আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

গর্ভপাত ঘটানোর মাসয়ালা

প্রশ্নঃ ২৩৯২০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামুয়ালাইকুআমার একটা সারে আট মাসের মেয়ে বাচ্চা আছে। আমার নতুন করে বেবি কন্সেভ হয়েছে ৪৫দিন হয়েছে ধারনা অনুযায়ী। এখন আমার বাচ্চা ছোট তাই আর আমার বাচ্চাটা সিজারের। তাই আমি আর জীবনেও চাই না সিজারে হোক। বাকিতুকু আল্লাহ হাতে আমার খাস নিয়ত।কারণ সিজার মানেই পংগু। আমি ডাক্তার এর সাথে কথা হয়েছে সে বলেছে ৩/৪ পর নরমাল এ নিতে পারব। তাই আমি মূলত সিজার না করার কথা আর বাচ্চার কথা চিন্তা করেই এই ৪৫ দিনের কিনবা৫০ দিনের বেবি কে রাখতে চাইছিনা। আমি এখন কি করব এই বিষয়ে মাসআলা বলে দিলে উপকৃত হতাম।

২৬ অক্টোবর, ২০২২
নামবিহীন রাস্তা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





সম্মানিত প্রশ্নকারী!
নিচের রেফারেন্সে “জন্মনিয়ন্ত্রণ” সম্পর্কে জানুন। আর আপনার প্রশ্ন থেকে আমাদের কাছে যে বিষয়টি পরিস্কার হয় তা হলো, আপনি মূলত সিজার থেকে বাঁচতে এখনই গর্ভপাত ঘটাতে চাচ্ছেন। কিন্তু শরঈ দৃষ্টিতে এটা জায়েজ হবে না। তাই আপনার জন্য ওই ভ্রুণ হত্যা করা বৈধ হবে না।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেন:

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।
প্রসঙ্গসমূহ:

রেফারেন্স উত্তর :

জন্মনিয়ন্ত্রন: ইসলামী দৃষ্টিকোণ

প্রশ্নঃ ২৩৭৩০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, মুহতারাম! জন্মনিয়ন্ত্রন করার মাসয়ালা জানতে চাই।

১০ ডিসেম্বর, ২০২৩
৮V৯P+MFH

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


জড় ও জীবসহ সবকিছুই আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই পবিত্র কুরআনে ভূপৃষ্ঠে বিচরণকারী সকল প্রাণীর রিযিক তথা জীবিকার দায়িত্বভার নিজে গ্রহণ করার কথা ঘোষণা করেছেন। আর তার ভাণ্ডার অফুরন্ত। যা কখনো শেষ হবার নয়। একটি হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন যে, তোমাদের সর্বপ্রথম ও সর্বশেষ অর্থাৎ সমস্ত জিন-ইনসান কোনোস্থানে একত্রিত হয়ে আমার নিকট প্রার্থনা করে। আর আমি তাদের সকলের প্রার্থণা মাফিক তাদেরকে দান করি, তাহলে আমার ভাণ্ডার থেকে এতোটুকুও কমবে না যতোটুকু সুঁই সাগরে ডুবিয়ে উঠালে সাগরের পানি কমে। তাই পৃথিবীতে জনসংখ্যা যতোই হোক না কেন। প্রত্যেকের রিযিকের ব্যবস্থা অবশ্যই আল্লাহ তা’য়ালা করে থাকেন ও করবেন। প্রত্যেক মুসলমানের এই বিশ্বাস রাখা চাই। এর বিপরীত আকীদা পোষণ করা কুফরী। তাই জন্মনিয়ন্ত্রণ করা নিষেধ। সুতরাং ওলামায়ে কেরাম যে ব্যাখ্যা করেন তা যথার্থই করেন। তবে অবস্থা ও পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কখনও এক্ষেত্রে হুকুমের মধ্যে কিছু শিথিলতা আসে। যা ব্যাখ্যা সাপেক্ষ। নিম্নে ব্যাখ্যাসহ এর হুকুম বর্ণনা করা হলো। জন্মনিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনিয়তা ও পদ্ধতিতে ভিন্নতা রয়েছে। সকল ক্ষেত্র ও সকল পদ্ধতির হুকুম এক নয়।

মৌলিকভাবে এর তিনটি পদ্ধতি রয়েছে।

এক. জন্মনিয়ন্ত্রণের স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যার দ্বারা নারী বা পুরুষ প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

দুই. অস্থায়ীভাবে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যার ফলে স্বামী-স্ত্রীর কেউ প্রজনন ক্ষমতাহীন হয়ে যায় না যেমন : কনডম ব্যবহার করা, পিল সেবন করা ইত্যাদি।

তিন. গর্ভধারনের পর গর্ভপাত ঘটানো।

প্রথম পদ্ধতিটি গ্রহণ করা সম্পূর্ণ অবৈধ। কেননা এতে আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন করা আবশ্যক হয়ে পড়ে। তবে এক্ষেত্রেও কখনও কোনো কোন অভিজ্ঞ দীনদার ডাক্তারের বক্তব্যমতে গর্ভধারণের কারণে মায়ের প্রাণনাশের আশঙ্কা হলে স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণ করা বৈধ হবে।

আর দ্বিতীয় পদ্ধতি কেবল নিম্মোক্ত ক্ষেত্রে বৈধ হবে।

১। দুই বাচ্চার জন্মের মাঝে কিছু সময় বিরতি দেওয়া যাতে প্রথম সন্তানের লালন-পালন, পরিচর্যা ঠিকমত হয়।

২। কোন কারণে মহিলার বাচ্চা লালন-পালনের সামর্থ না থাকলে।

৩। মহিলা অসুস্থ ও দূর্বল হওয়ার কারণে গর্ভধারণ বিপদজনক হলে। তবে ভালোভাবে মনে রাখা দরকার যে, এ সকল ক্ষেত্রে বৈধতা শুধু ব্যক্তিগত প্রয়োজনে। রাষ্ট্রীয় ও সম্মিলিতভাবে মানুষের নিকট প্রচারণা করা ও এতে উদ্বুদ্ধ করা কোনোভাবেই বৈধ নয়।

আর তৃতীয় পদ্ধতিও নাজায়েয। তবে যদি মহিলা অত্যাধিক দূর্বল হয়, যার কারণে গর্ভধারণ তার জন্য আশঙ্কাজনক হয় আর গর্ভধারনের মেয়াদ চার মাসের কম হয়। তাহলে গর্ভপাত বৈধ হবে। আর মেয়াদ চার মাসের অধিক হলে বৈধ নয়।

[মুসলিম শরিফ ২/৩১৯, জাদীদ ফিকহী মাবাহেস ১/২৮২]

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেন:

মোহাম্মদ আমীর হোসাইন, মুফতি ও মুহাদ্দীস,
শাইখ আবু সাঈদ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, মোহাম্মাদপুর।

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন