প্রবন্ধ
নফসকে প্রতিহত করার চার চমৎকার কৌশল
গুনাহ থেকে তো নিরাপদ থাকা তখনই সহজ হবে যখন আমরা বুঝবো যে, গুনাহগুলো আসে কোন রাস্তা দিয়ে। কেননা শত্রুকে ঘায়েল করতে হলে শত্রুর রাস্তা চিনতে হয়, যাতে করে শত্রু না আসতে পারে।গুনাহ তো হলো আমাদের জন্য বিষতুল্য। এই বিষ সরবরাহ করে ইবলিস। রিসিভ করে আমাদের নফস।
ইবলিস আমাদের পর্যন্ত এই গুনাহগুলোকে পৌঁছাতে গিয়ে দু’টি রাস্তা ব্যবহার করে থাকে। যত গুনাহ আছে সব গুনাহ এই দু’টি রোডের মাধ্যমেই ইবলিস আমাদের কাছে পৌঁছায়। এমনকি কুফরি নামক গুনাহও এই দু’টি রোডের যে কোনো একটি ব্যবহার হয়ে মানুষের কাছে আসে। একটি রোডের নাম হল, শুবুহাত। দ্বিতীয় রোডের নাম হল, শাহওয়াত। সুতরাং আমরা যদি এই দু’টি রোড বন্ধ করে দেই তাহলে বাঁশরি থাকবে না, বাঁশিও বাজবে না। তখন গুনাহ আর হবে না।
اَلْحَمْدُ لِلّهِ وَكَفَى وَسَلَامٌ عَلَى عِبَادِهِ الَّذِيْن َاصْطَفَى اَمَّا بَعْدُ! فَاَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ. بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيْمِ. إِنَّ ٱلسَّمْعَ وَٱلْبَصَرَ وَٱلْفُؤَادَ كُلُّ أُوْلَٰٓئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْـُٔولًا
بَارَكَ اللهُ لِيْ وَلَكُمْ فِي الْقُرْآنِ الْعَظِيْمِ، وَنَفَعَنِيْ وَإِيَّاكُمْ بِمَا فِيْهِ مِنَ اْلآيَاتِ وَالذِّكْرِ الْحَكِيْمِ. وجعلني وإياكم مِنَ الصَّالِحِينَ. أَقُوْلُ قَوْلِيْ هَذَا أَسْتَغْفِرُ اللهَ لِيْ وَلَكُمْ وَلِسَائِرِ الْمُسْلِمِيْنَ. فَاسْتَغْفِرُوْهُ، إِنَّهُ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ .اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ وَّعَلَى آلِ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ وَّبَارِكْ وَسَلِّمْ
হামদ ও সালাতের পর!
আল্লাহ তাআলার লাখো-কোটি শোকর যে, তিনি আমাদেরকে দীর্ঘ একমাস পর আবার এখানে নিজেদের ইসলাহের উদ্দেশ্যে জমায়েত হওয়ার তাওফীক দান করেছেন আলহামদুলিল্লাহ। ঈমানদার মাত্রই এই কথা বিশ্বাস করে যে, আমাদের কামিয়াবি হল আল্লাহ তাআলার হুকুম মানার ভিতর এবং নবী ﷺ এর তরিকা মানার ভিতর। বিপরীতে যদি আমরা আল্লাহর হুকুম না মেনে নবীজির তরীকা অনুসরণ না করে গুনাহ করতে থাকি তাহলে আমাদের জন্য ব্যর্থতা অবধারিত।
আল্লাহ তাআলার লাখো-কোটি শোকর যে, তিনি আমাদেরকে দীর্ঘ একমাস পর আবার এখানে নিজেদের ইসলাহের উদ্দেশ্যে জমায়েত হওয়ার তাওফীক দান করেছেন আলহামদুলিল্লাহ। ঈমানদার মাত্রই এই কথা বিশ্বাস করে যে, আমাদের কামিয়াবি হল আল্লাহ তাআলার হুকুম মানার ভিতর এবং নবী ﷺ এর তরিকা মানার ভিতর। বিপরীতে যদি আমরা আল্লাহর হুকুম না মেনে নবীজির তরীকা অনুসরণ না করে গুনাহ করতে থাকি তাহলে আমাদের জন্য ব্যর্থতা অবধারিত।
ড. ইকবাল আমাদের অবস্থা দেখে যথার্থ বলেছেন যে, তোমরা বিশ্বাস করো এক রকম কাজ করো ভিন্নরকম।
قلب میں سوز نہیں، رُوح میں احساس نہیں
کچھ بھی پیغامِ محمّدؐ کا تمھیں پاس نہیں
‘তোমাদের হৃদয়ে অনুভূতি নেই, অন্তরে জ্বালা নেই, মুহাম্মদের পয়গামের মর্যাদা তোমাদের কাছে নেই।’আমরা চার শ্রেণিতে বিভক্ত
একটু চিন্তা করলে দেখা যায়, আল্লাহর হুকুম মানা এবং না মানার দিক থেকে আমরা চার শ্রেণিতে বিভক্ত।
তিন. সমাজের মধ্যে কিছু দুর্ভাগা এমনও আছে, যারা কেবল গুনাহ করে, গুনাহের মাঝে আকণ্ঠ ডুবে থাকে, নেক আমল করার তাওফীক এদের মোটেও হয় না।
চার. এর বিপরীতে আল্লাহ তাআলার কিছু বান্দা এমনও আছেন যারা কেবল নেক আমল করেন এবং গুনাহ থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করেন। এরাই আল্লাহ তাআলার খাস বান্দা। এরা আল্লাহর অলী।
একটু চিন্তা করলে দেখা যায়, আল্লাহর হুকুম মানা এবং না মানার দিক থেকে আমরা চার শ্রেণিতে বিভক্ত।
এক. আমাদের মধ্যে কিছু লোক এমন আছে যারা ইবাদত করে, গুনাহও করে অর্থাৎ কিছু ইবাদত করে, কিছু গুনাহ করে।
দুই. কিছু লোক এমন আছে, যারা ইবাদত করে না, গুনাহও করে না। ইবাদত করে না অলসতার কারণে। গুনাহ করে না জানা না থাকার কারণে। এদের সংখ্যা সমাজে নিতান্তই কম।তিন. সমাজের মধ্যে কিছু দুর্ভাগা এমনও আছে, যারা কেবল গুনাহ করে, গুনাহের মাঝে আকণ্ঠ ডুবে থাকে, নেক আমল করার তাওফীক এদের মোটেও হয় না।
চার. এর বিপরীতে আল্লাহ তাআলার কিছু বান্দা এমনও আছেন যারা কেবল নেক আমল করেন এবং গুনাহ থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করেন। এরাই আল্লাহ তাআলার খাস বান্দা। এরা আল্লাহর অলী।
নফল ইবাদত উত্তম না গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা উত্তম?
এখন প্রশ্ন হলো, নফল ইবাদত করা উত্তম না গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা উত্তম? আমরা তো মনে করি, ইবাদত বেশি বেশি করা উত্তম। কিন্তু আমাদের মাশায়েখ তা মনে করতেন না। বরং তাঁরা মনে করেন, নফল ইবাদতের চেয়ে বহু গুণে উত্তম হলো, গুনাহ না করা। কেননা নফল ইবাদতের জন্য ধন্যবাদ পাবেন। সাওয়াব পাবেন। আখেরাতে আপনার মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু এর বিপরীতে কোনো জবাবদিহিতা নেই। অর্থাৎ না করলে কোনো গুনাহ নেই। পক্ষান্তরে গুনাহের জন্য জবাবদিহিতা আছে, শাস্তি আছে, আখেরাতের নাজাত থেকে বঞ্চিত হওয়ার মতো জঘন্য ব্যাপার আছে।
মনে করুন, এক ব্যক্তি ফরজ ওয়াজিব সুন্নাতে মুআক্কাদা ঠিকভাবে আদায় করেছে। এক্ষেত্রে সে অলসতা কিংবা উদাসীনতাকে স্থান দেয়নি। কিন্তু সে অন্যান্য নফল আমল যেমন নফল নামায, নফল রোযা, নফল হজ, নফল সাদকা খুব একটা করেনি। তবে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার পরিপূর্ণ চেষ্টা সে করেছে। তাহলে আল্লাহ তাআলার রহমতের প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে বলা যায় যে, এ ব্যক্তির নাজাত নিশ্চিত। কেননা আল্লাহ তাআলা এটা জিজ্ঞেস করবেন না যে, কেন অমুক নফল আমল করেনি? তবে আল্লাহ তাআলা এটা অবশ্যই জিজ্ঞেস করবেন যে, কেন তুমি দরজা-বন্ধ করে গুনাহ করেছ? কেন তুমি রাত জেগে ইউটিউবে, ফেসবুকে, ইনস্ট্রাগ্রামে, ইমুতে গুনাহ করেছ? কেন তুমি চোখের হেফাজত করনি? কেন তুমি জবানের হেফাজত করনি?
এখন প্রশ্ন হলো, নফল ইবাদত করা উত্তম না গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা উত্তম? আমরা তো মনে করি, ইবাদত বেশি বেশি করা উত্তম। কিন্তু আমাদের মাশায়েখ তা মনে করতেন না। বরং তাঁরা মনে করেন, নফল ইবাদতের চেয়ে বহু গুণে উত্তম হলো, গুনাহ না করা। কেননা নফল ইবাদতের জন্য ধন্যবাদ পাবেন। সাওয়াব পাবেন। আখেরাতে আপনার মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু এর বিপরীতে কোনো জবাবদিহিতা নেই। অর্থাৎ না করলে কোনো গুনাহ নেই। পক্ষান্তরে গুনাহের জন্য জবাবদিহিতা আছে, শাস্তি আছে, আখেরাতের নাজাত থেকে বঞ্চিত হওয়ার মতো জঘন্য ব্যাপার আছে।
মনে করুন, এক ব্যক্তি ফরজ ওয়াজিব সুন্নাতে মুআক্কাদা ঠিকভাবে আদায় করেছে। এক্ষেত্রে সে অলসতা কিংবা উদাসীনতাকে স্থান দেয়নি। কিন্তু সে অন্যান্য নফল আমল যেমন নফল নামায, নফল রোযা, নফল হজ, নফল সাদকা খুব একটা করেনি। তবে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার পরিপূর্ণ চেষ্টা সে করেছে। তাহলে আল্লাহ তাআলার রহমতের প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে বলা যায় যে, এ ব্যক্তির নাজাত নিশ্চিত। কেননা আল্লাহ তাআলা এটা জিজ্ঞেস করবেন না যে, কেন অমুক নফল আমল করেনি? তবে আল্লাহ তাআলা এটা অবশ্যই জিজ্ঞেস করবেন যে, কেন তুমি দরজা-বন্ধ করে গুনাহ করেছ? কেন তুমি রাত জেগে ইউটিউবে, ফেসবুকে, ইনস্ট্রাগ্রামে, ইমুতে গুনাহ করেছ? কেন তুমি চোখের হেফাজত করনি? কেন তুমি জবানের হেফাজত করনি?
সবচেয়ে দামী আমল : গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা
আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাযি. বলতেন
হাসান বসরী রহ. বলতেন
আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাযি. বলতেন
لَا أَعْدِلُ بِالسَّلَامَةِ شَيْئًا
গুনাহ থেকে নিরাপদ থাকার মত সমকক্ষ আমল আমি কোনোটিকে মনে করি না। [আদাবুদদুনয়া ওয়াদদীন : ১/৯৮]হাসান বসরী রহ. বলতেন
مَا عَبَدَ الْعَابِدُونَ بِشَيْءٍ أَفْضَلَ مِنْ تَرْكِ مَا نَهَاهُمُ اللَّهُ عَنْه
আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়গুলো থেকে বেঁচে থাকার চেয়ে উত্তম কোনো ইবাদত আর কোনো ইবাদতকারী করতে পারেনি। [জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম : ২৯৬]জেগে থাকাটা মানুষকে ধ্বংস করে দিয়েছে
আমাদের মাশায়েখ থেকে বর্ণিত আছে যে, ইবাদত যা-ই করতে পারো তবে গুনাহ করো না।
সালফে সালেহীনের যুগে মাঝে মাঝে কিছু লোক সুন্দর সুন্দর কথা নিয়ে বাজারে প্রচার করত। এক ব্যক্তি বাজারে হেঁটে হেঁটে প্রচার করতে লাগলো
অর্থাৎ সে বুঝাতে চাইলো যে, মানুষ ঘুমের কারণে ইবাদত করে না তাই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তখন একজন আল্লাহওয়ালা তাকে শুধরে দিয়ে বললেন, বিষয়টা এমন নয়। বরং প্রকৃত বিষয় হল
এর অর্থ হল, জেগে থেকে মানুষ গুনাহ করে। আর এটাই তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
এ জন্যই বুযুর্গ বলেন, তোমার কথা সংশোধন করো এবং এভাবে বল
এখন তো সব কিছু উল্টো। এখন যুবকরা রাতের বেলায় জাগ্রত থাকে আর দিনের বেলায় ঘুমায়।
আমাদের মাশায়েখ থেকে বর্ণিত আছে যে, ইবাদত যা-ই করতে পারো তবে গুনাহ করো না।
সালফে সালেহীনের যুগে মাঝে মাঝে কিছু লোক সুন্দর সুন্দর কথা নিয়ে বাজারে প্রচার করত। এক ব্যক্তি বাজারে হেঁটে হেঁটে প্রচার করতে লাগলো
أَهْلَكَكُمْ النَّوْمُ
‘হে মানুষ! ঘুম তোমাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’ অর্থাৎ সে বুঝাতে চাইলো যে, মানুষ ঘুমের কারণে ইবাদত করে না তাই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তখন একজন আল্লাহওয়ালা তাকে শুধরে দিয়ে বললেন, বিষয়টা এমন নয়। বরং প্রকৃত বিষয় হল
بَلْ أَهْلَكَتْكُمْ الْيَقِظَةُ
‘মানুষকে জেগে থাকাটা ধ্বংস করে দিয়েছে।’ এর অর্থ হল, জেগে থেকে মানুষ গুনাহ করে। আর এটাই তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
এ জন্যই বুযুর্গ বলেন, তোমার কথা সংশোধন করো এবং এভাবে বল
خَفْ اللَّهَ بِالنَّهَارِ وَنَمْ بِاللَّيْلِ
দিনের বেলায় আল্লাহকে ভয় করো আর রাতের বেলায় ঘুমাও। [আদাবুদদুনয়া ওয়াদদীন : ১/৯৮]এখন তো সব কিছু উল্টো। এখন যুবকরা রাতের বেলায় জাগ্রত থাকে আর দিনের বেলায় ঘুমায়।
পাঁচটি মহা-মূল্যবান কথা
হাদীস শরীফে এসেছে, এক দিন রাসূলুল্লাহ ﷺ সাহাবায়ে কেরামকে জিজ্ঞেস করলেন, পাঁচটি কথা আমার কাছ থেকে কে নিবে এবং মুখস্থ করবে তারপর অন্যের কাছে পৌঁছে দিবে? আবু হুরায়রা রাযি. বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি নিবো, মুখস্থ করবো, অন্যের কাছে পৌঁছে দিবো।
নবীজী ﷺ বললেন
হাদীস শরীফে এসেছে, এক দিন রাসূলুল্লাহ ﷺ সাহাবায়ে কেরামকে জিজ্ঞেস করলেন, পাঁচটি কথা আমার কাছ থেকে কে নিবে এবং মুখস্থ করবে তারপর অন্যের কাছে পৌঁছে দিবে? আবু হুরায়রা রাযি. বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি নিবো, মুখস্থ করবো, অন্যের কাছে পৌঁছে দিবো।
নবীজী ﷺ বললেন
اتَّقِ الْمَحَارِمَ تَكُنْ أَعْبَدَ النَّاسِ
১. গুনাহসমূহ থেকে বাঁচবে তবে সর্বাপেক্ষা ইবাদতকারী লোক হিসেবে গণ্য হবে। وَارْضَ بِمَا قَسَمَ اللهُ لَكَ تَكُنْ أَغْنَى النَّاسِ
২. তোমার তাকদীরে আল্লাহ তাআলা যা বণ্টন করে রেখেছেন সে বিষয়ে সন্তুষ্ট থাকবে, তবে সর্বাপেক্ষা অমুখাপেক্ষী লোক হতে পারবে। وَأَحْسِنْ إِلَى جَارِكَ تَكُنْ مُؤْمِنًا
৩. প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ব্যহার করবে তবে প্রকৃত মুমিন হতে পারবে। وَأَحِبَّ لِلنَّاسِ مَا تُحِبُّ لِنَفْسِكَ تَكُنْ مُسْلِمًا
৪. নিজের জন্য যা পছন্দ কর মানুষের জন্যও তা পছন্দ করবে তাহলে প্রকৃত মুসলিম হতে পারবে। وَلاَ تُكْثِرِ الضَّحِكَ ، فَإِنَّ كَثْرَةَ الضَّحِكِ تُمِيتُ الْقَلْبَ
৫. বেশি হাসবে না, কেননা বেশি হাস্য-কৌতুক হৃদয়কে মুর্দা বানিয়ে দেয়। [তিরমিযী : ২৩০৫]হাদিসটির সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা
উক্ত হাদিসের প্রথমাংশে বলা হয়েছে
এ জন্য আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহ. বলতেন, আমার কাছে সন্দেহমুক্ত এক দিরহাম দান করা সন্দেহযুক্ত লক্ষ দিরহাম দান করার চেয়ে উত্তম।
উক্ত হাদীসের দ্বিতীয় অংশে নবীজি ﷺ বলেন
আমরাতো হা-পিত্যেশ করি যে, পেলাম না, খেলাম না। অথচ নবীজি ﷺ বলেন, আল্লাহর দেওয়া বণ্টনের উপর সন্তুষ্ট হয়ে যাও জগতের মধ্যে তুমি সবচেয়ে সুখী হতে পারবে। দেখবেন, যে যত বড় ধনী সে ততো বড় অসুখী। এর কারণ হলো আল্লাহর দেওয়া বণ্টনের উপর সে সন্তুষ্ট নয় বরং তার অবস্থা হলো এই যে, আরও চাই, আরও চাই এবং আরও চাই।
তৃতীয় অংশে নবীজি ﷺ বলেছেন
আর চতুর্থ অংশে নবীজি ﷺ বলেন
হাদিসটির শেষাংশে নবীজি ﷺ বলেন
উক্ত হাদিসের প্রথমাংশে বলা হয়েছে
اتَّقِ الْمَحَارِمَ تَكُنْ أَعْبَدَ النَّاسِ
অর্থাৎ জগতের যত ইবাদতগুজার আছে সকলের চেয়ে তুমি আগে চলে যেতে পারবে, সকলেই তোমার থেকে পিছিয়ে যাবে যদি তুমি গুনাহ থেকে বেঁচে থাকো।এ জন্য আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহ. বলতেন, আমার কাছে সন্দেহমুক্ত এক দিরহাম দান করা সন্দেহযুক্ত লক্ষ দিরহাম দান করার চেয়ে উত্তম।
উক্ত হাদীসের দ্বিতীয় অংশে নবীজি ﷺ বলেন
وَارْضَ بِمَا قَسَمَ اللهُ لَكَ تَكُنْ أَغْنَى النَّاسِ
আল্লাহ তাআলা যা বণ্টন করে রেখেছেন সে বিষয়ে সন্তুষ্ট থাকবে, তবে সর্বাপেক্ষা সুখী হতে পারবে।আমরাতো হা-পিত্যেশ করি যে, পেলাম না, খেলাম না। অথচ নবীজি ﷺ বলেন, আল্লাহর দেওয়া বণ্টনের উপর সন্তুষ্ট হয়ে যাও জগতের মধ্যে তুমি সবচেয়ে সুখী হতে পারবে। দেখবেন, যে যত বড় ধনী সে ততো বড় অসুখী। এর কারণ হলো আল্লাহর দেওয়া বণ্টনের উপর সে সন্তুষ্ট নয় বরং তার অবস্থা হলো এই যে, আরও চাই, আরও চাই এবং আরও চাই।
তৃতীয় অংশে নবীজি ﷺ বলেছেন
وَأَحْسِنْ إِلَى جَارِكَ تَكُنْ مُؤْمِنًا
তুমি তোমার প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার করো তাহলে প্রকৃত মুমিন হতে পারবে।আর চতুর্থ অংশে নবীজি ﷺ বলেন
وَأَحِبَّ لِلنَّاسِ مَا تُحِبُّ لِنَفْسِكَ تَكُنْ مُسْلِمًا
তুমি নিজের জন্য যা পছন্দ করো অপর মুসলমানের জন্য তাই পছন্দ করো তাহলে মুসলিম হতে পারবে। যেমন তুমি চাও কেউ তামাকে গালি না দিক। সুতরাং তুমিও কাউকে গালি দিও না। তুমি চাও কেউ তোমার গীবত না করুক সুতরাং তুমিও গীবত করো না। তুমি চাও কেউ তোমার ব্যাপারে বদধারণা না করুক সুতরাং তুমিও কারো ব্যাপারে বদধারণা করো না।হাদিসটির শেষাংশে নবীজি ﷺ বলেন
وَلاَ تُكْثِرِ الضَّحِكَ ، فَإِنَّ كَثْرَةَ الضَّحِكِ تُمِيتُ الْقَلْبَ
বেশি আনন্দ-বিনোদন করো না। কারণ অতিরিক্ত বিনোদন মানুষের অন্তর মেরে ফেলে।গুনাহ বর্জন করা ছাড়া আল্লাহর অলী হওয়া যায় না
যাই হোক উক্ত হাদিসের প্রথমাংশে নবীজি ﷺ আল্লাহর অলী হওয়ার রহস্য বলে দিয়েছেন যে, কোনো আল্লাহর অলী ‘অলী’ হতে পারেননি যতক্ষণ পর্যন্ত গুনাহ ছাড়তে পারেননি। আল্লাহর অলী হতে হলে গুনাহ ছাড়তেই হবে। এছাড়া বিকল্প নেই। এটাই হলো সবচেয়ে উত্তম ইবাদত।
আল্লাহ আমাদেরকে তাওফীক দান করুন আমীন।
যাই হোক উক্ত হাদিসের প্রথমাংশে নবীজি ﷺ আল্লাহর অলী হওয়ার রহস্য বলে দিয়েছেন যে, কোনো আল্লাহর অলী ‘অলী’ হতে পারেননি যতক্ষণ পর্যন্ত গুনাহ ছাড়তে পারেননি। আল্লাহর অলী হতে হলে গুনাহ ছাড়তেই হবে। এছাড়া বিকল্প নেই। এটাই হলো সবচেয়ে উত্তম ইবাদত।
আল্লাহ আমাদেরকে তাওফীক দান করুন আমীন।
রাত জেগে ইবাদতকারীর চেয়েও আগে বেড়ে যেতে পারবে
হযরত আয়শা রাযি. একদিন নবীজি ﷺ-কে বললেন, অনেকে রাত জেগে ইবাদত করে। আমরা মহিলারা একটু অলসপ্রকৃতির। রাত জেগে ইবাদত করতে পারি না। শুধু ঘুম আসে। পুরুষের তুলনায় মহিলাদের ঘুম বেশি। তো আমাদের শুধু ঘুম আসে। ফলে যারা রাত জেগে ইবাদত করে তাদের থেকে তো পিছনে পড়ে গেলাম। তখন আয়শা রাযি.-কে নবীজী ﷺ সান্ত্বনা দিয়ে বললেন
হযরত আয়শা রাযি. একদিন নবীজি ﷺ-কে বললেন, অনেকে রাত জেগে ইবাদত করে। আমরা মহিলারা একটু অলসপ্রকৃতির। রাত জেগে ইবাদত করতে পারি না। শুধু ঘুম আসে। পুরুষের তুলনায় মহিলাদের ঘুম বেশি। তো আমাদের শুধু ঘুম আসে। ফলে যারা রাত জেগে ইবাদত করে তাদের থেকে তো পিছনে পড়ে গেলাম। তখন আয়শা রাযি.-কে নবীজী ﷺ সান্ত্বনা দিয়ে বললেন
مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَسْبِقَ الدَّائِبَ الْمُجْتَهِدَ فَلْيَكُفَّ عَنِ الذُّنُوبِ
যে ব্যক্তি খুব ইবাদতকারীর চেয়েও অগ্রসর হয়ে আনন্দ পেতে চায় তার জন্য উচিত হল, গুনাহসমূহ থেকে বেঁচে থাকা। অর্থাৎ যদি তুমি গুনাহ থেকে বেঁচে থাকো তাহলে রাত জেগে ইবাদতকারীর চেয়েও আগে বেড়ে যেতে পারবে। [মুসনাদ আবু ইয়ালা : ৪৯৫০]একটি চমৎকার ঘটনা
কিতাবে এসেছে, কাজী আব্দুল ওয়াহিদ ইবনে যায়েদ রহ.। যিনি ছিলেন একজন তাবে’ তাবিয়ী। বিখ্যাত তাবিয়ী হাসান বসরী রহ. এবং মালেক ইবনে দিনার রহ.-এর শাগরিদ ছিলেন। আল্লাহর অলী ছিলেন। তিনি বলেন যে, আমি একদিন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে—যাকে জুমা রাত বলা হয়। এ রাতের ফজিলত সম্পর্কে নবীজী ﷺ বলেন, পাঁচ রাতে আল্লাহ তাআলা দোয়া ফেরত দেন না। তন্মধ্যে একটি রাত হল জুমা রাত।
আব্দুল ওয়াহিদ ইবনে যায়েদ রহ. বলেন, আমি একদিন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বাইতুল মুকাদ্দাসে সারারাত ইবাদত করলাম। এরপর ভোর রাতের দিকে আমি মসজিদের দরজা খুললাম। মসজিদে তখন আমি ছাড়া আর কেউ ছিল না। ঠিক ওই সময়ে আঠার জন লোক একসঙ্গে প্রবেশ করল। প্রত্যেকের পরনে লোহা জাতীয় পাশাক অর্থাৎ লোহা দিয়ে বানানো হয়েছে এ জাতীয় পোশাক এবং প্রত্যেকের পায়ে ছিল খেজুর পাতা দিয়ে বানানো জুতা। আর প্রত্যেকের গলায় ঝোলানো ছিল কুরআন মজিদ। আমি গুনে দেখলাম তারা মোট আঠারো জন। তাঁদের চেহারা থেকে একপ্রকার নূরের ঝলক প্রতিভাত হচ্ছিল। এটা দেখে আমি অভিভূত হলাম এবং প্রভাবিত হলাম। তাদেরকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা এত বড় মর্যাদা পেলেন কীভাবে? কীভাবে এত বেশি সম্মানিত হলেন? তখন তাঁদের একজন উত্তর দিলেন
আরেকজন বললেন
কিতাবে এসেছে, কাজী আব্দুল ওয়াহিদ ইবনে যায়েদ রহ.। যিনি ছিলেন একজন তাবে’ তাবিয়ী। বিখ্যাত তাবিয়ী হাসান বসরী রহ. এবং মালেক ইবনে দিনার রহ.-এর শাগরিদ ছিলেন। আল্লাহর অলী ছিলেন। তিনি বলেন যে, আমি একদিন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে—যাকে জুমা রাত বলা হয়। এ রাতের ফজিলত সম্পর্কে নবীজী ﷺ বলেন, পাঁচ রাতে আল্লাহ তাআলা দোয়া ফেরত দেন না। তন্মধ্যে একটি রাত হল জুমা রাত।
আব্দুল ওয়াহিদ ইবনে যায়েদ রহ. বলেন, আমি একদিন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বাইতুল মুকাদ্দাসে সারারাত ইবাদত করলাম। এরপর ভোর রাতের দিকে আমি মসজিদের দরজা খুললাম। মসজিদে তখন আমি ছাড়া আর কেউ ছিল না। ঠিক ওই সময়ে আঠার জন লোক একসঙ্গে প্রবেশ করল। প্রত্যেকের পরনে লোহা জাতীয় পাশাক অর্থাৎ লোহা দিয়ে বানানো হয়েছে এ জাতীয় পোশাক এবং প্রত্যেকের পায়ে ছিল খেজুর পাতা দিয়ে বানানো জুতা। আর প্রত্যেকের গলায় ঝোলানো ছিল কুরআন মজিদ। আমি গুনে দেখলাম তারা মোট আঠারো জন। তাঁদের চেহারা থেকে একপ্রকার নূরের ঝলক প্রতিভাত হচ্ছিল। এটা দেখে আমি অভিভূত হলাম এবং প্রভাবিত হলাম। তাদেরকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা এত বড় মর্যাদা পেলেন কীভাবে? কীভাবে এত বেশি সম্মানিত হলেন? তখন তাঁদের একজন উত্তর দিলেন
يَا عَبْدَ الْوَاحِدِ، لَا يُوصِلُ إِلَى وَلَايَةِ اللَّهِ إِلَّا بِتَرْكِ الْهَوَى
‘হে আব্দুল ওয়াহিদ! নফস-তাড়িত গুনাহ ত্যাগ করা ছাড়া আল্লাহর অলী হওয়া যায় না।’আরেকজন বললেন
مَا عَرَفَ اللهَ مَنْ لَمْ يَسْتَحِ مِنْهُ فِي الْخَلَاءِ
‘যে ব্যক্তি নির্জনতার সময়গুলোতে আল্লাহকে লজ্জা করেনি, সে আল্লাহর পরিচয় লাভ করতে পারেনি।’ [আযযাহির; আবুল হাসান আলী আলকুরতুবী : ৩২,৩৩]একটি দরজা কি বন্ধ করা যাবে!
এক লোক সুযোগ পেয়ে জনৈক মহিলাকে অভাবগ্রস্ত পেয়ে খারাপ কাজের প্রস্তাব দিয়ে বসলো। মহিলাও অভাবের তাড়নায় রাজি হয়ে গেল। যখন কাজ শুরু করতে গেল তখন পুরুষটি মহিলাটিকে বলল যাও, দরজা বন্ধ করে আসো। তখন মহিলাটি আশ্চর্য উত্তর দিল। সে বলল, সব দরজা তো বন্ধ করা যাবে কিন্তু একটি দরজা কি বন্ধ করা যাবে! অর্থাৎ আল্লাহর দরজা কি বন্ধ করা যাবে?
আল্লাহ তাআলা বলেন
এক লোক সুযোগ পেয়ে জনৈক মহিলাকে অভাবগ্রস্ত পেয়ে খারাপ কাজের প্রস্তাব দিয়ে বসলো। মহিলাও অভাবের তাড়নায় রাজি হয়ে গেল। যখন কাজ শুরু করতে গেল তখন পুরুষটি মহিলাটিকে বলল যাও, দরজা বন্ধ করে আসো। তখন মহিলাটি আশ্চর্য উত্তর দিল। সে বলল, সব দরজা তো বন্ধ করা যাবে কিন্তু একটি দরজা কি বন্ধ করা যাবে! অর্থাৎ আল্লাহর দরজা কি বন্ধ করা যাবে?
আল্লাহ তাআলা বলেন
اَلَمْ يَعْلَمْ بِّاَنَّ اللهُ يَرى
সে কি জানে না যে, আল্লাহ দেখতে পাচ্ছেন! [সূরা আলাক : ১৪]هُوَ مَعَكُمْ اَيْنَمَا كُنْتُمْ
তোমরা যেখানেই থাকো না কেন; তিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন। [সূরা হাদীদ : ০৪]গুনাহ অনুপ্রবেশ করে দুটি রোড ব্যবহার করে
মুহতারাম হাজিরীন! গোনাহ থেকে তো নিরাপদ থাকা তখনই সহজ হবে যখন আমরা বুঝবো যে, গুনাহগুলো আসে কোন্ রাস্তা দিয়ে! কেননা শত্রুকে ঘায়েল করতে হলে শত্রুর রাস্তা চিনতে হয়, যাতে করে শত্রু না আসতে পারে। গুনাহ তো হলো আমাদের জন্য বিষতুল্য। এই বিষ সরবরাহ করে ইবলিস। রিসিভ করে আমাদের নফস।
আমাদের মাশায়েখ বলেন, ইবলিস আমাদের পর্যন্ত এই গোনাহগুলোকে পৌঁছাতে গিয়ে দুটি রাস্তা ব্যবহার করে থাকে। যত গুনাহ আছে সব গুনাহ এই দুটি রোডের মাধ্যমেই ইবলিস আমাদের কাছে পৌঁছায়। এমনকি কুফরি নামক গুনাহও এই দুটি রোডের যে কোনো একটি ব্যবহার হয়ে মানুষের কাছে আসে। একটি রোডের নাম হল, শুবুহাত। দ্বিতীয় রোডের নাম হল, শাহওয়াত। সুতরাং আমরা যদি এই দুটি রোড বন্ধ করে দেই তাহলে বাঁশরি থাকবে না, বাঁশিও বাজবে না। তখন গুনাহ আর হবে না।
ইসলামে শুবুহাতের কোনো স্থান নেই
শুবুহাত এর অর্থ হল, ওয়াসওয়াসা বা দ্বিধাদ্বন্দ্ব বা সন্দেহ সৃষ্টির মাধ্যমে কুমন্ত্রণা দেওয়া। এই ওয়াসওয়াসা নানা ধরনের হতে পারে। ঈমানের ব্যাপারে হতে পারে, পবিত্রতার ব্যাপারে হতে পারে, নামাযের ব্যাপারে হতে পারে, ইবাদত-বন্দেগীর ব্যাপারে হতে পারে, এমনকি ব্যক্তির ব্যপারেও হতে পারে যেমন, অমুক আমার ব্যাপারে এটা বলল কিনা; আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করল কিনা! নবীজী ﷺ বলেন ইসলামে এই শুবুহাতের কোনো স্থান নেই। বরং তিনি বলেন
সুতরাং সন্দেহজনক বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেয়া যাবে না; বরং নবীজির কথা অনুযায়ী চলব। যেমন নবীজি ﷺ বলেছেন
সুতরাং ভালো ধারণা রাখব। কেবল সন্দেহের ভিত্তিতে খারাপ ধারণা করবো না।
মুহতারাম হাজিরীন! গোনাহ থেকে তো নিরাপদ থাকা তখনই সহজ হবে যখন আমরা বুঝবো যে, গুনাহগুলো আসে কোন্ রাস্তা দিয়ে! কেননা শত্রুকে ঘায়েল করতে হলে শত্রুর রাস্তা চিনতে হয়, যাতে করে শত্রু না আসতে পারে। গুনাহ তো হলো আমাদের জন্য বিষতুল্য। এই বিষ সরবরাহ করে ইবলিস। রিসিভ করে আমাদের নফস।
আমাদের মাশায়েখ বলেন, ইবলিস আমাদের পর্যন্ত এই গোনাহগুলোকে পৌঁছাতে গিয়ে দুটি রাস্তা ব্যবহার করে থাকে। যত গুনাহ আছে সব গুনাহ এই দুটি রোডের মাধ্যমেই ইবলিস আমাদের কাছে পৌঁছায়। এমনকি কুফরি নামক গুনাহও এই দুটি রোডের যে কোনো একটি ব্যবহার হয়ে মানুষের কাছে আসে। একটি রোডের নাম হল, শুবুহাত। দ্বিতীয় রোডের নাম হল, শাহওয়াত। সুতরাং আমরা যদি এই দুটি রোড বন্ধ করে দেই তাহলে বাঁশরি থাকবে না, বাঁশিও বাজবে না। তখন গুনাহ আর হবে না।
ইসলামে শুবুহাতের কোনো স্থান নেই
শুবুহাত এর অর্থ হল, ওয়াসওয়াসা বা দ্বিধাদ্বন্দ্ব বা সন্দেহ সৃষ্টির মাধ্যমে কুমন্ত্রণা দেওয়া। এই ওয়াসওয়াসা নানা ধরনের হতে পারে। ঈমানের ব্যাপারে হতে পারে, পবিত্রতার ব্যাপারে হতে পারে, নামাযের ব্যাপারে হতে পারে, ইবাদত-বন্দেগীর ব্যাপারে হতে পারে, এমনকি ব্যক্তির ব্যপারেও হতে পারে যেমন, অমুক আমার ব্যাপারে এটা বলল কিনা; আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করল কিনা! নবীজী ﷺ বলেন ইসলামে এই শুবুহাতের কোনো স্থান নেই। বরং তিনি বলেন
إِنَّ الْحَلَالَ بَيِّنٌ، والْحَرَامَ بَيِّنٌ، وبَيْنَهُمَا مُشْتَبِهَاتٌ لَا يَعْلَمُهُنَّ كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ، فَمَنِ اتَّقَى الشُّبُهَاتِ فَقَدِ اسْتَبْرَأَ لِدِينِهِ، وعِرْضِهِ، ومَنْ وقَعَ فِي الشُّبُهَاتِ وقَعَ فِي الْحَرَامِ
হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট। আর এ দুয়ের মাঝে রয়েছে বহু সন্দেহজনক বিষয়— যা অনেকেই জানে না। যে ব্যক্তি সেই সন্দেহজনক বিষয়সমূহ থেকে বেঁচে থাকবে। সে তার দীন ও মর্যাদা রক্ষা করতে পারবে। আর যে সন্দেহজনক বিষয়সমূহে লিপ্ত হল সে হারামেই লিপ্ত হল। [সহীহ বুখারী : ৫২]সুতরাং সন্দেহজনক বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেয়া যাবে না; বরং নবীজির কথা অনুযায়ী চলব। যেমন নবীজি ﷺ বলেছেন
ظُنوا بالْمُؤْمِنُينَ خَيْراً
তোমরা কারো প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করো না। কেননা খারাপ ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা। [সহীহ বুখারী : ৫১৪৩]সুতরাং ভালো ধারণা রাখব। কেবল সন্দেহের ভিত্তিতে খারাপ ধারণা করবো না।
ওয়াসওয়াসা বা সন্দেহ কার সৃষ্ট?
এই ওয়াসওয়াসা বা সন্দেহ কার সৃষ্ট? শয়তানের সৃষ্ট। শয়তান মানুষের অন্তরে এগুলো সৃষ্টি করে। নবীজী ﷺ বলেন
অর্থাৎ সন্দেহ সৃষ্টি করে, দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি করে শয়তান মানুষের অন্তরে কেবল গুনাহের কুমন্ত্রণা দিতে পারে, কিন্তু সে গুনাহ করাতে পারে না। তার কুমন্ত্রণার পথ ধরে আমি গুনাহ করে নিলাম, এর অর্থ হল আমি তার কুমন্ত্রণার জালে পড়ে গেলাম। নাউযুবিল্লাহ।
এই ওয়াসওয়াসা কত মানুষের জীবনকে ধ্বংস করে দিয়েছে! কত সুন্দর বাগানকে বিলীন করে দিয়েছে! কত দাম্পত্যজীবনকে জাহান্নাম বানিয়ে ছেড়েছে! এখন তো ইমো হেয়াটসঅ্যাপ আর ফেসবুকের যুগ। তাই ওয়াসওয়াসার পরিমাণটা অতীতের তুলনায় আরও বেশি।
এই ওয়াসওয়াসা বা সন্দেহ কার সৃষ্ট? শয়তানের সৃষ্ট। শয়তান মানুষের অন্তরে এগুলো সৃষ্টি করে। নবীজী ﷺ বলেন
الحَمْدُ لله الذي رَدَّ كَيْدَ الشيطان إلى الوَسْوَسةِ
সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর জন্য যিনি শয়তানের যাবতীয় চক্রান্ত ওয়াসওয়াসার ভিতরে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছেন। [আবু দাউদ : ৫১১২]অর্থাৎ সন্দেহ সৃষ্টি করে, দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি করে শয়তান মানুষের অন্তরে কেবল গুনাহের কুমন্ত্রণা দিতে পারে, কিন্তু সে গুনাহ করাতে পারে না। তার কুমন্ত্রণার পথ ধরে আমি গুনাহ করে নিলাম, এর অর্থ হল আমি তার কুমন্ত্রণার জালে পড়ে গেলাম। নাউযুবিল্লাহ।
এই ওয়াসওয়াসা কত মানুষের জীবনকে ধ্বংস করে দিয়েছে! কত সুন্দর বাগানকে বিলীন করে দিয়েছে! কত দাম্পত্যজীবনকে জাহান্নাম বানিয়ে ছেড়েছে! এখন তো ইমো হেয়াটসঅ্যাপ আর ফেসবুকের যুগ। তাই ওয়াসওয়াসার পরিমাণটা অতীতের তুলনায় আরও বেশি।
শুবুহাত এবং শাহওয়াত
ইবলিস আমাদের পর্যন্ত গুনাহগুলো পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে যে দ্বিতীয় রাস্তা ব্যবহার করে তার নাম হল শাহওয়াত। শাহওয়াত মানে কামনা, বাসনা এবং যৌনতার প্রতি লালসা। ইবলিস আমাদের দেহের মাঝে এই কামনাগুলো তৈরি করে। সুতরাং ইবলিস শুবুহাত এবং শাহওয়াত এ দুটি রাস্তার মাধ্যমেই সকল গুনাহ সাপ্লাই করে আর আমাদের নফস সেগুলো রিসিভ করে।
ইবলিস আমাদের পর্যন্ত গুনাহগুলো পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে যে দ্বিতীয় রাস্তা ব্যবহার করে তার নাম হল শাহওয়াত। শাহওয়াত মানে কামনা, বাসনা এবং যৌনতার প্রতি লালসা। ইবলিস আমাদের দেহের মাঝে এই কামনাগুলো তৈরি করে। সুতরাং ইবলিস শুবুহাত এবং শাহওয়াত এ দুটি রাস্তার মাধ্যমেই সকল গুনাহ সাপ্লাই করে আর আমাদের নফস সেগুলো রিসিভ করে।
নফস গুনাহগুলো রিসিভ করে কীভাবে?
প্রশ্ন হল, রিসিভ করে কীভাবে? আসলে সে তো গডফাদার; তাই সে নিজে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। আর রিসিভ করার কাজে লাগায় আমাদের দেহের কিছু অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে। যেগুলোকে সে রিসিভ করার কাউন্টার হিসেবে ব্যবহার করে। শুবুহাত কিংবা শাহওয়াত— যে পথেই গুনাহ আসুক না কেন, ইবলিস গুনাহ যে পথেই সরবরাহ করুক না কেন; ওই অঙ্গগুলো তা গ্রহণ করে এবং এর মাধ্যমেই নফসের গ্রহণ করা হয়ে যায়। অর্থাৎ নফস কেমন যেন ওই অঙ্গগুলোকে বলে, তুমি গুনাহটা ধারণ কর এতেই আমি পেয়ে যাব। কেননা তোমার রিসিভ করা মানে আমার রিসিভ করা। তোমার ধারণ করা মানে আমার ধারণ করা। তোমার গ্রহণ করা মানে আমার গ্রহণ করা।
প্রশ্ন হল, রিসিভ করে কীভাবে? আসলে সে তো গডফাদার; তাই সে নিজে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। আর রিসিভ করার কাজে লাগায় আমাদের দেহের কিছু অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে। যেগুলোকে সে রিসিভ করার কাউন্টার হিসেবে ব্যবহার করে। শুবুহাত কিংবা শাহওয়াত— যে পথেই গুনাহ আসুক না কেন, ইবলিস গুনাহ যে পথেই সরবরাহ করুক না কেন; ওই অঙ্গগুলো তা গ্রহণ করে এবং এর মাধ্যমেই নফসের গ্রহণ করা হয়ে যায়। অর্থাৎ নফস কেমন যেন ওই অঙ্গগুলোকে বলে, তুমি গুনাহটা ধারণ কর এতেই আমি পেয়ে যাব। কেননা তোমার রিসিভ করা মানে আমার রিসিভ করা। তোমার ধারণ করা মানে আমার ধারণ করা। তোমার গ্রহণ করা মানে আমার গ্রহণ করা।
গুনাহ রিসিভ করার চার কাউন্টার
মুহতারাম হাজিরীন! সুতরাং এ পর্যায়ে আমাদের জানা প্রয়োজন ইবলিসের সরবরাহকৃত গুনাহগুলো রিসিভ করার জন্য আমাদের কোন কোন অঙ্গকে নফস কাউন্টার হিসেবে ব্যবহার করে?
এ রকম অঙ্গ প্রধানত চারটি। ১. চোখ ২. জবান ৩. কান ৪. মস্তিষ্ক।
সুতরাং যদি আমরা এই চারটি অঙ্গের হেফাজত করতে পারি তাহলে ব্যভিচার ও গীবত কিংবা হারাম খাদ্য গ্রহণ করা থেকে শুরু করে কুফরি পর্যন্ত কোনো গুনাহই আমাদের দ্বারা ইবলিস কিংবা নফস করাতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা বলেন
মুহতারাম হাজিরীন! সুতরাং এ পর্যায়ে আমাদের জানা প্রয়োজন ইবলিসের সরবরাহকৃত গুনাহগুলো রিসিভ করার জন্য আমাদের কোন কোন অঙ্গকে নফস কাউন্টার হিসেবে ব্যবহার করে?
এ রকম অঙ্গ প্রধানত চারটি। ১. চোখ ২. জবান ৩. কান ৪. মস্তিষ্ক।
সুতরাং যদি আমরা এই চারটি অঙ্গের হেফাজত করতে পারি তাহলে ব্যভিচার ও গীবত কিংবা হারাম খাদ্য গ্রহণ করা থেকে শুরু করে কুফরি পর্যন্ত কোনো গুনাহই আমাদের দ্বারা ইবলিস কিংবা নফস করাতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা বলেন
وَلَا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِۦ عِلْمٌ إِنَّ ٱلسَّمْعَ وَٱلْبَصَرَ وَٱلْفُؤَادَ كُلُّ أُوْلَٰٓئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْـُٔولًا
যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, অযথা তার পিছনে পড়ো না। কেননা কেয়ামতের দিন কান, চোখ ও অন্তর; এ সব কয়টির ব্যবহার সম্পর্কে তোমাকে জিজ্ঞাসা করা হবে। [সূরা ইসরা : ৩৬]প্রথম কাউন্টার : চোখ
চোখকে বলা হয়ে থাকে মনের আয়না। মানুষ প্রথমে চোখ দিয়ে দেখে তারপর হৃদয় দিয়ে কল্পনা ও কামনা করে। পরবর্তীতে তা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালায়। চোখের যত্রতত্র দৃষ্টিপাতে মানুষের মন অশান্ত অস্থির হয়।
ইবলিস পরনারীর চেহারা, সুদের টাকা, ঘুষের পয়সা ইত্যাদিকে খুব নয়নলোভন পদ্ধতিতে উপস্থাপন করে। নফস তা চোখের মাধ্যেমে রিসিভ করে মজা ভোগ করে এবং নিজের মধ্যে পুষে রাখে। সুযোগ পেলেই তা ফুলে-ফেঁপে বিশাল হয়ে ওঠে।
দেখুন কাবিল-হাবিলের স্ত্রীর রূপ-যৌবনের প্রতি কুদৃষ্টি দিয়েছিল। পরিণামে তার কাঁধে এমনই ভূত চড়ে বসেছিল, আপন ভাইকে হত্যা করতেও তার কলিজা কাঁপেনি।
চোখকে বলা হয়ে থাকে মনের আয়না। মানুষ প্রথমে চোখ দিয়ে দেখে তারপর হৃদয় দিয়ে কল্পনা ও কামনা করে। পরবর্তীতে তা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালায়। চোখের যত্রতত্র দৃষ্টিপাতে মানুষের মন অশান্ত অস্থির হয়।
ইবলিস পরনারীর চেহারা, সুদের টাকা, ঘুষের পয়সা ইত্যাদিকে খুব নয়নলোভন পদ্ধতিতে উপস্থাপন করে। নফস তা চোখের মাধ্যেমে রিসিভ করে মজা ভোগ করে এবং নিজের মধ্যে পুষে রাখে। সুযোগ পেলেই তা ফুলে-ফেঁপে বিশাল হয়ে ওঠে।
দেখুন কাবিল-হাবিলের স্ত্রীর রূপ-যৌবনের প্রতি কুদৃষ্টি দিয়েছিল। পরিণামে তার কাঁধে এমনই ভূত চড়ে বসেছিল, আপন ভাইকে হত্যা করতেও তার কলিজা কাঁপেনি।
জায়েয বিষয় থেকেও চোখের হেফাজত
চোখের হেফাজত কেবল নাজায়েয কিছু থেকে নয়, বরং ক্ষেত্রবিশেষ জায়েয বিষয় থেকেও করতে হয়। দুনিয়াবী বিষয়গুলো নিয়ে যার মধ্যে আকর্ষণ বেশী কাজ করে, তার জন্য জরুরী এরকম ক্ষেত্রেও চোখের হেফাজত করা। যেমন যার লেটেস্ট মডেলের গাড়ির প্রতি আকর্ষণ আছে, এরকম গাড়ি চোখে পড়লেই তার জন্য চোখ সরিয়ে নেয়া জরুরী। সুন্দর বাড়ী বা এপার্টমেন্ট, লেটেস্ট মডেলের মোবাইল ফোন বা আকর্ষণীয় কোনো ড্রেস - যেগুলো দেখলে তার নিজের ভেতর আফসোস এবং আকর্ষণ তৈরি হয়, সে যেন এসব কিছু থেকেও চোখের হেফাজত করে। দেখুন, স্বয়ং আল্লাহ তাআলা তার রাসূল ﷺ-কে এরকম আদেশ দিয়েছেন।
চোখের হেফাজত কেবল নাজায়েয কিছু থেকে নয়, বরং ক্ষেত্রবিশেষ জায়েয বিষয় থেকেও করতে হয়। দুনিয়াবী বিষয়গুলো নিয়ে যার মধ্যে আকর্ষণ বেশী কাজ করে, তার জন্য জরুরী এরকম ক্ষেত্রেও চোখের হেফাজত করা। যেমন যার লেটেস্ট মডেলের গাড়ির প্রতি আকর্ষণ আছে, এরকম গাড়ি চোখে পড়লেই তার জন্য চোখ সরিয়ে নেয়া জরুরী। সুন্দর বাড়ী বা এপার্টমেন্ট, লেটেস্ট মডেলের মোবাইল ফোন বা আকর্ষণীয় কোনো ড্রেস - যেগুলো দেখলে তার নিজের ভেতর আফসোস এবং আকর্ষণ তৈরি হয়, সে যেন এসব কিছু থেকেও চোখের হেফাজত করে। দেখুন, স্বয়ং আল্লাহ তাআলা তার রাসূল ﷺ-কে এরকম আদেশ দিয়েছেন।
وَلا تَمُدَّنَّ عَيْنَيْكَ إِلَى مَا مَتَّعْنَا بِهِ أَزْوَاجًا مِنْهُمْ زَهْرَةَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا لِنَفْتِنَهُمْ فِيهِ وَرِزْقُ رَبِّكَ خَيْرٌ وَأَبْقَى
হে নবী! তুমি পার্থিব জীবনের ওই চাকচিক্যের দিকে তাকিও না, যা আমি তাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে সাময়িক উপভোগের জন্য দিয়ে রেখেছি, তা দ্বারা তাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য। বস্তুত তোমার রবের রিযক সর্বাপেক্ষা উত্তম ও সর্বাধিক স্থায়ী। [সূরা ত্বহা : ১৩১] চোখের হেফাজতের উপকারিতা
এ জন্যই ইসলাম বলে, পর-নারীর প্রতি, তার ফটো কিংবা ভিডিওর প্রতি; অনুরূপভাবে অন্যের সম্পদের প্রতি, অন্যের ঘরের প্রতি দৃষ্টি দিবে না।
তোমার দৃষ্টির এই হেফাজত তোমার নফসের জন্য শাসন। কেমন যেন সে যা চেয়েছে তা তুমি তাকে দাওনি; বরং তুমি তার উপর চপেটাঘাত করলে। এতে ইবলিস নিরাশ হয়েছে আর অপরদিকে তোমার মালিক খুশি হয়েছেন।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন
তুমি যদি এই তীর থেকে আত্মরক্ষা করতে পার তাহলে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, হাদীসে কুদসি
এ জন্যই ইসলাম বলে, পর-নারীর প্রতি, তার ফটো কিংবা ভিডিওর প্রতি; অনুরূপভাবে অন্যের সম্পদের প্রতি, অন্যের ঘরের প্রতি দৃষ্টি দিবে না।
তোমার দৃষ্টির এই হেফাজত তোমার নফসের জন্য শাসন। কেমন যেন সে যা চেয়েছে তা তুমি তাকে দাওনি; বরং তুমি তার উপর চপেটাঘাত করলে। এতে ইবলিস নিরাশ হয়েছে আর অপরদিকে তোমার মালিক খুশি হয়েছেন।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন
اَلنَّظْرَةُ سَهْمٌ مَسْمُوْمٌ مِنْ سِهَامِ اِبْلِيْسَ
দৃষ্টি হল ইবলিসের বিষাক্ত তীরসমূহের অন্যতম। [আলজাওয়াবুলকাফী : ২০৪]তুমি যদি এই তীর থেকে আত্মরক্ষা করতে পার তাহলে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, হাদীসে কুদসি
مَنْ تَرَكَهَا مِنْ مَخَافَتِىْ اَبْدَلْتُهُ إِيْمَاناً يَجِدُ حَلَاوَتَه فِىْ قَلْبِه
যে আমার ভয়ে তার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিবে, আমি তার অন্তরে এমন ঈমান সৃষ্টি করব, যাতে সে তার স্বাদ পাবে। [আততারগীব ওয়াততারহীব : ২/৩৭]উবায়দা ইবনুল জাররাহ রাযি.
ওমর রাযি.-এর খেলাফতকালে উবায়দা ইবনুল জাররাহ রাযি. একবার সাহাবাদের নিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত কাফেরদের দুর্গ অবরোধ করলেন। অবরোধ দীর্ঘ হয়ে গেল; কিন্তু দুর্গটিকে পদানত করা সম্ভব হচ্ছিল না। অপরদিকে দুর্গের লোকেরা মুসলিমদের এই অবিচলতা দেখে চক্রান্তের একটা নীল নকশা তৈরি করল। তা ছিল এই যে, তারা দুর্গের দরজা খুলে দিবে। প্রতিপক্ষ মুসলিম বাহিনীকে ভিতরে আসার আহ্বান জানাবে। যে দিক থেকে দরজা উন্মুক্ত করা হবে সেদিকে রয়েছে বিশাল বাজার। বাজারের শেষ মাথা দিয়ে লেগেছে শাহী মহলের সঙ্গে।
সুতরাং মুসলিম বাহিনী শাহী মহলে ঢুকতে হলে বাজার অতিক্রম করতে হবে। তাই বাজারের দুধারে অবস্থিত দোকানগুলোতে বাছাই করা সুন্দরী নারীদের বসিয়ে দেওয়া হবে। যাদেরকে বলে দেওয়া হবে, মুসলিমরা যখন বাজারে প্রবেশ করবে, তখন তোমরা নানা অঙ্গভঙ্গি দিয়ে তাদেরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা চালাবে। তারপর তারা যখন দোকানে ঢুকবে এবং যৌনতাড়িত হয়ে তোমাদের দিকে হাত বাড়াবে তখন চুপ থাকবে। যেহেতু তারা কয়েক মাস ধরে ঘরবাড়ি, স্ত্রী-পরিজন থেকে দূরে, ফলে ভেতরে প্রবেশের পর হঠাৎ যখন সুন্দরী-সুশোভিত নারীদের দেখবে, তখন তারা তাদের প্রতি আকৃষ্ট হবে, তাদের নিয়ে মত্ত হয়ে পড়বে আর আমরা পেছন দিক থেকে আক্রমণ করব।
উক্ত সংবাদ পাওয়ার পর উবায়দা ইবনুল জাররাহ রাযি. বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবলেন। তিনি ভেবে বিচলিত হলেন যে, এতদিন পর্যন্ত এ লোকগুলো যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল। দরজা খুলছিল না। এখন হঠাৎ কী হলো যে তারা দরজা খোলার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেল এবং সৈন্যদের প্রবেশের অনুমতি দিয়ে দিল! এতে নিশ্চয়ই কোনো ষড়যন্ত্র আছে।
তাই তিনি সকল সৈন্যকে একত্রিত করে তাদের সামনে একটি ভাষণ দিলেন এবং বললেন, আল্লাহর শোকর! শত্রুরা অস্ত্র নামিয়ে ফেলেছে। আমাদের প্রবেশের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। আমরা অবশ্যই প্রবেশ করবো। কিন্তু আমি আপনাদেরকে পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত শোনাবো। আপনারা আয়াতটি পড়তে পড়তে এবং এর ওপর আমল করতে করতে প্রবেশ করবেন।
আয়াতটি এই
অবশেষে মুজাহিদ বাহিনী দুর্গে প্রবেশ করল। তাদের দৃষ্টি ছিল অবনত, মুখে ছিল আল্লাহর জিকির। তারা পুরো বাজার-লোকালয় সব অতিক্রম করে শাহী মহল পর্যন্ত পৌঁছে গেল। কেউ একজনও ডানে-বামে চোখ তুলে তাকিয়েও দেখলেন না যে কী ফেতনা পথের দুপাশে দৃশ্যমান ছিল। মুসলিম বাহিনীর দৃষ্টি হেফাজত ও স্মরণের এ দৃশ্য দেখে অগণিত শহরবাসী কালেমা পড়ে মুসলমান হয়ে গেল! [ইসলাহি খুতুবাত : ১৫/৯৮]
ওমর রাযি.-এর খেলাফতকালে উবায়দা ইবনুল জাররাহ রাযি. একবার সাহাবাদের নিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত কাফেরদের দুর্গ অবরোধ করলেন। অবরোধ দীর্ঘ হয়ে গেল; কিন্তু দুর্গটিকে পদানত করা সম্ভব হচ্ছিল না। অপরদিকে দুর্গের লোকেরা মুসলিমদের এই অবিচলতা দেখে চক্রান্তের একটা নীল নকশা তৈরি করল। তা ছিল এই যে, তারা দুর্গের দরজা খুলে দিবে। প্রতিপক্ষ মুসলিম বাহিনীকে ভিতরে আসার আহ্বান জানাবে। যে দিক থেকে দরজা উন্মুক্ত করা হবে সেদিকে রয়েছে বিশাল বাজার। বাজারের শেষ মাথা দিয়ে লেগেছে শাহী মহলের সঙ্গে।
সুতরাং মুসলিম বাহিনী শাহী মহলে ঢুকতে হলে বাজার অতিক্রম করতে হবে। তাই বাজারের দুধারে অবস্থিত দোকানগুলোতে বাছাই করা সুন্দরী নারীদের বসিয়ে দেওয়া হবে। যাদেরকে বলে দেওয়া হবে, মুসলিমরা যখন বাজারে প্রবেশ করবে, তখন তোমরা নানা অঙ্গভঙ্গি দিয়ে তাদেরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা চালাবে। তারপর তারা যখন দোকানে ঢুকবে এবং যৌনতাড়িত হয়ে তোমাদের দিকে হাত বাড়াবে তখন চুপ থাকবে। যেহেতু তারা কয়েক মাস ধরে ঘরবাড়ি, স্ত্রী-পরিজন থেকে দূরে, ফলে ভেতরে প্রবেশের পর হঠাৎ যখন সুন্দরী-সুশোভিত নারীদের দেখবে, তখন তারা তাদের প্রতি আকৃষ্ট হবে, তাদের নিয়ে মত্ত হয়ে পড়বে আর আমরা পেছন দিক থেকে আক্রমণ করব।
উক্ত সংবাদ পাওয়ার পর উবায়দা ইবনুল জাররাহ রাযি. বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবলেন। তিনি ভেবে বিচলিত হলেন যে, এতদিন পর্যন্ত এ লোকগুলো যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল। দরজা খুলছিল না। এখন হঠাৎ কী হলো যে তারা দরজা খোলার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেল এবং সৈন্যদের প্রবেশের অনুমতি দিয়ে দিল! এতে নিশ্চয়ই কোনো ষড়যন্ত্র আছে।
তাই তিনি সকল সৈন্যকে একত্রিত করে তাদের সামনে একটি ভাষণ দিলেন এবং বললেন, আল্লাহর শোকর! শত্রুরা অস্ত্র নামিয়ে ফেলেছে। আমাদের প্রবেশের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। আমরা অবশ্যই প্রবেশ করবো। কিন্তু আমি আপনাদেরকে পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত শোনাবো। আপনারা আয়াতটি পড়তে পড়তে এবং এর ওপর আমল করতে করতে প্রবেশ করবেন।
আয়াতটি এই
قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ
আপনি মুমিনদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা রয়েছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। [সূরা নূর : ৩০]অবশেষে মুজাহিদ বাহিনী দুর্গে প্রবেশ করল। তাদের দৃষ্টি ছিল অবনত, মুখে ছিল আল্লাহর জিকির। তারা পুরো বাজার-লোকালয় সব অতিক্রম করে শাহী মহল পর্যন্ত পৌঁছে গেল। কেউ একজনও ডানে-বামে চোখ তুলে তাকিয়েও দেখলেন না যে কী ফেতনা পথের দুপাশে দৃশ্যমান ছিল। মুসলিম বাহিনীর দৃষ্টি হেফাজত ও স্মরণের এ দৃশ্য দেখে অগণিত শহরবাসী কালেমা পড়ে মুসলমান হয়ে গেল! [ইসলাহি খুতুবাত : ১৫/৯৮]
বর্তমানের সবচেয়ে বড় অভিশাপ
বর্তমানেও সবচেয়ে বড় অভিশাপের নাম পর্দাহীনতা। এমন সব পোশাক বেরিয়েছে; যা উলঙ্গপনার নামান্তর। যার ফলে চোখের জিনায় জড়িয়ে পড়ছে নারী-পুরুষ।
আবার এক ধরণের বোরকা বেরিয়েছে, যেটা মূলত বোরকা নয়; বরং বোরকার ফাঁদ। টাইট বোরকা পরে, গায়ে পারফিউম মেখে, মুখটা কোনরকম ওড়না দিয়ে প্যাঁচিয়ে নিলেই পর্দা হয় না বোন!
কবির ভাষায়
বর্তমানেও সবচেয়ে বড় অভিশাপের নাম পর্দাহীনতা। এমন সব পোশাক বেরিয়েছে; যা উলঙ্গপনার নামান্তর। যার ফলে চোখের জিনায় জড়িয়ে পড়ছে নারী-পুরুষ।
আবার এক ধরণের বোরকা বেরিয়েছে, যেটা মূলত বোরকা নয়; বরং বোরকার ফাঁদ। টাইট বোরকা পরে, গায়ে পারফিউম মেখে, মুখটা কোনরকম ওড়না দিয়ে প্যাঁচিয়ে নিলেই পর্দা হয় না বোন!
কবির ভাষায়
إِذَا الْمَرْءُ لَمْ يَلْبَسْ ثِيَاباً مِنْ التُّقَى
تَجَرَّدَ عُرْيَاناً وَإِنْ كَانَ كَاسِياً
ব্যক্তি যদি না পরে তাকওয়ার পোশাক, তাহলে সে নিরাবরণ উলঙ্গ, হোক না সে পোশাক পরিহিত।ইতিহাসের সবচেয়ে ছোট খুতবা
তিউনিসিয়ায় তখন পর্দা বিরোধী আন্দোলন গড়ে উঠেছে, বুরগুইবার শাসনামল। তিনি মহিলাদের পর্দা ছাড়াই পুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের উন্নয়নে কাজের আহ্বান জানিয়েছেন, এই সুযোগে মহিলারা কেনা কাটার জন্য বাজারে ভিড় জমিয়েছে। তিউনিসিয়ার সবচে বড় জামে মসজিদের ইমাম ও খতীব এবং দেশের গ্রান্ড মুফতী শাইখ মুহাম্মাদ তাহের বিন আশুর এই বাজার অতিক্রম করেই খুতবা দেয়ার জন্য জাতীয় মসজিদে উপস্থিত হন।
খুতবা দেয়ার জন্য তিনি মিম্বারে উঠে যথারীতি হামদ ও ছানা পড়েন। অতঃপর তিউনিসিয়ার আঞ্চলিক ভাষায় মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দেন
মসজিদে পিনপতন নীরবতা বিরাজ করছে কারও মুখে কোনো শব্দ নেই !
ঐ একই প্রশ্ন আবার করেন, এই মহিলারা কারা? কী এদের পরিচয়?
তিনি একটু বসলেন, অতঃপর দ্বিতীয় খুতবার জন্য উঠে বললেন
অতঃপর তিনি অন্য ইমামের ইমামতিতে সালাত আদায় করেন।
তিউনিসিয়ায় তখন পর্দা বিরোধী আন্দোলন গড়ে উঠেছে, বুরগুইবার শাসনামল। তিনি মহিলাদের পর্দা ছাড়াই পুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের উন্নয়নে কাজের আহ্বান জানিয়েছেন, এই সুযোগে মহিলারা কেনা কাটার জন্য বাজারে ভিড় জমিয়েছে। তিউনিসিয়ার সবচে বড় জামে মসজিদের ইমাম ও খতীব এবং দেশের গ্রান্ড মুফতী শাইখ মুহাম্মাদ তাহের বিন আশুর এই বাজার অতিক্রম করেই খুতবা দেয়ার জন্য জাতীয় মসজিদে উপস্থিত হন।
খুতবা দেয়ার জন্য তিনি মিম্বারে উঠে যথারীতি হামদ ও ছানা পড়েন। অতঃপর তিউনিসিয়ার আঞ্চলিক ভাষায় মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দেন
نِسَاءُ مَنِ اللَّاتِي فِي الأَسْوَاقِ؟
বাজারে অর্ধনগ্ন মহিলাদের বিক্ষোভ মিছিল হচ্ছে এরা কারা?মসজিদে পিনপতন নীরবতা বিরাজ করছে কারও মুখে কোনো শব্দ নেই !
ঐ একই প্রশ্ন আবার করেন, এই মহিলারা কারা? কী এদের পরিচয়?
তিনি একটু বসলেন, অতঃপর দ্বিতীয় খুতবার জন্য উঠে বললেন
لَا خَيْرَ فِي صَلَاتِكُمْ وَنِسَاؤُكُمْ عَرَايَا
ثُمَّ قَالَ: أَقِمِ الصَّلَاةَ يَا إِمَامُ
সালাত আদায় করে কোনো লাভ নেই, মহিলারা যদি নগ্ন বা অর্ধনগ্ন থাকে।অতঃপর তিনি অন্য ইমামের ইমামতিতে সালাত আদায় করেন।
দ্বিতীয় কাউন্টার : জবান
মুহতারাম হাজিরীন! ইবলিসের সরবরাহকৃত গুনাহগুলো রিসিভ করার জন্য আমাদের নফস যে অঙ্গগুলোকে কাউন্টার হিসেবে ব্যবহার করে, তন্মধ্যে দ্বিতীয়টি হলো আমাদের জবান।
জবানের লাগামহীনতাও অসংখ্য গুনাহ ডেকে আনে। মিথ্যা বলা, গীবত করা, গালি দেয়া, ঝগড়া করা, হারাম খাওয়া থেকে শুরু করে কোন্ অপরাধটা এই জবান দ্বারা করা যায় না! এ অপরাধগুলো ইবলিস লবণ মরিচ মাখিয়ে নফসের সামনে পেশ করে। নফস তা জবানের মধ্যমে গ্রহণ করে।
জবান ঠিক তো সব ঠিক
এ জন্যই হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন
সুতরাং জবানকে হারাম কথা ও হারাম খানা থেকে হেফাজত করুন। এটাও নফসের উপর এক প্রকার শাসন। এর কারণেও ইবলিস নিরাশ হয় আর অপরদিকে আল্লাহ তাআলা খুশি হন।
হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, কোনো বান্দার ঈমান দুরস্ত হয় না; যতক্ষণ পর্যন্ত না তার অন্তর দুরস্ত হয় এবং তার অন্তরও দুরস্ত হয় না যতক্ষণ পর্যন্ত না তার জবান দুরস্ত হয়। [মুসনাদে আহমাদ : ১০৪০৮]
জিহবা একটা বিষাক্ত সাপের মতো
কবি বলেন
মুহতারাম হাজিরীন! ইবলিসের সরবরাহকৃত গুনাহগুলো রিসিভ করার জন্য আমাদের নফস যে অঙ্গগুলোকে কাউন্টার হিসেবে ব্যবহার করে, তন্মধ্যে দ্বিতীয়টি হলো আমাদের জবান।
জবানের লাগামহীনতাও অসংখ্য গুনাহ ডেকে আনে। মিথ্যা বলা, গীবত করা, গালি দেয়া, ঝগড়া করা, হারাম খাওয়া থেকে শুরু করে কোন্ অপরাধটা এই জবান দ্বারা করা যায় না! এ অপরাধগুলো ইবলিস লবণ মরিচ মাখিয়ে নফসের সামনে পেশ করে। নফস তা জবানের মধ্যমে গ্রহণ করে।
জবান ঠিক তো সব ঠিক
এ জন্যই হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন
إِذَا أَصْبَحَ ابْنُ آدَمَ فَإِنَّ الأَعْضَاءَ كُلَّهَا تُكَفِّرُ اللِّسَانَ فَتَقُولُ اتَّقِ اللَّهَ فِينَا فَإِنَّمَا نَحْنُ بِكَ فَإِنِ اسْتَقَمْتَ اسْتَقَمْنَا وَإِنِ اعْوَجَجْتَ اعْوَجَجْنَا
আদম সন্তান যখন সকালে উপনীত হয়, তখন তার সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জিভকে অত্যন্ত বিনীতভাবে নিবেদন করে যে, তুমি আমাদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। কারণ আমাদের ব্যাপারসমূহ তোমার সঙ্গেই সম্পৃক্ত। যদি তুমি সোজা সরল থাক, তাহলে আমরাও সোজা-সরল থাকব। আর তুমি যদি বাঁকা পথে যাও তাহলে আমরাও বাঁকা পথে যেতে বাধ্য হব। [তিরমিযী : ২৪০৭]সুতরাং জবানকে হারাম কথা ও হারাম খানা থেকে হেফাজত করুন। এটাও নফসের উপর এক প্রকার শাসন। এর কারণেও ইবলিস নিরাশ হয় আর অপরদিকে আল্লাহ তাআলা খুশি হন।
হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, কোনো বান্দার ঈমান দুরস্ত হয় না; যতক্ষণ পর্যন্ত না তার অন্তর দুরস্ত হয় এবং তার অন্তরও দুরস্ত হয় না যতক্ষণ পর্যন্ত না তার জবান দুরস্ত হয়। [মুসনাদে আহমাদ : ১০৪০৮]
জিহবা একটা বিষাক্ত সাপের মতো
কবি বলেন
احْفَظْ لسانكَ أيها الإنسان
لا يلدغنَّك؛ إنَّهُ ثُعْبَانُ
كَمْ فِي المَقَابِرِ مِنْ قَتِيلِ لسَانِهِ
كَانَتْ تَخَافُ لِقَاءَهُ الأَقْرَانُ
হে মানুষ! জিহবাকে সংযত রাখ। তোমার জিহবা একটা বিষাক্ত সাপের মতো, সে যেন তোমাকে ছোবল না মারে। কবরে এমন কত নিহত লোক আছে, যাকে তার জিহবা হত্যা করেছে। জিহবা এমন ভয়ংকর বস্তু যে, তরবারিও তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ভয় পায়। [ইবনুল জাওযী, বাহরুদ দুমূ‘ : ১২৫]তৃতীয় কাউন্টার : কান
ইবলিসের সরবরাহকৃত গুনাহগুলো রিসিভ করার জন্য আমাদের নফস যে অঙ্গগুলোকে কাউন্টার হিসেবে ব্যবহার করে, তন্মধ্যে তৃতীয়টি হলো আমাদের কান। এ জন্য ইসলামের মূলনীতি হল, যা বলা হারাম, তা শোনাও হারাম। অবলীলায় যে কোনো কিছু শোনা অন্তরে মুনাফেকি সৃষ্টির অন্যতম কারণ। যেমন গান সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ রাযি. বলেন
ইবলিসের সরবরাহকৃত গুনাহগুলো রিসিভ করার জন্য আমাদের নফস যে অঙ্গগুলোকে কাউন্টার হিসেবে ব্যবহার করে, তন্মধ্যে তৃতীয়টি হলো আমাদের কান। এ জন্য ইসলামের মূলনীতি হল, যা বলা হারাম, তা শোনাও হারাম। অবলীলায় যে কোনো কিছু শোনা অন্তরে মুনাফেকি সৃষ্টির অন্যতম কারণ। যেমন গান সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ রাযি. বলেন
الْغِنَاءُ يُنْبِتُ النِّفَاقَ فِى الْقَلْبِ كَمَا يُنْبِتُ الْمَاءُ الزَّرْعَ
পানি যেমন ভূমিতে তৃণলতা উৎপন্ন করে তেমনি গান মানুষের অন্তরে নিফাক সৃষ্টি করে। [বাইহাকী : ২১৫৩৬ তাফসীরে কুরতুবী : ১৪/৫২]ইবলিসের আওয়াজ
কুরআন মজীদে আছে, ইবলিস আদম-সন্তানকে ধোঁকা দেওয়ার আরজি পেশ করলে আল্লাহ তাআলা ইবলিসকে সম্বোধন করে বলেন
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. বলেন, যে সকল বস্তুু পাপাচারের দিকে আহ্বান করে তাই ইবলিসের আওয়াজ।
সুতরাং আপনি যদি সকল পাপাচার থেকে কানের হেফাজত করেন তাহলে এটাও হবে নফসের উপর শক্তিশালী শাসন এবং ইবলিসের জন্য বিশাল পেরেশানির কারণ। আর এতে আল্লাহ তাআলা খুশি হয়ে যাবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন
কুরআন মজীদে আছে, ইবলিস আদম-সন্তানকে ধোঁকা দেওয়ার আরজি পেশ করলে আল্লাহ তাআলা ইবলিসকে সম্বোধন করে বলেন
وَاسْتَفْزِزْ مَنِ اسْتَطَعْتَ مِنْهُمْ بِصَوْتِكَ
তোমার আওয়াজ দিয়ে তাদের মধ্যে যাকে পারো প্ররোচিত কর, সত্য থেকে বিমুখ করে দাও। [সূরা ইসরা : ৬৪]এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. বলেন, যে সকল বস্তুু পাপাচারের দিকে আহ্বান করে তাই ইবলিসের আওয়াজ।
সুতরাং আপনি যদি সকল পাপাচার থেকে কানের হেফাজত করেন তাহলে এটাও হবে নফসের উপর শক্তিশালী শাসন এবং ইবলিসের জন্য বিশাল পেরেশানির কারণ। আর এতে আল্লাহ তাআলা খুশি হয়ে যাবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন
وَاتَّقُوا اللّهَ وَاسْمَعُواْ
আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করো। আর তোমাদেরকে যে উপদেশ দেয়া হচ্ছে তা ভালভাবে শোনো। [সূরা মায়েদা : ১০৮]আবদুল্লাহ ইবনু ওমর রাযি.
বিখ্যাত তাবেয়ী হযরত নাফে’ রহ. বলেন, একবার চলার পথে আবদুল্লাহ ইবনু ওমর রাযি. বাঁশির আওয়াজ শুনলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি দুই কানে আঙ্গুল দিলেন। কিছু দূর গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, হে নাফে’! এখনও কি আওয়াজ শুনছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তারপর একটা পর্যায়ে আমি যখন বললাম, এখন আর আওয়াজ শোনা যাচ্ছে না তখন তিনি কান থেকে আঙ্গুল সরালেন এবং বললেন, একবার রাসূলুল্লাহ ﷺ চলার পথে বাঁশির আওয়াজ শুনে এমনই করেছিলেন। [আবু দাউদ : ৪৯২৪]
বিখ্যাত তাবেয়ী হযরত নাফে’ রহ. বলেন, একবার চলার পথে আবদুল্লাহ ইবনু ওমর রাযি. বাঁশির আওয়াজ শুনলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি দুই কানে আঙ্গুল দিলেন। কিছু দূর গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, হে নাফে’! এখনও কি আওয়াজ শুনছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তারপর একটা পর্যায়ে আমি যখন বললাম, এখন আর আওয়াজ শোনা যাচ্ছে না তখন তিনি কান থেকে আঙ্গুল সরালেন এবং বললেন, একবার রাসূলুল্লাহ ﷺ চলার পথে বাঁশির আওয়াজ শুনে এমনই করেছিলেন। [আবু দাউদ : ৪৯২৪]
চোখ ও কানের শোকর আদায় করার পদ্ধতি
তাবিয়ী সালামাহ ইবনু দীনার রহ. বলেন
তাবিয়ী সালামাহ ইবনু দীনার রহ. বলেন
شُكْرُ العَيْنَيْنِ: إِنْ رَأَيْتَ بِهِمَا خَيْرًا أَعْلَنْتَهُ، وَإِنْ رَأَيْتَ بِهِمَا شَرًّا سَتَرْتَهُ
شُكْرُ الأُذُنَيْنِ: إِنْ سَمِعْتَ بِهِمَا خَيْرًا وَعَيْتَهُ، وَإِنْ سَمِعْتَ بِهِمَا شَرًّا دَفَنْتَهُ
দুই চোখের শোকর হচ্ছে, ভালো যা কিছু দেখবে, প্রকাশ করবে। আর মন্দ যা কিছু দেখবে, লুকিয়ে রাখবে। দুই কানের শোকর হচ্ছে, ভালো যা কিছু শুনবে, ধারণ করবে। মন্দ যা কিছু শুনবে, দাফন করে দিবে। [ইবনু আবিদদুনয়া; কিতাবুশ শোকর : ৪৪]চতুর্থ কাউন্টার : মস্তিষ্ক
ইবলিসের সরবরাহকৃত গুনাহগুলো রিসিভ করার জন্য আমাদের নফস যে অঙ্গগুলোকে কাউন্টার হিসেবে ব্যবহার করে, তন্মধ্যে চতুর্থটি হলো আমাদের মস্তিষ্ক।
মুমিন বান্দা চাইলে তার ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সব কাজকেই মস্তিস্ক তথা চিন্তাশক্তির হেফাজতের মাধ্যমে নেকির কাজে পরিণত করতে পারে। দুনিয়ার কাজকেও ইতিবাচক নিয়তের মাধ্যমে ‘দীন’ করে নিতে পারে।
আরেফ বিল্লাহ ডা. আব্দুল হাই আরেফী রহ. বলতেন
ইবলিসের সরবরাহকৃত গুনাহগুলো রিসিভ করার জন্য আমাদের নফস যে অঙ্গগুলোকে কাউন্টার হিসেবে ব্যবহার করে, তন্মধ্যে চতুর্থটি হলো আমাদের মস্তিষ্ক।
মুমিন বান্দা চাইলে তার ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সব কাজকেই মস্তিস্ক তথা চিন্তাশক্তির হেফাজতের মাধ্যমে নেকির কাজে পরিণত করতে পারে। দুনিয়ার কাজকেও ইতিবাচক নিয়তের মাধ্যমে ‘দীন’ করে নিতে পারে।
আরেফ বিল্লাহ ডা. আব্দুল হাই আরেফী রহ. বলতেন
دین زاویہ نگاہ کو بدلنے کا نام ہے
‘দীন দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের নাম।’নিয়তের কারণে ঘুমও ইবাদত হয়ে যায়
ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী রহ. বলেন
ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী রহ. বলেন
إِذَا قُصِدَ بِالنَّوْمِ زَوَالُ التَّعَبِ لِلْقِيَامِ إِلَى الْعِبَادَةِ عَنْ نَشَاطٍ، كَانَ النَّوْمُ طَاعَةً.
যদি ঘুমের মাধ্যমে ক্লান্তি দূর করে প্রফুল্লতা নিয়ে ইবাদত করার নিয়ত করা হয়, তাহলে সেই ঘুমও ইবাদত। [মিরআতুল মাফাতীহ : ৫/৪৭৫]নিয়তের কারণে স্ত্রীসহবাসও ইবাদত হয়ে যায়
ইমাম নববী রহ. বলেন
ইমাম নববী রহ. বলেন
الْجِمَاعُ يَكُونُ عِبَادَةً إِذَا نَوَى بِهِ قَضَاءَ حَقِّ الزَّوْجَةِ وَمُعَاشَرَتَهَا بِالْمَعْرُوفِ الَّذِي أَمَرَ اللهُ تَعَالَى بِهِ أَوْ طَلَبَ وَلَدٍ صَالِحٍ أَوْ إِعْفَافَ نَفْسِهِ أَوْ إِعْفَافَ الزَّوْجَةِ
স্বামী-স্ত্রীর সহবাসও ইবাদত হিসাবে গণ্য হবে, যদি স্ত্রীর অধিকার আদায়ের নিয়ত করা হয়, আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় স্ত্রীর সাথে ন্যায়সঙ্গতভাবে মেলামেশা করা হয়, নেক সন্তান কামনা করা হয় এবং স্বামী-স্ত্রী উভয়ের চরিত্রের হেফাযতের জন্য এটা করা হয়। [শারহুন নববী আলা মুসলিম : ৭/৯২]কাজের প্রতিদান পাবে নিয়ত অনুযায়ী
ইমাম বুখারী রহ. তাঁর বিখ্যাত হাদিসগ্রন্থ নিয়তের হাদিস দ্বারাই শুরু করেছেন। হযরত আলকামাহ ইবনু ওয়াক্কাস আল-লাইসি থেকে বর্ণিত, আমি হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি.-কে মিম্বরের ওপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছি, আমি আল্লাহর রাসূল ﷺ-কে বলতে শুনেছি
সুতরাং আপনি যদি মস্তিস্কের হেফাজত করেন, যা কিছু ভালো ও নেক আমল তা নিয়ে ভাবেন এবং যা কিছু মন্দ ও গুনাহ তা নিয়ে চিন্তা করা থেকে বিরত থাকেন তাহলে এটাও হবে নফসের উপর শক্তিশালী শাসন এবং ইবলিসের জন্য বড় পেরেশানির কারণ।
আল্লাহ আমাদেরকে নেক নিয়ত, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, সুন্দর চিন্তা, কল্যাণমুখী মানসিকতা লালন করার তাওফীক দান করুন আমীন।
ইমাম বুখারী রহ. তাঁর বিখ্যাত হাদিসগ্রন্থ নিয়তের হাদিস দ্বারাই শুরু করেছেন। হযরত আলকামাহ ইবনু ওয়াক্কাস আল-লাইসি থেকে বর্ণিত, আমি হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি.-কে মিম্বরের ওপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছি, আমি আল্লাহর রাসূল ﷺ-কে বলতে শুনেছি
إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى، فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوْ إِلَى امْرَأَةٍ يَنْكِحُهَا فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ
নিশ্চয় প্রত্যেক কাজের প্রতিদান পাবে নিয়ত অনুযায়ী। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে। তাই যার হিজরত হবে দুনিয়া অথবা কোনো মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে—তবে তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই হবে, যে জন্যে সে হিজরত করেছে। [সহীহ বুখারী : ০১]সুতরাং আপনি যদি মস্তিস্কের হেফাজত করেন, যা কিছু ভালো ও নেক আমল তা নিয়ে ভাবেন এবং যা কিছু মন্দ ও গুনাহ তা নিয়ে চিন্তা করা থেকে বিরত থাকেন তাহলে এটাও হবে নফসের উপর শক্তিশালী শাসন এবং ইবলিসের জন্য বড় পেরেশানির কারণ।
আল্লাহ আমাদেরকে নেক নিয়ত, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, সুন্দর চিন্তা, কল্যাণমুখী মানসিকতা লালন করার তাওফীক দান করুন আমীন।
وَآخِرُ دَعْوَانَا اَنِ الْحَمْدُ لِلّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
মন্তব্য (...)
এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ
‘এ দাওয়াত ও তাবলীগের উদ্দেশ্য হচ্ছে দ্বীনের তলব পয়দা করা’
...
আল্লামা সাইয়্যেদ আবুল হাসান আলী নদভী রাহ.
১০ নভেম্বর, ২০২৪
৩৫১৭ বার দেখা হয়েছে
ওলী হওয়ার সহজ পথ
[প্রদত্ত বয়ান থেকে সংগৃহীত] হামদ ও সালাতের পর… আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদেরকে আজ এখানে একত্র করেছেন ...
মুফতী আব্দুল বারী
১০ নভেম্বর, ২০২৪
৭৩২৩ বার দেখা হয়েছে
দুআ একটি ইবাদতঃ দুআ কেন কবুল হয় না?
...
শাঈখুল ইসলাম হযরত আব্দুল মালেক
১০ নভেম্বর, ২০২৪
৪৬৭১ বার দেখা হয়েছে
আপনি কি দ্বীনের খাদিম হতে চান?
...
মাওলানা আবু আহমাদ
১০ নভেম্বর, ২০২৪
১৬১৮ বার দেখা হয়েছে
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন