهِ وعن شِمَالِهِ وَمِنْ خَلْفِهِ، ثُمَّ سَارَ، فقال: «إنَّ الأَكْثَرينَ هُمُ الأَقَلُّونَ يَوْمَ القِيَامَةِ إِلاَّ مَنْ قَالَ بالمَالِ هكَذَا وَهكَذَا وَهكَذَا» عن يمينِهِ وعن شِمَالِهِ وِمنْ خَلْفِهِ «وَقَلِيلٌ مَاهُمُ». ثُمَّ قَالَ لي: «مَكَانَكَ لاَ تَبْرَحْ حَتَّى آتِيكَ» ثُمَّ انْطَلَقَ في سَوادِ اللَّيْلِ حَتَّى تَوَارَى، فَسَمِعْتُ صَوتًا، قَدِ ارْتَفَع، فَتَخَوَّفْتُ أَنْ يَكُونَ أحَدٌ عَرَضَ للنَّبيِّ - صلى الله عليه وسلم - فَأرَدْتُ أَنْ آتِيهِ فَذَكَرتُ قَوْله: «لا تَبْرَحْ حَتَّى آتِيَكَ» فلم أبْرَحْ حَتَّى أتَاني، فَقُلْتُ: لَقَدْ سَمِعْتُ صَوتًا تَخَوَّفْتُ مِنْهُ، فَذَكَرْتُ لَهُ، فقال: [ص:164] «وَهَلْ سَمِعْتَهُ؟» قلت: نَعَمْ، قَالَ: «ذَاكَ جِبريلُ أتَانِي. فقال: مَنْ مَاتَ مِنْ أُمَّتِكَ لاَ يُشْرِكُ بِاللهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ»، قلت: وَإنْ زَنَى وَإنْ سَرَقَ؟ قَالَ: «وَإنْ زَنَى وَإنْ سَرَقَ». متفقٌ عَلَيْهِ (2)، وهذا لفظ البخاري.
হাদীস নং: ৪৬৫
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
হাদীছ নং : ৪৬৫

হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমার যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণও থাকত, তবে আমার পক্ষে এটাই আনন্দদায়ক হতো যে, তা থেকে সামান্য কিছু রেখেও আমার তিন রাত পার হবে না। অবশ্য ঋণ পরিশোধের জন্য যেটুকু রাখতাম তা আলাদা- বুখারী ও মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
465 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - عن رسول الله - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «لَوْ كَانَ لِي مِثْلُ أُحُدٍ ذَهَبًا، لَسَرَّنِي أَنْ لاَ تَمُرَّ عَلَيَّ ثَلاَثُ لَيالٍ وَعِنْدِي مِنْهُ شَيْءٌ إِلاَّ شَيْءٌ أرْصُدُهُ لِدَيْنٍ». متفقٌ عَلَيْهِ. (1)
হাদীস নং: ৪৬৬
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
যারা উপরে আছে তাদের দিকে নয়; যারা নিচে আছে তাদের দিকে তাকাও
হাদীছ নং: ৪৬৬

অর্থ : হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা তোমাদের চেয়ে যার অবস্থান নিচে তার দিকে তাকাও। যে তোমাদের চেয়ে উপরে তার দিকে তাকিও না। এটাই তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহকে তুচ্ছ মনে না করার পক্ষে বেশি সহায়ক– বুখারী ও মুসলিম। এটা মুসলিমের ভাষা।
বুখারীর বর্ণনায় আছে, তোমাদের কেউ যখন এমন কারও দিকে তাকায়, যাকে অর্থ-সম্পদ ও দৈহিক গঠনে তার উপর শ্রেষ্ঠত্ব দেওয়া হয়েছে, তখন যেন এমন কারও দিকেও তাকায়, যার অবস্থান তার নিচে।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
466 - وعنه، قَالَ: قَالَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «انْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ أسْفَلَ مِنْكُمْ وَلاَ تَنْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ فَوْقَكُمْ؛ فَهُوَ أجْدَرُ أَنْ لاَ تَزْدَرُوا نِعْمَةَ الله عَلَيْكُمْ». متفقٌ عَلَيْهِ، (1) وهذا لفظ مسلم.
وفي رواية البخاري: «إِذَا نَظَرَ أَحَدُكُمْ إِلَى مَنْ فُضِّلَ عَلَيْهِ في المَالِ وَالخَلْقِ، فَلْيَنْظُرْ إِلَى مَنْ هُوَ أسْفَل مِنْهُ».
হাদীস নং: ৪৬৭
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
টাকা-পয়সা ও পোশাক-আশাকের গোলাম যারা
হাদীছ নং : ৪৬৭

হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, দীনার, দিরহাম, ডোরাকাটা চাঁদর ও চৌকোণা পশমী চাদরের দাস ধ্বংস হোক, যাকে দেওয়া হলে তো খুশি হয়, আর না দেওয়া হলে নাখোশ হয় - বুখারী
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
467 - وعنه، عن النبي - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «تَعِسَ عَبْدُ الدِّينَارِ، وَالدِّرْهَمِ، وَالقَطِيفَةِ (1)، وَالخَمِيصَةِ، إنْ أُعْطِيَ رَضِيَ، وَإنْ لَمْ يُعْطَ لَمْ يَرْضَ». رواه البخاري. (2)
হাদীস নং: ৪৬৮
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
আসহাবুস সুফফার চরম দারিদ্র্যাবস্থা
হাদীছ নং : ৪৬৮

হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি সুফফাবাসীদের মধ্যে এমন সত্তরজনকে দেখেছি, যাদের মধ্যে এমন একজনও ছিল না, যার চাদর ছিল। হয়তো একটি লুঙ্গি ছিল কিংবা একটি কম্বল, যা তারা তাদের গলায় বেঁধে রাখতেন। তার কোনওটি আবার পায়ের গোছার অর্ধেক পর্যন্ত পৌঁছত। কোনওটি পৌঁছত হাঁটু পর্যন্ত। তারা সেটি হাত দিয়ে ধরে রাখতেন, যেন লজ্জাস্থান দেখা না যায় - বুখারী।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
468 - وعنه - رضي الله عنه - قَالَ: لَقَدْ رَأيْتُ سَبعِينَ مِنْ أهْلِ الصُّفَّةِ، مَا منهُمْ رَجُلٌ عَلَيْهِ رِدَاءٌ: إمَّا إزارٌ، وَإمَّا كِسَاءٌ، قَدْ رَبَطُوا في أعنَاقِهِمْ، فَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ نِصْفَ السَّاقَيْن، وَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ الكَعْبَيْنِ، فَيَجْمَعُهُ بِيَدِهِ كَراهِيَةَ أَنْ تُرَى عَوْرَتُهُ. رواه البخاري. (1)
হাদীস নং: ৪৬৯
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
মুমিন ও কাফেরের জন্য দুনিয়া কেমন
হাদীছ নং : ৪৬৯

হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, দুনিয়া মুমিনের জন্য কারাগার এবং কাফেরের জন্য জান্নাত - মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
469 - وعنه، قَالَ: قَالَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «الدُّنْيَا سِجْنُ الْمُؤْمِنِ، وَجَنَّةُ الكَافِرِ». رواه مسلم. (1)
হাদীস নং: ৪৭০
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
দুনিয়ায় থাকতে হবে যে দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে
হাদীছ নং ৪৭০

হযরত ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার দুই কাঁধ ধরে বললেন, তুমি দুনিয়ায় এমনভাবে থাক, যেন তুমি একজন প্রবাসী অথবা পথিক।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি. বলতেন, তুমি যখন সন্ধ্যায় উপনীত হও, তখন আর ভোরের অপেক্ষা করো না এবং যখন ভোরে উপনীত হও, তখন আর সন্ধ্যার অপেক্ষা করো না। তুমি তোমার সুস্থকালীন সময়ে অর্জন করে নাও অসুস্থতাকালীন সময়ের জন্য এবং তোমার জীবনকালে (অর্জন করে নাও) মৃত্যুর জন্য - বুখারী
ইমাম নববী রহ. বলেন, 'উলামায়ে কেরাম এ হাদীছের ব্যাখ্যায় বলেছেন যে, এর অর্থ হল তুমি দুনিয়ার প্রতি ঝুঁকে পড়ো না এবং দুনিয়াকে আসল ঠিকানা বানিয়ো না। তুমি এখানে দীর্ঘকাল থাকবে বলে আশা করো না এবং এর প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ দিয়ো না। দুনিয়ার সঙ্গে তোমার সম্পর্ক হবে কেবলই বিদেশের সঙ্গে একজন প্রবাসীর সম্পর্কের মত এবং যে প্রবাসী দেশে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা রাখে, সে প্রবাসজীবনে যেসব বিষয়ে মশগুল হয় না, তুমিও ইহজীবনে সেসবে মশগুল হয়ো না ।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
470 - وعن ابن عمر رضي الله عنهما، قَالَ: أخذ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - بِمَنْكِبَيَّ، فقال: «كُنْ في الدُّنْيَا كَأنَّكَ غَرِيبٌ، أَو عَابِرُ سَبيلٍ». [ص:165]
وَكَانَ ابن عُمَرَ رضي الله عنهما، يقول: إِذَا أمْسَيتَ فَلاَ تَنْتَظِرِ الصَّبَاحَ، وَإِذَا أَصْبَحْتَ فَلاَ تَنْتَظِرِ المَسَاءَ، وَخُذْ مِنْ صِحَّتِكَ لِمَرَضِكَ، وَمِنْ حَيَاتِكَ لِمَوْتِكَ. رواه البخاري. (1)
قالوا في شَرْحِ هَذَا الحديث معناه: لاَ تَرْكَنْ إِلَى الدُّنْيَا وَلاَ تَتَّخِذْهَا وَطَنًا، وَلاَ تُحَدِّثْ نَفْسَكَ بِطُولِ البَقَاءِ فِيهَا، وَلاَ بِالاعْتِنَاءِ بِهَا، وَلاَ تَتَعَلَّقْ مِنْهَا إِلاَّ بِمَا يَتَعَلَّقُ بِهِ الْغَريبُ في غَيْرِ وَطَنِهِ، وَلاَ تَشْتَغِلْ فِيهَا بِمَا لاَ يَشْتَغِلُ بِهِ الغَرِيبُ الَّذِي يُريدُ الذَّهَابَ إِلَى أهْلِهِ، وَبِاللهِ التَّوْفِيقُ.
হাদীস নং: ৪৭১
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
আল্লাহর মহব্বত ও মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার উপায়
হাদীছ নং: ৪৭১

হযরত আবুল আব্বাস সাহল ইবন সা'দ আস সাইদী রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে এমন কোনও কাজের কথা বলে দিন, যখন আমি তা করব আল্লাহ আমাকে ভালোবাসবেন এবং মানুষও আমাকে ভালোবাসবে। তিনি বললেন, তুমি দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্ত হও, আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন। এবং মানুষের কাছে যা আছে তার প্রতিও নিরাসক্ত হও, মানুষ তোমাকে ভালোবাসবে - ইবনে মাজাহ।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
471 - وعن أَبي العباس سهل بن سعد الساعدي - رضي الله عنه - قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النبي - صلى الله عليه وسلم - فقال: يَا رسولَ الله، دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ إِذَا عَمِلْتُهُ أحَبَّنِي اللهُ وَأحَبَّنِي النَّاسُ، فقال: «ازْهَدْ في الدُّنْيَا يُحِبّك اللهُ، وَازْهَدْ فِيمَا عِنْدَ النَّاسِ يُحِبّك النَّاسُ». حديث حسن رواه ابن ماجه وغيره بأسانيد حسنة. (1)
হাদীস নং: ৪৭২
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুহদ ও কৃচ্ছ্রতা
হাদীছ নং : ৪৭২

হযরত নু'মান ইবনে বাশীর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মানুষ দুনিয়ার যা- কিছু (সমৃদ্ধি) অর্জন করেছে, উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি. তা উল্লেখ করে বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি দিনভর অনাহারে কুঁকড়ে থাকতেন। রদ্দি কিসিমের খেজুর পর্যন্ত পেতেন না, যা দ্বারা পেট ভরবেন - মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
472 - وعن النعمان بن بشير رضي الله عنهما، قَالَ: ذَكَرَ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ - رضي الله عنه - مَا أَصَابَ النَّاسُ مِنَ الدُّنْيَا، فَقَالَ: لَقَدْ رَأيْتُ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - يَظَلُّ الْيَوْمَ يَلْتَوِي مَا يَجِدُ مِنَ الدَّقَلِ مَا يَمْلأ بِهِ بَطْنَهُ. رواه مسلم. (1)
«الدَّقَلُ» بفتح الدَّال المهملة والقاف: رديءُ التمرِ.
হাদীস নং: ৪৭৩
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
কষ্টসহিষ্ণু জীবনে অভ্যস্ত হওয়া ও খাদ্যদ্রব্যে বরকত প্রসঙ্গ
হাদীছ নং : ৪৭৩

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অবস্থায় ইন্তিকাল করেন যে, তখন আমার ঘরে এমন কোনও বস্তু ছিল না, যা কোনও জীবিত প্রাণী খেতে পারে। তবে আমার ‘তাক’-এ সামান্য কিছু যব ছিল। আমি তা থেকে দীর্ঘদিন খেতে থাকি। পরিশেষে একদিন আমি তা মাপলাম, অমনি তা (দ্রুত) নিঃশেষ হয়ে গেল - বুখারী ও মুসলিম ।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
473 - وعن عائشة رضي الله عنها، قالت: تُوفي رسول الله - صلى الله عليه وسلم - وَمَا في بَيْتِي مِنْ شَيْءٍ يَأكُلُهُ ذُو كَبِدٍ إِلاَّ شَطْرُ شَعِيرٍ في رَفٍّ لِي، فَأكَلْتُ مِنْهُ حَتَّى طَالَ عَلَيَّ، فَكِلْتُهُ فَفَنِيَ. متفقٌ عَلَيْهِ. (1)
قولها: «شَطْرُ شَعير» أيْ: شَيْءٌ مِنْ شَعير،، كَذَا فَسَّرَهُ التُرْمذيُّ. (2)
হাদীস নং: ৪৭৪
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
ওফাতকালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা রেখে গিয়েছিলেন
হাদীছ নং : ৪৭৪

উম্মুল মুমিনীন জুওয়ায়রিয়া বিনতে হারিছ রাযি.-এর ভাই হযরত আমর ইবনুল হারিছ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুকালে দীনার, দিরহাম, দাস-দাসী এবং অন্য কিছুই রেখে যাননি। রেখে গিয়েছিলেন কেবল তাঁর সাদা খচ্চরটি, যেটিতে তিনি আরোহণ করতেন এবং তাঁর যুদ্ধাস্ত্র ও কিছু ভূমি, যা মুসাফিরদের জন্য সদাকা (ওয়াকফ) করেছিলেন - বুখারী।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
474 - وعن عمرو بن الحارث أخي جُوَيْرِيّة بنتِ الحارِث أُمِّ المُؤْمِنِينَ، رضي الله عنهما، قَالَ: مَا تَرَكَ رسولُ الله - صلى الله عليه وسلم - عِنْدَ مَوْتِهِ دِينارًا، وَلاَ دِرْهَمًا، وَلاَ عَبْدًا، وَلاَ أَمَةً، وَلاَ شَيْئًا إِلاَّ [ص:166] بَغْلَتَهُ الْبَيضَاءَ الَّتي كَانَ يَرْكَبُهَا، وَسِلاَحَهُ، وَأرْضًا جَعَلَهَا لاِبْنِ السَّبِيلِ صَدَقَةً. رواه البخاري. (1)
হাদীস নং: ৪৭৫
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
পার্থিব সচ্ছলতা-অসচ্ছলতা হিসেবে সাহাবায়ে কেরামের শ্রেণীবিভাগ
হাদীছ নং : ৪৭৫

অর্থ : হযরত খাব্বাব ইবনে আরাত রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে হিজরত করেছি। এর জন্য আল্লাহর কাছে আমাদের প্রতিদান সাব্যস্ত হয়েছে। তারপর আমাদের মধ্যে কেউ এ অবস্থায় মারা গেছেন যে, তিনি এর প্রতিদান থেকে কিছুমাত্র ভোগ করেননি। তাদের মধ্যে একজন হলেন মুস'আব ইবনে উমায়র। তিনি উহুদের যুদ্ধে শহীদ হন। তিনি একটি পশমের চাদর রেখে যান। আমরা (কাফন দেওয়ার জন্য)
যখন সেটি দ্বারা তার মাথা ঢাকতে যাই, তার পা দু'টি বের হয়ে যায়। আর যখন তা দ্বারা তার পা ঢাকতে যাই, তার মাথা বের হয়ে থাকে। শেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে হুকুম করলেন যেন তার মাথা ঢেকে দিই আর তার দু' পায়ের উপর কিছু ইযখির ঘাস রেখে দিই। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ এমন, যার ফল পেকে গেছে এবং তিনি তা ভোগ করছেন - বুখারী ও মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
475 - وعن خَبابِ بن الأَرَتِّ - رضي الله عنه - قَالَ: هَاجَرْنَا مَعَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - نَلْتَمِسُ وَجْهَ اللهِ تَعَالَى، فَوَقَعَ أجْرُنَا عَلَى اللهِ، فَمِنَّا مَنْ مَاتَ وَلَمْ يَأكُل منْ أَجْرِهِ شَيْئًا، مِنْهُمْ: مُصْعَبُ بن عُمَيْرٍ - رضي الله عنه - قُتِلَ يَوْمَ أُحُد، وَتَرَكَ نَمِرَةً، فَكُنَّا إِذَا غَطَّيْنَا بِهَا رَأْسَهُ، بَدَتْ رِجْلاَهُ، وَإِذَا غَطَّيْنَا بِهَا رِجْلَيْهِ، بَدَا رَأسُهُ، فَأمَرَنَا رسول الله - صلى الله عليه وسلم - أَنْ نُغَطِّي رَأسَهُ، وَنَجْعَل عَلَى رِجْلَيْهِ شَيْئًا مِنَ الإذْخِرِ (1)، وَمِنَّا مَنْ أيْنَعَتْ لَهُ ثَمَرَتُهُ، فَهُوَ يَهْدِبُهَا. متفقٌ عَلَيْهِ. (2)
«النَّمِرَةُ»: كِساءٌ مُلَوَّنٌ مِنْ صوف. وَقَوْلُه: «أيْنَعَتْ» أيْ: نَضِجَتْ وَأَدْرَكَتْ. وَقَوْلُه: «يَهْدِبها» هُوَ بفتح الياءِ وضم الدال وكسرها لغتان: أيْ: يَقْطُفهَا وَيَجْتَنِيهَا، وهذه استعارة لما فتح الله تَعَالَى عليهم من الدنيا وتمكنوا فِيهَا.
হাদীস নং: ৪৭৬
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
আল্লাহর কাছে দুনিয়ার হীনতা
হাদীস নং:৪৭৬

হযরত সাহল ইবনে সা'দ সাইদী রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহর কাছে দুনিয়ার মূল্য যদি মশার ডানা বরাবরও হতো, তবে তিনি কোনও কাফেরকে এক চুমুক পানিও পান করাতেন না– তিরমীযী।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
476 - وعن سهلِ بن سعد الساعدي - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «لَوْ كَانَت الدُّنْيَا تَعْدِلُ عِنْدَ الله جَنَاحَ بَعُوضَةٍ، مَا سَقَى كَافِرًا مِنْهَا شَرْبَةَ مَاءٍ». رواه الترمذي، (1) وقال: «حديث حسن صحيح».
হাদীস নং: ৪৭৭
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
দুনিয়ার অভিশপ্ততা ও সে অভিশপ্ততা থেকে বাঁচার উপায়
হাদীছ নং: ৪৭৭

হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, শোন, দুনিয়া ও তার মধ্যকার সবকিছুই অভিশপ্ত। ব্যতিক্রম কেবল আল্লাহ তা'আলার যিকির এবং যা তিনি ভালোবাসেন (বা যা-কিছু তাঁর নিকটবর্তী করে দেয়) আর আলেম ও ইলম শিক্ষার্থী – তিরমিযী ।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
477 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - قَالَ: سَمِعْتُ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - يقول: «أَلاَ إنَّ الدُّنْيَا مَلْعُونَةٌ، مَلْعُونٌ مَا فِيهَا، إِلاَّ ذِكْرَ اللهِ تَعَالَى، وَمَا وَالاهُ، وَعالِمًا وَمُتَعَلِّمًا». رواه الترمذي، (1) وقال: «حديث حسنٌ».
হাদীস নং: ৪৭৮
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
জমি-জায়েদাদে লিপ্ত হওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা
হাদীছ নং : ৪৭৮

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা জমি-জমায় লিপ্ত হয়ো না, তাহলে তোমরা দুনিয়ায় আসক্ত হয়ে পড়বে - তিরমিযী।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
478 - وعن عبد الله بن مسعود - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «لاَ تَتَّخِذُوا الضَّيْعَةَ (1) فَتَرْغَبُوا في الدُّنْيَا». رواه الترمذي، (2) وقال: «حديثٌ حسنٌ».
হাদীস নং: ৪৭৯
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
মৃত্যুর নিকটবর্তিতা
হাদীছ নং: ৪৭৯

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন আমরা আমাদের একটি কুটির মেরামত করছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এটা কী করছে? আমরা বললাম, এটা জরাজীর্ণ হয়ে গেছে, তাই আমরা এটি মেরামত করেছি। তিনি বললেন, আমি তো দেখছি ব্যাপারটি (মৃত্যু) এরচে'ও বেশি শীঘ্রগামী। আবু দাউদ ও তিরমীযী
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
479 - وعن عبدِ الله بن عمرو بن العاص رضي الله عنهما، قَالَ: مَرَّ عَلَيْنَا رسولُ الله - صلى الله عليه وسلم - وَنَحْنُ نعالِجُ خُصًّا (1) لَنَا، فَقَالَ: «مَا هَذَا؟» فَقُلْنَا: قَدْ وَهَى، فَنَحَنُ نُصْلِحُهُ، فَقَالَ: «مَا أرَى الأَمْرَ إِلاَّ أعْجَلَ مِنْ ذَلِكَ». رواه أَبو داود والترمذي بإسناد البخاري ومسلم، وقال الترمذي: «حديثٌ حسنٌ صحيحٌ». (2)
হাদীস নং: ৪৮০
ভূমিকা অধ্যায়
পরিচ্ছেদঃ অধ্যায়ঃ ৫৫ দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির ফযীলত, অল্পেতুষ্টির প্রতি উৎসাহদান ও দারিদ্র্যের মাহাত্ম্য।
এ উম্মতের সবচে' বড় ফিতনার বিষয়
হাদীছ নং : ৪৮০

হযরত কা'ব ইবন ইয়ায রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, প্রত্যেক উম্মতের একটা ফিতনা (পরীক্ষার বস্তু) আছে। আমার উম্মতের ফিতনা হল সম্পদ - তিরমিযী।
مقدمة الامام النووي
55 - باب فضل الزهد في الدنيا والحث على التقلل منها وفضل الفقر
480 - وعن كعب بن عياض - رضي الله عنه - قَالَ: سَمِعْتُ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - يقول: «إنَّ لِكُلِّ أُمَّةٍ فِتْنَةً، وفِتْنَةُ أُمَّتِي: المَالُ». رواه الترمذي، (1) وقال: «حديثٌ حسنٌ صحيحٌ».