নামাজে শরীরে ঝাঁকুনি আসলে কি অজু ভেঙ্গে যাবে?
প্রশ্নঃ ৬৮০৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, (০১) নামাযরত অবস্থায় প্রথম রাকাতে সুরা কেরাতের শেষ পর্যায়ে শরীরে কয়েকবার ঝাকি মারল এবং শরীরের লোমগুলো দাড়িয়ে গেল এতে করে আমার অজুর কোন সমস্যা হবে কি না..এবং বাকি নামায শেষ করলাম এতে নামাজের কোনো ক্ষতি হবে কি না...??
(০২) যোহর এবং আসর নামাজের ক্ষেত্রে ইমামের পিছনে যখন নামায পড়ি তখনতো ইমাম সাহেব উচ্চস্বরে সুরা কেরাত করে না এক্ষেত্রে মুসল্লিরাও কি মনে মনে চার রাকাতেই সুরা কেরাত করবে না কি সম্পূর্ণ চুপ থেকে ইমামকে অনুসরণ করবে...?আবার মাগরিব এবং ঈশার নামাযে ইমাম উচ্চস্বরে কেরাত করে সকল মুসল্লিরা কেরাত শুনতে পায় যার কারনে মুসল্লিদের পড়ার প্রয়োজন হয় না কিন্তু যখন তৃতীয় রাকাত শুরু হয় তখন থেকে বাকি নামাযে কি মুসল্লিরাও মনে মনে সুরা কেরাত করবে না কি চুপ থাকবে..? [বিদ্রহীঃ হাদিসে আসছে নামাযে যারা সুরা ফাতেহা পড়ল না তার যেন নামাযই হলো না] কুরআান হাদিসের আলোকে সঠিকটা জানতে চাই এবং আমলে সংযুক্ত করতে চাই
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
১. এতে করে আপনার ওযু বা নামাযের কোন ক্ষতি হওয়ার কথা নয়।
২. "সূরা ফাতিহা ছাড়া নামায হয় না" এই সংক্রান্ত হাদীস ইমাম এবং মুনফারিদ (একাকী নামায আদায়কারী)-এর জন্য প্রযোজ্য।
মুক্তাদির জন্য ভিন্ন হাদীস রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, "যার ইমাম রয়েছে ইমামের কিরাআত তার জন্য কিরাআত।"
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ صَالِحٍ، عَنْ جَابِرٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَنْ كَانَ لَهُ إِمَامٌ فَإِنَّ قِرَاءَةَ الإِمَامِ لَهُ قِرَاءَةٌ " .
জাবীর বিন আবদুল্লাহ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যাদের ইমাম আছে ইমামের কিরাআতই তার কিরাআত।
—সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৮৫০
ইমামের পিছনে যোহর-আসর বা অন্য নামায পড়ার সময় ইমাম যখন ক্বিরাত পড়বেন তখন মুক্তাদী চুপ থাকবে।
أَخْبَرَنَا الْجَارُودُ بْنُ مُعَاذٍ التِّرْمِذِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الْأَحْمَرُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنُ عَجْلَانَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " إِنَّمَا جُعِلَ الْإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا، وَإِذَا قَرَأَ فَأَنْصِتُوا، وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ فَقُولُوا: اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ " [حكم الألباني] حسن صحيح
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ: তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ইমাম নিযুক্ত করা হয়েছে তাঁর অনুসরণ করার জন্য। অতএব, যখন সে তাকবীর বলে তখন তোমরাও তাকবীর বল, আর যখন সে কুরআন পড়ে তখন তোমরা চুপ থাকবে, আর যখন তিনি বলেন, ‘সামি’আল্লাহু লিমান হামিদাহ’ তখন তোমরা বলবে, ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’।
—সুনানু নাসায়ী, হাদিস নং ৯২১
আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেন-
وَاِذَا قُرِیٴَ الۡقُرۡاٰنُ فَاسۡتَمِعُوۡا لَہٗ وَاَنۡصِتُوۡا لَعَلَّکُمۡ تُرۡحَمُوۡنَ
যখন কুরআন পড়া হয় তখন তা মনোযোগ দিয়ে শোন এবং চুপ থাক, যাতে তোমাদের প্রতি রহমত হয়।
—আল আরাফ - ২০৪
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন