প্রশ্নঃ ৪২৪১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, প্রশ্ন:
(ক) বিদআত কাকে বলে?
(খ) প্রচলিত মিলাদন্নাবী কেন বিদআত?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
১. বিদআত অর্থ নতুন সৃষ্টি। শরীয়তে পরিভাষায় বিদআত বলা হয় দ্বীনের মধ্যে কোন নতুন সৃষ্টিকে। অর্থাৎ দ্বীনের মধ্যে ইবাদত মনে করে এবং অতিরিক্ত সওয়াবের আশায় কিছু আক্বীদা বা আমল সংযোজন ও বৃদ্ধি করা, যা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবী ও তাবেয়ীদের যুগে অর্থাৎ আদর্শ যুগে ছিল না।
তবে যেসব নেক কাজের প্রেক্ষাপট সে যুগে হয়নি, পরবর্তীতে নতুন প্রেক্ষাপট সৃষ্টি হওয়ায় নতুন আঙ্গিকে দ্বীনের কোন কাজ করা হয় সেটা বিদআত নয়।
الْبِدْعَةُ لُغَةً: مِنْ بَدَعَ الشَّيْءَ يَبْدَعُهُ بَدْعًا، وَابْتَدَعَهُ: إِذَا أَنْشَأَهُ وَبَدَأَهُ.
وَالْبِدْعُ: الشَّيْءُ الَّذِي يَكُونُ أَوَّلاً، وَمِنْهُ قَوْله تَعَالَى: {قُل مَا كُنْتُ بِدْعًا مِنَ الرُّسُل} (1) أَيْ لَسْتُ بِأَوَّل رَسُولٍ بُعِثَ إِلَى النَّاسِ، بَل قَدْ جَاءَتِ الرُّسُل مِنْ قَبْل، فَمَا أَنَا بِالأَْمْرِ الَّذِي لاَ نَظِيرَ لَهُ حَتَّى تَسْتَنْكِرُونِي.
وَالْبِدْعَةُ: الْحَدَثُ، وَمَا ابْتُدِعَ فِي الدِّينِ بَعْدَ الإِْكْمَال.
আল মাওসূআ আল ফিক্বহিয়্যাহ
২. মিলাদুন্নবী অর্থ রাসূল করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মদিনকে কেন্দ্র করে উৎসব পালন করা। জন্মদিন পালন মুসলমানদের কোন তরিকা নয়। এটি খ্রিস্টানদের রসম-রেওয়াজ।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার জন্ম তারিখ পালন করেননি। সাহাবায়ে কেরামের শতবর্ষে কেউ কোন দিন পালন করেননি। এটি পরবর্তীতে একটি উদ্ভট ও উদ্ভাবিত বিষয়। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইসলামের দুটি ঈদ ঘোষণা করে গিয়েছেন। একটি হল ঈদুল আযহা। অপরটি হল ঈদুল ফিতর। যারা বারই রবিউল আওয়ালে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করে এবং চরম ধৃষ্টতা প্রদর্শন করে ঈদে মিলাদুন্নবীকে সকল ঈদের সেরা ঈদ বলে, প্রকারান্তরে তারা যেন বলতে চায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্ধারিত ও বর্ণিত ঈদের তুলনায় তাদের বানোয়াট ঈদ সেরা।
অতএব ঈদে মিলাদুন্নবী শুধু বিদআতই নয়। বরং এটি নবীর সঙ্গে বেয়াদবি। ইসলামের বিকৃতি। কাফের মুশরিকদের অনুসরণ সহ যাবতীয় অন্যায়ের সমষ্টি।
এ থেকে সকল মুসলমান সতর্ক থাকতে হবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের ঈমান আমল হিফাযত করুক। আমীন।
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ وَلَهُمْ يَوْمَانِ يَلْعَبُونَ فِيهِمَا فَقَالَ " مَا هَذَانِ الْيَوْمَانِ " . قَالُوا كُنَّا نَلْعَبُ فِيهِمَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ قَدْ أَبْدَلَكُمْ بِهِمَا خَيْرًا مِنْهُمَا يَوْمَ الأَضْحَى وَيَوْمَ الْفِطْرِ " .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাদীনাহ্-তে এসে দেখেন, মাদীনাহ্বাসীরা নির্দিষ্ট দু’টি দিনে খেলাধূলা ও আনন্দ করে থাকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করলেনঃ এ দু’টি দিন কিসের? সকলেই বললো, জাহিলী যুগে আমরা এ দু’ দিন খেলাধূলা করতাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, মহান আল্লাহ তোমাদের এ দু’ দিনের পরিবর্তে উত্তম দু’টি দিন দান করেছেন। তা হলো, ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিত্বরের দিন।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১১৩৪
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন