প্রশ্নঃ ৮১০৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম , একজন মহিলার কন্ঠ যদি তার পর্দার অন্তর্ভূক্ত হয় তাহলে তার ছায়া ও কি তার পর্দার অন্তর্ভুক্ত?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ওয়ালাইকুমুস সালাম,
حامدا و مصليا و مسلما .
মহিলাদের কন্ঠ পর্দার অন্তর্ভুক্ত এজন্যই যে, মহিলাদের কন্ঠের কোমলতা’র কারণে পরপুরুষ তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়তে পারে এবং এর মাধ্যমে সমাজে ফিতনা সৃষ্টি হতে পারে। ঠিক এক’ই কারণ যদি ছায়ার মাঝেও বিদ্যমান থাকে, তাহলে ছায়া’ও তার পর্দা’র অন্তর্ভুক্ত হবে।
অর্থাৎ ছায়ার মাধ্যমে যেহেতু অনেক ক্ষেত্রে অন্যের কাছে মানুষের দৈহিক অবয়ব অনেকটা অনুমেয় হয়ে থাকে, তাই কোন মহিলা যদি এমন পোষাক পরিহিতা অবস্থায় থাকে যে, তার ছায়ার মাধ্যমে তার দৈহিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো অন্যের কাছে অনুমেয় হয় বা তার দৈহিক গড়নের সৌন্দর্যতা অন্যের কাছে প্রকাশমান হয় এবং সেই ছায়ার মাধ্যমে এই মহিলার প্রতি পরপুরুষ আকৃষ্ট হয়ে পড়ে, যদ্দরা ফিতনার আশংকা প্রবল হয়, তাহলে এই মহিলার ছায়া তার জন্য পর্দার অন্তর্ভুক্ত হবে, কেননা আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন-
وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا
অর্থাৎ- (হে নবী! আপনি) ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে। (সূরা,নূর-আয়াত-৩১)
অপরদিকে পুরুষদেরকে চক্ষু অবনত রাখার নির্দেশ দিয়ে ইরশাদ করেন-
قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ
অর্থাৎ- মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। (সূরা,নূর-আয়াত-৩০)
সুতরাং যেসব মাধ্যমে মহিলার সৌন্দর্য পরপুরুষের কাছে প্রকাশমান হয় বা পুরুষ ওই মহিলার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে, ঐ সমস্ত ক্ষেত্রে’ই পুরুষ এবং মহিলার মাঝে পর্দা করতে হবে।
আর যদি কোন মহিলা এমন ঢিলেঢালা পোষাক পরিধান করে থাকে বা এমন অবস্থায় থাকে যে, তার ছায়ার মাধ্যমে তার দৈহিক অবয়ব অন্যের কাছে তেমন একটা প্রতীয়মান হচ্ছে না বা এই ছায়ার মাধ্যমে পরপুরুষ তার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে না, বা এক্ষেত্রে কোন ফেতনার আশঙ্কা না থাকে, তাহলে মহিলা তার ছায়ার ক্ষেত্রে পর্দা করা জরুরী নয়।
তবে হ্যা, পুরুষ এবং মহিলা’র মাঝে পর্দা এমন একটা বিধান যে, সেখানে যত বেশি সর্তকতা অবলম্বন করা যাবে, ততোই পুরুষ-মহিলা উভয়ের জন্য উত্তম হবে। আর ‘পুরুষের দৃষ্টি অবনত রাখা এবং নারীর সৌন্দর্য প্রদর্শন না করা’ এর ফায়দা বর্ণনা করে আল্লাহপাক রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন-
ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ
এতে রয়েছে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা। (সূরা,নূর-আয়াত-৩০)
তাই, পরপুরুষের ক্ষেত্রে প্রথমত সুরতে পর্দা করা’তো জরুরী হবে’ই, দ্বিতীয় সুরতে জরুরী না হলেও যথাসম্ভব সর্তকতা অবলম্বন করা উত্তম হবে।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন