قَالَ اِنِّیۡۤ اُرِیۡدُ اَنۡ اُنۡکِحَکَ اِحۡدَی ابۡنَتَیَّ ہٰتَیۡنِ عَلٰۤی اَنۡ تَاۡجُرَنِیۡ ثَمٰنِیَ حِجَجٍ ۚ فَاِنۡ اَتۡمَمۡتَ عَشۡرًا فَمِنۡ عِنۡدِکَ ۚ وَمَاۤ اُرِیۡدُ اَنۡ اَشُقَّ عَلَیۡکَ ؕ سَتَجِدُنِیۡۤ اِنۡ شَآءَ اللّٰہُ مِنَ الصّٰلِحِیۡنَ
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
২০. একথা বলার সময় হযরত শুআইব আলাইহিস সালাম যদিও নির্দিষ্ট করেননি কোন মেয়েকে তাঁর সাথে বিবাহ দেবেন, কিন্তু যখন বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়, তখন যথারীতি নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন। পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাজ করার দ্বারা বকরী চরানোর কাজ বোঝানো হয়েছে। অনেক ফকীহ ও মুফাসসিরের মতে হযরত শুআইব আলাইহিস সালাম ছাগল চরানোকে কন্যার মোহরানা স্থির করেছিলেন। কিন্তু এর উপর প্রশ্ন আসে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর কোন কাজ করে দেওয়াটা কি তার মোহরানা হিসেবে গ্রাহ্য হতে পারে? এ মাসআলায় ফুকাহায়ে কেরামের মধ্যে মতভেদ আছে। তদুপরি এ ঘটনায় চুক্তি তো স্ত্রীর কাজ নয়; বরং স্ত্রীর পিতার কাজ করা সম্পর্কে হয়েছিল। যারা এটাকে মোহরানা সাব্যস্ত করতে চান, তারা এর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বটে, কিন্তু লক্ষ্য করলে ধরা পড়ে সে চেষ্টায় জবরদস্তির ছাপ স্পষ্ট।
এর বিপরীতে কোন কোন মুফাসসির ও ফকীহের অভিমত হল, আসলে এখানে বিষয় ছিল দুটো। হযরত শুআইব আলাইহিস সালাম হযরত মূসা আলাইহিস সালামের সাথে সে দুটো বিষয়েই সিদ্ধান্ত স্থির করতে চেয়েছিলেন। একটি তো এই যে, তিনি চাচ্ছিলেন হযরত মূসা আলাইহিস সালাম তার মেষপাল চরাবেন এবং সেজন্য আলাদাভাবে মজুরি ধার্য করা হবে আর দ্বিতীয়টি হল, মূসা আলাইহিস সালাম তার কন্যাকে বিবাহও করুন, যার জন্য নিয়ম মাফিক মোহরানা স্থির করা হবে। উভয়টির ব্যাপারে তিনি হযরত মূসা আলাইহিস সালামের মর্জি জানতে চাচ্ছিলেন এবং সে উদ্দেশ্যে উভয়টিই আলোচনায় এনেছিলেন, যদি উভয়টিতে তিনি সম্মত থাকেন, তবে প্রত্যেকটি তার আপন-আপন রীতি অনুসারে অনুষ্ঠিত হবে। বিবাহের ক্ষেত্রে কন্যা কোনটি তা স্থির করা হবে, সাক্ষী রাখা হবে এবং মোহরানাও ধার্য করা হবে। আর চাকুরির ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করা হবে এবং তার জন্য স্বতন্ত্র মজুরি ধার্য করা হবে। উভয় চুক্তি অনুষ্ঠিত হবে তো পরে, তবে এই মুহূর্তে তার জন্য উভয় পক্ষ হতে ওয়াদা হয়ে যাক। এই শেষোক্ত ব্যাখ্যাটি খুবই যুক্তিযুক্ত। এ অবস্থায় একটি চুক্তিকে আরেকটি চুক্তির সাথে শর্তযুক্ত করার প্রশ্নও আসে না। আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী (রহ.) ‘উমদাতুল কারী’ গ্রন্থে এ ব্যাখ্যাই অবলম্বন করেছেন (দ্রষ্টব্য উক্ত গ্রন্থ কিতাবুল ইজারাত, ১২ খণ্ড, ৮৫ পৃষ্ঠা)।