প্রবন্ধ
আচ্ছা নবীজি সা.-এর সুন্নাত কি কঠিন হতে পারে? উঁহু মোটেও না। নবীজির সুন্নাত তো:
ক: আসহাল: সহজতর।
খ: আজমাল: সুন্দরতর।
গ: আকমাল: পূর্ণতর।
অনেক সময় এমন হয়, আমরা যখন শুনি:
ওমুক দু‘আটা একশবার পড়লে এই সওয়াব মিলবে, ওই ফযীলত লাভ করা যাবে! মর্যাদার বুলুন্দি হবে! গুনাহ মাফ হবে! তখন আমাদের মনে প্রথমেই চিন্তা আসে:
ওরে বাপস্! এ ক শও বাআর!!! এত সময় কোথায় পাবো? এতক্ষণ কে বসে থাকবে?
আমাদের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। ‘একশ’ শুনতেই যা একটু বেশি লাগে, বাস্তবে ততটা নয়। আমরা আমলে না নেমেই অহেতুক-অমূলক ভয়ে কেঁপে উঠি! কার্যকালে দেখা যায় শুধু শুধু ভয় পেয়েছি!
গুনাহ করতে করতে করতে চারদিক ভরিয়ে ফেলেছি? কোনও ভয় নেই! নবীজি সমাধান দিয়ে গেছেন। খুবই সহজ! সময়ও ব্যয় হবে সাকুল্যে আড়াই মিনিটের মতো!
مَنْ قَالَ: سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ. فِي يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ، حُطَّتْ خَطَايَاهُ، وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ البَحْرِ
যে ব্যক্তি দিনে একশ বার ‘সুবহা-নাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ পড়বে, তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে। সমুদ্রের ফেনাপরিমাণ হলেও মাফ করে দেয়া হবে (বুখারী)।
এর চেয়ে সহজ আর কী হতে পারে? অল্পপুঁজিতে কতো বেশি লাভ! হাদীসের ভাষ্যমতে দেখা যাচ্ছে, গুনাহের চেয়ে দু‘আটার ‘ক্ষমাশক্তি’ কত্তো বেশি! গুনাহ যতই করি, অনেকেই সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ গুনাহ তো আর করে না!
হাদীসটার আরেকটি রূপ দেখি:
مَنْ قَالَ: حِينَ يُصْبِحُ وَحِينَ يُمْسِي: سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ. مِائَةَ مَرَّةٍ، لَمْ يَأْتِ أَحَدٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِأَفْضَلَ مِمَّا جَاءَ بِهِ، إِلاَّ أَحَدٌ قَالَ مِثْلَ مَا قَالَ أَوْ زَادَ عَلَيْهِ
যে ব্যক্তি সকালে ও সন্ধ্যায় একশবার করে ‘সুবহা-নাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ পড়বে, কেয়ামতের দিন কেউ তার চেয়ে বেশি উত্তম কিছু নিয়ে আসতে পারবে না। শুধু আরেকজনও যদি দু‘আটা পড়ে, একমাত্র সেই তার সমকক্ষ হতে পারবে (মুসলিম)।
কেয়ামতের দিন শ্রেষ্ঠতম বস্তু সাথে করে নিয়ে আসা যাবে, শুধু ছোট্ট একটা দু‘আ নিয়মিত পড়লে! কোনও বুঝদার মানুষ এতবড় লাভ হাতছাড়া করতে চাইবে?
দুষ্টমনে প্রশ্ন জাগবে:
আচ্ছা এই একটা আমল করলেই যদি সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়, তাহলে এত কষ্ট করে নামায-কালামের কী দরকার?
জ্বি ভায়া! নামায-কালামের দরকার আছে! একটা বিষয় কি খেয়াল করেছেন? আপনি সকাল-সন্ধ্যায় দু‘আটা পড়লে, গুনাহ মাফ হয়ে যাবে! পাশাপাশি এটাও মনে রাখবেন, আপনি দু‘আটা নিয়মিত পড়লে, নামায না পড়ে থাকতেই পারবেন না! উল্টো করে বলতে গেলে, আপনি নামায-কালাম না পড়লে, এই দু‘আ পড়ার তাওফীকই লাভ করবেন না! পরীক্ষা করে দেখতে পারেন! দু-একদিন চলার পর কিভাবে যেন আমলটা বন্ধ হয়ে গেছে!
আর হাঁ, সগীরা গুনাহ মাফ হবে। কবীরা গুনাহ মাফের জন্যে তাওবার প্রয়োজন হবে!
মন্তব্য (...)
এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ১০ আমল
দুশ্চিন্তা, মানসিক অস্থিরতা আমাদের জীবনের এক অনাকাঙ্ক্ষিত অংশ। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব হতে পারে ...
টুপি পরিধান করার কোন প্রমাণ কি হাদীস বা আছারে সাহাবায় নেই?
...
নিজের যিন্দেগীতে ফাতেমী সুন্নত যিন্দা করুন
...
মিলাদ-কিয়াম এর শরঈ বিধান
...
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন