রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
৭. রোগীর শুশ্রূষা ও মাইয়্যেতের প্রতি কর্তব্য
হাদীস নং: ৯৩২
রোগীর শুশ্রূষা ও মাইয়্যেতের প্রতি কর্তব্য
পরিচ্ছেদ:১৩ জানাযার নামাযে মুসল্লীদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা ও তাদের তিন বা ততোধিক কাতার বানানো
কেমন লোকের পক্ষ থেকে এবং কেমন মায়্যিতের জন্য জানাযার নামায শাফা'আত বলে গণ্য
হাদীছ নং: ৯৩২
হযরত ইবন আব্বাস রাযি. বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, কোনও মুসলিম ব্যক্তি যদি মারা যায় এবং তার জানাযায় এমন চল্লিশ ব্যক্তি অংশগ্রহণ করে, যারা আল্লাহর সঙ্গে কোনওকিছুকে শরীক করে না , তবে আল্লাহ তার পক্ষে তাদের সুপারিশ অবশ্যই গ্রহণ করেন। -মুসলিম
(সহীহ মুসলিম: ৯৪৮; মুসনাদে আহমাদ: ২৫০৯; সহীহ ইবন হিব্বান : ৩০৮২; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৮৮৯৮; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা : ৫৬২১: শু'আবুল ঈমান : ৮৮১২; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ১৫০৫)
হাদীছ নং: ৯৩২
হযরত ইবন আব্বাস রাযি. বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, কোনও মুসলিম ব্যক্তি যদি মারা যায় এবং তার জানাযায় এমন চল্লিশ ব্যক্তি অংশগ্রহণ করে, যারা আল্লাহর সঙ্গে কোনওকিছুকে শরীক করে না , তবে আল্লাহ তার পক্ষে তাদের সুপারিশ অবশ্যই গ্রহণ করেন। -মুসলিম
(সহীহ মুসলিম: ৯৪৮; মুসনাদে আহমাদ: ২৫০৯; সহীহ ইবন হিব্বান : ৩০৮২; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৮৮৯৮; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা : ৫৬২১: শু'আবুল ঈমান : ৮৮১২; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ১৫০৫)
كتاب عيادة المريض وتشييع الميت والصلاة عليه وحضور دفنه والمكث عند قبره بعد دفنه
باب استحباب تكثير المصلين عَلَى الجنازة وجعل صفوفهم ثلاثة فأكثر
932 - وعن ابن عباسٍ رضي الله عنهما، قَالَ: سَمِعْتُ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - يقول: «مَا مِنْ رَجُلٍ مُسْلِمٍ يَمُوتُ، فَيقومُ عَلَى جَنَازَتِهِ أرْبَعُونَ رَجُلًا لاَ يُشْرِكُونَ بِاللهِ شَيْئًا، إِلاَّ شَفَّعَهُمُ اللهُ فِيهِ». رواه مسلم. (1)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
কোনও মুসলিম ব্যক্তি মারা গেলে অন্যসব মুসলিমের কর্তব্য তার জানাযা পড়া। এটা মায়্যিতের হক। এ হাদীছে সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে যে, চল্লিশজন লোক যদি কোনও মুসলিম ব্যক্তির জানাযা পড়ে, তবে তার পক্ষে তাদের সুপারিশ অবশ্যই কবুল করা হয়। অর্থাৎ তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। তবে শর্ত হল সে চল্লিশজনের প্রত্যেকেরই মুসলিম হতে হবে। কোনও একজনও যদি মুশরিক হয়, অর্থাৎ এমন ব্যক্তি হয়, যে আল্লাহ তা'আলার সঙ্গে অন্য কাউকে শরীক করে, তবে সে ক্ষেত্রে হাদীছটির ফযীলত প্রযোজ্য নয়। কেননা মুশরিক ব্যক্তি শিরক থেকে তাওবা না করলে তার নিজেরই তো মাগফিরাত লাভ হবে না। এ অবস্থায় অন্যের মাগফিরাতের জন্য তার সুপারিশ কীভাবে কবুল হতে পারে?
লক্ষণীয়, এর আগের হাদীছটিতে বলা হয়েছিল একশজন লোকের কথা। জানাযা আদায়কারীর সংখ্যা একশজন হলে তাদের দু'আয় আল্লাহ তা'আলা মায়্যিতকে ক্ষমা করবেন বলে জানানো হয়েছিল। আলোচ্য হাদীছটিতে সে সংখ্যা চল্লিশে নামিয়ে আনা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে উভয় হাদীছের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। প্রথম হাদীছটি দ্বারা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ তা'আলা তাঁর অপার রহমত সম্পর্কে অবগত করেছিলেন যে, একশজন মুসলিমও কোনও মায়্যিতের জানাযা পড়লে আল্লাহ তা'আলা তাকে ক্ষমা করে দেবেন। পরে আল্লাহ তা'আলা তাঁর রহমতকে আরও বেশি বিস্তার করে দেন এবং জানিয়ে দেন যে, সে সংখ্যাটি যদি চল্লিশও হয়, তবুও আল্লাহ তা'আলা তাদের দু'আর অছিলায় মায়্যিতকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহু আকবার! কী অসীম আল্লাহ তা'আলার দয়া।
এ হাদীছটিতে স্পষ্টই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, জানাযাটা হতে হবে কোনও মুসলিম ব্যক্তির। ব্যক্তি নিজে যদি মুসলিম না হয়, যদি তার আকীদা-বিশ্বাস সঠিক না হয়, সে যদি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শেষনবী না মানে, যদি সম্পূর্ণ কুরআনকে সত্য বলে স্বীকার না করে, যদি কুরআনের প্রতিটি বিধান কার্যকর বলে বিশ্বাস না রাখে, যদি আখিরাতের জীবন সত্য বলে স্বীকার না করে কিংবা এরকম অন্য কোনও জরুরি আকীদা প্রত্যাখ্যান করে, তবে তার জানাযার নামাযে লাখ লাখ লোক হলেও কিছু আসে যায় না। বিনা তাওবায় মারা গেলে এরূপ লোক কিছুতেই ক্ষমা পাবে না।
প্রকাশ থাকে যে, জানাযার নামায দ্বারা সাধারণত ক্ষমা করা হয় আল্লাহর হক। বিভিন্ন দলীল-প্রমাণ দ্বারা জানা যায় যে, বান্দার হক ক্ষমার জন্য যার হক নষ্ট করা হয়েছে তার পক্ষ থেকেও ক্ষমা পাওয়া জরুরি। সুতরাং বান্দার হক আদায়ের ব্যাপারে অনেক বেশি সতর্কতা জরুরি। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে তাঁর হকসমূহ আদায়ের পাশাপাশি তাঁর বান্দাদের যতরকম হক আছে তাও আদায় করার তাওফীক দান করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা জানাযার নামাযের ফযীলত জানা যায় যে, তা মায়্যিতের পক্ষে সুপারিশস্বরূপ।
খ. আমাদের কর্তব্য খুব গুরুত্বের সঙ্গে মুসলিম মায়্যিতের জানাযা আদায় করা এবং চেষ্টা করা যাতে জানাযা আদায়কারীদের সংখ্যা অন্ততপক্ষে চল্লিশজন হয়।
গ. এ হাদীছ দ্বারা শিরকের কদর্যতাও জানা যায়। তার জানাযা পড়ার কোনও মূল্য নেই। শিরকের কারণে সে নিজেই তো ক্ষমার অযোগ্য, যদি না তাওবা করে। এ অবস্থায় অন্যের পক্ষে সে কী সুপারিশ করবে?
ঘ. মায়্যিত যদি মুসলিম না হয়, অর্থাৎ পরিপূর্ণ ইসলামকে সত্য বলে মেনে না নেয়, তবে জানাযার নামায দ্বারা তার ক্ষমালাভ হবে না, তাতে জানাযা আদায়কারীর সংখ্যা যত বেশিই হোক না কেন। ক্ষমা পাওয়ার জন্য মৃত্যুর আগে তাকে অবশ্যই তাওবা করে যেতে হবে।
লক্ষণীয়, এর আগের হাদীছটিতে বলা হয়েছিল একশজন লোকের কথা। জানাযা আদায়কারীর সংখ্যা একশজন হলে তাদের দু'আয় আল্লাহ তা'আলা মায়্যিতকে ক্ষমা করবেন বলে জানানো হয়েছিল। আলোচ্য হাদীছটিতে সে সংখ্যা চল্লিশে নামিয়ে আনা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে উভয় হাদীছের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। প্রথম হাদীছটি দ্বারা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ তা'আলা তাঁর অপার রহমত সম্পর্কে অবগত করেছিলেন যে, একশজন মুসলিমও কোনও মায়্যিতের জানাযা পড়লে আল্লাহ তা'আলা তাকে ক্ষমা করে দেবেন। পরে আল্লাহ তা'আলা তাঁর রহমতকে আরও বেশি বিস্তার করে দেন এবং জানিয়ে দেন যে, সে সংখ্যাটি যদি চল্লিশও হয়, তবুও আল্লাহ তা'আলা তাদের দু'আর অছিলায় মায়্যিতকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহু আকবার! কী অসীম আল্লাহ তা'আলার দয়া।
এ হাদীছটিতে স্পষ্টই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, জানাযাটা হতে হবে কোনও মুসলিম ব্যক্তির। ব্যক্তি নিজে যদি মুসলিম না হয়, যদি তার আকীদা-বিশ্বাস সঠিক না হয়, সে যদি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শেষনবী না মানে, যদি সম্পূর্ণ কুরআনকে সত্য বলে স্বীকার না করে, যদি কুরআনের প্রতিটি বিধান কার্যকর বলে বিশ্বাস না রাখে, যদি আখিরাতের জীবন সত্য বলে স্বীকার না করে কিংবা এরকম অন্য কোনও জরুরি আকীদা প্রত্যাখ্যান করে, তবে তার জানাযার নামাযে লাখ লাখ লোক হলেও কিছু আসে যায় না। বিনা তাওবায় মারা গেলে এরূপ লোক কিছুতেই ক্ষমা পাবে না।
প্রকাশ থাকে যে, জানাযার নামায দ্বারা সাধারণত ক্ষমা করা হয় আল্লাহর হক। বিভিন্ন দলীল-প্রমাণ দ্বারা জানা যায় যে, বান্দার হক ক্ষমার জন্য যার হক নষ্ট করা হয়েছে তার পক্ষ থেকেও ক্ষমা পাওয়া জরুরি। সুতরাং বান্দার হক আদায়ের ব্যাপারে অনেক বেশি সতর্কতা জরুরি। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে তাঁর হকসমূহ আদায়ের পাশাপাশি তাঁর বান্দাদের যতরকম হক আছে তাও আদায় করার তাওফীক দান করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা জানাযার নামাযের ফযীলত জানা যায় যে, তা মায়্যিতের পক্ষে সুপারিশস্বরূপ।
খ. আমাদের কর্তব্য খুব গুরুত্বের সঙ্গে মুসলিম মায়্যিতের জানাযা আদায় করা এবং চেষ্টা করা যাতে জানাযা আদায়কারীদের সংখ্যা অন্ততপক্ষে চল্লিশজন হয়।
গ. এ হাদীছ দ্বারা শিরকের কদর্যতাও জানা যায়। তার জানাযা পড়ার কোনও মূল্য নেই। শিরকের কারণে সে নিজেই তো ক্ষমার অযোগ্য, যদি না তাওবা করে। এ অবস্থায় অন্যের পক্ষে সে কী সুপারিশ করবে?
ঘ. মায়্যিত যদি মুসলিম না হয়, অর্থাৎ পরিপূর্ণ ইসলামকে সত্য বলে মেনে না নেয়, তবে জানাযার নামায দ্বারা তার ক্ষমালাভ হবে না, তাতে জানাযা আদায়কারীর সংখ্যা যত বেশিই হোক না কেন। ক্ষমা পাওয়ার জন্য মৃত্যুর আগে তাকে অবশ্যই তাওবা করে যেতে হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)