قَالَتۡ اِحۡدٰىہُمَا یٰۤاَبَتِ اسۡتَاۡجِرۡہُ ۫ اِنَّ خَیۡرَ مَنِ اسۡتَاۡجَرۡتَ الۡقَوِیُّ الۡاَمِیۡنُ
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
১৯. ইনি হযরত শুআইব আলাইহিস সালামের সেই কন্যা, যিনি হযরত মূসা আলাইহিস সালামকে ডাকতে গিয়েছিলেন। তাঁর নাম ছিল সাফুরা। হযরত মূসা আলাইহিস সালামের সঙ্গে তাঁরই বিবাহ হয়েছিল। বাইরের কাজকর্ম দেখাশুনার জন্য হযরত শুআইব আলাইহিস সালামের পরিবারে একজন পুরুষের দরকার ছিল, যাতে মেষ চরানো ও তাদেরকে পানি পান করানোর জন্য ঘরের মেয়েদের বাইরে যেতে না হয়। এজন্যই হযরত সাফুরা (রাযি.) তার পিতার কাছে প্রস্তাব দিলেন, যেন তিনি এই যুবককে কাজে নিযুক্ত করেন এবং যথারীতি তার পারিশ্রমিকও ধার্য করে দেন।
তিনি যে বললেন, আপনি পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কারও থেকে কাজ নিতে চাইলে সেজন্য এমন ব্যক্তিই উত্তম, যে শক্তিশালী হবে এবং বিশ্বস্তও’এটা তার গভীর বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক। আল্লাহ তাআলা তার এ বাক্যটি বিবৃত করে ‘কর্মচারী নিয়োগদান’ সংক্রান্ত চমৎকার মাপকাঠি দিয়ে দিয়েছেন। আমরা এর দ্বারা জানতে পারি, যে-কোন কাজে যাকে নিয়োগ দান করা হবে, মৌলিকভাবে তার মধ্যে দু’টি গুণ থাকতে হবে। (ক) যে দায়িত্ব তার উপর অর্পণ করা হবে, তা আঞ্জাম দেওয়ার মত দৈহিক ও মানসিক শক্তি এবং (খ) আমানতদারী। হযরত মূসা আলাইহিস সালাম যে এ উভয় গুণের অধিকারী সে অভিজ্ঞতা শুআইব-তনয়া লাভ করেছিলেন। পানি পান করানোর জন্য তিনি যে কাজ করেছিলেন তা তার দৈহিক ও মানসিক কর্মক্ষমতার পরিচায়ক ছিল। রাখালেরা কখন পানি খাওয়ানো শেষ করবে সেই প্রতীক্ষাজনিত পীড়া হতে নারীদ্বয়কে মুক্তিদানের জন্য তিনি পৃথক একটি কুয়ায় চলে যান এবং তার মুখে পড়ে থাকা বিশাল পাথর খণ্ডটিকে কারও সাহায্য ছাড়া একাই সরিয়ে ফেলেন। তার এ বুদ্ধি ও শক্তি তারা প্রত্যক্ষ করেছিল।
আর তিনি যে একজন বিশ্বস্ত লোক তার পরিচয় পাওয়া গিয়েছিল এভাবে যে, হযরত মূসা আলাইহিস সালাম যখন শুআইব-তনয়ার সাথে তাদের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি তাকে বলেছিলেন, আপনি আমার পেছনে থাকুন এবং কোন দিকে যেতে হবে তা বলে দিন। এভাবে তিনি সে মহিয়সীর লজ্জাশীলতা, পবিত্রতা ও চরিত্রবত্তার প্রতি সম্মান দেখালেন। এ জাতীয় আমানতদারী যেহেতু কদাচ নজরে পড়ে, তাই তিনি উপলব্ধি করলেন, আমানতদারী ও বিশ্বস্ততা এই ব্যক্তির একটি বিশেষ গুণ।