یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا شَہَادَۃُ بَیۡنِکُمۡ اِذَا حَضَرَ اَحَدَکُمُ الۡمَوۡتُ حِیۡنَ الۡوَصِیَّۃِ اثۡنٰنِ ذَوَا عَدۡلٍ مِّنۡکُمۡ اَوۡ اٰخَرٰنِ مِنۡ غَیۡرِکُمۡ اِنۡ اَنۡتُمۡ ضَرَبۡتُمۡ فِی الۡاَرۡضِ فَاَصَابَتۡکُمۡ مُّصِیۡبَۃُ الۡمَوۡتِ ؕ تَحۡبِسُوۡنَہُمَا مِنۡۢ بَعۡدِ الصَّلٰوۃِ فَیُقۡسِمٰنِ بِاللّٰہِ اِنِ ارۡتَبۡتُمۡ لَا نَشۡتَرِیۡ بِہٖ ثَمَنًا وَّلَوۡ کَانَ ذَا قُرۡبٰی ۙ وَلَا نَکۡتُمُ شَہَادَۃَ ۙ اللّٰہِ اِنَّاۤ اِذًا لَّمِنَ الۡاٰثِمِیۡنَ
উচ্চারণ
ইয়াআইয়ুহাল্লাযীনা আ-মানূশাহা-দাতুবাইনিকুম ইযা-হাদারা আহাদাকুমুল মাওতু হীনাল ওয়াসিইইয়াতিছনা-নি যাওয়া-‘আদলিম মিনকুম আও আ-খারা-নি মিন গাইরিকুম ইন আনতুম দারাবতুম ফিল আরদিফাআসা-বাতকুম মুসীবাতুল মাওতি তাহবিছূনাহুমামিম বা‘দিস সালা-তি ফাইউকছিমা-নি বিল্লা-হি ইনিরতাবতুম লা-নাশতারী বিহী ছামানওঁ ওয়া লাও কা-না যা- কুরবা- ওয়ালা-নাকতুমুশাহা-দাতাল্লা-হি ইন্নাইযাল্লা মিনাল আ-ছিমীন।
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
৮০. একটি বিশেষ ঘটনার প্রেক্ষাপটে এ আয়াত নাযিল হয়েছে। ঘটনাটি এই বুদায়ল নামক এক মুসলিম ব্যবসা উপলক্ষে শাম গিয়েছিলেন। তার সঙ্গে ছিল তামীম ও আদী নামক দু’জন খ্রিস্টান। সেখানে পৌঁছার পর বুদায়ল অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তাঁর অনুমান হয়ে যায় যে, তিনি আর বাঁচবেন না। সুতরাং তিনি সঙ্গীদ্বয়কে ওসিয়ত করলেন, তারা যেন তাঁর মালামাল তার ওয়ারিশদের কাছে পৌঁছিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে তিনি এই সতর্কতা অবলম্বন করলেন যে, মালামালের একটা তালিকা তৈরি করে গোপনে সেই মালের মধ্যেই রেখে দিলেন। সে তালিকা সম্পর্কে সঙ্গীদ্বয়ের কোনও খবর ছিল না। তারা বুদায়লের ওয়ারিশদের কাছে তার মালপত্র পৌঁছিয়ে দিল। তার ভেতর সোনার গিল্টি করা একটা রুপার পেয়ালা ছিল, যার মূল্য ছিল এক হাজার দিরহাম। সেই পেয়ালাটি বের করে তারা নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছিল। ওয়ারিশগণ যখন বুদায়লের লেখা তালিকাটি হাতে পেল, তখন সেই পেয়ালাটির কথা জানতে পারল। সুতরাং তারা তামীম ও আদীর কাছে সেটি দাবী করল। তারা কসম খেযে বলল, মালামাল থেকে তারা কোনও জিনিস সরায়নি বা গোপন করেনি। কিন্তু কিছুদিন পর ওয়ারিশগণ জানতে পারল, তারা মক্কা মুকাররমায় এক স্বর্ণকারের কাছে পেয়ালাটি বিক্রি করে দিয়েছে। এর ভিত্তিতে যখন তামীম ও আদীকে চাপ দেওয়া হল, তখন তারা কথা ঘুরিয়ে দিল। বলল, আমরা আসলে পেয়ালাটি তার কাছ থেকে কিনে নিয়েছিলাম, কিন্তু ক্রয় সম্পর্কে যেহেতু আমাদের কোনও সাক্ষ্য-প্রমাণ ছিল না, তাই আমরা প্রথমে তার উল্লেখ সমীচীন মনে করিনি। এবার তারা যখন ক্রয় করার দাবীদার হল, তখন নিয়ম অনুসারে সাক্ষী পেশ করা তাদের জন্য অপরিহার্য ছিল, কিন্তু তারা তা পেশ করতে পারল না। ফলে বুদায়লের নিকটাত্মীয়দের মধ্যে থেকে দু’জন কসম করল যে, বুদায়ল পেয়ালটির মালিক ছিল, আর এ দুই খ্রিস্টান ক্রয়ের মিথ্যা দাবী করছে। সুতরাং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়ারিশদের পক্ষে রায় দিলেন। সে অনুযায়ী তামীম ও আদী পেয়ালাটির মূল্য আদায় করতে বাধ্য হল। ফায়সালাটি এই আয়াতের আলোকেই নিষ্পন্ন হয়েছে। আয়াতে এ রকম পরিস্থিতির জন্য একটা সাধারণ বিধানও বাতলে দেওয়া হয়েছে।