পরিবারকে না জানিয়ে বিবাহ করা
প্রশ্নঃ ১০৮২৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আচ্ছালামু আ'লাইকুম হুজুর, প্রাসঙ্গিক তাই একসাথে ৪টি করা, উত্তর দিলে উপকৃত হবো।
১. বিয়ের ক্ষেত্রে অভিভাবকের অনুমতি কি প্রয়োজন?
২. অভিভাবক যদি জোর করে বিয়ে দেয়, আর পাত্রী যদি রাজী না থাকে সেক্ষেত্রে শরীয়ত কি বলে?
৩.অভিভাবক যদি জোর করে বিয়ে দেয়, আর পাত্রী যদি রাজী না থাকে(পাত্রী হারাম সম্পর্কে লিপ্ত bf আছে, পড়ালেখা আগে শেষ করতে চায়) এক্ষেত্রে শরীয়ত কি বলে?
৪. অভিভাবক যদি বিয়ে না দেয় ছেলে মেয়ে গুনাহ এর কাজে লিপ্ত। গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য ছেলে মেয়েরা কি অভিভাবক কে না জানিয়ে বিয়ে করতে পারবে?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(সকল প্রশ্নের উত্তর একত্রে)
প্রিয় প্রশ্নকারী!
বিবাহ একটি মহৎ ইবাদত। এটা নিছক সামাজিক কোনো রীতিনীতি নয়। নয় কোনো ছেলে খেলা। যেখানে আমরা জীবনের নূন্যতম বিষয়েও পরিবারের সাথে আলোচনা করে থাকে সেখানে বিবাহের ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ,গুরুগম্ভীর ও দূরদৃষ্টি সম্পৃক্ত স্পর্শকাতর বিষয়ে কিভাবে আমরা পরিবারকে না জানিয়ে করার চিন্তা করি বিষয়টি আমাদের ভাবিয়ে তুলছে।
শরীয়তের শর্ত মেনে যদি কেউ বিবাহ করে, যেমন মোহর ধার্য করা, দুজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুজন নারী সাক্ষীর সম্মুখে বিবাহ সম্পন্ন হওয়া, ইত্যাদি শর্ত মেনে বিবাহ সম্পন্ন করলে যদিও বিবাহ হয়ে যাবে কিন্তু পরিবারের মুরুব্বিদের না জানিয়ে/পালিয়ে বিয়ে করা শরীয়তের নীতি-আদর্শের সম্পূর্ণ খেলাফ। কেননা এখানে আবেগের চেয়ে বাস্তবতা, অভিজ্ঞতা এবং বর-কনের কাফায়াত (বিবাহ প্রত্যাশীদের সমতা) এর পরিমাণ বেশী।
পরিবারের লোকজন বিশেষত পিতামাতা কখনোই সন্তানের অমঙ্গল চায় না। সন্তানের মঙ্গল এবং পারিপার্শ্বিকতার কথা চিন্তা করেই অনেক সময় পরিবার ছেলেমেয়েদের পছন্দ মতে বিবাহ দেন না।
bf/gf বা এজাতীয় যেকোনো সম্পর্ককে শরীয়ত কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। কাজেই আবেগ তাড়িত না হয়ে আবেগ কন্ট্রোল করে শরীয়ত সম্মত পন্থায় পারিবারের পরামর্শক্রমে বিষয়গুলোর সুরাহা করা আবশ্যক। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে দীনের সহিহ বুঝ ও শুভবুদ্ধি দান করুন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ৩৬১৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার একটা প্রশ্ন আমার বিয়ের সময় আমার মা বাবা এবং আমার বউ এর মা বাবা কেউই ছিল না। এবং তারা রাজিও ছিল না আমরা দুজনে পালিয়ে বিয়ে করেছি তার এক বছর পর সবাই মেনে নিয়েছে এখন এই বিয়েতে কোনো সমস্যা আছে কিনা?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের শর্ত মেনে যদি বিবাহ করা হয়ে থাকে, যেমন -
(১) ইজাব কবুল (একজনের প্রস্তাব আরেকজনের গ্রহন) বলা।
(২) দুজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুজন নারী সাক্ষীর সম্মুখে বিবাহ সম্পন্ন হওয়া এবং উভয়ে একসাথে ইজাব কবুল শ্রবণ করা।
(তৃতীয় শর্ত হলো) মোহর ধার্য করা, ইত্যাদি শর্ত মেনে বিবাহ সম্পন্ন হয়ে থাকলে বিবাহ ঠিক আছে। নতুন করে কিছু করতে হবে না।
উল্লেখ্য: পরিবারের মুরুব্বিদের না জানিয়ে পালিয়ে বিয়ে করা শরীয়তের নীতি-আদর্শের সম্পূর্ণ খেলাফ।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا، وَالْبِكْرُ تُسْتَأْذَنُ فِي نَفْسِهَا، وَإِذْنُهَا صُمَاتُهَا ".
সুনানু আবী দাউদ ২০৯৮
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : " الْبَغَايَا : اللَّاتِي يُنْكِحْنَ أَنْفُسَهُنَّ بِغَيْرِ بَيِّنَةٍ ".
সুনানু তিরমিজী ১১০৩
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন