আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

তাওয়াফ করার পদ্ধতি

প্রশ্নঃ ১০১২৩৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, তাওয়াফ করার পদ্ধতি কি?

২৯ এপ্রিল, ২০২৫
ঢাকা ১২০৭

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


তাওয়াফের জন্য নিয়ত করা ফরয। নিয়ত ব্যতীত বাইতুল্লার চতুর দিকে যতই ঘুরা হবে তাওয়াফ আদায় হবে না। তাওয়াফের নিয়ত এভাবে করবে যে, হে আল্লাহ! আমি তোমার সন্তুষ্টির জন্য তাওয়াফের ইচ্ছা করছি, তা আমার জন্য সহজ করে দাও এবং কবুল কর। অন্তরে এই নিয়ত করা ফরয এবং মুখে উচ্চারণ করাও উত্তম। এ নিয়তের সাথে সাথে বাইতুল্লাহ্ শরীফের পূর্ব-দক্ষিণ কোণে যেখানে হাজরে আসওয়াদ রয়েছে সেখানে এভাবে দাঁড়াবে যে, হাজরে আসওয়াদ যেন ডান দিকে থাকে। এরপর তাওয়াফের নিয়ত করে এমনিভাবে একটু ডান দিকে যাবে যেন হাজরে আসওয়াদ সম্পূর্ণ সামনে থাকে। হাজরে আসওয়াদের সামনে দাঁড়িয়ে এভাবে হাত উঠাবে যেমনি নামাযে তাকবীর তাহরীমার সময় উঠাতে হয় এবং এভাবে তাকবীর বলবে-
بِسْمِ اللهِ اَللهُ أَكْبَرُ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَلِلّٰهِ الْحَمْدُ ، وَالصَّلٰوةُ وَالسَّلَامُ عَلٰى رَسُوْلِ الله - اَللّٰهُمَّ إِيمَانًا بِكَ، وَتَصْدِيْقًا بِكِتَابِكَ، وَوَفَاءً بِعَهْدِكَ، وَاتِّبَاعًا لِسُنَّةِ نَبِيِّكَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
যদি সম্পূর্ণ স্মরণ না থাকে অথবা ভীড়ের কারণে অসুবিধা হয় তাহলে শুধু 'বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ্‌' পাঠ করলেই চলবে। এরপর হাত ছেড়ে হাজরে আসওয়াদকে এভাবে চুমু দেবে যে, উভয় হাত হাজরে আসওয়াদের দুপাশে এভাবে রাখবে যেমনি সিজদার মধ্যে রাখা হয় এবং হাজরে আসওয়াদকে আদবের সাথে চুমা দেবে।
ভিড়ের কারণে চুমু দেয়া সম্ভব না হলে হাত দ্বারা হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করে হাতে চুমু দেবে। তাও সম্ভব না হলে কোন লাঠি থাকলে তা দ্বারা স্পর্শ করে তাতে চুমু দেবে। তাও সম্ভব না হলে দুই হাতের তালু দিয়ে হাজরে আসওয়াদের দিকে ইশারা করে দুই হাতেই চুমু খাবে। হাত দ্বারা ইশারা করার সময় হাত এতটুকু উঠাবে যে, হাতের তালু হাজরে আসওয়াদের দিকে থাকবে এবং হাতের পিঠ চেহারার দিকে থাকবে।
হাজরে আসওয়াদ চুমা দেওয়ার পর ডান দিকে কা'বা শরীফের দরওয়াজার দিকে যাবে এবং বাইতুল্লাহ্ বামে রেখে চতুর্দিকে বাইতুল্লার তাওয়াফ করবে। যখন রুকনে ইয়ামানীর নিকট পৌঁছবে তখন উভয় হাতে অথবা ডান হাতে রুকনে ইয়ামানী স্পর্শ করা সুন্নত। এটা চুমা দেওয়া বা বাম হাতে স্পর্শ করা সুন্নতের খেলাফ বা বিরোধী। যদি হাতে স্পর্শ করার সুযোগ না পাওয়া যায় তবে স্বাভাবিকভাবে চলে যেতে হবে।
বায়তুল্লাহর চারটি কোণ রয়েছে। প্রত্যেকটি কোণকে রোকন বলা হয়। হাজরে আসওয়াদ হলো একটি রোকন। এর বিপরীত পশ্চিম দিকের কোণকে বলা হয় রোকনে ইয়ামানী। অপর দু'টি রোকনে শামী ও রোকনে ইরাকী নামে প্রসিদ্ধ। কিন্তু তাওয়াফে এ দু'টি রোকনের সাথে শরীয়তের কোন বিধান জড়িত নয়।
রুকনে ইয়ামানী থেকে হাজরে আসওয়াদের কোণে যাওয়া পর্যন্ত নিম্নোক্ত দু‘আ পড়া মোস্তাহাব। তাওয়াফের ৭ চক্করেই এই স্থানে এ দু‘আটি পড়তে হয়।
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ يَا عَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا رَبَّ الْعَلَمِينَ
তারপর হাজরে আসওয়াদ বরাবর পৌঁছলে তখন বিছমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে আবার পূর্বের নিয়মে হাজরে আসওয়াদে চুমু খাবে বা হাতে স্পর্শ করে বা ইশারা করে হাতে চুমু খাবে। এভাবে একটি চক্কর পূর্ণ হবে। এরপর হাজরে আসওয়াদ থেকে শুরু করে পূর্বের ন্যায় হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত সাতবার চক্কর দিতে হবে। সাত চক্কর পূর্ণ করার পর অষ্টম বারে পূর্বের ন্যায় হাজরে আসওয়াদকে চুমা দেবে। তাহলে একটি তাওয়াফ পূর্ণ হবে। মুআল্লিমুল হুজ্জাজ ৬; আহকামে হজ্ব ও উমরা ৪৮-৫২

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া খতীব, নবোদয় সি ব্লক জামে মসজিদ, মোহাম্মদপুর ইমাম, বায়তুল ওয়াহহাব জামে মসজিদ, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন