বাইয়ে সালামের বিকৃত রূপ
প্রশ্নঃ ৫৪০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের এলাকায় আশ্বিন-কার্তিক মাসে মানুষের অভাব-অনটন দেখা দেয়। তখন অভাবী মানুষ ধনী লোকের নিকট থেকে এই শর্তে টাকা নেয় যে, এখন এক হাজার টাকা দিব, এক/দুই মাস পর সে টাকার বিনিময়ে দুই মণ ধান দিতে হবে। মেয়াদ শেষে ঋণদাতা কখনো ধান না নিয়ে সে সময়ের বাজারদর হিসেবে ধানের মূল্য নিয়ে নেয়। অনেকে এ ধরনের লেনদেনকে সুদী কারবার বলে। কারণ, এর দ্বারা ঋণদাতার লাভ হয়। মাননীয় মুফতী সাহেবের নিকট বিনীত নিবেদন, উক্ত লেনদেনের শরয়ী হুকুম জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে এভাবে অগ্রিম টাকা দিয়ে মেয়াদান্তে ধান না নিয়ে মূল্য আদান-প্রদান করা সহীহ নয়। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা যা গ্রহণ করা হবে তা নাজায়েয হবে। আর চুক্তির সময় পরবর্তীতে ধানের মূল্য নিবে এমন বললে তা সুদী চুক্তির অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য যে, প্রশ্নোক্ত লেনদেনটি বাইয়ে সালামের একটি বিকৃত রূপ। শরীয়তসম্মত পন্থায় বাইয়ে সালাম (মূল্য আগে পরিশোধ করে নির্ধারিত মেয়াদের পর পণ্য গ্রহণের চুক্তি) করতে চাইলে নি¤েœর শর্তগুলো পালন করতে হবে। অন্যথায় তা জায়েয হবে না।
১. চুক্তিকৃত পণ্যটির প্রকার ও গুণগতমান সুনির্ধারিত হতে হবে।
২.পণ্যের পরিমাণ নির্ধারিত হতে হবে।
৩. পণ্য আদায়ের সময় ও স্থান নির্ধারিত হতে হবে।
৪. চুক্তির মজলিসেই পুরো মূল্য বিক্রেতার হস্তগত হতে হবে।
৫. মেয়াদ শেষে চুক্তিকৃত নির্ধারিত পণ্যটিই গ্রহণ করতে হবে। এর পরিবর্তে তার বাজারমূল্য বা অন্য কিছু গ্রহণ করা যাবে না। একান্ত কোনো কারণে নির্ধারিত পণ্য নেয়া সম্ভব না হলে এ বাবদ পূর্বে পরিশোধ করা মূল টাকাই ফেরত নিতে পারবে। এর চেয়ে বেশি নেওয়া জায়েয হবে না। আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন-
إِذَا سَلّفْتَ فِي شَيْءٍ فَلَا تَأْخُذْ إِلّا رَأْسَ مَالِكَ أَوِ الّذِي سَلّفْتَ فِيهِ.
অর্থাৎ বাইয়ে সালামের লেনদেন করলে তুমি নির্ধারিত পণ্যই গ্রহণ কর, বা মূল টাকা ফেরত নাও। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, ১৪১০৬)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন