প্রশ্নঃ ১১৮৪৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
কোনো বিশেষ মেয়েকে স্ত্রী হিসেবে আল্লাহ এর কাছে চাওয়া যাবে?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
‘হ্যাঁ’, দোয়া করা যাবে। কাউকে জীবনসঙ্গী বা জীবনসঙ্গীনী হিসেবে পেতে আল্লাহর কাছে দোয়া করা যাবে; যদি সংশ্লিষ্ট ছেলে-মেয়ের সঙ্গে কোনো অবৈধ বা ইসলাম বিরোধী কোনো সর্ম্পক জড়িত না থাকে। পছন্দের কাউকে বিয়ে করতে কিংবা বিয়ে সহজ হতে দোয়া করা প্রসঙ্গে হাদিসের একটি বর্ণনা উল্লেখ করা যেতে পারে। যেসব ক্ষেত্রে দোয়া করা যাবে। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয়ই নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘বান্দার দোয়া সব সময় গ্রহণ করা হয়; যদি না সে দোয়া কোনো অন্যায় কাজ অথবা আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদ করার কথা না থাকে। এবং (দোয়ায়) তাড়াহুড়া না করে। জিজ্ঞাসা করা হলো- হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (দোয়ায়) তাড়াহুড়া করা কি? তিনি বললেন- সে বলতে থাকে, আমি তো দোয়া করেছি, আমি তো দোয়া করেছি; কিন্তু আমি দেখতে পেলাম না যে, তিনি আমার দোয়া কবুল করেছেন। তখন সে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, আর দোয়া করা থেকে নিজেকে বিরত রাখে।’ (বুখারি ও মুসলিম)
কোনো উদ্দেশ্যে দোয়া করার বিষয়টি এ হাদিস থেকে সুস্পষ্ট হয়ে গেছে। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী- উল্লেখিত ৩টি ক্ষেত্রে দোয়া করা যাবে না। যা করতে নিষেধ করেছেন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তাহলো-
- যে কাজে গোনাহ হবে, এমন কোনো কাজের উদ্দেশ্যে দোয়া করা যাবে না।
- আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করতে দোয়া করা যাবে না।
- দোয়া করে তার ফলাফল পেতে তাড়াহুড়া করা যাবে না।
হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী, এ তিনটি ক্ষেত্র ব্যতিত যে কোনো বিষয়ে আল্লাহর সাহায্য লাভে দোয়া করা যেতে পারে। এতে কোনো বাধা নেই। তবে ইসলামি শরিয়ত একজন মুসলিমকে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ক্ষেত্রে একটি শর্ত জুড়ে দিয়ে দোয়া করার গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেয়। আবার কোনো কাজ করার ক্ষেত্রে ইসতেখারা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।
>> শর্ত জুড়ে দিয়ে দোয়া করা
কেউ সুনির্দিষ্ট বা কাঙ্ক্ষিত কাউকে বিয়ে করতে চায় বা বিয়ের ব্যবস্থাপনায় সহজ হতে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে ইসলামি শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শের আলোকে একটি শর্ত উল্লেখ করে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া উচিত। তাহলো-
‘হে আল্লাহ! তাকে ( অমুক ব্যক্তিকে) জীবনসঙ্গী বা জীবনসঙ্গীনী হিসেবে পাওয়া যদি সার্বিক দিক থেকে আমার জন্য কল্যাণকর হয় তবে আপনি সেটি আমার জন্য সহজ করে দিন।’
আর এভাবে দোয়া করা প্রত্যেকের জন্য কল্যাণকর, ভালো এবং উপকারি। কেননা আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে শর্ত জুড়ে দিয়ে এভাবে দোয়া করার বিষয়ে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَعَسَى أَن تَكْرَهُواْ شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تُحِبُّواْ شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ وَاللّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ
‘আর তোমাদের কাছে হয়তো কোনো একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোনো একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তা তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুত আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২১৬)
>> ইস্তেখারা করা
কাউকে বিয়ে করার জন্য আল্লাহর কাছে শর্তজুড়ে দিয়ে দোয়া করার পাশাপাশি ইস্তেখারা করা যেতে পারে। হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্মের ভালো-মন্দ ইঙ্গিত লাভে ইস্তেখারা করার নসিহত পেশ করেছেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের সব কাজের জন্য ইস্তেখারার শিক্ষা দিতেন। যেমনভাবে তিনি কুরআনের সুরা শিক্ষা দিতেন। (বলতেন)- যখন তোমাদের কারো কোনো বিশেষ কাজ করার ইচ্ছে হয়, তখন সে যেন দুই রাকাআত নামাজ পড়ে এভাবে দোয়া করে-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ، وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ، وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ، وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ، وَأَنْتَ عَلاَّمُ الْغُيُوبِ،
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার জ্ঞানের দ্বারা আমার উদ্দিষ্ট কাজের ভালো-মন্দ জানতে চাই এবং আপনার ক্ষমতা বলে আমি কাজে সক্ষম হতে চাই। আর আমি আপনার মহান অনুগ্রহ প্রার্থনা করি। কারণ, আপনি ক্ষমতাবান আর আমার কোনো ক্ষমতা নেই এবং আপনি জানেন আর আমি জানি না। আপনিই গায়েব সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন।’
হে আল্লাহ! যদি আপনার জ্ঞানে এ কাজটিকে আমার দ্বীনের ব্যাপারে, আমার জীবন ধারণে ও পরিণামে (রাবী বলেন; কিংবা তিনি বলেছেন)- আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিক দিয়ে মঙ্গলজনক বলে জানেন তাহলে তা আমার জন্য নির্ধারিত করে দিন। আর যদি আমার এ কাজটি আমার দ্বীনের ব্যাপারে, জীবন ধারণে ও পরিণামে- রাবী বলেন, কিংবা তিনি বলেছেন- দুনিয়ায় আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিক দিয়ে আপনি আমার জন্য অমঙ্গলজনক মনে করেন, তবে আপনি তা আমার থেকে ফিরিয়ে নিন। আমাকেও তা থেকে ফিরিয়ে রাখুন। আর যেখানেই হোক, আমার জন্য মঙ্গলজনক কাজ নির্ধারিত করে দিন। তারপর আমাকে আপনার নির্ধারিত কাজের প্রতি তৃপ্ত রাখুন। রাবী বলেন, সে যেন এ সময় তার প্রয়োজনের নির্দিষ্ট বিষয়ের কথা উল্লেখ করে।’ (বুখারি)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের জন্য কেনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে জীবনসঙ্গী বা জীবনসঙ্গীনী হিসেবে পাওয়ার জন্য দোয়া করতে কোনো ধরনের বাধা নেই। কুরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী শর্তজুড়ে দিয়ে এবং ইস্তেখারা করে যদি দোয়া করা হয়, তাতে বরকত ও কল্যাণের দরজা খুলে দেবেন মহান আল্লাহ।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর বিয়ে প্রত্যাশী ছেলে-মেয়েকে ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী সাহায্য লাভে দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ১০৯৫৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি আমার মামতো বোনকে অনেক ভালোবাসি।এখন তার বয়স ১৫হওয়াতে বিয়ের সমস্যা হচ্ছে। আর সে আমার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এখন আমি শীঘ্রই বিয়ে করতে চায় তার জন্য আমার কি আমল করতে হবে?।আমি তাকে জীবনসঙ্গী এবং জান্নাতের সঙ্গী হিসেবে পেতে চায়।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
বিবাহ বহির্ভূত প্রেম-ভালোবাসা, মনের আদান-প্রদান করা হারাম ও নাজায়েজ। এটি অশ্লীলতা।
বিবাহের বয়স হওয়ার পর উপযুক্ত পাত্র পাত্রী পেয়ে গেলে দ্রুত বিবাহ করে নেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে নিজের প্রয়োজন পরিবারের কাছে নিজে পেশ করতে না পারলে যাদের মাধ্যমে পেশ করা সম্ভব তাদের মাধ্যমে পেশ করবে।
আল্লাহর কাছে এভাবে দোয়া করতে পারবেন-
আল্লাহ ! ঐ মানুষটি যদি আমার জীবনের সঙ্গী হিসেবে দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণকর হয়, তবে আমার সঙ্গে তাকে মিলিয়ে দাও। আর যদি কল্যাণকর না হয়, তবে তার থেকে আমাকে দূরে সরিয়ে দাও। আমার থেকেও তাকে দূরে সরিয়ে দেও। এবং যেখানে কল্যাণ হবে সেখানে সহজে ব্যবস্থা করে দাও।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
প্রশ্নঃ ১১৪৫৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার প্রশ্ন হলো : আমার একটা ছেলের সাথে রেলেশন ছিল ১.৫বছর। আমরা ২জন ই নিজেদের পরিবার এ ব্যাপারটা জানিয়ে রেখেছিলাম যেনো পরিবারের মত অনুযায়ী সময়মতো বিয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।২মাস আগে সে ভবিষ্যতে নিজেদের বোঝাপড়ায় সমস্যা হতে পারে এমন একটি কারণ দেখিয়ে সম্পর্কটা শেষ করে দেয়।আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি যে হারাম সম্পর্কটি এখন আর নেই তবে আমি তাকে এখনো ভালোবাসি।আমি প্রতিদিন ধৈর্য্য সহকারে আল্লাহর কাছে তাহাজ্জুত পরে, সালাতুল হাজতের মাধ্যমে, ইস্তেগফার করে, ইজমে আজমের মাধ্যমে, ইস্তেখারার মাধ্যমে, কমবেশি দান সদকা করে দোয়া করি আমি যেনো জীবনসঙ্গী হিসেবে সেই ছেলেকেই পাই এবং আল্লাহ যেনো আমাদের পরস্পরের কল্যাণ লিখে রাখে একসাথে থাকার মাধ্যমে।আমি বুঝতে পারছি না আমার দোয়া টি কী কবুল হওয়ার যোগ্য নাকি অজান্তে আমি এমন দোয়া করছি যা আল্লাহ কখনো কবুল করবে না।আমি বলে রাখতে চাই আমি আল্লাহর রহমতে টিউশন এর মাধ্যমে উপার্জন করি, হালাল খাদ্য গ্রহণ করি এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ও ভঙ্গ করিনি এবং যথাসম্ভব চেষ্টা করি অন্তত ফরয ইবাদতগুলো ঠিক রাখার।আমি যতটুকু জানি নফল ইবাদত , দান সদকা এগুলি প্রকাশ্যে না করা বেশি ভালো কিন্তু আমি যে আমার বিষয়টি আপনাদের বললাম এজন্য কী আমার ইবাদত লোক দেখানো ইবাদত এর মধ্যে গণ্য হবে বা কবুল হাওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
বিয়ের পূর্বে পরপুরুষের সঙ্গে প্রেম-ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে তোলা হারাম। এ জাতীয় প্রেম মানুষকে আল্লাহর রহমত থেকে অনেক দূরে ঠেলে দেয়। প্রেমিকের ভাবনা তাকে দিন দিন আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন করে দেয়। ইতালির পিজা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডোনাটেলা মারাজ্জিতি ২০ জন সদ্য প্রেমে পড়া যুগলের ওপর একটি গবেষণা চালান। গবেষণায় তিনি দেখতে চেয়েছেন যে সারাক্ষণ ভালোবাসার মানুষটির কথা ভাবার ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কেমন হতে পারে। গবেষণায় ডোনাটেলা মারাজ্জিতি ছেলে-মেয়েদের রক্ত পরীক্ষা করে দেখেছেন, সদ্য প্রেমে পড়া তরুণ-তরুণীদের ও নেশাগ্রস্ত ব্যক্তির রক্তের সেরোটোনিনের পরিমাণ একই মাত্রায় রয়েছে। (সূত্র : বাংলানিউজ২৪)
এজন্যই রাসূল ﷺ বলেন,
وَالْقَلْبُ يَهْوِىْ وَيَتَمَنَّى وَيُصَدِّقُ ذَالِكَ الْفَرْجُ اَوْ يُكَذِّبُه
আর অন্তরের ব্যভিচার হল কামনা-বাসনা আর গুপ্তাঙ্গঁ তা সত্য অথবা মিথ্যায় পরিণত করে। (সহীহ মুসলিম ২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ ৮৯৩২)
প্রিয় বোন, সুতরাং আপনার প্রতি আমাদের পরামর্শ হল–
১. উক্ত চিন্তা থেকে তাওবা করুন এবং সাহসিকতার সঙ্গে মনের বিরোধিতা করুন। আল্লাহ তো বলেছেন,
وَالَّذِينَ جَاهَدُوا فِينَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا وَإِنَّ اللَّهَ لَمَعَ الْمُحْسِنِينَ
যারা আমার পথে সাধনায় আত্মনিয়োগ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত করব। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের সাথে আছেন। (সুরা আনকাবুত ৬৯)
২. নির্দিষ্ট কাউকে জীবনসঙ্গী হিসেবে কামনা না করে আল্লাহর কাছে উত্তমটা কামনা করুন। আল্লাহর পক্ষে আপনার ধারণা থেকেও উত্তম জীবনসঙ্গী দেয়া কোন বিষয়ই না।
কেননা, অনেক সময় এমন হয়, আজ যে জিনিস পাওয়ার জন্য আমরা উদগ্রীব থাকি, দু’ দিন পরই তা পেয়েছি বলে উৎকণ্ঠিত হই। আবার আজ যা থেকে দূরে সরে থাকার ব্যাপারে চেষ্টিত থাকি, কয়েক দিন পর তা পেয়েছি বলে আনন্দিত হই। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَعَسَىٰ أَن تَكْرَهُوا شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ ۖ وَعَسَىٰ أَن تُحِبُّوا شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ ۗ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না। (সূরা বাকারা ২১৬)
৩. প্রত্যেক নামাযের পর দৈনিক অন্তত পাঁচ বার কিছু সময়ের জন্য- দুই থেকে পাঁচ মিনিটের জন্য আল্লাহর সান্নিধ্যের মুরাকাবা করুন। মুরাকাবা এভাবে করবেন- চোখ বন্ধ করবেন। তারপর ভাববেন, ‘আমি যেখানেই থাকি না আল্লাহ আমার সাথে আছেন।’ অথবা এই আয়াতের বিষয়বস্তু নিয়ে চিন্তা করবেন- هُوَ مَعَكُمْ اَيْنَمَا كُنْتُمْ ‘তোমরা যেখানেই তিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন।’
এভাবে নিয়মিত কিছুদিন করতে পারলে -ইনশা আল্লাহ- ধীরে ধীরে আল্লাহর সান্নিধ্যের সার্বক্ষণিক অনুভূতি অন্তরে বসে যাবে এবং বাজে চিন্তা থেকে বের হওয়া সহজ হয়ে যাবে।
৪. এরপরেও যদি উক্ত পুরুষকে স্বামী হিসেবে পেতে চান তাহলে এভাবে দোয়া করুন যে, ‘হে আল্লাহ! যদি সে আমার জন্য কল্যাণকর হয় তাহলে তাকে আমার জন্য জীবনসঙ্গী হিসেবে কবুল করুন। ইবনুল জাওযী রহ. বলেন,
فإياك أن تسأل شيئًا إلا وتقرنه بسؤال الخيرة ، فرب مطلوب من الدنيا كان حصوله سببًا للهلاك
আল্লাহ তাআলার কাছে কোন কিছু নির্দিষ্ট করে চাওয়া থেকে বিরত থাকবে। তবে (কোন কিছু নির্দিষ্ট করে চাওয়ার) সময় কল্যাণের দোয়া যুক্ত থাকলে অসুবিধা নেই। কেননা, অনেক সময় অনেক দুনিয়াবি কাম্য বস্তু অর্জন ভবিষ্যতে ক্ষতির কারণ হয়। (চায়দুল খাতির ৩৫২)
(না, এক্ষেত্রে আপনার ইবাদত লোকদেখানো হিসেবে গণ্য হবে না )
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন