আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ২০৬৫৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ক্রিটিকেল ও বিপর্যস্ত হয়ে কি কেউ তার ছবি বিনিময় করতে পারে। অভিভাবক এর মাধ্যমে। বিয়ের উদ্দেশ্য। মুহতারাম আামার বয়স ২৮।গত ৩বছর ধরে পরিবার বিয়ের চেষ্টা করছে।যত প্রস্তাব আসে সবাই ছবি চায় আগে।আমি জানি ছবি বিনিময় জায়েজ নয়। কত গালি যে শুনতে হয়েছেপ্রতিদিন ছবি না দেয়ার জন্য। আর বিভিন্ন সময় গাইরে মাহরাম এর সামনে যেতে বাধ্য হতে হয়।আর আমার জন্য ছোট ভাই কে বিয়ে দেয়া যাচ্ছে না।আমি বলেছি তাকে বিয়ে দেয়ার জন্য। তার পরেও দেয়না মানুষ তাকে খারাপ বলবে। সম্মানিত বাবা মা। ।এজন্য সে ও অনেক রাগ দেখায় সব সময়। আবার এমন কোন প্রস্তাব আসে না যারা ছবি না সরাসরি আাসবে।আমাকে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।ছবি না দেয়ায় অনেক প্রস্তাব ফেরত হয়ে গেছে। আর এদিকে তো পরিবার এর সদস্যের কথা ও রাগ প্রতিনিয়ত আছে।

১৯ জুলাই, ২০২২
ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





সম্মানিত প্রশ্নকারী!
আল্লাহ তায়ালা আপনার পেরেশানি দূর করুন। উত্তম পাত্রের সাথে আপনার দাম্পত্য বন্ধন তৈরী করে দিন। প্রকৃতপক্ষে একজন নারীর জন্য ২৮ বছরেও বিবাহ না হওয়া দুশ্চিন্তার বিষয়। এটা ঠিক। কিন্তু সাথে সাথে আরেকটি মূলনীতিও স্মরণে রাখা উচিত সেটা হলো, كل شيء مرهون بوقته অর্থাৎ, প্রতিটি বস্তুই নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সম্পৃক্ত। কাজেই দেরীতে বিবাহ হওয়া দোষণীয় নয়।

এজন্য আপনি দোয়া করতে থাকুন। যথাযথভাবে নিজের ইজ্জত ও ইফফতের হেফাজত করুন।

সম্মানিতা বোন!
নিজের দীলে এই বিশ্বাস ও একীন রাখুন, আল্লাহ তায়ালা যদি আপনার জন্য স্বামী নির্ধারণ করে থাকেন তাহলে যেকোনো ভাবেই হোক তিনি আপনার কাছে আসবেই। আপনাকে বধু বানিয়ে ঘরে তুলবেই। হৃদয়ের সাথে এই বোঝাপড়া করে নিন প্রয়োজনে আজীবন কুমারী থাকবেন তবুও নিজের ইজ্জত বিসর্জন দিবেন না!

আপনার বর্ণনায় আমরা বুঝতে পেরেছি আপনি যথাসাধ্য পর্দা মেইনটেইন করে চলেন। এখন আপনি যাকে ছবি দিচ্ছেন এব্যাপারে কি আপনি নিশ্চিত সে-ই আপনার হবু স্বামী? নিশ্চয়ই নয়। সেই ব্যক্তি আপনার ছবিটি অন্য কাউকে দেখাবে না? এইভাবে আপনার ছবি শত পুরুষের নজরে পড়বে না?!

আমাদের অভিজ্ঞতায় বলে যারা সত্যিকার অর্থে বিবাহের প্রত্যাশী তারা কখনও ছবির উপর নির্ভর করে না। এমনকি যারা ছবি সংগ্রহ করে শেষতক তারা ওই নারীকে বিবাহ করে না। তারচে বড় কথা হলো যদি কেউ ছবি দেখে আপনাকে বিবাহ করেও নেয় তবে পর্দা পালনে সে আপনার বড় প্রতিবন্ধক হতে পারে।
কাজেই সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। আমাদের পরামর্শ থাকবে আপনি কিছুতেই আপনার ছবি প্রদান করবেন না।
দ্রুত বিবাহের আমল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচের রেফারেন্স উত্তরটি দেখুন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেন:

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
প্রসঙ্গসমূহ:

রেফারেন্স উত্তর :

দ্রুত বিবাহের কার্যকরি ৭ আমল

প্রশ্নঃ ১০৬৬৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, হুজুর কিছু দিন আগে ইউটিউবে দ্রুত বিয়ে হওয়ার ২ টি আমল দেখলাম। প্রথমটি হলো প্রতি ওয়াক্ত ফরজ নামাজ শেষে সূরা কাসাসের ২৪ নম্বর আয়াত ২১ বার পড়তে হবে, টানা ৪১ দিন। দ্বিতীয়টি হলো ফজর ও মাগরিবের ফরজ নামাজ শেষে বাম হাতের কব্জির উপর ডান হাতের কব্জি রেখে চাপ দিয়ে ধরে ৪১ বার ইয়া ফাত্তাহু পড়তে হবে। তবে যিনি আমলগুলো আলোচনা করেছিল, তিনি কোনো হাদীসের রেফারেন্স দেননি।এখন আমার প্রশ্ন এই আমলগুলো এবং আমলের নিয়ম গুলো কি সহীহ, এর কি কোনো হাদীস বা রেফারেন্স আছে? দয়া করে জানাবেন।

১৮ নভেম্বর, ২০২৩
ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


এজাতীয় অজিফাগুলো অধিকাংশই অভিজ্ঞতা নির্ভর। হতেও পারে আবার না-ও হতে পারে। চাইলে করে দেখতে পারেন। নিচের লেখাটিও অনুসরণ করতে পারেন।

দ্রুত বিবাহ করতে কার্যকরি ৭ আমল
************************************
আবদুল্লাহ তামিম:

বিবাহ একটি সুন্নাত আমল। কে কখন বিবাহ করবে আল্লাহ তায়ালা ভালো জানেন। আল্লাহ তায়ালা চাইলেই সব কিছু সম্ভব।আল্লাহ তায়ালা না চাইলে কোনো কিছু সম্ভব না। পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে যাদের বিবাহের বয়স অতিক্রম করলেও তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারছেন না।

ছেলে বা মেয়ে বিবাহের ক্ষেত্রে তারা যদি প্রস্তাব পেয়েও তাদের বিবাহ না হয় তাহলে তাদের জন্য কার্যকরি ৭টি দোয়া আমরা আমলের জন্য উপস্থাপন করেছি।

কিছু লোক খুব ভাগ্যবান, যারা বিয়ের প্রস্তাব পেয়ে তাড়াতাড়ি তাদের বিবাহও হয়ে যায়। অনেক মানুষ এমন আছে যারা প্রস্তাবের পর আর বিবাহ হয় না। আর কেউ কেউ বিবাহের প্রস্তাব না পেয়ে হতাশ হয়ে যায়।

হতাশ হওয়া উচিত নয়, হতাশ হবেন না। প্রতিক্ষা করলে বিলম্বে আল্লাহ তায়ালা ভালোটা ব্যবস্থা করে দিতে পারেন।কারণ আল্লাহ সবসময় আপনার জন্য সেরাটা চান।

আমরা যে ৭টি আমল উল্লেখ করছি, সবসময় নিয়ম মত তা আমল করলে আল্লাহ চাহে তো খুব শীঘ্রই একটি বিয়ের প্রস্তাব পাবেন আপনি।

১. সূরা ইয়াসিন পাঠ করা

সূরা ইয়াসিন কুরআনের অন্তর হিসেবেও পরিচিত। কারণ, তার রয়েছে সীমাহীন মর্যাদা ও বৈশিষ্ট। সূরা ইয়াসিন শীঘ্রই বিবাহ বিচ্ছেদের সাথে সম্পর্কিত সব সমস্যার সমাধান করে দেয় ।

০২. সূরা দোহা ও কাসাসের ২৪ আয়াত পাঠ

فَسَقَى لَهُمَا ثُمَّ تَوَلَّى إِلَى الظِّلِّ فَقَالَ رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ
সূরা কাসাসের ২৪ আয়াতে মুসা আ. এর বিশেষ আলোচনা করা হয়েছে। মূসা আ. খুব একাকী ও বিষণ্ণতা অনুভব করেছিলেন তখন তিনি এ আয়াতটি বেশি বেশি পাঠ করেছেন।

অনেক আলেমরাই এ আমলটি দিয়ে থাকেন। যদি কোনো ছেলে এই আয়াতটি ১০০ বার পাঠ করে, তাহলে শীঘ্রই তিনি তার জন্য একটি ভালো পাত্রী পাবেন বলে আশা করা যায়।

মেয়েদের সর্বোত্তম বিবাহ প্রস্তাব পেতে ফজরের নামাজে ১১ বার সূরা দোহা পাঠ করে দোয়া করা।

৩. আল্লাহ নামের জিকির

প্রথমে আমলটি করার শুরুতে ১১ বার দরুদ শরিফ পাঠ করা। তারপর ৩১৩ বার আল্লাহ শব্দটি পাঠ করা।
শেষে আবারো ১১বার দরুদ শরিফ পাঠ করা। টানা ৪১ দিন বাদ না দিয়ে এ আমলটি করতে হবে।

৪. সূরা তাওবার ১২৯ নম্বর আয়াত পাঠ করা

فَإِن تَوَلَّوْاْ فَقُلْ حَسْبِيَ اللّهُ لا إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ
“এ সত্ত্বেও যদি তারা বিমুখ হয়ে থাকে, তবে বলে দাও, আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত আর কারো বন্দেগী নেই। আমি তাঁরই ভরসা করি এবং তিনিই মহান আরশের অধিপতি।”
প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার পর এ আমলটি করতে হবে। সঙ্গে ১৯বার বিসমিল্লাহ, ১১০০ বার সুরা তাওবার ১২৯ নম্বর আয়াত পাঠ করা। এর পর ১০০বার দরুদ শরিফ পাঠ করা। শেষে ১০০বার আবারো বিসমিল্লাহ পড়তে হবে।

৫. সূরা মরিয়ম পড়া

সূরা মরিয়ম কোন এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে পড়া। যে মেয়ের বা ছেলের বিবাহ নিয়ে সমস্যা সে পড়বে বা তাদের বাবা মা পড়বে।

৬. হযরত ফাতেমা রা. তাসবিহ পাঠ করা

২ রাকাত নামাজ আদায় করে কুরআন তিলাওয়াত করে ১১ বার দরুদ শরিফ পড়বে। তারপর ফাতেমা রা. এর তাসবিহ পাঠ করবে।

ফাতেমা রা. এর তাসবিহ হলো ৩৪ বার আল্লাহ ও আকবার পড়বে। ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ পড়ে শেষে ১১বার দরুদ শরিফ পড়বে।

তারপর সুরা পাঠ করবে। প্রথমে সুরা দোহা, সুরা শুআরা, সুরা কাসাস, সুরা ইয়াসিন তারপর আবারো সুরা ‍শুআরা পাঠ করবে। উল্লেখ্য এ আমল পাত্রের পিতা -মাতা করতে পারবে বা তারা নিজেরাই।

৭. সূরা মুজাম্মিল পাঠ করা

যদি কোন মেয়ে বড় হয়ে যায়, কোন বিয়ের প্রস্তাব না পায় তাহলে একজন মা বাবা শুক্রবার দিনে জুম্মার নামাযের পর ২ রাকাআত নামাজ আদায়ের পর সূরা মুজাম্মিলের ২১ বার পড়তে হবে।

সূত্র: দ্যা ইসলামিক ইনফরমেশন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেন:

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন