রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
৬. সালাম-মুসাফাহার আদব
হাদীস নং: ৮৭৪
সালাম-মুসাফাহার আদব
পরিচ্ছেদ:১১ অনুমতিপ্রার্থীকে 'তুমি কে' জিজ্ঞেস করা হলে 'আমি' বা এরূপ কিছু না বলে সে যে নামে পরিচিত তাই বলে জবাব দেওয়া
পরিচয় জিজ্ঞাসার জবাবে সরাসরি নিজের নাম বলা
হাদীছ নং: ৮৭৪
হযরত আবূ যার্র রাযি. বলেন, আমি কোনও এক রাতে বের হলাম। হঠাৎ দেখি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একা হাঁটছেন। আমি চাঁদের ছায়ায় (অর্থাৎ কোনও আড়ালের কারণে চাঁদের আলো যেখানে পড়ে না) হাঁটতে থাকলাম। তিনি জেনে তাকিয়ে আমাকে দেখতে পেলেন। জিজ্ঞেস করলেন, কে? বললাম, আবু যার্র।-বুখারী ও মুসলিম
(সহীহ বুখারী: ৬৪৪৩; সহীহ মুসলিম: ৯৪; মুসনাদুল বাযযার: ৩৯৮১)
হাদীছ নং: ৮৭৪
হযরত আবূ যার্র রাযি. বলেন, আমি কোনও এক রাতে বের হলাম। হঠাৎ দেখি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একা হাঁটছেন। আমি চাঁদের ছায়ায় (অর্থাৎ কোনও আড়ালের কারণে চাঁদের আলো যেখানে পড়ে না) হাঁটতে থাকলাম। তিনি জেনে তাকিয়ে আমাকে দেখতে পেলেন। জিজ্ঞেস করলেন, কে? বললাম, আবু যার্র।-বুখারী ও মুসলিম
(সহীহ বুখারী: ৬৪৪৩; সহীহ মুসলিম: ৯৪; মুসনাদুল বাযযার: ৩৯৮১)
كتاب السلام
باب بيان أنَّ السنة إِذَا قيل للمستأذن: من أنت؟ أن يقول: فلان، فيسمي نفسه بما يعرف به من اسم أَوْ كنية وكراهة قوله: «أنا» ونحوها
874 - وعن أَبي ذرٍّ - رضي الله عنه - قَالَ: خَرَجْتُ لَيْلَةً مِنَ اللَّيَالِي، فَإذَا رسول الله - صلى الله عليه وسلم - يَمْشِي وَحْدَهُ، فَجَعَلْتُ أمْشِي فِي ظلِّ القمَرِ، فَالْتَفَتَ فَرَآنِي، فَقَالَ: «مَنْ هَذَا؟» فقلتُ: أَبُو ذَرٍّ. متفقٌ عَلَيْهِ. (1)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীছটি এখানে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে। বিস্তারিত বর্ণনাসমূহে আছে একদিন এশার পর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনার উত্তর দিকে হাররায় (কালো পাথরপূর্ণ ভূমি) একা একা হাঁটছিলেন। এ সময় হযরত আবু যার্র রাযি.-ও বের হয়েছিলেন। তিনি দেখতে পান রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাই হাঁটছেন। তাঁর সঙ্গে কেউ নেই। তিনি ভাবলেন এ সময় হয়তো তিনি তাঁর কাছে কারও যাওয়াটা পসন্দ করবেন না। তাই আমি খানিকটা দূর থেকে এমন জায়গা ধরে চলতে থাকলাম, যেখানে চাঁদের আলো পড়ে না। ক্ষণিক পরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেছন দিকে তাকিয়ে আমাকে দেখতে পেলেন (অর্থাৎ একটা ছায়ামূর্তি দেখতে পেলেন)। জিজ্ঞেস করলেন, কে? বললাম, আমি আবু যার্র। আল্লাহ আমাকে আপনার প্রতি উৎসর্গিত করুন। বললেন, হে আবু যার্র ! কাছে আসো। আমি এগিয়ে গিয়ে তাঁর সঙ্গে হাঁটতে থাকলাম। কিছুক্ষণ পর তিনি বললেন, যাদের অর্থ. সম্পদ বেশি, কিয়ামতের দিন তারাই হবে অভাবগ্রস্ত। তবে আল্লাহ যাকে সম্পদ দিয়েছেন আর সে তার ডান দিকে, বাম দিকে, সামনে ও পেছনে তা অকাতরে ব্যয় করে এবং তাতে সৎকর্ম করে, তার কথা আলাদা।.... (হাদীছটি আরও দীর্ঘ)
এটা একটা আদব যে, কেউ যখন একা থাকে এবং অনুমান করা যায় অন্য কারও উপস্থিতি পসন্দ করবে না, তখন তার কাছে যেতে নেই। কেননা হতে পারে সে ব্যক্তি তখন কোনও গভীর ভাবনায় নিমজ্জিত। কাছে গেলে তার চিন্তায় ব্যাঘাত ঘটবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ক্ষেত্রে এর অবকাশ অনেক বেশি ছিল। বিশেষত একাকী অবস্থায় তাঁর প্রতি ওহী নাযিলেরও সম্ভাবনা থাকত।
যদি আশঙ্কা হয় একাকী থাকার কারণে সেই ব্যক্তির কোনও বিপদ দেখা দিতে পারে, তবে খানিকটা দূর থেকে তার প্রতি লক্ষ রাখা চাই। হাদীছের এ ঘটনাটিতে হযরত আবু যার্র রাযি. এমনই করেছেন। তিনি বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করেছেন এই যে তিনি চাঁদের আলো এড়িয়ে ছায়ায় ছায়ায় চলছিলেন। যাতে সহজে তাঁর প্রতি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দৃষ্টি না পড়ে। কারণ দৃষ্টি পড়ে গেলে, সাহাবীদের প্রতি তাঁর যে গভীর মমতা ছিল, তাতে খুব সম্ভাবনা ছিল তাঁকে কাছে ডেকে নেবেন আর তাতে হয়তো যে উদ্দেশ্যে তিনি একাকী চলছিলেন তাতে বিঘ্ন ঘটবে। কারও কাছে যেতে বা কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসব বিষয়ে খুব লক্ষ রাখা দরকার।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বভাবগতভাবেই একজন সতর্ক মানুষ ছিলেন। তিনি ঠিকই অনুমান করতে পারেন যে, কেউ একজন তাঁকে অনুসরণ করছে। তাই পেছন ফিরে জিজ্ঞেস করলেন কে? হযরত আবু যার্র রাযি. নিজের নাম বললেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কেউ কোথাও একা থাকলে এবং তখন একা থাকাটাই তার ইচ্ছা বলে অনুমিত হলে তখন তাকে একাই থাকতে দেওয়া উচিত। কাছে গিয়ে তার চিন্তা ও আবেগ-অনুভূতিতে ব্যাঘাত ঘটাতে নেই।
খ. কারও একা থাকা অবস্থায় তার প্রতি কোনও বিপদের আশঙ্কাবোধ করলে খানিকটা দূর থেকে তার প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা কর্তব্য।
গ. কেউ পরিচয় জিজ্ঞেস করলে পরিষ্কারভাবে নিজের নাম বলা উচিত। 'আমি' বা অন্য কিছু নয়।
এটা একটা আদব যে, কেউ যখন একা থাকে এবং অনুমান করা যায় অন্য কারও উপস্থিতি পসন্দ করবে না, তখন তার কাছে যেতে নেই। কেননা হতে পারে সে ব্যক্তি তখন কোনও গভীর ভাবনায় নিমজ্জিত। কাছে গেলে তার চিন্তায় ব্যাঘাত ঘটবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ক্ষেত্রে এর অবকাশ অনেক বেশি ছিল। বিশেষত একাকী অবস্থায় তাঁর প্রতি ওহী নাযিলেরও সম্ভাবনা থাকত।
যদি আশঙ্কা হয় একাকী থাকার কারণে সেই ব্যক্তির কোনও বিপদ দেখা দিতে পারে, তবে খানিকটা দূর থেকে তার প্রতি লক্ষ রাখা চাই। হাদীছের এ ঘটনাটিতে হযরত আবু যার্র রাযি. এমনই করেছেন। তিনি বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করেছেন এই যে তিনি চাঁদের আলো এড়িয়ে ছায়ায় ছায়ায় চলছিলেন। যাতে সহজে তাঁর প্রতি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দৃষ্টি না পড়ে। কারণ দৃষ্টি পড়ে গেলে, সাহাবীদের প্রতি তাঁর যে গভীর মমতা ছিল, তাতে খুব সম্ভাবনা ছিল তাঁকে কাছে ডেকে নেবেন আর তাতে হয়তো যে উদ্দেশ্যে তিনি একাকী চলছিলেন তাতে বিঘ্ন ঘটবে। কারও কাছে যেতে বা কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসব বিষয়ে খুব লক্ষ রাখা দরকার।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বভাবগতভাবেই একজন সতর্ক মানুষ ছিলেন। তিনি ঠিকই অনুমান করতে পারেন যে, কেউ একজন তাঁকে অনুসরণ করছে। তাই পেছন ফিরে জিজ্ঞেস করলেন কে? হযরত আবু যার্র রাযি. নিজের নাম বললেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কেউ কোথাও একা থাকলে এবং তখন একা থাকাটাই তার ইচ্ছা বলে অনুমিত হলে তখন তাকে একাই থাকতে দেওয়া উচিত। কাছে গিয়ে তার চিন্তা ও আবেগ-অনুভূতিতে ব্যাঘাত ঘটাতে নেই।
খ. কারও একা থাকা অবস্থায় তার প্রতি কোনও বিপদের আশঙ্কাবোধ করলে খানিকটা দূর থেকে তার প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা কর্তব্য।
গ. কেউ পরিচয় জিজ্ঞেস করলে পরিষ্কারভাবে নিজের নাম বলা উচিত। 'আমি' বা অন্য কিছু নয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)