মসজিদের টাকা ব্যবসায় লাগানো জায়েজ!
প্রশ্নঃ ১২৯৩৭৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের মসজিদের কিছু টাকা আছে,সে টাকা গুলো বা'য়ে সালাম হিসেবে এলাকার মানুষকে দেওয়া হয়,এই শর্তে যে এক বছর পর টাকার বিনিময়ে ধান দিবে,কিন্তু নির্ধারিত সময় যাওয়ার পর ধান না নিয়ে টাকা নেওয়া হয়,এই টাকা দিয়ে যদি মসজিদের কাজ করা হয় তাহলে কি সে মসজিদে নামাজ পড়া জায়েজ হবে?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রিয় প্রশ্নকারী, মসজিদের ফান্ড (টাকা-পয়সা) কমিটি, মোতাওয়াল্লি বা কোষাধ্যক্ষের নিকট আমানত হিসেবে থাকে। তাই মসজিদের মোতাওয়াল্লি মসজিদের টাকা শুধুমাত্র মসজিদের খরচ ও কল্যাণমূলক কাজেই ব্যয় করতে বাধ্য। মসজিদের ওয়াকফকৃত সম্পদ কাউকে ব্যবসায় খাটানোর জন্য ঋণ হিসেবে দেওয়া অথবা কমিটির সদস্যদের নিজেদের জন্য নেওয়া জায়েজ নেই। এমনকি মসজিদের টাকা বৃদ্ধি করার নিয়তেও কাউকে ব্যবসায় বিনিয়োগ করার জন্য দেওয়া বৈধ নয়।
কারণ, মসজিদের ফান্ড হলো আমানত, আর আমানতের টাকা ব্যবসায় খাটানো খেয়ানত। হালাল ব্যবসায় লাভ ও ক্ষতি উভয়ের সম্ভাবনা থাকে। আর যে ব্যবসায় লাভের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়, তা শরীয়ত সম্মত বৈধ ব্যবসা হতে পারে না। সুতরাং হালাল ব্যবসায় ক্ষতির আশঙ্কা থাকার কারণেও ওয়াকফ (মসজিদ)-এর টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ করা জায়েজ হবে না।
তাছাড়া ওয়াকফকৃত সম্পদ দাতার অভিপ্রায় অনুযায়ী ব্যবহার করা আবশ্যক। আর মসজিদের টাকার ক্ষেত্রে দাতার উদ্দেশ্য ব্যবসায় খাটিয়ে তা বৃদ্ধি করা নয়, বরং মসজিদে ব্যয় করে সওয়াব হাসিল করা। অন্যথায় দাতা নিজেই ব্যবসায় খাটিয়ে বৃদ্ধি করার পর তা মসজিদে দান করতেন। তাই দাতার উদ্দেশ্যের লঙ্ঘন হওয়ার কারণেও মসজিদের টাকা কোনো ব্যবসায় বিনিয়োগ করা জায়েজ নেই।
সারকথা হলো, মসজিদের টাকা ব্যবসায় খাটানো জায়েজ নেই; তাই কাউকে ব্যবসায় বিনিয়োগ করার জন্য দেওয়া যাবে না, যদিও লাভসহ টাকা মসজিদে ফেরত দেওয়ার ইচ্ছা থাকে।
আর ধান না নিয়ে টাকা নেওয়ার কারণে এই উপার্জন অবৈধ। এই টাকায় মসজিদের কাজ করা গুনাহ। তবে সাধারণ মুসল্লিদের জন্য ওই মসজিদে নামাজ পড়া জায়েয আছে, কিন্তু মসজিদ কমিটির জন্য এই কাজ অবিলম্বে বন্ধ করা ফরজ।
فتاوی ہندیہ :
" وأما حكمها فوجوب الحفظ على المودع وصيرورة المال أمانة في يده ووجوب أدائه عند طلب مالكه، كذا في الشمني.
الوديعة لاتودع ولاتعار ولاتؤاجر ولاترهن، وإن فعل شيئًا منها ضمن، كذا في البحر الرائق."
(كتاب الوديعة، الباب الأول في تفسير الإيداع الوديعة وركنها وشرائطها وحكمها، ٤ / ٣٣٨، ط: دار الفكر)
البحر الرائق شرح كنز الدقائق :
"وفي القنية ولا يجوز للقيم شراء شيء من مال المسجد لنفسه ولا البيع له وإن كان فيه منفعة ظاهرة للمسجد. اهـ.... أن القيم ليس له إقراض مال المسجد قال في جامع الفصولين ليس للمتولي إيداع مال الوقف والمسجد إلا ممن في عياله ولا إقراضه فلو أقرضه ضمن وكذا المستقرض وذكر أن القيم لو أقرض مال المسجد ليأخذه عند الحاجة وهو أحرز من إمساكه فلا بأس به وفي العدة يسع المتولي إقراض ما فضل من غلة الوقف لو أحرز. اهـ. "
( كتاب الوقف، تصرفات الناظر في الوقف، ٥ / ٢٥٩، ط: دار الكتاب الإسلامي)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুহাদ্দিস, জামিয়া বাবুস সালাম, বিমানবন্দর ঢাকা
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন