ইসলামী কায়দায় জন্মদিন পালন
প্রশ্নঃ ১১৭৭১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ইসলামে জন্মদিন পালন হারাম তা স্পষ্টভাবেই জানি কিন্তু আমি সদ্য দ্বীনে ফেরা আর আমার পরিবার তেমন দ্বীনি না। তো আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমি আমার ২ বছর বয়সী ভাতিজাকে যদি নামাজের জন্য জায়ানামাজ কিনে জন্মদিনের দিন উপহার দেই বা তার আগেই দিয়ে যদি বলি ওর জন্মদিনের উপহার আগেই দিয়ে দিলাম এতে কি আমার গুনাহ হবে?ওর জন্মদিনের দিন যদি কেক কাটা বা হইহুল্লোর না করে বাসায় পারিবারিকভাবে রান্নাবান্না করে খেলে কি হারাম হবে?অথবা আমার বাবাকে একটা টি-শার্ট উপহার দিলাম এছাড়া জন্মদিনের কোন আনুষ্ঠানিকতা করিনি আমরা। যেমন কেক কাটা বা হইহুল্লোর ইত্যাদি। এতেও কি গুনাহ হবে?আর আমার জন্মদিন উপলক্ষে যদি ভাই/বাবা টাকা দেয় যে এটা দিয়ে কিছু কিনিও বা খেও তাহলে কি ওই টাকাটাও হারাম হবে যেহেতু জন্মদিনের নামে দেয়া।কিন্তু ওই ১ দিন ই দেখা যায় সবাই টাকা হাদিয়া হিসেবে দেয়।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রিয় দ্বীনি বোন,
আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারীমে সুস্পষ্ট হুকুম দিয়েছেন, রাসুল তোমাদের কাছে যা নিয়ে এসেছেন তা গ্রহণ কর। যা থেকে তোমাদেরকে নিষেধ করছেন তা থেকে তোমরা নিবৃত হও।
وَمَاۤ اٰتٰىکُمُ الرَّسُوۡلُ فَخُذُوۡہُ ٭ وَمَا نَہٰىکُمۡ عَنۡہُ فَانۡتَہُوۡا ۚ وَاتَّقُوا اللّٰہَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ ۘ
রসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।
—আল হাশ্র - ৭
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাফির-মুশরিকদের অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। তাদের সাথে সাদৃশ্যতা বর্জন করতে বলেছেন।
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو النَّضْرِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ ثَابِتٍ، حَدَّثَنَا حَسَّانُ بْنُ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي مُنِيبٍ الْجُرَشِيِّ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ " .
ইবনু ‘উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদের দলভুক্ত গণ্য হবে।
—সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৪০৩১
জন্মদিন পালন করা ইহুদী-নাসারাদের সাদৃশ্যতা। মুসলমানদের জন্য জন্মদিন পালন করার সুযোগ নেই।
আপনি প্রশ্নে যে কয়েকটি উদাহরণ পেশ করেছেন, এ সব যদিও এখন বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে হচ্ছে। জন্মদিন পালন মনে হচ্ছে না। কিন্তু সময়ের স্রোতে এই বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলো জন্মদিন পালনের উৎসবে পরিণত হতে বাধ্য। তাই জন্মদিন উপলক্ষ করে নয়, বরং ঈদ উপলক্ষে, কিংবা বাচ্চারা বিশেষ কোন সূরা মুখস্ত করে শুনাতে পেরেছে, সুন্দর করে নামাজ পড়তে পেরেছে, অথবা পড়ায় ভালো রেজাল্ট করেছে এমন কোন উপলক্ষে তাদেরকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে পুরস্কার দেয়া, কেক কিনে দেওয়া, পছন্দের পোশাক আশাক দেয়া যেতে পারে। সেটি বরং তার দ্বীনি জীবনে অগ্রগামিতার কারন হবে। কাফির মুশরিকদের অনুসরণে জন্মদিন পালন থেকে দূরে থাকা হবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে আল্লাহর হুকুম মানা, নবীর তরিকায় চলা সহজ করে দেন। আমীন
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন