মাইয়্যেতের খাবার
প্রশ্নঃ ৯৪১১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি জানি চল্লিশা করা বেদাত। কোন মৃত ব্যক্তির জন্য তার মৃত্যুর 40 দিন পর বা তিনদিন পর বা সাত দিন চল্লিশা করা যাবে না। চল্লিশার আয়োজন করা বেদাত কিন্তু কেউ চল্লিশা আয়োজন করে আমাকে দাওয়াত দিল,আমি কি সেখানে যেয়ে চল্লিশার দাওয়াত খেতে পারব এবং আমি আমি শুনেছি যে দাওয়াত খাওয়া সুন্নাহ। কেউ দাওয়াত করলে তার বাড়িতে গিয়ে দাওয়াত খাইতে হয়। তো এই চল্লিশার দাওয়াত খাওয়াটা কি ঠিক হবে। খাওয়াটা কি জায়েজ হবে একটু বিস্তারিত বললে ভাল হত
১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
VVJ৫+৫২৬
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ওয়ালাইকুম আসসালামু ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
ইসলামে অপরজনকে আহার করানোর গুরুত্ব অপরিসীম। বিভিন্ন হাদিসে এটাকে শ্রেষ্ঠ ইসলাম বলেও অবহিত করা হয়েছে। আবার কেউ দাওয়াত দিলে তা গ্রহন করাও রাসুলুল্লাহ সাঃ এর সুন্নাহ। এর মাধ্যমে পারস্পরিক বন্ধন সুদৃঢ় হয় এবং
ইসলামের ভ্রাতৃত্বের বিকাশ ঘটে।
কাজেই কোনো মুসলিম যদি অপর মুসলিমকে দাওয়াত দিয়ে আহার করায় তাতে কোনো দোষ নেই।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যখন দীনের বহির্ভূত কোনো বিষয়কে দীনের নামে চালিয়ে দেওয়া হয়,শরিয়তের পরিভাষায় যাকে বেদায়াত বলে।
মৃত ব্যক্তির জন্য তার মৃত্যুর 40 দিন পর বা তিনদিন পর বা সাত দিন পর নির্দিষ্ট করে বিশেষ কোনো ফজিলত বা সাওয়াবের প্রত্যাশায়, অথবা রুসম-প্রথা হিসেবে যেই খাবারের আয়োজন করা হয় ইসলামি শরিয়তের এর কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। কাজেই সেটা বেদায়াত এবং পরিত্যাজ্য। সাধারণ মুসলমানের জন্য এজাতীয় খাবারে অংশগ্রহণ করা অনুচিত। বিশেষত সমাজে যারা অনুসৃত ব্যক্তি -এজাতীয় আয়োজন থেকে দূরে থাকা তাদের জন্য আবশ্যক। তা নাহলে তাদের উপস্থিতিকে অনুকরণীয় মনে করে মানুষ এই গর্হিত কাজে লিপ্ত হতে থাকবে।
তবে যদি এটাকে নির্দিষ্ট কোনো নিয়মনীতির আওতামুক্ত রেখে মাইয়্যেতের জন্য ইসালে সাওয়াবের অন্যান্য মাধ্যমের ন্যায় নিছক এটাও একটা মাধ্যম মনে করে মানুষকে আহার্য দান করা হয় তাহলে সেখানে অংশগ্রহণ করা এবং খাবার গ্রহন করা জায়েজ আছে।
প্রসঙ্গত, অনেকাংশে যেখানে মৃত ব্যক্তির ত্যাজ্য সম্পদ থেকে এজাতীয় আয়োজন করা হয় সেখানে সকল ওয়ারিসের স্বতঃস্ফূর্ত অনুমতি থাকে না। অনেকটা বাধ্য হয়ে কিংবা পরিস্থিতির শিকার হয়ে তারা এগুলোতে সম্মতি দিয়ে থাকেন। যা কোনোক্রমেই অনুমোদিত নয়। এছাড়াও ওয়ারিসদের মধ্যে যদি কোনো নাবালেগ থাকে তাহলে তার বালেগ হওয়ার আগ পর্যন্ত এজাতীয় জিয়াফত করা নাজায়েজ। আবার এজাতীয় খাবারের অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে পর্দাপুশিদার প্রতি মোটেও লক্ষ্য করা হয় না। যা সরাসরি শরীয়তবিরোধী কাজ। কাজেই এগুলো কিছুতেই জায়েজ হবে না। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে যাবতীয় বেদয়াত এবং গোমরাহি থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন:
মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
আল কুরআনুল কারীম
৪
হাদীস ও সুন্নাহ
৬
তাসাউফ-আত্মশুদ্ধি । ইসলাহী পরামর্শ
৩
শরীআত সম্পর্কিত
১৪
ফিতনাসমুহ; বিবরণ - করণীয়
২
আখিরাত - মৃত্যুর পরে
৩
ঈমান বিধ্বংসী কথা ও কাজ
৬
ফিরাকে বাতিলা - ভ্রান্ত দল ও মত
২
পবিত্রতা অর্জন
৮
নামাযের অধ্যায়
১৯
যাকাত - সদাকাহ
৫
রোযার অধ্যায়
৬
হজ্ব - ওমরাহ
২
কাফন দাফন - জানাযা
৫
কসম - মান্নত
১
কুরবানী - যবেহ - আকীকা
৪
বিবাহ শাদী
৮
মীরাছ-উত্তরাধিকার
২
লেনদেন - ব্যবসা - চাকুরী
৯
আধুনিক মাসায়েল
৬
দন্ড বিধি
২
দাওয়াত ও জিহাদ
৩
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
৬
সীরাতুন নবী সাঃ । নবীজীর জীবনচরিত
৩
সাহাবা ও তাবেঈন
৩
ফাযায়েল ও মানাকেব
৩
কিতাব - পত্রিকা ও লেখক
৩
পরিবার - সামাজিকতা
৭
মহিলা অঙ্গন
২
আখলাক-চরিত্র
২
আদব- শিষ্টাচার
১২
রোগ-ব্যধি। চিকিৎসা
২
দোয়া - জিকির
২
নাম। শব্দ জ্ঞান
৩
নির্বাচিত
২
সাম্প্রতিক
১
বিবিধ মাসআলা
১