যোগ ব্যায়ামের ইসলামী বিধান
প্রশ্নঃ ৮৪৩৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ইসলাম এ কি যোগ করা পুরুষ/মহিলা দের জন্যে জায়েজ?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
অনৈসলামিক ধ্যান-ধারণায় তাড়িত না হয়ে, নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা না করে শুধুমাত্র শরীর চর্চার উদ্দেশ্যে যোগ ব্যায়াম করা মৌলিকভাবে নাজায়েয নয়।
কিন্তু যোগব্যায়ামের পেছনে বৌদ্ধ-হিন্দু সন্ন্যাসী ও খ্রীষ্টান পাদ্রীদের অনেক ধারণা সম্পৃক্ত রয়েছে। যেগুলোর অধিকাংশই শিরকী আকীদা থেকে আমদানি করা।
মেডিটেশন (meditation), যোগ ব্যায়াম (yoga) মূলতঃ একটি শয়তানী ফাঁদ; যা নিঃসন্দেহে হারাম।
মানুষকে আল্লাহর ইবাদত থেকে ফিরিয়ে কথিত অন্তর্গুরুর ইবাদতে লিপ্ত করার অভিনব প্রতারণার নাম হল কোয়ান্টাম মেথড। হাজার বছর পূর্বে ফেলে আসা হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান পাদ্রী ও যোগী সন্ন্যাসীদের যোগ-সাধনার আধুনিক কলা-কৌশলের নাম দেওয়া হয়েছে “মেডিটেশন”। হতাশাগ্রস্ত মানুষকে সাময়িক প্রশান্তির সাগরে ভাসিয়ে এক কল্পিত দেহ ভ্রমণের নাম দেওয়া হয়েছে Science of Living বা জীবন-যাপনের বিজ্ঞান।
যারা এসব মেডিটেশন করে,তারা প্রত্যেকের ধর্মবিশ্বাসকে শ্রদ্ধা করে। তাদের মতে, “সকল ধর্মই সঠিক”। তারা বিশ্বাস করে মেডিটেশনই হচ্ছে নতুন সহস্রাব্দে আধুনিক মানুষের জীবন যাপনের বিজ্ঞান।
তাদের প্রচার অনুযায়ী বাংলাদেশে ফলিত মনোবিজ্ঞানের পথিকৃৎ এবং আত্ম-উন্নয়নে ধ্যান পদ্ধতির প্রবর্তক প্রফেসর এম. ইউ. আহমাদ নাকি ক্লিনিক্যালি ডেড হওয়ার পরেও পুনরায় জীবন লাভ করেন শুধু “তাঁকে বাঁচতে হবে, তিনি ছাড়া দেশে নির্ভরযোগ্য মনোচিকিৎসক নেই” তাঁর এই দৃঢ় বিশ্বাসের জোরে। [মহাজাতক, কোয়ান্টাম টেক্সট বুক, জানুয়ারি ২০০০, পৃষ্ঠা ২২-২৪] অর্থাৎ হায়াত মউতের মালিক তিনি নিজেই। (নাউযুবিল্লাহ)
এটি মূলতঃ হাজার বছর পূর্বে ফেলে আসা হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান পাদ্রী ও যোগী-সন্ন্যাসীদের যোগ-সাধনার আধুনিক কলা-কৌশলের নাম। (yoga and breathing by Muhammad ‘Abd al-Fattaah Faheem p. 19)
অথচ রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِغَيْرِنَا، لَا تَشَبَّهُوا بِاليَهُودِ وَلَا بِالنَّصَارَى
যে অন্য সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য বা মিল রেখে চলে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়, তোমরা ইয়াহূদী ও নাসারাদের সাথে সাদৃশ্য রেখো না। (তিরমিযী ২৬৯৫)
মেডিটেশনের লক্ষ্য হ’ল অন্তর্গুরুকে পাওয়া। তাদের ভাষায়, ‘মেডিটেশনের মাধ্যমেই আপনি সংযোগ সাধন করতে পারেন আপনার ‘অন্তরের আমি’র সাথে, আপনার শক্তির মূল উৎসের সাথে।’
মেডিটেশনের এই দৃষ্টিভঙ্গি ইসলামের দৃষ্টিতে মারাত্মক অপরাধ। মূলতঃ ‘অন্তরের আমি’ হল নফসে আম্মারা; যার অনুসরণের পরিণতি হল জাহান্নাম। এদেরকে লক্ষ্য করেই আল্লাহ বলেন,
أَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَٰهَهُ هَوَاهُ أَفَأَنتَ تَكُونُ عَلَيْهِ وَكِيلًا-أَمْ تَحْسَبُ أَنَّ أَكْثَرَهُمْ يَسْمَعُونَ أَوْ يَعْقِلُونَ ۚ إِنْ هُمْ إِلَّا كَالْأَنْعَامِ ۖ بَلْ هُمْ أَضَلُّ سَبِيلًا
আপনি কি দেখেছেন ঐ ব্যক্তিকে, যে তার প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে? তবুও কি আপনি তার যিম্মাদার হবেন? আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে ? তারা তো চতুস্পদ জন্তুর মত; বরং আরও পথভ্রান্ত। (সূরা ফুরক্বান ৪৩-৪৪)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন