আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

পাক নাপাকি, যৌনজীবন এবং বিবাহ

প্রশ্নঃ ৪১৬৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, প্রশ্ন নাম্বার ১/ বড় মাপের আলেম উলামায়ে একরাম মারা যাওয়ার পর উনার ছবি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা কি জায়েজ? ২/ যেই পোশাক পরে স্ত্রী সহবাস করা হয় ঐ পোশাকে নাপাকী না লাগলেও উহা ধোয়া কি বাধ্যতামূলক? ৩/ স্ত্রীর স্তনে বা লজ্জাস্থানে মুখ দেওয়া জায়েজ কি?৪/বিবাহ বন্ধনের পর যদি ওলিমা না খাওয়াই তাহলে কি স্ত্রীর সাথে মেলামেশা করা যাবে? আর যদি কেউ ওলিমা দেরিতে করার সুযোগ আছে কি?

২১ আগস্ট, ২০২৪
H৯JP+P৩J

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


১. বড় মাপের আলেমের ছবি তার মৃত্যুর পরে ফেসবুকে পোস্ট করা তো বহু পরের বিষয়! অপ্রয়োজনে কোন প্রাণীর ছবি তোলাই অনুচিত।

২. নাপাক না লাগলে ঐ কাপড় ধোয়া বাধ্যতামূলক নয়। নাপাক লাগলে ঐ নাপাকি অংশ ধুয়ে এই কাপড়ে নামাজ পড়া জায়েজ আছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাপড় থেকে বীর্য ধুয়ে আবার কখনো খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তুলে ঐ কাপড় পরে নবীজি নামাজ পড়েছেন।
উল্লেখ্য : বীর্য গাঢ় হলে তা খুচিয়ে উঠানোর পর কাপড় পবিত্র থাকে। যাদের প্রধান খাদ্য ভাত, তাদের বীর্যের ক্ষেত্রে এমনটা কল্পনা করা মুশকিল।
৩. স্ত্রীর সঙ্গে যৌন আচরণ যেভাবে ভালো লাগে সবই জায়েজ এবং সওয়াবের বিষয়।
সুতরাং সহবাসের পূর্বে স্ত্রীর স্তন চোষা ও উত্তেজনা তীব্র করার জন্য সবই করতে পারেন। তবে যেই মুখে কুরআনুল কারীম তিলাওয়াত করা হয়, আল্লাহর জিকির করা হয়, লজ্জাস্থানে সেই মুখ দেওয়া একজন মুমিনের জন্য কেমন?
৪. বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রীর প্রথম সাক্ষাত শেষে ওয়ালিমা করা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। তাই বলে স্বামী স্ত্রীর সহবাসের জন্য ওলিমাকে শর্ত মনে করা ঠিক হবে না।
মাসআলা না জানার কারণে পূর্বে ওলীমার সুন্নত ছুটে গেলে পরবর্তীতে তা আদায় করার সুযোগ রয়েছে।
নবীজি তার প্রিয় সাহাবীর বিবাহের খবর শুনে ওলীমা করতে বলেছিলেন। যদিও ইতোমধ্যে কয়েক দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে।

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَدِمَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ الْمَدِينَةَ فَآخَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُ وَبَيْنَ سَعْدِ بْنِ الرَّبِيعِ الأَنْصَارِيِّ، وَكَانَ سَعْدٌ ذَا غِنًى، فَقَالَ لِعَبْدِ الرَّحْمَنِ أُقَاسِمُكَ مَالِي نِصْفَيْنِ، وَأُزَوِّجُكَ‏.‏ قَالَ بَارَكَ اللَّهُ لَكَ فِي أَهْلِكَ وَمَالِكَ، دُلُّونِي عَلَى السُّوقِ‏.‏ فَمَا رَجَعَ حَتَّى اسْتَفْضَلَ أَقِطًا وَسَمْنًا، فَأَتَى بِهِ أَهْلَ مَنْزِلِهِ، فَمَكَثْنَا يَسِيرًا ـ أَوْ مَا شَاءَ اللَّهُ ـ فَجَاءَ وَعَلَيْهِ وَضَرٌ مِنْ صُفْرَةٍ، فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ مَهْيَمْ ‏"‏‏.‏ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ تَزَوَّجْتُ امْرَأَةً مِنَ الأَنْصَارِ‏.‏ قَالَ ‏"‏ مَا سُقْتَ إِلَيْهَا ‏"‏‏.‏ قَالَ نَوَاةً مِنْ ذَهَبٍ، أَوْ وَزْنَ نَوَاةٍ مِنْ ذَهَبٍ‏.‏ قَالَ ‏"‏ أَوْلِمْ وَلَوْ بِشَاةٍ ‏"‏‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, ‘আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) মদীনায় আগমন করলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ও সা‘দ ইবনু রাবী’ আনসারীর মাঝে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন করে দেন। সা‘দ (রাঃ) ধনী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ‘আবদুর রহমান (রাঃ)-কে বললেন, আমি তোমার উদ্দেশ্যে আমার সম্পত্তি অর্ধেক অর্ধেক ভাগ করে নিতে চাই এবং তোমাকে বিবাহ করিয়ে দিতে চাই। তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলা তোমার পরিবার ও সম্পদে বরকত দান করুন। আমাকে বাজার দেখিয়ে দাও। তিনি বাজার হতে মুনাফা করে নিয়ে আসলেন পনীর ও ঘি। এভাবে কিছুকাল কাটালেন। একদিন তিনি এভাবে আসলেন যে, তাঁর গায়ে বিয়ের হলুদ রঙের চিহ্ন লেগে আছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, কী ব্যাপার? তিনি বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি জনৈকা আনসারী মহিলাকে বিবাহ করেছি। তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] জিজ্ঞেস করলেন, তুমি তাকে কী দিয়েছ? তিনি বললেন, খেজুরের এক আঁটি পরিমাণ স্বর্ণ। তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] বললেন, একটি বকরী দিয়ে হলেও ওয়ালীমা কর।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২০৪৯

حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ خَالِدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، قَالَ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مَيْمُونِ بْنِ مِهْرَانَ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا كَانَتْ تَغْسِلُ الْمَنِيَّ مِنْ ثَوْبِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، ثُمَّ أَرَاهُ فِيهِ بُقْعَةً أَوْ بُقَعًا‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাপড় হতে বীর্য ধুয়ে ফেলতেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ তারপর আমি তাতে পানির একটি বা কয়েকটি দাগ দেখতে পেতাম।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২৩২

وَعَنِ الْاَسْوَدِ وَهَمَّامٍ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كُنْتُ اَفْرُكُ الْمَنِىَّ مِنْ ثَوْبِ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ

(তাবি’ঈদ্ব্য়) আসওয়াদ ও হাম্মাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
উভয়ে বলেন, ‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃ-এর কাপড় হতে বীর্য খুঁটে তুলে ফেলতাম।
মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস নং ৪৯৫

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ, মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন