و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

মসজিদের কুরআন শরীফ যদি ওয়াকফকৃত হয়, তাহলে তা বিক্রি করা জায়েয নয়। বরং ছেড়া ফাটা হয়ে গেলে তা দাফন করে দিবে। আর যদি সাধারণ দান হয়, তাহলে বিক্রি করে ঐ টাকা মসজিদে লাগানো জায়েজ আছে।

২,হযরত খিজির আ. এর জীবিত থাকার ব্যাপারে উলামায়ে কেরামের মতভিন্নতা রয়েছে।

যেসব উলামাগণ হাদীস নিয়ে গবেষণা করেন তারা তাহকীক করে বলেন যে, খিজির আ. এখন জীবিত থাকার ব্যাপারে একটিও সহীহ রেওয়াত পাওয়া যায় না। বরং চো এমন অনেক আয়াত ও হাদীস আছে যার দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যায় যে, কোনো মানুষ চিরকাল থাকবে না। তাই খিজির আ.ও দুনিয়াতে নেই। এক হাদীসে আছে, নবীজী কোনো এক রাতে বলেন, আজ যারা দুনিয়াতে আছে তাদের কেউ একশ বছরের মাথায় পৃথিবীতে থাকবে না। সহীহ বুখারী,৬০১

এ হাদীস দ্বারাও বুঝা যায় নবীজী দুনিয়া থেকে বিদায়ের একশ বছর পর আর কেউ জীবিত নেই। তাই খিজির আ.ও জীবিত নেই। ইমাম বুখারী, ইবনে আরাবী, ইবনে হাজার আসকালানী, ইবনে কাইয়ুম ও ইবনে তাইমিয়া রাহিমাহুমুল্লাহ এই মতের প্রবক্তা। এ ব্যাপারে ইমাম ইবনে কাসীর রহ. বলেন,

ﻭﻛﺎﻥ ﻳﻜﻨﻰ ﺃﺑﺎ اﻟﻌﺒﺎﺱ، ﻭﻳﻠﻘﺐ ﺑﺎﻟﺨﻀﺮ، ﻭﻛﺎﻥ ﻣﻦ ﺃﺑﻨﺎء اﻟﻤﻠﻮﻙ، ﺫﻛﺮﻩ اﻟﻨﻮﻭﻱ ﻓﻲ ﺗﻬﺬﻳﺐ اﻷﺳﻤﺎء، ﻭﺣﻜﻰ ﻫﻮ ﻭﻏﻴﺮﻩ ﻓﻲ ﻛﻮﻧﻪ ﺑﺎﻗﻴﺎ ﺇﻟﻰ اﻵﻥ، ﺛﻢ ﺇﻟﻰ ﻳﻮﻡ اﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻗﻮﻟﻴﻦ، ﻭﻣﺎﻝ ﻫﻮ ﻭاﺑﻦ اﻟﺼﻼﺡ ﺇﻟﻰ ﺑﻘﺎﺋﻪ، ﻭﺫﻛﺮﻭا ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﺣﻜﺎﻳﺎﺕ ﻭﺁﺛﺎﺭا ﻋﻦ اﻟﺴﻠﻒ ﻭﻏﻴﺮﻫﻢ، ﻭﺟﺎء ﺫﻛﺮﻩ ﻓﻲ ﺑﻌﺾ اﻷﺣﺎﺩﻳﺚ، ﻭﻻ ﻳﺼﺢ ﺷﻲء ﻣﻦ ﺫﻟﻚ، ﻭﺃﺷﻬﺮﻫﺎ ﺣﺪﻳﺚ اﻟﺘﻌﺰﻳﺔ، ﻭﺇﺳﻨﺎﺩﻩ ﺿﻌﻴﻒ. ﻭﺭﺟﺢ ﺁﺧﺮﻭﻥ ﻣﻦ اﻟﻤﺤﺪﺛﻴﻦ ﻭﻏﻴﺮﻫﻢ ﺧﻼﻑ ﺫﻟﻚ، ﻭاﺣﺘﺠﻮا ﺑﻘﻮﻟﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ: ﻭﻣﺎ ﺟﻌﻠﻨﺎ ﻟﺒﺸﺮ ﻣﻦ ﻗﺒﻞك اﻟﺨﻠﺪ

কিন্তু অনেক মাশায়েখ ও সুফী হযরতগণ বলেন, খিজির আ. এখনও জীবিত আছেন। তারা এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন কারামত ও সাহাবীদের সাথে তার সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করেন। হযরত থানভী রহ. নশরুত তীবে লেখেন,

اب تک زندہ ہونے کے بارے میں تمام اہل باطن و صلحاء کا اجتماع ہے اور ہمیشہ ایسے لوگوں کے ساتھ ملاقات کرتے رہے اور کرتے ہیں

সুফী হযরতদের আরেকটি কথা তাফসীরে মাযহারীতে উল্লেখ আছে। তা হলো,

ﻭﻻ ﻳﻤﻜﻦ ﺣﻞ ﻫﺬا اﻻﺷﻜﺎﻝ اﻻ ﺑﻜﻼﻡ اﻟﻤﺠﺪ ﻟﻻﻟﻒ اﻟﺜﺎﻧﻲ ﺭﺿﻲ اﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻓﺎﻧﻪ ﺣﻴﻦ ﺳﺌﻞ ﻋﻦ ﺣﻴﻮﺓ اﻟﺨﻀﺮ ﻋﻠﻴﻪ اﻟﺴﻼﻡ ﻭﻭﻓﺎﺗﻪ ﺗﻮﺟﻪ اﻟﻰ اﻟﻠﻪ ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﻣﺴﺘﻌﻠﻤﺎ ﻣﻦ ﺟﻨﺎﺑﻪ ﻋﻦ ﻫﺬا اﻷﻣﺮ- ﻓﺮاﻯ اﻟﺨﻀﺮ ﻋﻠﻴﻪ اﻟﺴﻼﻡ ﺣﺎﺿﺮا ﻋﻨﺪﻩ ﻓﺴﺎﻟﻪ ﻋﻦ ﺣﺎﻟﻪ ﻓﻘﺎﻝ اﻧﺎ ﻭاﻟﻴﺎﺱ ﻟﺴﻨﺎ ﻣﻦ اﻻﺣﻴﺎء ﻟﻜﻦ اﻟﻠﻪ ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ اﻋﻄﻰ ﻻﺭﻭاﺣﻨﺎ ﻗﻮﺓ ﻧﺘﺠﺴﺪ ﺑﻬﺎ ﻭﻧﻔﻌﻞ ﺑﻬﺎ اﻓﻌﺎﻝ اﻻﺣﻴﺎء ﻣﻦ اﺭﺷﺎﺩ اﻟﻀﺎﻝ ﻭاﻏﺎﺛﺔ اﻟﻤﻠﻬﻮﻑ ﺇﺫا ﺷﺎء اﻟﻠﻪ ﻭﺗﻌﻠﻴﻢ اﻟﻌﻠﻢ اﻟﻠﺪﻧﻲ ﻭﺇﻋﻄﺎء اﻟﻨﺴﺒﺔ ﻟﻤﻦ ﺷﺎء اﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ- ﻭﺟﻌﻠﻨﺎ اﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻣﻌﻴﻨﺎ ﻟﻠﻘﻄﺐ اﻟﻤﺪاﺭ ﻣﻦ اﻭﻟﻴﺎء اﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ اﻟﺬﻱ ﺟﻌﻠﻪ اﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻣﺪاﺭا ﻟﻠﻌﺎﻟﻢ ﺟﻌﻞ ﺑﻘﺎء اﻟﻌﺎﻟﻢ ﺑﺒﺮﻛﺔ ﻭﺟﻮﺩﻩ ﻭﺇﻓﺎﺿﺘﻪ- ﻭﻗﺎﻝ اﻟﺨﻀﺮاﻥ اﻟﻘﻄﺐ ﻓﻲ ﻫﺬا اﻟﺰﻣﺎﻥ ﻓﻲ ﺩﻳﺎﺭ اﻟﻴﻤﻦ ﻣﺘﺒﻊ ﻟﻠﺸﺎﻓﻌﻰ ﻓﻲ اﻟﻔﻘﻪ- ﻗﺎﻝ ﻓﻨﺤﻦ ﻧﺼﻠﻰ ﻣﻊ اﻟﻘﻄﺐ ﺻﻠﻮﺓ ﻋﻠﻰ ﻣﺬﻫﺐ اﻟﺸﺎﻓﻌﻲ ﻓﺒﻬﺬا اﻟﻜﺸﻒ اﻟﺼﺤﻴﺢ اﺟﺘﻤﻊ اﻷﻗﻮاﻝ ﻭﺫﻫﺐ اﻻﺷﻜﺎﻝ ﻭاﻟﺤﻤﺪ ﻟﻠﻪ اﻟﻜﺒﻴﺮ اﻟﻤﺘﻌﺎﻝ-.

এই ইবারতের সারমর্ম হলো, হযরত মুজাদ্দিদ আলফে সানী রহ. বলেন, আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করার পর কাশফের হালতে খিজির আ. আমাকে বলেন যে, আমি ও ইদ্রিস জীবিত ন‌ই। কিন্তু আমাদেরকে আল্লাহ এক শক্তি দান করেছেন যার বদৌলতে আমরা বুযুর্গদের সাথে দেখা করতে পারি।- সুরা কাফহের ৮২ নং আয়াতের তাফসির

যেহেতু উভয় দিকে বড় বড় উলামায়ে কেরাম আছেন, তাই কোনো একটি মত সুনির্দিষ্ট ভাবে নিশ্চিত বলা যায় না। এ ব্যাপারে হযরত ওলী হাসান টুংকী রহ. একটি সুন্দর কথা লিখেছেন। তিনি লেখেন,

حضرت خضر علیہ السلام کی حیات اور موت کے بارے میں ہمارا اعتقادی یا علمی مسئلہ متعلق نہیں ہے۔ اس لیے قرآن اور حدیث میں اس کے بارے میں کوئی صراحت و وضاحت ملتی نہیں۔ اس لیے اس میں زیادہ بحث و تمحیص کی ضرورت نہیں اور نہ ہی کسی ایک جانب کا یقین رکھنا ہمارے لئے ضروری ہے۔

অর্থাৎ খিজির আ. জীবিত থাকা বা মারা যাওয়ার ব্যাপারে আমাদের কোনো আকীদা বা আমলের সম্পর্ক নেই। এ কারণে কুরআন হাদীসে এ ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু বর্ণনা পাওয়া যায় না। তাই এ ব্যাপারে আমাদের বেশি খোঁজাখুঁজির দরকার নেই। আর কোনো এক পক্ষ অবলম্বন করাও জরুরী নয়।

والله اعلم بالصواب