আল মুওয়াত্তা-ইমাম মুহাম্মাদ রহঃ

موطأ الإمام مالك برواية الإمام محمد بن الحسن الشيباني

১২- শরীআতে যিনা ব্যভিচারের দন্ড বিধি - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৬৯৪
রজম (পাথর নিক্ষেপে হত্যা)।
৬৯৪ । আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ কোন বিবাহিত পুরুষ বা স্ত্রীলোক যেনায় লিপ্ত হলে এবং তার সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে বা গর্ভধারণ অথবা স্বীকারোক্তির মাধ্যমে তা প্রমাণিত হলে, এর শাস্তিস্বরূপ আল্লাহর কিতাবে রজম অর্থাৎ পাথর নিক্ষেপে হত্যার ব্যবস্থা রয়েছে।**
بَابُ الْحُدُودِ فِي الزِّنَا
أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ سَمِعَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، يَقُولُ: " الرَّجْمُ فِي كِتَابِ اللَّهِ تَعَالَى حَقٌّ عَلَى مَنْ زَنَى إِذَا أُحْصِنَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ، إِذَا قَامَتْ عَلَيْهِ الْبَيِّنَةُ، أَوْ كَانَ الْحَبْلُ، أَوِ الاعْتِرَافُ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৬৯৫
রজম (পাথর নিক্ষেপে হত্যা)।
৬৯৫। ইয়াহ্ইয়া ইবনে সাঈদ (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব (রাহঃ)-কে বলতে শুনেছেন, হযরত উমার (রাযিঃ) মিনা থেকে প্রত্যাবর্তন করে আবতাহ নামক স্থানে পৌঁছে নিজের উটকে বসালেন। অতঃপর তিনি কাঁকড়ের একটি স্তুপ বানিয়ে তার উপর নিজের চাদর বিছিয়ে দিলেন। অতঃপর তার উপর চিত হয়ে শুয়ে তিনি নিজের হাত দু'টি আসমানের দিকে উত্তোলন করে বললেনঃ
“হে আল্লাহ! আমার বয়স অনেক বেড়ে গেছে, আমার শক্তি কমে গেছে এবং আমার প্রজাদের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে। অতএব তুমি আমাকে এমন অবস্থায় তোমার কাছে তুলে নাও যে, আমি শরীআতের বিধান কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোনরূপ হ্রাস-বৃদ্ধি ও বাড়াবাড়ি করিনি।”
রাবী বলেন, অতঃপর তিনি মদীনায় পৌঁছে জনগণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেনঃ “হে জনগণ! তোমাদের জন্য সুন্নতসমূহ নির্ধারিত হয়ে গেছে এবং ফরজসমূহ বিধিবদ্ধ হয়েছে। তোমাদের একটি সুস্পষ্ট রাস্তার উপর উঠিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।” রাবী বলেন, অতঃপর তিনি তার উভয় হাতে তালি বাজাতে বাজাতে বলেন, “সাবধান! তোমরা অন্য লোকের সাথে (এই পথ ছেড়ে) ডানে বা বাঁয়ে গিয়ে পথহারা হয়ে পড়ো না।” অতঃপর তিনি বলেন, “সাবধান! রজম সম্পর্কিত আয়াতকে কেন্দ্র করে তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করো না । হয়তো কোন ব্যক্তি বলবে, আমরা আল্লাহর কিতাবে দু'টি হদ্দ (বেত্রাঘাত ও রজম) দেখতে পাচ্ছি না। (শুনে রেখো), রাসূলুল্লাহ ﷺ রজমের শাস্তি কার্যকর করেছেন এবং আমরাও তা কার্যকর করেছি এবং করছি। সেই সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ। যদি লোকদের এই কথা বলার আংশকা না করতাম যে, খাত্তাবের পুত্র উমার আল্লাহর কিতাব নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে, তবে আমি তার মধ্যে নিম্নোক্ত আয়াত লিখে দিতামঃ

الشيخ والشيخة اذا زنيا فرجموهما البتة

নিশ্চয় আমরাও এ আয়াত পাঠ করেছি।” সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব (রাহঃ) বলেন, যিলহজ্জ মাস শেষ না হতেই উমার (রাযিঃ) ঘাতকের হাতে শহীদ হন (তেইশ হিজারীর ২৬ যিলহজ্জ ঘাতকের তরবারির আঘাতে আহত হন এবং ২৪ হিজারীর পহেলা মুহাররম ইন্তেকাল করেন)।
أخبرنا مالك، حدثنا يحيى بن سعيد، أنه سمع سعيد بن المسيب، يقول: لما صدر عمر بن الخطاب من منى، أناخ بالأبطح، ثم كوم كومة من بطحاء، ثم طرح عليه ثوبه، ثم استلقى، ومد يديه إلى السماء، فقال: اللهم كبرت سني، وضعفت قوتي، وانتشرت رعيتي، فاقبضني إليك غير مضيع، ولا مفرط، ثم قدم المدينة، فخطب الناس، فقال: أيها الناس، قد سنت لكم السنن، وفرضت لكم الفرائض، وتركتم على الواضحة، وصفق بإحدى يديه على الأخرى، إلا أن لا تضلوا بالناس يمينا وشمالا، ثم إياكم أن تهلكوا عن آية الرجم، أن يقول قائل: لا نجد حدين في كتاب الله، فقد رجم رسول الله صلى الله عليه وسلم، ورجمنا، وإني والذي نفسي بيده لولا أن يقول الناس زاد عمر بن الخطاب في كتاب الله لكتبتها: «الشيخ والشيخة إذا زنيا فارجموهما ألبتة» ، فإنا قد قرأناها.
قال سعيد بن المسيب: فما انسلخ ذو الحجة حتى قتل عمر
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৬৯৬
রজম (পাথর নিক্ষেপে হত্যা)।
৬৯৬ ৷ আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। ইহুদীরা নবী ﷺ -এর কাছে এসে তাঁকে অবহিত করলো যে, তাদের মধ্যকার একটি পুরুষলোক ও একটি স্ত্রীলোক যেনা করেছে। রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদের জিজ্ঞেস করেনঃ “রজম সম্পর্কে তাওরাতে তোমরা কি নির্দেশ পাচ্ছো?” তারা বললো, আমরা এদের অপমান করি এবং বেত্রাঘাত করি । আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রাযিঃ) তাদের বলেন, তোমরা মিথ্যা কথা বললে। তাওরাতে রজম করার নির্দেশ রয়েছে। তারা তাওরাত শরীফ নিয়ে এলো। তারা তাওরাত খুললো এবং তাদের এক ব্যক্তি রজম সম্পর্কিত আয়াতটি হাত দিয়ে ঢেকে রেখে তার আগে-পিছের অংশ পাঠ করলো। আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রাযিঃ) বলেন, তোমার হাত সরাও। সে তার হাত তুলে নিলেই রজম সম্পর্কিত আয়াত প্রকাশিত হয়ে পড়ে। সে (হাত দিয়ে আয়াতটি ঢেকে রাখা ব্যক্তি) বললো, হে মুহাম্মাদ! আপনি সত্য কথা বলেছেন। তাতে রজম সংক্রান্ত আয়াত বর্তমান আছে। অতএব রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদের সম্পর্কে নির্দেশ দিলেন এবং তদনুযায়ী তাদের উভয়কে রজম করা হলো। ইবনে উমার (রাযিঃ) বলেন, আমি যেনাকারী পুরুষটিকে দেখেছি সে স্ত্রীলোকটিকে পাথরের আঘাত থেকে বাঁচানোর জন্য তার দিকে ঝুঁকে যেতো (বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ)।১
ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) বলেন, আমরা এসব হাদীস ও আছার-এর উপর আমল করি । কোন স্বাধীন মুসলমান বিবাহিত ব্যক্তি নিজ স্ত্রীর সাথে সংগম স্বাদ লাভ করার সুযোগ পাওয়ার পরও অপর কোন নারীর সাথে যেনায় লিপ্ত হলে তাকে রজমের শাস্তি দিতে হবে। কেননা এই ব্যক্তি মুহসান (বিবাহের দুর্গে সুরক্ষিত)। কিন্তু সে যদি স্ত্রীর সাথে যৌনস্বাদ আস্বাদনের সুযোগ না পেয়ে থাকে, বরং কেবল বিবাহ করেছে এবং সঙ্গম করেনি অথবা তার কাছে ইহুদী বা খৃষ্টান বাঁদী রয়েছে—তবে এসব কারণে সে মুহসান নয়। অতএব তাকে রজম করা যাবে না, বরং এক শত বেত্রাঘাত করতে হবে। ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) এবং আমাদের ফিকহবিদদের এটাই সাধারণ মত।২
أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، أَخْبَرَنَا نَافِعٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ الْيَهُودَ جَاءُوا إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَخْبَرُوهُ أَنَّ رَجُلا مِنْهُمْ وَامْرَأَةً زَنَيَا، فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا تَجِدُونَ فِي التَّوْرَاةِ فِي شَأْنِ الرَّجْمِ» ؟ فَقَالُوا: نَفْضَحُهُمَا، وَيُجْلَدَانِ، فَقَالَ لَهُمْ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلامٍ: كَذَبْتُمْ، إِنَّ فِيهَا الرَّجْمَ، فَأَتَوْا بِالتَّوْرَاةِ، فَنَشَرُوهَا، فَجَعَلَ أَحَدُهُمْ يَدَهُ عَلَى آيَةِ الرَّجْمِ، ثُمَّ قَرَأَ مَا قَبْلَهَا وَمَا بَعْدَهَا، فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلامٍ: ارْفَعْ يَدَكَ، فَرَفَعَ يَدَهُ، فَإِذَا فِيهَا آيَةُ الرَّجْمِ، فَقَالَ: صَدَقْتَ يَا مُحَمَّدُ، فِيهَا آيَةُ الرَّجْمِ، «فَأَمَرَ بِهِمَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَرُجِمَا» .
قَالَ ابْنُ عُمَرَ: فَرَأَيْتُ الرَّجُلَ يَجْنَأُ عَلَى الْمَرْأَةِ يَقِيهَا الْحِجَارَةَ ".
قَالَ مُحَمَّدٌ: وَبِهَذَا كُلِّهِ نَأْخُذُ، أَيُّمَا رَجُلٍ حُرٍّ مُسْلِمٍ زَنَى بِامْرَأَةٍ وَقَدْ تَزَوَّجَ بِامْرَأَةٍ قَبْلَ ذَلِكَ حُرَّةٍ مُسْلِمَةٍ وَجَامَعَهَا فَفِيهِ الرَّجْمُ، وَهَذَا هُوَ الْمُحْصَنُ، فَإِنْ كَانَ لَمْ يُجَامِعْهَا إِنَّمَا تَزَوَّجَهَا، وَلَمْ يَدْخُلْ بِهَا، أَوْ كَانَتْ تَحْتَهُ أَمَةٌ يَهُودِيَّةٌ أَوْ نَصْرَانِيَّةٌ لَمْ يَكُنْ بِهَا مُحْصَنًا، وَلَمْ يُرْجَمْ، وَضُرِبَ مِائَةً.
وَهَذَا هُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ رَحِمَهُ اللَّهُ، وَالْعَامَّةِ مِنْ فُقَهَائِنَا
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান